এলজিইডি বরগুনা নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান খাঁন ও উপজেলা প্রকৌশলী ইদ্রিস আলীর যোগসাজশে ঠিকাদার অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে দায়সারা কাজ শেষ করেছেন। সড়ক নির্মাণে অনিয়ম করায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। পুনরায় এ সড়ক নির্মাণের দাবি তাদের
আমতলী (বরগুনা) : অটোরিকশার চাকার সঙ্গে ওঠে যাওয়া সড়কের ঢালাই -সংবাদ
বিটুমিন ছাড়াই আমতলী উপজেলার চাওড়া ইউনিয়নের লোদা সেতু থেকে কাউনিয়া ইসমাইল হাওলাদার বাড়ি পর্যন্ত তিন কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। এতে অটোগাড়ির চাকায় সঙ্গে ওঠে যাচ্ছে সড়কের ঢালাই।
স্থানীয়দের অভিযোগ ঠিকাদার শাহীন তালুকদারের সড়ক নির্মাণের অনিয়মের বিষয়টি প্রকৌশলীকে জানালোও তিনি কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। অভিযোগ রয়েছে এলজিইডি বরগুনা নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান খাঁন ও উপজেলা প্রকৌশলী ইদ্রিস আলীর যোগসাজসে ঠিকাদার অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে দায়সারা কাজ শেষ করেছেন। সড়ক নির্মাণে অনিয়ম করায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। পুনরায় এ সড়ক নির্মাণের দাবি তাদের।
জানাগেছে, আমতলী উপজেলার উপজেলার চাওড়া ইউনিয়নের লোদা সেতু থেকে তিন হাজার একশ’ ৬০ মিটার সড়ক। এ সড়ক নির্মাণের দরপত্র আহ্বান করে বরগুনা নির্বাহী প্রকৌশল বিভাগ। ওই কাজে এক কোটি সাতষট্টি লাখ চৌদ্দ হাজার ৬৮৯ টাকা বরাদ্দ করা হয়। গত ২০২৩ সালের ২৫ এপ্রিল ওই কাজের টেন্ডার হয়। মেসার্স রহমান ট্রেডার্স নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওই কাজ পায়। গত ২০২৩ সালের পহেলা মে কাজ শুরু করার কথা। কিন্তু ওই বছর আগামী জুন মাসে সড়কের কাজ শুরু করেন ঠিকাদার।
গত বছর গত ৩০ নভেম্বর ওই কাজের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। কাজ শুরু করে ঠিকাদার এলজিইডি বরগুনা নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান খাঁন ও উপজেলা প্রকৌশলী ইদ্রিস আলীকে ম্যানেজ করে দুই কিস্তির টাকা উত্তোলন করে নিয়ে যান। কিন্তু কত টাকা নিয়েছেন তা জানে না উপজেলা প্রকৌশলী মো. ইদ্রিস আলী। টাকা তুলে নেয়ার পর থেকে গত দেড় বছরে ঠিকাদারের খবর নেই।
এ বছর মার্চ মাসের প্রথম দিকে ওই সড়কের কাজ পুনরায় শুরু করেন ঠিকাদার। শুরুতেই তিনি নিম্নমানের ইটের খোয়া দিয়ে সড়কের সাববেইজ করেছেন। এখানেও ঠিকাদার অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছেন।
দরপত্রে পাঁচ ইঞ্চি সাববেইজ করার কথা উল্লেখ থাকলেও ঠিকাদার শাহীন তালুকদার করেছেন মাত্র তিন ইঞ্চি। অপর দিকে ম্যাগাডামের ওপরে বিটুমিন না দিয়েই পুরো তিন কিলোমিটার সড়ক ঢালাই দিয়েছেন। দরপত্রে এক ইঞ্চি ঢালাই দেয়ার কথা থাকলেও তিনি দিয়েছেন মাত্র আধা ইঞ্চি।
