সিটি করপোরেশনের ৫ বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা চলতি বছরের জুন মাসে। মেয়াদ পার করে যখন নতুন নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে এসেছে তখন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের মামলা জেতার খবর এলো। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সেই নির্বাচনে বিজয়ী আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপসকে মেয়র ঘোষণা করে সরকারের জারি করা গেজেটও বাতিল করা হয়েছে রায়ে। সেই সঙ্গে ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করা হয়েছে।
২০২০ সালের নির্বাচনে হেরে ধানের শীষের প্রার্থী ইশরাক যে মামলা করেছিলেন, পাঁচ বছর পর বৃহস্পতিবার তার রায় দিয়েছে
নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল। এখন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে ইশরাক হোসেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হচ্ছেন কত দিনের জন্য? বাকি মেয়াদ তিন মাসের জন্য, নাকি যোগ দেয়ার পর থেকে মেয়াদ শুরু হবে?
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর দায়িত্ব নেয়া অন্তর্বর্তী সরকার গত আগস্টেই দেশের সব সিটি করপোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলরদের অপসারণ করেছে। মেয়রের জায়গায় বসানো হয়েছে প্রশাসক। তা যদি নাও হতো, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়াদ থাকত আর মাস তিনেক।
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটির নির্বাচন হয়। অবিভক্ত ঢাকার শেষ মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে, বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনকে পৌনে দুই লাখ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস মেয়র হন।
দেশে কোভিড মহামারি শুরুর পর ১৬ মে দায়িত্ব নেন তাপস। আর জুনের প্রথম সপ্তাহে প্রথম সভা হয়। সেই হিসেবে এ সিটি করপোরেশনের ৫ বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা চলতি বছরের জুনে। কিন্তু স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন অনুযায়ী, মেয়াদ শেষের আগের তিন মাসে (এপ্রিল-জুন) নতুন নির্বাচন হওয়ার কথা। সব প্রক্রিয়া শেষ করে শপথ গ্রহণের পর ইশরাক হোসেন কতদিনের জন্য মেয়রের আসনে বসার সুযোগ পাবেন।
ইশরাকের আগে আরও একজন আদালতের রায়ে মেয়র হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। ভোটের সাড়ে তিন বছর পর ২০২৪ সালে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা জিতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র হয়েছেন বিএনপির শাহাদাত হোসেন।
নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল ১ অক্টোবর শাহাদাতকে মেয়র ঘোষণা করে রায় দেয়ার পর নির্বাচন কমিশন কপি নিয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত নেয়। আইনি জটিলতা না থাকায় এক সপ্তাহের মাথায় গেজেট প্রকাশ করে ইসি সচিবালয়। গত বছর ৩ নভেম্বর চট্টগ্রামের মেয়র হিসেবে শপথ দেন শাহাদাত হোসেন।
বৃহস্পতিবার ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র হিসেবে নিজের পক্ষে রায় পেয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ইশরাক বলেন, ‘আমি ন্যায়বিচার পেয়েছি। আমি মেয়র হতে পারব বা মেয়র হিসেবে শপথ নেব কিনা সেটা সম্পূর্ণ দলীয় বিষয়।’
নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে ইশরাককে মেয়র ঘোষণার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘আদালতের আদেশ আমাদের মানতে হবে। এ সংক্রান্ত কপি কমিশনে এলে এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।’ আদালতের রায়ের কপি পাওয়ার পর গেজেট প্রকাশের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানান ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।
জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন অনুবিভাগ) এ এইচ এম কামরুজ্জামান বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ে এ সংক্রান্ত কপি এলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ইশরাক মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নিলে কত মাস দায়িত্ব পালনের সুযোগ পাবেন, সেই প্রশ্নে স্থানীয় সরকার বিভাগ ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, বাকি মেয়াদের জন্য (তিন মাস), নাকি নতুন যোগ দেয়ার পর থেকে মেয়াদ শুরু হবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। ইসির গেজেট প্রকাশ, আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত ও স্থানীয় সরকার বিভাগের পদক্ষেপের ওপর তা নির্ভর করবে।
রায়ের কপি যখন পাওয়া যাবে, তখন পরবর্তী কার্যক্রম নেয়া হবে জানিয়ে ইসি সচিব বলেন, ‘আদালতের রায়ের প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল। আদালতের রায় পাওয়ার পর গেজেট প্রকাশ করার যে সিদ্ধান্ত, সেটা বাস্তবায়ন করব। কপি পেয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব আমরা।’ রায়ের কপি পাওয়ার পর ‘দেরি করার কোনো অবকাশ নেই’ বলে মন্তব্য করেন আখতার আহমেদ।
শুক্রবার, ২৮ মার্চ ২০২৫
সিটি করপোরেশনের ৫ বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা চলতি বছরের জুন মাসে। মেয়াদ পার করে যখন নতুন নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে এসেছে তখন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের মামলা জেতার খবর এলো। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সেই নির্বাচনে বিজয়ী আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপসকে মেয়র ঘোষণা করে সরকারের জারি করা গেজেটও বাতিল করা হয়েছে রায়ে। সেই সঙ্গে ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করা হয়েছে।
২০২০ সালের নির্বাচনে হেরে ধানের শীষের প্রার্থী ইশরাক যে মামলা করেছিলেন, পাঁচ বছর পর বৃহস্পতিবার তার রায় দিয়েছে
নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল। এখন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে ইশরাক হোসেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হচ্ছেন কত দিনের জন্য? বাকি মেয়াদ তিন মাসের জন্য, নাকি যোগ দেয়ার পর থেকে মেয়াদ শুরু হবে?
