কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার উপকূলীয় জনপদের বিলুপ্ত সুন্দরবনের সুবিশাল প্যারাবন এক সময় ছিল মহিষ ও ভেড়া ছাগলের চারণভূমি। কিন্তু দীর্ঘ দুই যুগের বেশি সময় ধরে রাজনৈতিক সরকারের আমলে প্রভাবশালী দখলবাজ চক্র কর্তৃক উপকূলের সৃজিত প্যারাবন কেটে চিংড়িঘের তৈরি করার কারণে বর্তমানে সুন্দরবনের অস্তিত্ব অনেকটা বিপন্ন হয়ে গেছে।
এ অবস্থায় উপকূলীয় অঞ্চলে এখন আগের মতো প্যারাবন নেই বললেই চলে। এখন সেখানে শুধু চিংড়ি ঘের আর লবণ মাঠের বিস্তৃত। এমন পরিস্থিতিতে এখনও চিংড়ি ঘের তৈরির নামে প্যারাবন নিধন অব্যাহত রেখেছে দখলদাররা। এতে করে ওই এলাকায় চারণভূমির সংকট তৈরি হচ্ছে। পাশাপাশি ডাকাত সন্ত্রাসীদের অব্যাহত লুটতরাজের কারণে উপকূলে বর্তমানে গবাদিপশু তথা মহিষ ও ভেড়া পালন আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কক্সবাজার উত্তর ও চট্টগ্রাম উপকূলীয় বন বিভাগের মালিকানাধীন ৪৫ হাজার একর প্যারাবন নিয়ে চকরিয়া উপজেলার উপকূলীয় অঞ্চলে সুন্দরবন গড়ে উঠে। একসময় সুন্দরবন রেঞ্জের বিপরীতে তিনটি বনবিট ছিল। কিন্তু বর্তমানে কাগজে-কলমে ছাড়া সরকারি বন বিটের কোনো অস্তিত্ব নেই। পরিবেশবাদী সংগঠন বেলার একটি মামলায় উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে প্যারাবন উজাড় ও মৎস্য ঘের দখল অব্যাহত রেখেছে কতিপয় দখলবাজ চক্র।
কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা মেহরাজ উদ্দীন বলেন, চকরিয়া সুন্দরবন ছিল দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তর সুন্দরবন। এখানে ছিল শত শত প্রজাতির বন্যপ্রাণী। উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দারা অবাধে মহিষ ও ভেড়া পালন করতেন। কিন্তু ১৯৭৭ সালের দিকে ৩৯টি চিংড়ি ঘের লিজের মাধ্যমে শুরু হয় প্যারাবন নিধন কার্যক্রম। বন বিভাগ এসব ভূমির সিংহভাগ মৎস্য ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে ন্যস্ত করে।
বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চকরিয়া উপজেলার বহালতলী, চরণদ্বীপ, রিংভং, সগীরশাহ কাটা, পালাকাটা, রামপুর মৌজার বেশিরভাগ প্যারাবন নিধন করে চিংড়ি ঘের তৈরি হয়েছে। এতে সরকার রাজস্ব আয় ও চিংড়ি উৎপাদনের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করলেও ধ্বংস হয়ে যায় চকরিয়া সুন্দরবন। হুমকির মুখে পড়ে জীববৈচিত্র্য। একইভাবে ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের ক্ষতি থেকে উপকূলীয় জনপদকে রক্ষার একমাত্র প্রাকৃতিক বেষ্টনী নষ্ট হয়ে যায়।
উপকূলের স্থানীয় বাসিন্দা ও চকরিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মকছুদুল হক ছুট্ট বলেন, চকরিয়া উপজেলার উপকূলীয় অঞ্চলে চারণভূমির সংকট দেখা দিয়েছে। আর চোর-ডাকাতরা রাতের আঁধারে নৌকা ভর্তি করে ঘের মালিকদের জিম্মি করে মহিষ-ভেড়া লুট করে নিয়ে যায়। এতে চারণভূমি সংকটের পাশাপাশি সেখানে গবাদিপশু পালন হুমকির মুখে পড়েছে।
এদিকে চকরিয়া উপকুলে প্যারাবন সৃষ্টির আশার কথা জানিয়েছেন চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার মো. আনোয়ারুল আমিন। তিনি বলেন, আসামি কিছুদিনের মধ্যে আরণ্যেক ফাউন্ডেশন নামে একটি প্রতিষ্ঠান বিলুপ্ত চকরিয়া সুন্দরবন এলাকায় ৩ লাখ পিস বাইন কেওড়া গাছ লাগানো শুরু করবে। তাতে নতুন করে প্যারাবন তৈরি হবে। সৃষ্টি হবে গবাদি পশুর চারণভূমি।
