ফুটপাত থেকে শিশুকন্যার কাপড় কিনলাম। প্রায় একই ধরনের কাপড়ের দাম বেশি বলছে দোকানগুলোতে। তাই ফুটপাত থেকে পোশাক কিনলাম
রাজশাহী : ফুটপাতে ক্রেতাদের ভিড় -সংবাদ
ঈদের বাকি ৮ দিন। রাজশাহীতে জমতে শুরু করেছে ঈদের কেনাকাটা। শহরের অভিজাত বিপণীবিতান ছাড়াও ফুটপাতের দোকানগুলোতে বেড়েছে ক্রেতাদের ভিড়। সেখানে সাধ আর সাধ্যের মিল রেখে পছন্দের পোশাক কিনছেন অনেকেই। শহরের বিপনী বিতানগুলোর মত ফুটপাতের দোকানগুলোতে ছোট-বড় সব বয়সের মানুষের পোশাক পাওয়া যাচ্ছে।
নগরীর গণকপাড়া, সাহেববাজার, গোরহাঙ্গা রেলগেট, শিরোইল বাসস্ট্যান্ড ঘুরে দেখা যায়, ২০ রমজানের পর থেকে ফুটপাতে ইদের কেনাকাটা বেড়েছে। ক্রেতারা পছন্দের পোশাক কিনলেও তাদের দাবি- এ বছর গত বছরের তুলনায় পোশাকের দাম বেশি চাচ্ছে ব্যবসায়ীরা।
ঈদের পোশাক ক্রেতা শামসুল ইসলাম বলেন, দোকানগুলোর তুলনায় ফুটপাতে পণ্যের দাম কম। তাই অনেকেই ফুটপাতে পোশাক কিনছেন। আমি স্বল্প আয়ের মানুষ। এজন্য ফুটপাত থেকে শিশু কন্যার কাপড় কিনলাম। প্রায় একই ধরনের কাপড়ের দাম বেশি বলছে দোকানগুলোতে। তাই ফুটপাত থেকে পোশাক কিনলাম।
রাফিয়া খাতুন বলেন, অল্প দামে পোশাক কেনার জন্য ফুটপাতের দোকানে এসেছি। এখানে তুলনামূলক কম দাম। ছোট ছেলে-মেয়ের জন্য পোশাক কিনলাম। গত বছরের চেয়ে প্রায় সবধরনের পোশাকের দাম বেশি রাখছে ব্যবসায়ীরা। এতে আমাদের কিছু করার নেই। পরিবারের সবার জন্য যেটুকু কিনতে পেরেছি সেটা নিয়ে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে।
বিক্রেতা রাকিব হোসেন বলেন, এখানে যারা কেনাকাটা করতে আসেন, তারা সকলেই স্বল্প আয়ের মানুষ। তাদের সামর্থ অনুযায়ী পোশাক কিনছেন এখানে। আমাদের দোকানে ছেলে-মেয়েদের বিভিন্ন দামের পোশাক পাওয়া যায়।
রহিম উদ্দিন নামের এক বিক্রেতা বলেন, ১৫ রমজানের পর থেকে ফুটপাতে ইদের কেনাকাটা তুলনামূলক বেড়েছে। ইদের আর ৮ দিন বাকি। নিম্নœ আয়ের মানুষেরা সাধারণ ইদের দুই-তিনদিন আগে কেনাকাটা করে। আশা করা হচ্ছে যত দিন যাবে তত বিক্রি বাড়বে।
দাম বিষয়ে কয়েকজন বিক্রেতারা বলেন, প্রতি বছরই পোশাকেই দাম কিছুটা হলেও বাড়ে। সেই হিসাবে গত বছরের চেয়ে এবারও বেড়েছে। ক্রয়মূল্যের সঙ্গে সিমিত লাভ রেখে পোশাক বিক্রি করা হয়। তাই ক্রেতা পর্যায়ে দাম নিয়ে তেমন প্রভাব পড়ে না।