ওই সড়কের ঢালাইয়ের কাজ শেষ হওয়ার ৩ দিন পর সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, তিন কিলোমিটার সড়কের বেশ কয়েকটি স্থানে ঢালাই ওঠে গেছে। স্থানীয়রা বলেন, অটোগাড়ির চাকায় ঢালাই ওঠে যাচ্ছে। হাত দিয়ে টান দিলেই সড়কের ঢালায় ওঠে যায়। ঢালাই ওঠানোর পরে দেখা যাচ্ছে, ম্যাগাডামের ওপরে কোনো বিটুমিন নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলজিইডি অফিসের একজন বলেন, তিন কিলোমিটার সড়কে অন্তত ১৫ লাখ টাকার বিটুমিন প্রয়োজন হতো। বিটুমিন না দিয়ে ওই টাকা ঠিকাদারসহ অনেকে আত্মসাৎ করেছেন।
ঠিকাদার শাহীন তালুকদার বলেন, সড়কের কাজ ঠিকমতোই করেছি। তবে কাজ করলে ভুলত্রুটি হতে পারে। এতে আমার ফাঁসি হবে না। তিনি আরও বলেন, ঢালাই ওঠে গেলে আবার বিটুমিন দিয়ে ঢালাই দেয়া হবে।
আমতলী উপজেলা প্রকৌশলী মো. ইদ্রিস আলী বলেন, সড়ক নির্মাণে ঠিকাদার বিটুমিন ছাড়া ঢালাই দেয়া এবং ঢালাই ওঠে যাওয়ার কথা শুনেছি। ওই সড়ক দেখতে সহকারী প্রকৌশলীকে পাঠিয়েছি। তবে তিনি ঠিকাদারের সঙ্গে সড়ক নির্মাণে অনিয়মে যোগসাজসের কথা অস্বীকার করেছেন।
বরগুনা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মেহেদী হাসান ঠিকাদারের পক্ষে সাফাই গেয়ে বলেন, ঠিকাদারের সঙ্গে স্থানীয়দের দ্বন্ধ রয়েছে তাই তারা এমন অপবাদ দিচ্ছেন।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, সড়কের কাজের অনিয়মের বিষয়টি জেনেছি। খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এলজিইডির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী বরিশাল অঞ্চল শেখ মোহা. নুরুল ইসলাম বলেন, সড়ক নির্মাণে অনিয়ম এবং ঠিকাদারের সঙ্গে প্রকৌশলীদের কোনো ধরনের সখ্যতা পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এলজিইডি বরগুনা নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান খাঁন ও উপজেলা প্রকৌশলী ইদ্রিস আলীর যোগসাজশে ঠিকাদার অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে দায়সারা কাজ শেষ করেছেন। সড়ক নির্মাণে অনিয়ম করায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। পুনরায় এ সড়ক নির্মাণের দাবি তাদের
আমতলী (বরগুনা) : অটোরিকশার চাকার সঙ্গে ওঠে যাওয়া সড়কের ঢালাই -সংবাদ
শুক্রবার, ২৮ মার্চ ২০২৫
বিটুমিন ছাড়াই আমতলী উপজেলার চাওড়া ইউনিয়নের লোদা সেতু থেকে কাউনিয়া ইসমাইল হাওলাদার বাড়ি পর্যন্ত তিন কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। এতে অটোগাড়ির চাকায় সঙ্গে ওঠে যাচ্ছে সড়কের ঢালাই।
স্থানীয়দের অভিযোগ ঠিকাদার শাহীন তালুকদারের সড়ক নির্মাণের অনিয়মের বিষয়টি প্রকৌশলীকে জানালোও তিনি কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। অভিযোগ রয়েছে এলজিইডি বরগুনা নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান খাঁন ও উপজেলা প্রকৌশলী ইদ্রিস আলীর যোগসাজসে ঠিকাদার অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে দায়সারা কাজ শেষ করেছেন। সড়ক নির্মাণে অনিয়ম করায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। পুনরায় এ সড়ক নির্মাণের দাবি তাদের।
