গাইবান্ধাসহ উত্তরাঞ্চলের পাঁচ জেলার অনেক নদীনালা খাল বিলের অযত্ন, অবহেলা এবং দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে জলাধারগুলো পানি ধারণ ও বহন ক্ষমতা হ্রাস পাওয়ার কারণে সামান্য বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টিসহ বন্যার পানি দ্রুত নিষ্কাশনের সুযোগ না থাকায় এলাকার ফসলহানি সহ জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়ে আসছে। পাশাপাশি এ সমস্ত নদী-নালা, খাল, বিল ও জলাশয়গুলো পরিকল্পিত ভাবে খনন ও প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে এলাকায় ভু-উপরিস্থ পানির আধার সৃষ্টি এবং সেচসহ গৃহস্থালি কাজে ব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। সেলক্ষ্যে বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের পাঁচ জেলায় খাল, বিল ও জলাশয়গুলো বিএমডিএ’র “ভূ-উপরস্থি পানির সর্বোত্তম ব্যবহার ও বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের মাধ্যমে বৃহত্তর রংপুর জেলায় সেচ সম্প্রসারণ (ইআইআরপি)” কর্মসূচির মাধ্যমে পুনঃখননের উদ্যোগ গ্রহণ করে। প্রকল্পটি ২০২০ সালে একনেক এ অনুমোদন প্রদান করেন।
এই প্রকল্পের আওতায় রংপুর, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও গাইবান্ধা ৫ জেলার ৩৫টি উপজেলায় ২৩০ (কি.মি.) খাস খাল-খাড়ী পুনঃখনন ও ১০৮ বিল ও পুকুর পুনঃ খনন কাজ চলমান অব্যাহত আছে। রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার শেরুডাঙ্গা বিল হতে উৎপন্ন হয়ে পীরগঞ্জ উপজেলার পাঁচগাছি ইউনিয়নের শাহাপুর গ্রামে নলেয়া নদী ও শান নদী মিলিত হয়েছে। এরপর নলেয়া নাম ধারন করে পীরগঞ্জের মাদারগঞ্জ, গাইবান্ধা জেলার সাদুল্লাপুরের মিরপুর, ঢোলডাঙ্গা হয়ে গোবিন্দগঞ্জের কাছে কাটাখালি নদীতে মিলিত হয়েছে। এ নদীটি মিঠাপুকুর উপজেলার ১৫নং বড় হযরতপুর, পীরগঞ্জ উপজেলার ১০নং শানেরহাট, ১১নং পাঁচগাছি, ১২নং মিঠিপুর ইউনিয়ন, সাদুল্লাপুর উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। নলেয়া নদী পুনঃখনন কাজের উদ্দেশ্যে সর্বমোট-৪৩.০০ কিঃমিঃ জরীপ কাজ সম্পন্ন করা হয়। সাদুল্লাপুর উপজেলা-১১.৫০ কিঃমিঃ নলেয়া নদী পূনঃখনন করা হয়। যার প্রাক্কলিত ব্যয় ছিল প্রায় ৩৬০.০০ লক্ষটাকা। যার ফলে - বিলুপ্তপ্রায় নদী পুনঃখনন ও পুনঃখননকৃত এ জলাশয়ে সাবমার্জডওয়ার (ক্রস ড্যাম) নির্মাণের কারণে ভু-উপরিস্থ পানির ধারণ ও সংরক্ষণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ধারণকৃত/সঞ্চিত ভূ-উপরিস্থ পানি দ্বারা খালের উভয় পাড়ের ৮১০ হেক্টর জমিতে স্বল্প খরচে সেচ সুবিধা প্রদানের পাশা-পাশি হাঁস চাষ, মাছ চাষ, পাট পচানোসহ নানাপ্রকার গৃহাস্থালি কাজে ব্যবহার হচ্ছে। ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর পুনর্ভরণ এবং সেচ কাজে ভূ-উপরিস্থ পানির ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। পানির স্তর অবনমন প্রতিরোধ হচ্ছে। নদী-নালা, খাল, বিলে আবার বছর ব্যাপি পানির প্রবাহ থাকায় বাতাসে আর্দ্রতা বিরাজ করায় পরিবেশের রুক্ষতা হ্রাসে সহায়ক ভুমিকা পালন করছে। ভরাট হয়ে যাওয়া বিলুপ্তপ্রায় নদী-নালা, খাল, বিল পুনঃখনন করায় পানি নিষ্কাশনের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এতে প্রায় ২৫০০ হেক্টর আংশিক জলাবদ্ধ জমি জলাবদ্ধতামুক্ত হয়ে কৃষি উপযোগি হয়েছে। ফলে বছরে প্রায় ৬৪৮০মেঃ টন ফসল উৎপাদনের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে যার বাজার মূল্য প্রায় ১৬২.০০ লক্ষটাকা। পুনঃখননকৃত জলাশয় গুলোর পাড়ে প্রকল্প থেকে ৪৫০০০ বিভিন্ন জাতের ফলদ, বনজ, ঔষধি চারা রোপন করা হয়েছে। এ ছাড়াও কৃষকেরা নিজ উদ্যোগে খালের পাড়ে অর্থকরি ফসল হিসেবে কলা, লাউ, শিম, বরবটি ইত্যাদি চাষ করছেন যা অতিরিক্ত বনজ সম্পদ সৃষ্টি, পুষ্টির চাহিদা পুরণ এবং পরিবেশ উন্নয়ন, বাস্তু-তন্ত্রের পুনরুজ্জীবন ও মরুকরণ প্রক্রিয়া প্রতিরোধে অবদান রাখছেন। জলাশয়গুলোতে অতিথি পাখির আগমন, তাদের কল-কাকলি ও নিরাপদে বংশ বৃদ্ধি, পাড়ে সবুজায়ন সবকিছু মিলে যে নয়ণাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দয্যর সৃষ্টি হয়েছে, তা মানুষের আত্মিক ও মানসিক প্রশান্তি প্রদানে ভূমিকা রাখছে। খালের উপরে ২টি ফুট-ওভারব্রিজ ও ২টি ক্রসড্যাম নির্মাণ করায় এলাকাবাসির যাতায়াতের সুযোগ সৃষ্টির পাশা-পাশি উৎপন্ন ফসল পরিবহন ও বাজারজাত করণের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। যার প্রাক্কলিত মূল্য ছিল প্রায় ৩২৪.০০ লক্ষটাকা। এদিকে সাদ্ল্লুাপুর উপজেলার শেষ সীমনা ফরিদুপুর ইউনিয়নের মহেশপুর কুঞ্জ মহিপুর মাঝিপাড়া থেকে শুরু হওয়া এই খনন কাজ সরেজমিনে দেখা গেছ এলাকার চিত্র সম্পূর্ণ পাল্টে গেছে। এক সময় যে মাঝি পাড়া থেকে পীরগঞ্জ যাওয়া খুবই কঠিন হতো সেখানে এই খনন কাজের মধ্যে ব্রীজ হওয়ায় এলাকাবাসী খুবই উৎসরমুখর। বিশেষ করে ফুটওভার ব্রীজ নির্মান করায় এলাকায় বৈপ্লবিক সাধিত হয়েছে। ভ্যানচালক ইসরাফিল(৫০) জানান, আগে মাদারগঞ্জ যেতে ৯ কি.মি ঘুরে ঘুরে যাওয়া লাগত। এখন আর ঘোরা লাগেনা। মাঝিপাড়ার শ্যামচরন, (৫৫)আরতি রানী(৬৬)সহ অনেকের মুখে হাসি ।এই পাড়ার প্রায় ৪/৫শত সনাতন ধর্মের মানুষের বসবাস বলা যায় তারা বিভিন্ন ভাবে সাবলম্বি হয়েছেন। বিশেষ করে ধনতলা ব্রীজের সাথে নলেয়ার খনন কাজ একটি মাইলফলকে পরিনত হয়েছে। দীর্ঘ পুরা খনন কাজ নলোয়া নদীর দুই ধার ঘুরে ঘুরে দেখা গেছে এ দৃশ্য। শুকনো নদী খননের ফলে গোটা এলাকায় চানচাল্যোর সৃষ্টি হয়েছে। শুধু তাই নয় এলাকায় কৃষি কাজ পানি সেচসহ বিভিন্ন ধরনের উন্নয়নের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উজ্জ্বল.. সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। সাদুল্যাপুরের ফরিদপুর ইউনিয়নের অংশে নলেয়া নদী খননের কাজ ইতিপুবে সরেজমিনে পরিদর্শন করছেনে প্রকল্প পরিচালক ( ইআইআরপি) ও রংপুর সার্কেলের তত্তাবধায়ক