এদিকে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, এদিকে ছুটির দিন হওয়ায় নগরীর বিসিক এলাকার শোরুমগুলোতে ক্রেতা সমাগমও যথেষ্ট। এমনকি সুযোগ বুঝে অন্য বিভাগ থেকেও এসেছেন ক্রেতারা। ক্রেতা উপস্থিতি ভালো হওয়ায় ফুরফুরে মেজাজে বেচাবিক্রি করছেন দোকানিরা।
নগরীর সিল্ক শোরুমগুলোতে দেখা যায়, রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী সিল্কের শাড়ি, পাঞ্জাবি, শেরওয়ানি, থ্রিপিস, শার্ট, হিজাব, ওড়না, স্কার্ফের মতো পোশাক বিক্রি হচ্ছে। নিরিবিলি পরিবেশে ক্রেতারা তাদের পছন্দের পোশাক দেখছেন।
অন্যান্য ঈদের মতো এবারও রাখা হয়েছে শাড়ি, পাঞ্জাবি, শেরওয়ানি, থ্রিপিস, শার্টসহ বিভিন্ন পোশাক। বলাকা, মক্কা, কাতান, ছিপ কাতানসহ বিভিন্ন নামের শাড়ি এক হাজার থেকে শুরু করে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি হচ্ছে। পাঞ্জাবি ১-৭ হাজার, শেরওয়ানি ৮-২৫ হাজার, থ্রিপিস ১-১০ হাজার টাকা পর্যন্ত দাম হাঁকছেন বিক্রেতারা।
রাজশাহী নগরীর বাসিন্দা নাজনীন সুলতানা বলেন, ‘ঈদে সিল্ক শাড়ি ও থ্রিপিস খুব ভালো লাগে। ঈদ এলে এখান থেকেই কেনা হয়। কিন্তু ভালো লাগলেও দাম একটু বেশি।’
বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা রাহাত হোসেন বলেন, ‘আমরা অনেক আগে থেকেই সিল্কের কাপড় পছন্দ করি। এদের কালেকশনগুলো অনন্য। এগুলো পড়ার জন্য খুবই আরামদায়ক।’
কথা হয় রেশম শিল্প মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের মুন্না বলেন, ‘রাজশাহী সিল্কের সুতার দাম বেড়ে গেছে, তবুও আমরা এগুলো কিছুটা কম দাম । উদ্দেশ্য সব কাস্টমার যেন এটি কিনতে পারেন। কারণ অনেক বড় শোরুম দেখে কাস্টমার হয়তো একটু ভয় পান, বড় দোকান দাম বেশি রাখবে। শোরুমে মসলিন শাড়ি ১৭৫০ টাকা থেকে শুরু করে পাঁচ হাজার, কাতান শাড়ি ৩৫০০ থেকে শুরু করে ১০ হাজারের মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। থ্রি-পিস ১৪৫০ থেকে শুরু করে ১০ হাজার পর্যন্ত দামের আছে। এবার মসলিন সিল্কের চাহিদা বেশি।
রাজশাহী সপুরা সিল্ক মিল লিমিটেডের পরিচালক আশরাফ আলী বলেন, এবার যেহেতু ঈদ কিছুটা এগিয়ে এসে শীত ও গরমে মাঝামাঝি পড়েছে, সেই চিন্তা থেকেই পোশাক আরামদায়ক করে মসলিনের সিল্ক দিয়েই কাপড় তৈরি করেছি।
তিনি বলেন, যে কোনো উৎসবে সিল্কের বড় চাহিদা থাকে। এখন পর্যন্ত সেই হিসেবে চাহিদা বেশি। সাড়াও বেশি। বর্তমানে চাহিদা বাড়তির দিকে। নতুন করে সিল্ক নিয়ে অনেক কাজ হচ্ছে। কাস্টমারও আগ্রহী।
