বিরামপুর (দিনাজপুর) : বিতরণ শেষে বারান্দায় পড়ে থাকা ভিজিএফ’র চাল কুড়িয়ে নিচ্ছেন হতদরিদ্র খদেজা -সংবাদ
দিনাজপুরের বিরামপুরে ভিজিএফর চাল বিতরণ শেষে বারান্দায় পরে থাকা চাল কুড়িয়ে নিচ্ছেন পৌরশহরের ২ নং ওয়ার্ডের খদেজা। তিনি বর্তমানে উপজেলার মৌ পুকুর গুচ্ছ গ্রামে অকর্মহীন স্বামীকে নিয়ে ১১৯ নং ঘরে বাস করছেন। এর আগে পৌরশহরের নতুন সার গোডাউন এলাকায় তিনি বসবাস করতেন।
তিনি জানান, ৫ টাকা দিয়ে ভোটার আইডি ফটোকপি করে ৪০ টাকা ভ্যান ভাড়া দিয়ে এই ভিজিএফ এর চাল নিতে এসেছেন। দীর্ঘ লাইন ধরে থাকার পর তাকে দেয়া হয়েছে ৪ কেজি চাল। এই চাল পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। পরবর্তীতে পাশের মসজিদের গেটে বসে সাহায্য চান মুসল্লিদের কাছে। সাহায্য নিয়ে আবার আসেন ভিজিএফের চাল বিতরণ কেন্দ্রে বারান্দায় পরে থাকা চাল কুড়িয়ে নিতে। এই পরে থাকা চাল কুড়িয়ে নেয়ার অনুমতি পেয়ে পাশের বাড়ি থেকে ঝাড়ু চেয়ে নিয়ে তা সংগ্রহ করেন। গত ২২ মার্চ সকাল ১০টায় বিরামপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের বারান্দায় পৌরশহরের ৪ হাজার ৬২১ জনকে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দুস্থ, অসহায় ও গরীব পরিবারের মাঝে বিনামূল্যে ভিজিএফ চাল বিতরণ করা হয়। এই কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বিরামপুর পৌরসভার পৌর প্রশাসক নুজহাত তাসনীম আওন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিরামপুর পৌরসভার পৌর সচিব (ভারপ্রাপ্ত) কামাল হোসেন এবং ট্যাগ অফিসার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিরামপুর উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা এনামুল হক চৌধুরী। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন পৌরসভার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
বিনামূল্যে ভিজিএফের চাল সংগ্রহ করতে আসেন নির্ধারিত পরিবারের চেয়ে অনেক বেশি লোকজন। একারণে কার্ড (স্লিপধারী) অনেককেই ৮ কেজি করে চাল দেয়া হয় এবং কার্ড (স্লিপ) যাদের ছিল না তাদের অনেককেই ৪ কেজি করে চাল দেয়া হয়। এ বিষয়ে ট্যাগ অফিসারের সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, সকলেই যেন পায় এজন্য এভাবেই দেয়া হচ্ছে। ভিজিএফ চাল বিতরণের সময় পৌরসভার বেতনভুক্ত কর্মচারীকে ৩০ কেজি চাল দেয়ায় গরিব অসহায় ও দুস্থ দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
এ সময় উপস্থিত দুস্থ ও অসহায়দের মাঝে চাল বিতরণ শেষে বেঁচে যায় ৬৫ বস্তা চাল। পরবর্তীতে এসব বেঁচে যাওয়া চাল উপজেলার বিভিন্ন এতিমখানা মাদ্রাসায় দেয়া হয়। এর মধ্যে পলিপ্রয়াগপুর ইউনিয়নের একটি এতিমখানা মাদ্রাসায় ১২ জন শিক্ষার্থীর জন্য ১২ বস্তা চাল দেয়া হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে পরবর্তীতে ওই মাদ্রাসা থেকে ৬ বস্তা চাল ফেরত নিয়ে এসে বিরামপুর উপজেলার অন্য ৩টি মাদ্রাসায় ২ বস্তা করে দেয়া হয় বলে জানান দায়িত্বরত ট্যাগ অফিসার বিরামপুর উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা এনামুল হক চৌধুরী। এছাড়া পৌরশহরের একটি মাদ্রাসার নামে দেয়া ভিজিএফের চাল হতে ১ বস্তা চাল সাবেক মোয়াজ্জেমকে নিজ বাড়িতে নিয়ে যেতে দেখা যায়। পৌরসভার গরিব, অসহায় ও দুস্থদের মাঝে ভিজিএফের চাল বিতরণের সময় অন্য ইউনিয়ন থেকে আসা কয়েকজনকে চাল নিতে দেখা যায়। এতে করে পৌরসভার ভিজিএফের চাল নিতে আসা অনেকেই চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ তোলেন।
এই বিষয়ে দায়িত্বরত ট্যাগ অফিসার বিরামপুর উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা এনামুল হক চৌধুরীর সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আমি অসুস্থ থাকায় সবদিকে সঠিকভাবে নজর দিতে না পারায় ছোট খাটো ভুল-ত্রুটি হতে পারে। বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক নুজহাত তাসনীম আওনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ১০ কেজি করে চাল দেয়ার পরিবর্তে ৮ কেজি করে দেয়া হয় যেন উপস্থিত সকলেই চাল পায়।
চাল বিতরণ শেষে অতিরিক্ত ৬৫ বস্তা চাল বেঁচে যায়। সেসব চালের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি দায়িত্বরত ট্যাগ অফিসারকে উক্ত বেঁচে যাওয়া চালগুলো উপজেলার বিভিন্ন এতিমখানা মাদ্রাসায় বিতরণের নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন। ভিজিএফের চাল বিতরণে অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি বর্তমানে বাইরে আছি। বিষয়টি আমি পরে দেখব।
বিরামপুর (দিনাজপুর) : বিতরণ শেষে বারান্দায় পড়ে থাকা ভিজিএফ’র চাল কুড়িয়ে নিচ্ছেন হতদরিদ্র খদেজা -সংবাদ
শুক্রবার, ২৮ মার্চ ২০২৫
দিনাজপুরের বিরামপুরে ভিজিএফর চাল বিতরণ শেষে বারান্দায় পরে থাকা চাল কুড়িয়ে নিচ্ছেন পৌরশহরের ২ নং ওয়ার্ডের খদেজা। তিনি বর্তমানে উপজেলার মৌ পুকুর গুচ্ছ গ্রামে অকর্মহীন স্বামীকে নিয়ে ১১৯ নং ঘরে বাস করছেন। এর আগে পৌরশহরের নতুন সার গোডাউন এলাকায় তিনি বসবাস করতেন।
তিনি জানান, ৫ টাকা দিয়ে ভোটার আইডি ফটোকপি করে ৪০ টাকা ভ্যান ভাড়া দিয়ে এই ভিজিএফ এর চাল নিতে এসেছেন। দীর্ঘ লাইন ধরে থাকার পর তাকে দেয়া হয়েছে ৪ কেজি চাল। এই চাল পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। পরবর্তীতে পাশের মসজিদের গেটে বসে সাহায্য চান মুসল্লিদের কাছে। সাহায্য নিয়ে আবার আসেন ভিজিএফের চাল বিতরণ কেন্দ্রে বারান্দায় পরে থাকা চাল কুড়িয়ে নিতে। এই পরে থাকা চাল কুড়িয়ে নেয়ার অনুমতি পেয়ে পাশের বাড়ি থেকে ঝাড়ু চেয়ে নিয়ে তা সংগ্রহ করেন। গত ২২ মার্চ সকাল ১০টায় বিরামপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের বারান্দায় পৌরশহরের ৪ হাজার ৬২১ জনকে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দুস্থ, অসহায় ও গরীব পরিবারের মাঝে বিনামূল্যে ভিজিএফ চাল বিতরণ করা হয়। এই কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বিরামপুর পৌরসভার পৌর প্রশাসক নুজহাত তাসনীম আওন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিরামপুর পৌরসভার পৌর সচিব (ভারপ্রাপ্ত) কামাল হোসেন এবং ট্যাগ অফিসার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিরামপুর উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা এনামুল হক চৌধুরী। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন পৌরসভার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