প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান খান, এ সময় তার সাথে ছিলেন গাইবান্ধা বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম, সাদুল্লাপুর উপজেলা বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষের সহকারী প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ এই এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করে তারা কৃষকদের সাথে এবং স্থানীয় অধিবাসীদের সাথে কথাবার্তা বলে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। উল্লেখ্য কৃষি মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে রংপুর বিভাগের বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কতৃর্ক ভূ উপরিস্থ পানির সর্বোত্তম ব্যবহার ও বৃষ্টির পানি সংরক্ষনের মাধ্যমে বৃহত্তর রংপুর জেলায় সেচ সম্প্রাসারণ প্রকল্পের আওতায় ২০২৪-২০২৫ অর্থবছর গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের মাঝিপাড়া হতে কুঞ্জমহিপুর পর্যন্ত ১০ কি.মি নলিয়া নদী পুনঃখনননের জন্য ৩ কোটি ৫৮ লক্ষ ৭৭ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়। ১১টি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মাধ্রমেন কাজটি শুরু করা হয়েছে।
উক্ত কাজটি সম্পন্ন করা হয়েছে। যে কারনে এই বিশাল এলাকায় উন্নয়নের ছোয়া লক্ষ করা যাচ্ছে। এই খননের ফলে এলাকার জনগনের বিভিন্ন মুখি কার্যক্রমের পথ উন্মুক্ত হয়েছে। যে কারনে এলাকায় সরকারি ভাবে বিভিন্ন সেক্টরের কার্যক্রমের দুয়ার খূলে গেছে, তার মধ্যে অন্যতম হলো মৎসচাষ, সবজি চাষ, বৃক্ষ রোপন, কর্মসূচী, বরেন্দ্র অঞ্চলে কার্যক্রমের বিভিন্ন মুখি উন্নয়ন কর্মকান্ড । এছাড়াও এই বিশাল এলাকা জুড়ে দর্শনীয় স্থান হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞগন মতামত ব্যক্ত করেছেন। অপরদিকে,এলাকাবাসী জানান এই নলেয়া নদীটির উজানে এক বছর পূর্বে খনন করা হয়েছে কিন্তু উল্লিখিত স্থানে খনন না হওয়ায় ভারী বর্ষণ হলে বৃষ্টির পানি জমে নিম্ন অঞ্চল প্লাবিত হয়ে কৃষকদের রোপা আমন ধানের ব্যাপক হয় ক্ষতি হয়ে আসছিল। তাছাড়া খরা মৌসুমে নদীটির শুকিয়ে যেত ।খনন কাজ সম্পন্ন হওয়াতে বৃষ্টির পানি সহজে নেমে যাচ্ছে। তাতে রোপা আমন ধানের আর কেমন ক্ষয়ক্ষতি হবে না এবং খরা মৌসুমে সম্পূরক শেচ হিসেবে নদীর পানি ব্যবহার করতে পারবেন কৃষকরা । সেই সাথে সারা বছর নদীতে দেশীয় মাছ পাওয়ার আর কোন সমস্যা হবে না । উল্লেখ্য বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) কর্তৃক সাদুল্লাপুর অংশের নলেয়া নদীর পুরঃখনন কাজ সুষ্টভাবে সম্পন্ন হওয়ায় এলাকার বিভিন্ন পেশার সাথে জড়িত এবং উপকার ভোগী কৃষক স্থানীয় বাসিন্দা ও জনগনের সাথে কথাবার্তা বলে জানা গেছে বিএমডি এর এই কাজ খুবই প্রশংসার দাবিদার। তাদের দাবী নদীর বাকী আংশিক কাজ যেন বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে দ্রুত পুনঃখনন করা হয়।