ফুটপাত থেকে শিশুকন্যার কাপড় কিনলাম। প্রায় একই ধরনের কাপড়ের দাম বেশি বলছে দোকানগুলোতে। তাই ফুটপাত থেকে পোশাক কিনলাম
রাজশাহী : ফুটপাতে ক্রেতাদের ভিড় -সংবাদ
রোববার, ২৩ মার্চ ২০২৫
ঈদের বাকি ৮ দিন। রাজশাহীতে জমতে শুরু করেছে ঈদের কেনাকাটা। শহরের অভিজাত বিপণীবিতান ছাড়াও ফুটপাতের দোকানগুলোতে বেড়েছে ক্রেতাদের ভিড়। সেখানে সাধ আর সাধ্যের মিল রেখে পছন্দের পোশাক কিনছেন অনেকেই। শহরের বিপনী বিতানগুলোর মত ফুটপাতের দোকানগুলোতে ছোট-বড় সব বয়সের মানুষের পোশাক পাওয়া যাচ্ছে।
নগরীর গণকপাড়া, সাহেববাজার, গোরহাঙ্গা রেলগেট, শিরোইল বাসস্ট্যান্ড ঘুরে দেখা যায়, ২০ রমজানের পর থেকে ফুটপাতে ইদের কেনাকাটা বেড়েছে। ক্রেতারা পছন্দের পোশাক কিনলেও তাদের দাবি- এ বছর গত বছরের তুলনায় পোশাকের দাম বেশি চাচ্ছে ব্যবসায়ীরা।
ঈদের পোশাক ক্রেতা শামসুল ইসলাম বলেন, দোকানগুলোর তুলনায় ফুটপাতে পণ্যের দাম কম। তাই অনেকেই ফুটপাতে পোশাক কিনছেন। আমি স্বল্প আয়ের মানুষ। এজন্য ফুটপাত থেকে শিশু কন্যার কাপড় কিনলাম। প্রায় একই ধরনের কাপড়ের দাম বেশি বলছে দোকানগুলোতে। তাই ফুটপাত থেকে পোশাক কিনলাম।
রাফিয়া খাতুন বলেন, অল্প দামে পোশাক কেনার জন্য ফুটপাতের দোকানে এসেছি। এখানে তুলনামূলক কম দাম। ছোট ছেলে-মেয়ের জন্য পোশাক কিনলাম। গত বছরের চেয়ে প্রায় সবধরনের পোশাকের দাম বেশি রাখছে ব্যবসায়ীরা। এতে আমাদের কিছু করার নেই। পরিবারের সবার জন্য যেটুকু কিনতে পেরেছি সেটা নিয়ে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে।
বিক্রেতা রাকিব হোসেন বলেন, এখানে যারা কেনাকাটা করতে আসেন, তারা সকলেই স্বল্প আয়ের মানুষ। তাদের সামর্থ অনুযায়ী পোশাক কিনছেন এখানে। আমাদের দোকানে ছেলে-মেয়েদের বিভিন্ন দামের পোশাক পাওয়া যায়।
রহিম উদ্দিন নামের এক বিক্রেতা বলেন, ১৫ রমজানের পর থেকে ফুটপাতে ইদের কেনাকাটা তুলনামূলক বেড়েছে। ইদের আর ৮ দিন বাকি। নিম্নœ আয়ের মানুষেরা সাধারণ ইদের দুই-তিনদিন আগে কেনাকাটা করে। আশা করা হচ্ছে যত দিন যাবে তত বিক্রি বাড়বে।
দাম বিষয়ে কয়েকজন বিক্রেতারা বলেন, প্রতি বছরই পোশাকেই দাম কিছুটা হলেও বাড়ে। সেই হিসাবে গত বছরের চেয়ে এবারও বেড়েছে। ক্রয়মূল্যের সঙ্গে সিমিত লাভ রেখে পোশাক বিক্রি করা হয়। তাই ক্রেতা পর্যায়ে দাম নিয়ে তেমন প্রভাব পড়ে না।
