চাঁপাইনবাবগঞ্জ : রেশমের কাপড় তৈরিতে ব্যস্ত কারিগর -সংবাদ
বৈশাখ আর ঈদকে সামনে নিয়ে খটখট শব্দে কর্মচাঞ্চল্য থাকার কথা চাঁপাইনবাবগঞ্জের লাহারপুর, শিবগঞ্জের হরিনগর ও কানসাটের বিশ্বনাথপুরের রেশম পল্লীতে। কিন্তু সেক্ষেত্রে কম। তবুও বংশ পরম্পরায় এ পেশাকে আঁকড়ে ধরে রাখা হয়েছে। সুযোগ-সুবিধা ও পৃষ্ঠপোষকতা না বাড়ালে এ ব্যবসার মন্দাভাব কাটবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। তাঁত মালিকরা জানান, কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় উৎপাদন খরচের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাজারজাত করতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। বিশেষ করে আড়ংসহ অন্যান্য অভিজাত প্রতিষ্ঠানে সিল্কের কাপড়ের ব্যবসা কমে যাওয়ায় এবার তেমন চাহিদা নেই। এ নিয়ে হতাশায় পড়েছেন তাঁতপল্লীর মালিকরা। হরিনগর তাঁতিপাড়া ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিবছর পহেলা বৈশাখ ও ঈদ উল ফিতরকে ঘিরে রেশম তাঁতপল্লীতে কাজের চাপ বাড়ে। কিন্তু এবার এ পল্লীতে খুটখাট শব্দ আর কারিগর-শ্রমিকদের ব্যস্ততা তেমন নেই। সারাবছর যতনা সরব থাকে, ঈদ এলে তা বেড়ে যেতো কয়েকগুন। আর রেশম শাড়ির বুননে বৈচিত্র আর নতুনত্বের ছোঁয়া দিতে দিনরাত কাজ করতেন তাঁতিরা। বছরের অন্য সময়ের তুলনায় বিশেষ বিশেষ দিনগুলোতে চাহিদা থাকলেও এবার তেমন চাপ নেই তাঁত শ্রমিকদের। বাহারি সব রেশম সিল্কের পোশাক ছড়িয়ে পড়তো আড়ং, অভিজাত বিপনীবিতান, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। কিন্তু এবার তার উল্টো, এসব প্রতিষ্ঠান সেরকম মাল নিচ্ছে না। তাদের ব্যবসা মন্দার কারণে তারা অর্ডার দিচ্ছে না। এখানকার রেশম সিল্কের তৈরি শাড়ি, পাঞ্জাবির কাপড়, বেনারশী, গরদের কাপড়, মটকা, ওড়না, সালোয়ার কামিজ মূলতঃ মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে উচ্চবিত্তদের পোশাকের চাহিদা মেটায়। কিন্তু এখন তাদের সেই দিনকাল ভাল যাচ্ছে না। ফিরোজ কবির ও পুটু আলী নামে দুই তাঁত শ্রমিক জানান, তারা দীর্ঘ ২০-২৫ বছর এ পেশার সাথে জড়িত। এবার কাজ খুব একটা নেই। এরপরও যতুটুকু কাজ আছে তা চাহিদার তুলনায় কম। বাকি দিনগুলো তারা অন্য পেশায় চলে যান। আরেক তাঁত শ্রমিক আজিজুল হক জানান, ১ গজ কাপড় বুনলে ৯০ টাকা এবং সব মিলিয়ে ৪-৫ গজ কাপড় বুনলে সর্বমোট ৪০০-৪৫০ টাকা পাওয়া যায়। আগে সারাবছরই কমবেশী কাজ হতো। এখন এ শিল্পের অবস্থা খুব একটা ভাল না। তাঁত মালিক তরুণ কুমার দাসের ছেলে পলাশ দাস বলেন, এ ব্যবসার পরিস্থিতি খুব একটা ভাল যাচ্ছে না। সূতাসহ বিভিন্ন উপকরণের মূল্য বাড়লেও কাপড়ের দাম সেভাবে বাড়েনি। এজন্য আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারা যাচ্ছে না। বংশ পরম্পরায় এ পেশাকে আঁকড়ে ধরে রাখা হয়েছে। দোকানিরা অর্ডার দেয়া বন্ধ করে দিয়েছে, কিভাবে ব্যবসা চালাবে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন এই শিল্পের সাথে জড়িতরা। এ শিল্পের প্রতি সরকারের নজর আরো বাড়ানো প্রয়োজন। এ খাতে সুদমুক্ত ঋণের ব্যবস্থা থাকলে তাঁত শিল্পকে আরও গতিশীল করা সম্ভব।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ : রেশমের কাপড় তৈরিতে ব্যস্ত কারিগর -সংবাদ