জানাগেছে, আমতলী উপজেলার উপজেলার চাওড়া ইউনিয়নের লোদা সেতু থেকে তিন হাজার একশ’ ৬০ মিটার সড়ক। এ সড়ক নির্মাণের দরপত্র আহ্বান করে বরগুনা নির্বাহী প্রকৌশল বিভাগ। ওই কাজে এক কোটি সাতষট্টি লাখ চৌদ্দ হাজার ৬৮৯ টাকা বরাদ্দ করা হয়। গত ২০২৩ সালের ২৫ এপ্রিল ওই কাজের টেন্ডার হয়। মেসার্স রহমান ট্রেডার্স নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওই কাজ পায়। গত ২০২৩ সালের পহেলা মে কাজ শুরু করার কথা। কিন্তু ওই বছর আগামী জুন মাসে সড়কের কাজ শুরু করেন ঠিকাদার।
গত বছর গত ৩০ নভেম্বর ওই কাজের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। কাজ শুরু করে ঠিকাদার এলজিইডি বরগুনা নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান খাঁন ও উপজেলা প্রকৌশলী ইদ্রিস আলীকে ম্যানেজ করে দুই কিস্তির টাকা উত্তোলন করে নিয়ে যান। কিন্তু কত টাকা নিয়েছেন তা জানে না উপজেলা প্রকৌশলী মো. ইদ্রিস আলী। টাকা তুলে নেয়ার পর থেকে গত দেড় বছরে ঠিকাদারের খবর নেই।
এ বছর মার্চ মাসের প্রথম দিকে ওই সড়কের কাজ পুনরায় শুরু করেন ঠিকাদার। শুরুতেই তিনি নিম্নমানের ইটের খোয়া দিয়ে সড়কের সাববেইজ করেছেন। এখানেও ঠিকাদার অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছেন।
দরপত্রে পাঁচ ইঞ্চি সাববেইজ করার কথা উল্লেখ থাকলেও ঠিকাদার শাহীন তালুকদার করেছেন মাত্র তিন ইঞ্চি। অপর দিকে ম্যাগাডামের ওপরে বিটুমিন না দিয়েই পুরো তিন কিলোমিটার সড়ক ঢালাই দিয়েছেন। দরপত্রে এক ইঞ্চি ঢালাই দেয়ার কথা থাকলেও তিনি দিয়েছেন মাত্র আধা ইঞ্চি।
ওই সড়কের ঢালাইয়ের কাজ শেষ হওয়ার ৩ দিন পর সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, তিন কিলোমিটার সড়কের বেশ কয়েকটি স্থানে ঢালাই ওঠে গেছে। স্থানীয়রা বলেন, অটোগাড়ির চাকায় ঢালাই ওঠে যাচ্ছে। হাত দিয়ে টান দিলেই সড়কের ঢালায় ওঠে যায়। ঢালাই ওঠানোর পরে দেখা যাচ্ছে, ম্যাগাডামের ওপরে কোনো বিটুমিন নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলজিইডি অফিসের একজন বলেন, তিন কিলোমিটার সড়কে অন্তত ১৫ লাখ টাকার বিটুমিন প্রয়োজন হতো। বিটুমিন না দিয়ে ওই টাকা ঠিকাদারসহ অনেকে আত্মসাৎ করেছেন।
ঠিকাদার শাহীন তালুকদার বলেন, সড়কের কাজ ঠিকমতোই করেছি। তবে কাজ করলে ভুলত্রুটি হতে পারে। এতে আমার ফাঁসি হবে না। তিনি আরও বলেন, ঢালাই ওঠে গেলে আবার বিটুমিন দিয়ে ঢালাই দেয়া হবে।
আমতলী উপজেলা প্রকৌশলী মো. ইদ্রিস আলী বলেন, সড়ক নির্মাণে ঠিকাদার বিটুমিন ছাড়া ঢালাই দেয়া এবং ঢালাই ওঠে যাওয়ার কথা শুনেছি। ওই সড়ক দেখতে সহকারী প্রকৌশলীকে পাঠিয়েছি। তবে তিনি ঠিকাদারের সঙ্গে সড়ক নির্মাণে অনিয়মে যোগসাজসের কথা অস্বীকার করেছেন।
বরগুনা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মেহেদী হাসান ঠিকাদারের পক্ষে সাফাই গেয়ে বলেন, ঠিকাদারের সঙ্গে স্থানীয়দের দ্বন্ধ রয়েছে তাই তারা এমন অপবাদ দিচ্ছেন।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, সড়কের কাজের অনিয়মের বিষয়টি জেনেছি। খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এলজিইডির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী বরিশাল অঞ্চল শেখ মোহা. নুরুল ইসলাম বলেন, সড়ক নির্মাণে অনিয়ম এবং ঠিকাদারের সঙ্গে প্রকৌশলীদের কোনো ধরনের সখ্যতা পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।