শুক্রবার, ২৮ মার্চ ২০২৫
গাইবান্ধাসহ উত্তরাঞ্চলের পাঁচ জেলার অনেক নদীনালা খাল বিলের অযত্ন, অবহেলা এবং দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে জলাধারগুলো পানি ধারণ ও বহন ক্ষমতা হ্রাস পাওয়ার কারণে সামান্য বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টিসহ বন্যার পানি দ্রুত নিষ্কাশনের সুযোগ না থাকায় এলাকার ফসলহানি সহ জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়ে আসছে। পাশাপাশি এ সমস্ত নদী-নালা, খাল, বিল ও জলাশয়গুলো পরিকল্পিত ভাবে খনন ও প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে এলাকায় ভু-উপরিস্থ পানির আধার সৃষ্টি এবং সেচসহ গৃহস্থালি কাজে ব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। সেলক্ষ্যে বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের পাঁচ জেলায় খাল, বিল ও জলাশয়গুলো বিএমডিএ’র “ভূ-উপরস্থি পানির সর্বোত্তম ব্যবহার ও বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের মাধ্যমে বৃহত্তর রংপুর জেলায় সেচ সম্প্রসারণ (ইআইআরপি)” কর্মসূচির মাধ্যমে পুনঃখননের উদ্যোগ গ্রহণ করে। প্রকল্পটি ২০২০ সালে একনেক এ অনুমোদন প্রদান করেন।
এই প্রকল্পের আওতায় রংপুর, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও গাইবান্ধা ৫ জেলার ৩৫টি উপজেলায় ২৩০ (কি.মি.) খাস খাল-খাড়ী পুনঃখনন ও ১০৮ বিল ও পুকুর পুনঃ খনন কাজ চলমান অব্যাহত আছে। রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার শেরুডাঙ্গা বিল হতে উৎপন্ন হয়ে পীরগঞ্জ উপজেলার পাঁচগাছি ইউনিয়নের শাহাপুর গ্রামে নলেয়া নদী ও শান নদী মিলিত হয়েছে। এরপর নলেয়া নাম ধারন করে পীরগঞ্জের মাদারগঞ্জ, গাইবান্ধা জেলার সাদুল্লাপুরের মিরপুর, ঢোলডাঙ্গা হয়ে গোবিন্দগঞ্জের কাছে কাটাখালি নদীতে মিলিত হয়েছে। এ নদীটি মিঠাপুকুর উপজেলার ১৫নং বড় হযরতপুর, পীরগঞ্জ উপজেলার ১০নং শানেরহাট, ১১নং পাঁচগাছি, ১২নং মিঠিপুর ইউনিয়ন, সাদুল্লাপুর উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। নলেয়া নদী পুনঃখনন কাজের উদ্দেশ্যে সর্বমোট-৪৩.০০ কিঃমিঃ জরীপ কাজ সম্পন্ন করা হয়। সাদুল্লাপুর উপজেলা-১১.৫০ কিঃমিঃ নলেয়া নদী পূনঃখনন করা হয়। যার প্রাক্কলিত ব্যয় ছিল প্রায় ৩৬০.০০ লক্ষটাকা। যার ফলে - বিলুপ্তপ্রায় নদী পুনঃখনন ও পুনঃখননকৃত এ জলাশয়ে সাবমার্জডওয়ার (ক্রস ড্যাম) নির্মাণের কারণে ভু-উপরিস্থ পানির ধারণ ও সংরক্ষণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ধারণকৃত/সঞ্চিত ভূ-উপরিস্থ পানি দ্বারা খালের উভয় পাড়ের ৮১০ হেক্টর জমিতে স্বল্প খরচে সেচ সুবিধা প্রদানের পাশা-পাশি হাঁস চাষ, মাছ চাষ, পাট পচানোসহ নানাপ্রকার গৃহাস্থালি কাজে ব্যবহার হচ্ছে। ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর পুনর্ভরণ এবং সেচ কাজে ভূ-উপরিস্থ পানির ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। পানির স্তর অবনমন প্রতিরোধ হচ্ছে। নদী-নালা, খাল, বিলে আবার বছর ব্যাপি পানির প্রবাহ থাকায় বাতাসে আর্দ্রতা বিরাজ করায় পরিবেশের রুক্ষতা হ্রাসে সহায়ক ভুমিকা পালন করছে। ভরাট হয়ে যাওয়া বিলুপ্তপ্রায় নদী-নালা, খাল, বিল পুনঃখনন করায় পানি নিষ্কাশনের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এতে প্রায় ২৫০০ হেক্টর আংশিক জলাবদ্ধ জমি জলাবদ্ধতামুক্ত হয়ে কৃষি উপযোগি হয়েছে। ফলে বছরে প্রায় ৬৪৮০মেঃ টন ফসল উৎপাদনের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে যার বাজার মূল্য প্রায় ১৬২.০০ লক্ষটাকা। পুনঃখননকৃত জলাশয় গুলোর পাড়ে প্রকল্প থেকে ৪৫০০০ বিভিন্ন জাতের ফলদ, বনজ, ঔষধি চারা রোপন করা হয়েছে। এ ছাড়াও কৃষকেরা নিজ উদ্যোগে খালের পাড়ে অর্থকরি ফসল হিসেবে কলা, লাউ, শিম, বরবটি ইত্যাদি চাষ করছেন যা অতিরিক্ত বনজ সম্পদ সৃষ্টি, পুষ্টির চাহিদা পুরণ এবং পরিবেশ উন্নয়ন, বাস্তু-তন্ত্রের পুনরুজ্জীবন ও মরুকরণ প্রক্রিয়া প্রতিরোধে অবদান রাখছেন। জলাশয়গুলোতে অতিথি পাখির আগমন, তাদের কল-কাকলি ও নিরাপদে বংশ বৃদ্ধি, পাড়ে সবুজায়ন সবকিছু মিলে যে নয়ণাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দয্যর সৃষ্টি হয়েছে, তা মানুষের আত্মিক ও মানসিক প্রশান্তি প্রদানে ভূমিকা রাখছে। খালের উপরে ২টি ফুট-ওভারব্রিজ ও ২টি ক্রসড্যাম নির্মাণ করায় এলাকাবাসির যাতায়াতের সুযোগ সৃষ্টির পাশা-পাশি উৎপন্ন ফসল পরিবহন ও বাজারজাত করণের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। যার প্রাক্কলিত মূল্য ছিল প্রায় ৩২৪.০০ লক্ষটাকা। এদিকে সাদ্ল্লুাপুর উপজেলার শেষ সীমনা ফরিদুপুর ইউনিয়নের মহেশপুর কুঞ্জ মহিপুর মাঝিপাড়া থেকে শুরু হওয়া এই খনন কাজ সরেজমিনে দেখা গেছ এলাকার চিত্র সম্পূর্ণ পাল্টে গেছে। এক সময় যে মাঝি পাড়া থেকে পীরগঞ্জ যাওয়া খুবই কঠিন হতো সেখানে এই খনন কাজের মধ্যে ব্রীজ হওয়ায় এলাকাবাসী খুবই উৎসরমুখর। বিশেষ করে ফুটওভার ব্রীজ নির্মান করায় এলাকায় বৈপ্লবিক সাধিত হয়েছে। ভ্যানচালক ইসরাফিল(৫০) জানান, আগে মাদারগঞ্জ যেতে ৯ কি.মি ঘুরে ঘুরে যাওয়া লাগত। এখন আর ঘোরা লাগেনা। মাঝিপাড়ার শ্যামচরন, (৫৫)আরতি রানী(৬৬)সহ অনেকের মুখে হাসি ।এই পাড়ার প্রায় ৪/৫শত সনাতন ধর্মের মানুষের বসবাস বলা যায় তারা বিভিন্ন ভাবে সাবলম্বি হয়েছেন। বিশেষ করে ধনতলা ব্রীজের সাথে নলেয়ার খনন কাজ একটি মাইলফলকে পরিনত হয়েছে। দীর্ঘ পুরা খনন কাজ নলোয়া নদীর দুই ধার ঘুরে ঘুরে দেখা গেছে এ দৃশ্য। শুকনো নদী খননের ফলে গোটা এলাকায় চানচাল্যোর সৃষ্টি হয়েছে। শুধু তাই নয় এলাকায় কৃষি কাজ পানি সেচসহ বিভিন্ন ধরনের উন্নয়নের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উজ্জ্বল.. সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। সাদুল্যাপুরের ফরিদপুর ইউনিয়নের অংশে নলেয়া নদী খননের কাজ ইতিপুবে সরেজমিনে পরিদর্শন করছেনে প্রকল্প পরিচালক ( ইআইআরপি) ও রংপুর সার্কেলের