বরিশাল : ন্যায্য দাম না পেয়ে বরিশালের সম্ভাবনাময় কৃষিপণ্য ক্যাপসিকাম আবাদে কৃষকদের আগ্রহ কমছে -সংবাদ
বরিশালে এবার প্রচুর ক্যাপসিকাম চাষ ও ফলন হয়েছে। মিষ্টি মরিচ হিসাবে পরিচিত ক্যাপসিকাম বরিশালবাসীর কাছে এখনও জনপ্রিয় না হওয়ায় ন্যায্য দাম না পেয়ে বরিশালের সম্ভবনাময় কৃষিপণ্য ক্যাপসিকাম আবাদে কৃষকদের আগ্রহ কমছে। এমনকি চলতি বছর ক্যাপসিকাম বিক্রী করে কৃষকগণ উৎপাদান ব্যায়ও তুলতে পারছেন না বলে হতাশা ব্যক্ত করেছেন আবাদকারীগন।
সমাপ্তপ্রায় রবি মৌসুমে বরিশালে প্রায় ৩শ একর জমিতে ক্যলিফর্নিয়া ওয়ান্ডার জাতের ক্যাপসিকামের আবাদ হলেও মাঠপর্যায়ে চাষিরা প্রতি কেজি ক্যাপসিকাম মাত্র ১৫-২০ টাকা কেজি দরে তা বিক্রী করছেনÑ যা বরিশালের খোলা বাজারে ৪০-৫০ টাকা এবং সুপার শপে দেড়শ থেকে ২শ টাকায় বিক্রী হচ্ছে। মাস দুয়েক পরেই এসব ক্যাপসিকাম খোলা বাজার না মিললেও সুপার শপে তা ৪শ টাকা কেজি দরেও বিক্রী হবে বলে জানিয়েছেন ভোক্তারা।
ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ক্যাপসিকামে ফাইবার, আয়রন ও অন্যান্য খনিজ উপাদান থাকায় তা মানবদেহে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক বলে চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন। এটি আমাদের দেশের প্রচলিত সবজি না হলেও সারাবিশ্বে ইতোমধ্যে টমেটোর পরেই দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ সবজি হিসেবে অবস্থান তৈরি করেছে।
জাত ভেদে ক্যাপসিকাম সবুজ, হলুদ, বেগুনি ও কমলা রঙের হয়ে থাকে। অবশ্য রঙ্গিন ক্যাপসিকামকে বেল পেপার নামে ডাকা হয়। বরিশালে বেল পেপারের চাষ হয় না বললেই চলে। একেকটি রঙের ক্যাপসিকামের পুষ্টিগুণ ভিন্ন ধরনের। তবে বরিশালসহ আমাদের দেশে রবি মৌসুমে সবুজ রঙের ক্যাপসিকামই আবাদ ও উৎপাদন হয়ে থাকে। কোন কোন এলাকায় ইতোমধ্যে হলুদ ও লাল রঙের ক্যাপসিকামেরও আবাদ হচ্ছে গ্রীষ্মকালীন মৌসুমে।
আমাদের দেশের বিভিন্ন এলাকায় গত বছর দশেক ধরে ‘ক্যালিফর্নিয়া’, ‘টেন্ডারবেল’ ও ‘ইয়েলো ওয়ান্ডার’ জাতের ক্যাপসিকামের আবাদ শুরু হলেও গত ৫ বছর ধরে বরিশালের বিভিন্ন চরাঞ্চলের কৃষকরা ক্যালিফর্নিয়া জাতের ক্যাপসিকাম আবাদ করছেন। এ গাছ খরা এবং জলাবদ্ধতা কোনোটিই সহ্য করতে পারে না। অত্যন্ত স্পর্শকাতর এ ফসল আবাদ ও উৎপাদনে সতর্কতা অবলম্বন করতে হয় বিধায় কৃষক পর্যায়ে প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু আমাদেও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর-ডিএই ও কৃষি গবেষণা ইনষ্টিটিউট-বারি বিষয়টি নিয়ে এখনও তেমন মনযোগী নয় বলে কৃষকদের তরফ থেকে হতাশা ব্যক্ত করা হয়েছে।