বিনামূল্যে ভিজিএফের চাল সংগ্রহ করতে আসেন নির্ধারিত পরিবারের চেয়ে অনেক বেশি লোকজন। একারণে কার্ড (স্লিপধারী) অনেককেই ৮ কেজি করে চাল দেয়া হয় এবং কার্ড (স্লিপ) যাদের ছিল না তাদের অনেককেই ৪ কেজি করে চাল দেয়া হয়। এ বিষয়ে ট্যাগ অফিসারের সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, সকলেই যেন পায় এজন্য এভাবেই দেয়া হচ্ছে। ভিজিএফ চাল বিতরণের সময় পৌরসভার বেতনভুক্ত কর্মচারীকে ৩০ কেজি চাল দেয়ায় গরিব অসহায় ও দুস্থ দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
এ সময় উপস্থিত দুস্থ ও অসহায়দের মাঝে চাল বিতরণ শেষে বেঁচে যায় ৬৫ বস্তা চাল। পরবর্তীতে এসব বেঁচে যাওয়া চাল উপজেলার বিভিন্ন এতিমখানা মাদ্রাসায় দেয়া হয়। এর মধ্যে পলিপ্রয়াগপুর ইউনিয়নের একটি এতিমখানা মাদ্রাসায় ১২ জন শিক্ষার্থীর জন্য ১২ বস্তা চাল দেয়া হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে পরবর্তীতে ওই মাদ্রাসা থেকে ৬ বস্তা চাল ফেরত নিয়ে এসে বিরামপুর উপজেলার অন্য ৩টি মাদ্রাসায় ২ বস্তা করে দেয়া হয় বলে জানান দায়িত্বরত ট্যাগ অফিসার বিরামপুর উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা এনামুল হক চৌধুরী। এছাড়া পৌরশহরের একটি মাদ্রাসার নামে দেয়া ভিজিএফের চাল হতে ১ বস্তা চাল সাবেক মোয়াজ্জেমকে নিজ বাড়িতে নিয়ে যেতে দেখা যায়। পৌরসভার গরিব, অসহায় ও দুস্থদের মাঝে ভিজিএফের চাল বিতরণের সময় অন্য ইউনিয়ন থেকে আসা কয়েকজনকে চাল নিতে দেখা যায়। এতে করে পৌরসভার ভিজিএফের চাল নিতে আসা অনেকেই চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ তোলেন।
এই বিষয়ে দায়িত্বরত ট্যাগ অফিসার বিরামপুর উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা এনামুল হক চৌধুরীর সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আমি অসুস্থ থাকায় সবদিকে সঠিকভাবে নজর দিতে না পারায় ছোট খাটো ভুল-ত্রুটি হতে পারে। বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক নুজহাত তাসনীম আওনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ১০ কেজি করে চাল দেয়ার পরিবর্তে ৮ কেজি করে দেয়া হয় যেন উপস্থিত সকলেই চাল পায়।
চাল বিতরণ শেষে অতিরিক্ত ৬৫ বস্তা চাল বেঁচে যায়। সেসব চালের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি দায়িত্বরত ট্যাগ অফিসারকে উক্ত বেঁচে যাওয়া চালগুলো উপজেলার বিভিন্ন এতিমখানা মাদ্রাসায় বিতরণের নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন। ভিজিএফের চাল বিতরণে অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি বর্তমানে বাইরে আছি। বিষয়টি আমি পরে দেখব।