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর দায়িত্ব নেয়া অন্তর্বর্তী সরকার গত আগস্টেই দেশের সব সিটি করপোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলরদের অপসারণ করেছে। মেয়রের জায়গায় বসানো হয়েছে প্রশাসক। তা যদি নাও হতো, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়াদ থাকত আর মাস তিনেক।
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটির নির্বাচন হয়। অবিভক্ত ঢাকার শেষ মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে, বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনকে পৌনে দুই লাখ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস মেয়র হন।
দেশে কোভিড মহামারি শুরুর পর ১৬ মে দায়িত্ব নেন তাপস। আর জুনের প্রথম সপ্তাহে প্রথম সভা হয়। সেই হিসেবে এ সিটি করপোরেশনের ৫ বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা চলতি বছরের জুনে। কিন্তু স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন অনুযায়ী, মেয়াদ শেষের আগের তিন মাসে (এপ্রিল-জুন) নতুন নির্বাচন হওয়ার কথা। সব প্রক্রিয়া শেষ করে শপথ গ্রহণের পর ইশরাক হোসেন কতদিনের জন্য মেয়রের আসনে বসার সুযোগ পাবেন।
ইশরাকের আগে আরও একজন আদালতের রায়ে মেয়র হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। ভোটের সাড়ে তিন বছর পর ২০২৪ সালে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা জিতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র হয়েছেন বিএনপির শাহাদাত হোসেন।
নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল ১ অক্টোবর শাহাদাতকে মেয়র ঘোষণা করে রায় দেয়ার পর নির্বাচন কমিশন কপি নিয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত নেয়। আইনি জটিলতা না থাকায় এক সপ্তাহের মাথায় গেজেট প্রকাশ করে ইসি সচিবালয়। গত বছর ৩ নভেম্বর চট্টগ্রামের মেয়র হিসেবে শপথ দেন শাহাদাত হোসেন।
বৃহস্পতিবার ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র হিসেবে নিজের পক্ষে রায় পেয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ইশরাক বলেন, ‘আমি ন্যায়বিচার পেয়েছি। আমি মেয়র হতে পারব বা মেয়র হিসেবে শপথ নেব কিনা সেটা সম্পূর্ণ দলীয় বিষয়।’
নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে ইশরাককে মেয়র ঘোষণার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘আদালতের আদেশ আমাদের মানতে হবে। এ সংক্রান্ত কপি কমিশনে এলে এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।’ আদালতের রায়ের কপি পাওয়ার পর গেজেট প্রকাশের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানান ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।
জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন অনুবিভাগ) এ এইচ এম কামরুজ্জামান বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ে এ সংক্রান্ত কপি এলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ইশরাক মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নিলে কত মাস দায়িত্ব পালনের সুযোগ পাবেন, সেই প্রশ্নে স্থানীয় সরকার বিভাগ ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, বাকি মেয়াদের জন্য (তিন মাস), নাকি নতুন যোগ দেয়ার পর থেকে মেয়াদ শুরু হবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। ইসির গেজেট প্রকাশ, আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত ও স্থানীয় সরকার বিভাগের পদক্ষেপের ওপর তা নির্ভর করবে।
রায়ের কপি যখন পাওয়া যাবে, তখন পরবর্তী কার্যক্রম নেয়া হবে জানিয়ে ইসি সচিব বলেন, ‘আদালতের রায়ের প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল। আদালতের রায় পাওয়ার পর গেজেট প্রকাশ করার যে সিদ্ধান্ত, সেটা বাস্তবায়ন করব। কপি পেয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব আমরা।’ রায়ের কপি পাওয়ার পর ‘দেরি করার কোনো অবকাশ নেই’ বলে মন্তব্য করেন আখতার আহমেদ।