তবে এ ব্যপারে ডিএইর বরিশাল অঞ্চলের প্রধান নির্বাহী ও অতিরিক্ত পরিচালক জানান, খুব শীঘ্রই মাঠপর্যায়ে কৃষকদের জন্য যথাযথ প্রশিক্ষণ ও অবহিকতকরনের ব্যবস্থার গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন। তারমতে, বারী ইতোমধ্যে ক্যাপসিকাম-এর একটি উন্নতজাত উদ্ভাবন করেছে। ডিএই এবং বারী’র তরফ থেকে যথাযথ প্রশিক্ষণের ফলে উন্নতমানের এ ক্যাপসিকাম যা সবার নিকট মিষ্টি মরিচ হিসাবে পরিচিত তার বীজ আবাদের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধিতে পদক্ষেপ জোরদারের কথাও জানান অতিরিক্ত পরিচালক। একাধিক কৃষিবীদের মতে, আমাদের দেশের সাধারণ মানুষের মাঝে ক্যাপসিকামের ব্যাবহার এখনও খুব জনপ্রিয়তা অর্জন না করলেও তার রপ্তানির বিশাল বাজার রয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে ক্যাপসিকাম রপ্তানি বাজারে প্রবেশ করলে তা আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম পণ্যে পরিনত হতে পারে। বর্তমানে বিশ্বের শতাধিক দেশে বাংলাদেশের কৃষিপণ্য রপ্তানি হচ্ছে। যেখানে ক্যাপসিকামের অবস্থান তৈরি করা কোন কষ্টসাধ্য বিষয় নয় বলেও মনে করছেন কৃষিবীদরা। এমনকি বিশে^ অন্যান্য দেশের মত আমাদের দেশেও সারা বছরই ক্যাপসিকামের আবাদ ও উৎপাদন সম্ভব বলেও মনে করছেন কৃষিবীদরা।
বরিশাল : ন্যায্য দাম না পেয়ে বরিশালের সম্ভাবনাময় কৃষিপণ্য ক্যাপসিকাম আবাদে কৃষকদের আগ্রহ কমছে -সংবাদ
রোববার, ০৬ এপ্রিল ২০২৫
বরিশালে এবার প্রচুর ক্যাপসিকাম চাষ ও ফলন হয়েছে। মিষ্টি মরিচ হিসাবে পরিচিত ক্যাপসিকাম বরিশালবাসীর কাছে এখনও জনপ্রিয় না হওয়ায় ন্যায্য দাম না পেয়ে বরিশালের সম্ভবনাময় কৃষিপণ্য ক্যাপসিকাম আবাদে কৃষকদের আগ্রহ কমছে। এমনকি চলতি বছর ক্যাপসিকাম বিক্রী করে কৃষকগণ উৎপাদান ব্যায়ও তুলতে পারছেন না বলে হতাশা ব্যক্ত করেছেন আবাদকারীগন।
সমাপ্তপ্রায় রবি মৌসুমে বরিশালে প্রায় ৩শ একর জমিতে ক্যলিফর্নিয়া ওয়ান্ডার জাতের ক্যাপসিকামের আবাদ হলেও মাঠপর্যায়ে চাষিরা প্রতি কেজি ক্যাপসিকাম মাত্র ১৫-২০ টাকা কেজি দরে তা বিক্রী করছেনÑ যা বরিশালের খোলা বাজারে ৪০-৫০ টাকা এবং সুপার শপে দেড়শ থেকে ২শ টাকায় বিক্রী হচ্ছে। মাস দুয়েক পরেই এসব ক্যাপসিকাম খোলা বাজার না মিললেও সুপার শপে তা ৪শ টাকা কেজি দরেও বিক্রী হবে বলে জানিয়েছেন ভোক্তারা।
ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ক্যাপসিকামে ফাইবার, আয়রন ও অন্যান্য খনিজ উপাদান থাকায় তা মানবদেহে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক বলে চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন। এটি আমাদের দেশের প্রচলিত সবজি না হলেও সারাবিশ্বে ইতোমধ্যে টমেটোর পরেই দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ সবজি হিসেবে অবস্থান তৈরি করেছে।
