alt

সারাদেশ

রান্নায় কাঠখড়ির ব্যবহারে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পরিবেশ

প্রতিনিধি, গাইবান্ধা : রোববার, ০৬ এপ্রিল ২০২৫

গাইবান্ধা : রান্নার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে লাকড়ি -সংবাদ

গাইবান্ধার রান্না ও অন্যান্যকাজে কাঠ,খড়ি ও লাকড়ি ব্যবহারকারী পরিবারের সংখ্যা ৪লাখ ৯৬হাজার ৫৪৩। মোট পরিবারের প্রায় ৭২ শতাংশই কাঠ-খড়ি দিয়ে জ্বালানি চাহিদা পূরন করে থাকে। এতে করে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে পরিবেশে ও বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) এর ২০২২ সালের তথ্য অনুযায়ী গাইবান্ধা জেলার মোট পরিবার সংখ্যা ৬লাখ ৯৭হাজার ৩২০টি। এরমধ্যে কাঠ-খড়ি-লাকড়ি ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৪লাখ ৯৬হাজার ৫৪৩, এলপিজি গ্যাস ব্যবহারকারী ৩৪হাজার ৯২২, বায়োগ্যাস ৬৫০, ইলেকট্রিসিটি ৫১১ ও ৩ শতাধিক পরিবার নানা কিছু ব্যবহার করে রান্না করে থাকেন। তবে রান্নায় জ্বালানি ব্যবহারকারী পরিবারের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি সুন্দরগগঞ্জ উপজেলায়। এই উপজেলার মোট পরিবারের ৯৬ শতাংশই কাঠ-খড়ির উপর নির্ভরশীল। সবচেয়ে কম জ্বালানি ব্যবহার করে সাঘাটা উপজেলায় এবং এই উপজেলায় মোট পরিবারের ৫৭ শতাংশ কাঠ-খড়ির উপর নির্ভরশীল। গাইবান্ধা জেলায় এলপিজি ব্যবহার করে রান্নার কাজ করে ৫ শতাংশ পরিবার। সবচেয়ে বেশি এলপিজি ব্যবহারকারী পরিবারের সংখ্যা গাইবান্ধা সদর উপজেলায়। এই উপজেলার এলপিজি ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১২ শতাংশ। এছাড়াও ১৮.৪৪ শতাংশ পরিবার খড়, গাছপালার শুকনো পাতা, তুষ, ভুষি ব্যবহার করে থাকে।

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার চর কাপাসিয়া গ্রামের সালেহা বেগম জানান, অভাব-অনটনের সংসার জ্বালানি হিসেবে গাছের পাতা,খড়ি দিয়ে রান্না করে থাকি। এই গ্রামের মর্জিনা বেওয়া বলেন, জন্ম থেকেই দেখছে খড়ি দিয়ে রান্না করা হয়, আমরাও এভাবে করছি। তবে, জ্বালানিতে রান্নায় স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে তার কোন ধারনা নেই।

সাঘাটা উপজেলার হাসিলকান্দি গ্রামের সাবিনা বেগম বলেন, আর্থিক দন্যতা ও সুযোগ-সুবিধা না থাকায় রান্নায় জ্বালানি হিসেবে লাকড়ি ব্যবহার করি। এতে করে তাপমাত্রায় অনেক সমস্যা কথা তার জানা থাকলে উপায়ন্তরহীন এই নারীর বিকল্প কিছু নেই বলে তিনি জানান।

এদিকে, সাঘাটা দক্ষিন দিঘলকান্দি চরের গ্রামের নুর ইসলাম প্রামানিক জানান, চলতি এপ্রিল মাসেই অধিক তাপমাত্রায় চলাফেরা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। প্রতিনিয়ত তাপমাত্রা বাড়ছে বলে তিনি জানান।

কালুরপাড়া গ্রামের মানিকজান বেওয়া বলেন, সারাদিন বিভিন্ন চরে খড়ি সংগ্র করে রান্নার জন্য যোগার করতে হয়। তবে এই দায়িত্বভার নারীদের বলে তিনি জানান। রান্নার ধোয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হলেও কিছুই করার নেই এই মানিকজান বেওয়ার। কেননা চরে প্রেক্ষাপটে বিকল্প কিছু করার সামর্থ্য নেই। প্রায় ২০ বছর ধরে শ্বাসকষ্ট নিয়ে তিনি জীবনযাপন করছেন।

এ প্রসংগে জ্বালানি গবেষক জিয়াউল হক মুক্তা জানান, যেকোন ধরণের তাপ ও ধোয়া জীববৈচিত্র্যের জন্য ক্ষতিকর। বিশেষ করে জ্বালানি হিসেবে কাঠ, খড়ি, লাকড়ি এগুলো থেকে যে ধরনের ধোয়া বের হয় তা পরিবেশ ও মানবজীবনের জন্য মারাত্মক ক্ষতি করে। এজন্য তিনি সৌরতাপ ব্যবহারের জন্য পরামর্শ প্রদান করেন।