সোমবার, ২৪ মার্চ ২০২৫
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার উপকূলীয় জনপদের বিলুপ্ত সুন্দরবনের সুবিশাল প্যারাবন এক সময় ছিল মহিষ ও ভেড়া ছাগলের চারণভূমি। কিন্তু দীর্ঘ দুই যুগের বেশি সময় ধরে রাজনৈতিক সরকারের আমলে প্রভাবশালী দখলবাজ চক্র কর্তৃক উপকূলের সৃজিত প্যারাবন কেটে চিংড়িঘের তৈরি করার কারণে বর্তমানে সুন্দরবনের অস্তিত্ব অনেকটা বিপন্ন হয়ে গেছে।
এ অবস্থায় উপকূলীয় অঞ্চলে এখন আগের মতো প্যারাবন নেই বললেই চলে। এখন সেখানে শুধু চিংড়ি ঘের আর লবণ মাঠের বিস্তৃত। এমন পরিস্থিতিতে এখনও চিংড়ি ঘের তৈরির নামে প্যারাবন নিধন অব্যাহত রেখেছে দখলদাররা। এতে করে ওই এলাকায় চারণভূমির সংকট তৈরি হচ্ছে। পাশাপাশি ডাকাত সন্ত্রাসীদের অব্যাহত লুটতরাজের কারণে উপকূলে বর্তমানে গবাদিপশু তথা মহিষ ও ভেড়া পালন আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কক্সবাজার উত্তর ও চট্টগ্রাম উপকূলীয় বন বিভাগের মালিকানাধীন ৪৫ হাজার একর প্যারাবন নিয়ে চকরিয়া উপজেলার উপকূলীয় অঞ্চলে সুন্দরবন গড়ে উঠে। একসময় সুন্দরবন রেঞ্জের বিপরীতে তিনটি বনবিট ছিল। কিন্তু বর্তমানে কাগজে-কলমে ছাড়া সরকারি বন বিটের কোনো অস্তিত্ব নেই। পরিবেশবাদী সংগঠন বেলার একটি মামলায় উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে প্যারাবন উজাড় ও মৎস্য ঘের দখল অব্যাহত রেখেছে কতিপয় দখলবাজ চক্র।
কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা মেহরাজ উদ্দীন বলেন, চকরিয়া সুন্দরবন ছিল দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তর সুন্দরবন। এখানে ছিল শত শত প্রজাতির বন্যপ্রাণী। উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দারা অবাধে মহিষ ও ভেড়া পালন করতেন। কিন্তু ১৯৭৭ সালের দিকে ৩৯টি চিংড়ি ঘের লিজের মাধ্যমে শুরু হয় প্যারাবন নিধন কার্যক্রম। বন বিভাগ এসব ভূমির সিংহভাগ মৎস্য ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে ন্যস্ত করে।
বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চকরিয়া উপজেলার বহালতলী, চরণদ্বীপ, রিংভং, সগীরশাহ কাটা, পালাকাটা, রামপুর মৌজার বেশিরভাগ প্যারাবন নিধন করে চিংড়ি ঘের তৈরি হয়েছে। এতে সরকার রাজস্ব আয় ও চিংড়ি উৎপাদনের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করলেও ধ্বংস হয়ে যায় চকরিয়া সুন্দরবন। হুমকির মুখে পড়ে জীববৈচিত্র্য। একইভাবে ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের ক্ষতি থেকে উপকূলীয় জনপদকে রক্ষার একমাত্র প্রাকৃতিক বেষ্টনী নষ্ট হয়ে যায়।
উপকূলের স্থানীয় বাসিন্দা ও চকরিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মকছুদুল হক ছুট্ট বলেন, চকরিয়া উপজেলার উপকূলীয় অঞ্চলে চারণভূমির সংকট দেখা দিয়েছে। আর চোর-ডাকাতরা রাতের আঁধারে নৌকা ভর্তি করে ঘের মালিকদের জিম্মি করে মহিষ-ভেড়া লুট করে নিয়ে যায়। এতে চারণভূমি সংকটের পাশাপাশি সেখানে গবাদিপশু পালন হুমকির মুখে পড়েছে।
এদিকে চকরিয়া উপকুলে প্যারাবন সৃষ্টির আশার কথা জানিয়েছেন চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার মো. আনোয়ারুল আমিন। তিনি বলেন, আসামি কিছুদিনের মধ্যে আরণ্যেক ফাউন্ডেশন নামে একটি প্রতিষ্ঠান বিলুপ্ত চকরিয়া সুন্দরবন এলাকায় ৩ লাখ পিস বাইন কেওড়া গাছ লাগানো শুরু করবে। তাতে নতুন করে প্যারাবন তৈরি হবে। সৃষ্টি হবে গবাদি পশুর চারণভূমি।