জাত ভেদে ক্যাপসিকাম সবুজ, হলুদ, বেগুনি ও কমলা রঙের হয়ে থাকে। অবশ্য রঙ্গিন ক্যাপসিকামকে বেল পেপার নামে ডাকা হয়। বরিশালে বেল পেপারের চাষ হয় না বললেই চলে। একেকটি রঙের ক্যাপসিকামের পুষ্টিগুণ ভিন্ন ধরনের। তবে বরিশালসহ আমাদের দেশে রবি মৌসুমে সবুজ রঙের ক্যাপসিকামই আবাদ ও উৎপাদন হয়ে থাকে। কোন কোন এলাকায় ইতোমধ্যে হলুদ ও লাল রঙের ক্যাপসিকামেরও আবাদ হচ্ছে গ্রীষ্মকালীন মৌসুমে।
আমাদের দেশের বিভিন্ন এলাকায় গত বছর দশেক ধরে ‘ক্যালিফর্নিয়া’, ‘টেন্ডারবেল’ ও ‘ইয়েলো ওয়ান্ডার’ জাতের ক্যাপসিকামের আবাদ শুরু হলেও গত ৫ বছর ধরে বরিশালের বিভিন্ন চরাঞ্চলের কৃষকরা ক্যালিফর্নিয়া জাতের ক্যাপসিকাম আবাদ করছেন। এ গাছ খরা এবং জলাবদ্ধতা কোনোটিই সহ্য করতে পারে না। অত্যন্ত স্পর্শকাতর এ ফসল আবাদ ও উৎপাদনে সতর্কতা অবলম্বন করতে হয় বিধায় কৃষক পর্যায়ে প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু আমাদেও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর-ডিএই ও কৃষি গবেষণা ইনষ্টিটিউট-বারি বিষয়টি নিয়ে এখনও তেমন মনযোগী নয় বলে কৃষকদের তরফ থেকে হতাশা ব্যক্ত করা হয়েছে।
তবে এ ব্যপারে ডিএইর বরিশাল অঞ্চলের প্রধান নির্বাহী ও অতিরিক্ত পরিচালক জানান, খুব শীঘ্রই মাঠপর্যায়ে কৃষকদের জন্য যথাযথ প্রশিক্ষণ ও অবহিকতকরনের ব্যবস্থার গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন। তারমতে, বারী ইতোমধ্যে ক্যাপসিকাম-এর একটি উন্নতজাত উদ্ভাবন করেছে। ডিএই এবং বারী’র তরফ থেকে যথাযথ প্রশিক্ষণের ফলে উন্নতমানের এ ক্যাপসিকাম যা সবার নিকট মিষ্টি মরিচ হিসাবে পরিচিত তার বীজ আবাদের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধিতে পদক্ষেপ জোরদারের কথাও জানান অতিরিক্ত পরিচালক। একাধিক কৃষিবীদের মতে, আমাদের দেশের সাধারণ মানুষের মাঝে ক্যাপসিকামের ব্যাবহার এখনও খুব জনপ্রিয়তা অর্জন না করলেও তার রপ্তানির বিশাল বাজার রয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে ক্যাপসিকাম রপ্তানি বাজারে প্রবেশ করলে তা আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম পণ্যে পরিনত হতে পারে। বর্তমানে বিশ্বের শতাধিক দেশে বাংলাদেশের কৃষিপণ্য রপ্তানি হচ্ছে। যেখানে ক্যাপসিকামের অবস্থান তৈরি করা কোন কষ্টসাধ্য বিষয় নয় বলেও মনে করছেন কৃষিবীদরা। এমনকি বিশে^ অন্যান্য দেশের মত আমাদের দেশেও সারা বছরই ক্যাপসিকামের আবাদ ও উৎপাদন সম্ভব বলেও মনে করছেন কৃষিবীদরা।