রোববার, ২৩ মার্চ ২০২৫
বৈশাখ আর ঈদকে সামনে নিয়ে খটখট শব্দে কর্মচাঞ্চল্য থাকার কথা চাঁপাইনবাবগঞ্জের লাহারপুর, শিবগঞ্জের হরিনগর ও কানসাটের বিশ্বনাথপুরের রেশম পল্লীতে। কিন্তু সেক্ষেত্রে কম। তবুও বংশ পরম্পরায় এ পেশাকে আঁকড়ে ধরে রাখা হয়েছে। সুযোগ-সুবিধা ও পৃষ্ঠপোষকতা না বাড়ালে এ ব্যবসার মন্দাভাব কাটবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। তাঁত মালিকরা জানান, কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় উৎপাদন খরচের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাজারজাত করতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। বিশেষ করে আড়ংসহ অন্যান্য অভিজাত প্রতিষ্ঠানে সিল্কের কাপড়ের ব্যবসা কমে যাওয়ায় এবার তেমন চাহিদা নেই। এ নিয়ে হতাশায় পড়েছেন তাঁতপল্লীর মালিকরা। হরিনগর তাঁতিপাড়া ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিবছর পহেলা বৈশাখ ও ঈদ উল ফিতরকে ঘিরে রেশম তাঁতপল্লীতে কাজের চাপ বাড়ে। কিন্তু এবার এ পল্লীতে খুটখাট শব্দ আর কারিগর-শ্রমিকদের ব্যস্ততা তেমন নেই। সারাবছর যতনা সরব থাকে, ঈদ এলে তা বেড়ে যেতো কয়েকগুন। আর রেশম শাড়ির বুননে বৈচিত্র আর নতুনত্বের ছোঁয়া দিতে দিনরাত কাজ করতেন তাঁতিরা। বছরের অন্য সময়ের তুলনায় বিশেষ বিশেষ দিনগুলোতে চাহিদা থাকলেও এবার তেমন চাপ নেই তাঁত শ্রমিকদের। বাহারি সব রেশম সিল্কের পোশাক ছড়িয়ে পড়তো আড়ং, অভিজাত বিপনীবিতান, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। কিন্তু এবার তার উল্টো, এসব প্রতিষ্ঠান সেরকম মাল নিচ্ছে না। তাদের ব্যবসা মন্দার কারণে তারা অর্ডার দিচ্ছে না। এখানকার রেশম সিল্কের তৈরি শাড়ি, পাঞ্জাবির কাপড়, বেনারশী, গরদের কাপড়, মটকা, ওড়না, সালোয়ার কামিজ মূলতঃ মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে উচ্চবিত্তদের পোশাকের চাহিদা মেটায়। কিন্তু এখন তাদের সেই দিনকাল ভাল যাচ্ছে না। ফিরোজ কবির ও পুটু আলী নামে দুই তাঁত শ্রমিক জানান, তারা দীর্ঘ ২০-২৫ বছর এ পেশার সাথে জড়িত। এবার কাজ খুব একটা নেই। এরপরও যতুটুকু কাজ আছে তা চাহিদার তুলনায় কম। বাকি দিনগুলো তারা অন্য পেশায় চলে যান। আরেক তাঁত শ্রমিক আজিজুল হক জানান, ১ গজ কাপড় বুনলে ৯০ টাকা এবং সব মিলিয়ে ৪-৫ গজ কাপড় বুনলে সর্বমোট ৪০০-৪৫০ টাকা পাওয়া যায়। আগে সারাবছরই কমবেশী কাজ হতো। এখন এ শিল্পের অবস্থা খুব একটা ভাল না। তাঁত মালিক তরুণ কুমার দাসের ছেলে পলাশ দাস বলেন, এ ব্যবসার পরিস্থিতি খুব একটা ভাল যাচ্ছে না। সূতাসহ বিভিন্ন উপকরণের মূল্য বাড়লেও কাপড়ের দাম সেভাবে বাড়েনি। এজন্য আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারা যাচ্ছে না। বংশ পরম্পরায় এ পেশাকে আঁকড়ে ধরে রাখা হয়েছে। দোকানিরা অর্ডার দেয়া বন্ধ করে দিয়েছে, কিভাবে ব্যবসা চালাবে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন এই শিল্পের সাথে জড়িতরা। এ শিল্পের প্রতি সরকারের নজর আরো বাড়ানো প্রয়োজন। এ খাতে সুদমুক্ত ঋণের ব্যবস্থা থাকলে তাঁত শিল্পকে আরও গতিশীল করা সম্ভব।