এদিকে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, এদিকে ছুটির দিন হওয়ায় নগরীর বিসিক এলাকার শোরুমগুলোতে ক্রেতা সমাগমও যথেষ্ট। এমনকি সুযোগ বুঝে অন্য বিভাগ থেকেও এসেছেন ক্রেতারা। ক্রেতা উপস্থিতি ভালো হওয়ায় ফুরফুরে মেজাজে বেচাবিক্রি করছেন দোকানিরা।
নগরীর সিল্ক শোরুমগুলোতে দেখা যায়, রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী সিল্কের শাড়ি, পাঞ্জাবি, শেরওয়ানি, থ্রিপিস, শার্ট, হিজাব, ওড়না, স্কার্ফের মতো পোশাক বিক্রি হচ্ছে। নিরিবিলি পরিবেশে ক্রেতারা তাদের পছন্দের পোশাক দেখছেন।
অন্যান্য ঈদের মতো এবারও রাখা হয়েছে শাড়ি, পাঞ্জাবি, শেরওয়ানি, থ্রিপিস, শার্টসহ বিভিন্ন পোশাক। বলাকা, মক্কা, কাতান, ছিপ কাতানসহ বিভিন্ন নামের শাড়ি এক হাজার থেকে শুরু করে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি হচ্ছে। পাঞ্জাবি ১-৭ হাজার, শেরওয়ানি ৮-২৫ হাজার, থ্রিপিস ১-১০ হাজার টাকা পর্যন্ত দাম হাঁকছেন বিক্রেতারা।
রাজশাহী নগরীর বাসিন্দা নাজনীন সুলতানা বলেন, ‘ঈদে সিল্ক শাড়ি ও থ্রিপিস খুব ভালো লাগে। ঈদ এলে এখান থেকেই কেনা হয়। কিন্তু ভালো লাগলেও দাম একটু বেশি।’
বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা রাহাত হোসেন বলেন, ‘আমরা অনেক আগে থেকেই সিল্কের কাপড় পছন্দ করি। এদের কালেকশনগুলো অনন্য। এগুলো পড়ার জন্য খুবই আরামদায়ক।’
কথা হয় রেশম শিল্প মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের মুন্না বলেন, ‘রাজশাহী সিল্কের সুতার দাম বেড়ে গেছে, তবুও আমরা এগুলো কিছুটা কম দাম । উদ্দেশ্য সব কাস্টমার যেন এটি কিনতে পারেন। কারণ অনেক বড় শোরুম দেখে কাস্টমার হয়তো একটু ভয় পান, বড় দোকান দাম বেশি রাখবে। শোরুমে মসলিন শাড়ি ১৭৫০ টাকা থেকে শুরু করে পাঁচ হাজার, কাতান শাড়ি ৩৫০০ থেকে শুরু করে ১০ হাজারের মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। থ্রি-পিস ১৪৫০ থেকে শুরু করে ১০ হাজার পর্যন্ত দামের আছে। এবার মসলিন সিল্কের চাহিদা বেশি।
রাজশাহী সপুরা সিল্ক মিল লিমিটেডের পরিচালক আশরাফ আলী বলেন, এবার যেহেতু ঈদ কিছুটা এগিয়ে এসে শীত ও গরমে মাঝামাঝি পড়েছে, সেই চিন্তা থেকেই পোশাক আরামদায়ক করে মসলিনের সিল্ক দিয়েই কাপড় তৈরি করেছি।
তিনি বলেন, যে কোনো উৎসবে সিল্কের বড় চাহিদা থাকে। এখন পর্যন্ত সেই হিসেবে চাহিদা বেশি। সাড়াও বেশি। বর্তমানে চাহিদা বাড়তির দিকে। নতুন করে সিল্ক নিয়ে অনেক কাজ হচ্ছে। কাস্টমারও আগ্রহী।