তত্তাবধায়ক প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান খান, এ সময় তার সাথে ছিলেন গাইবান্ধা বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম, সাদুল্লাপুর উপজেলা বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষের সহকারী প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ এই এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করে তারা কৃষকদের সাথে এবং স্থানীয় অধিবাসীদের সাথে কথাবার্তা বলে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। উল্লেখ্য কৃষি মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে রংপুর বিভাগের বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কতৃর্ক ভূ উপরিস্থ পানির সর্বোত্তম ব্যবহার ও বৃষ্টির পানি সংরক্ষনের মাধ্যমে বৃহত্তর রংপুর জেলায় সেচ সম্প্রাসারণ প্রকল্পের আওতায় ২০২৪-২০২৫ অর্থবছর গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের মাঝিপাড়া হতে কুঞ্জমহিপুর পর্যন্ত ১০ কি.মি নলিয়া নদী পুনঃখনননের জন্য ৩ কোটি ৫৮ লক্ষ ৭৭ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়। ১১টি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মাধ্রমেন কাজটি শুরু করা হয়েছে।
উক্ত কাজটি সম্পন্ন করা হয়েছে। যে কারনে এই বিশাল এলাকায় উন্নয়নের ছোয়া লক্ষ করা যাচ্ছে। এই খননের ফলে এলাকার জনগনের বিভিন্ন মুখি কার্যক্রমের পথ উন্মুক্ত হয়েছে। যে কারনে এলাকায় সরকারি ভাবে বিভিন্ন সেক্টরের কার্যক্রমের দুয়ার খূলে গেছে, তার মধ্যে অন্যতম হলো মৎসচাষ, সবজি চাষ, বৃক্ষ রোপন, কর্মসূচী, বরেন্দ্র অঞ্চলে কার্যক্রমের বিভিন্ন মুখি উন্নয়ন কর্মকান্ড । এছাড়াও এই বিশাল এলাকা জুড়ে দর্শনীয় স্থান হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞগন মতামত ব্যক্ত করেছেন। অপরদিকে,এলাকাবাসী জানান এই নলেয়া নদীটির উজানে এক বছর পূর্বে খনন করা হয়েছে কিন্তু উল্লিখিত স্থানে খনন না হওয়ায় ভারী বর্ষণ হলে বৃষ্টির পানি জমে নিম্ন অঞ্চল প্লাবিত হয়ে কৃষকদের রোপা আমন ধানের ব্যাপক হয় ক্ষতি হয়ে আসছিল। তাছাড়া খরা মৌসুমে নদীটির শুকিয়ে যেত ।খনন কাজ সম্পন্ন হওয়াতে বৃষ্টির পানি সহজে নেমে যাচ্ছে। তাতে রোপা আমন ধানের আর কেমন ক্ষয়ক্ষতি হবে না এবং খরা মৌসুমে সম্পূরক শেচ হিসেবে নদীর পানি ব্যবহার করতে পারবেন কৃষকরা । সেই সাথে সারা বছর নদীতে দেশীয় মাছ পাওয়ার আর কোন সমস্যা হবে না । উল্লেখ্য বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) কর্তৃক সাদুল্লাপুর অংশের নলেয়া নদীর পুরঃখনন কাজ সুষ্টভাবে সম্পন্ন হওয়ায় এলাকার বিভিন্ন পেশার সাথে জড়িত এবং উপকার ভোগী কৃষক স্থানীয় বাসিন্দা ও জনগনের সাথে কথাবার্তা বলে জানা গেছে বিএমডি এর এই কাজ খুবই প্রশংসার দাবিদার। তাদের দাবী নদীর বাকী আংশিক কাজ যেন বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে দ্রুত পুনঃখনন করা হয়।