উন্নয়ন গবেষক ও গণউন্নয়ন কেন্দ্রের নির্বাহী প্রধান এম. আবদুস্্ সালাম জানান, দারিদ্রতা ও ভৌগোলিক প্রেক্ষাপটে গাইবান্ধার বেশিরভাগ পরিবারে রান্নায় জ্বালানি ব্যবহার করে। এতে করে সবচেয়ে বেশি নারীই স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ে। এছাড়াও রান্না থেকে নির্গত কালো ধোয়া পরিবেশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তিনি জানান, জ্বালানিতে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারলে নারীর স্বাস্থ্যঝুকি হ্রাস পাবে এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা পাবে।

জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ড, আইনুন নিশাত জানান, পরিবেশ দুষনের কারণে এখন শান্তিমতো নিঃশ্বাস নিতে পারিনা। এরজন্য আমরাই দায়ী, পরিবেশ রক্ষায় আইন থাকলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এজন্য তিনি আইন বাস্তবায়নের পাশাপাশি সঠিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পরামর্শ প্রদান করেন।

আইনজীবী হত্যার প্রতিবাদে মৌলভীবাজারে মানববন্ধন

ছবি

মুক্তাগাছায় আগাছানাশকে কৃষকের বোরো ধান নষ্ট

বাম্পার তরমুজের সম্ভাবনা

চুনারুঘাটে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে তরুণের মৃত্যু

ছবি

মুন্সীগঞ্জে মেডিকেল কলেজ নির্মাণের কাজ উদ্বোধন

রাজশাহী অঞ্চলে জৈব সারের চাহিদা বাড়ছে

দেশে ফিরেই রেলের নিচে মাথা দিয়ে সেনবাগের কাতার প্রবাসীর আত্মহত্যা

পর্নোগ্রাফি মামলায় গ্রেপ্তার ১

পূর্বধলায় যুবকের পুরুষাঙ্গ কেটে দিয়েছে তরুণী

লাইনম্যানের অবহেলায় বিদ্যুতে প্রাণ গেল শিশুর

দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান

ফটিকছড়িতে মা ও ভাই হত্যাকারী ইয়াসিন গ্রেপ্তার

ছবি

চকরিয়া সড়কের বনায়নের শিশু গাছ প্রকাশ্যে কেটে নিচ্ছে দুর্বৃত্তরা

ছবি

ফরিদপুরে বাস খাদে পড়ে নিহত ৭, আহত অন্তত ৩০

ছবি

বান্দরবানে স্থলমাইন বিস্ফোরণে যুবকের পা বিচ্ছিন্ন

শরণখোলা হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীর ভিড়, চিকিৎসা দিতে হিমশিম চিকিৎসক-নার্সরা

ছবি

সিলেটে আর্ন্তজাতিক যোগ দিবস উপলক্ষ্যে প্রস্তুতিমূলক যোগ সেশন অনুষ্ঠিত

পুলিশবাহী ট্রাককে ড্রাম ট্রাকের ধাক্কা, আহত ১৫ পুলিশ সদস্য, গ্রেফতার-১

নোয়াখালীর ধর্ষণের শিকার জমজ ২ বোনের পুনর্বাসন ও আইনি সহায়তা দিচ্ছেন তারেক রহমান

ছবি

দশমিনায় বোরোর বাম্পার ফলনে স্বপ্ন বুনছে কৃষক

পোরশায় ভাইবোনের মরদেহ উদ্ধার

ভোলায় পুকুরে ডুবে ভাইবোনের মৃত্যু

কালিয়াকৈরে শিশু ধর্ষণ চেষ্টায় যুবক আটক

মৌলভীবাজারে দুষ্কৃতকারীর হাতে আইনজীবী খুন

বাউফলে ট্রলির ধাক্কায় বাইক আরোহীর মৃত্যু

ছবি

বেদে পল্লীতে যুবক হত্যার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ

গলাচিপায় নদীর তীর দখলের মহোৎসব

আট দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি

চুয়াডাঙ্গায় অস্ত্রসহ ডাকাত গ্রেপ্তার

সাটুরিয়ায় স্কুলছাত্রী ধর্ষণ, যুবক গ্রেপ্তার

চট্টগ্রামে রেলওয়ের উদ্যোগে বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযান

এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রের ১শ গজের মধ্যে অবৈধ বাণিজ্যমেলা

আদমদীঘিতে মাছের খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি, বন্ধ হয়ে যাচ্ছে একের পর এক খামার

প্যালেস্টাইনে ইসরায়েলের গণহত্যার প্রতিবাদে সারাদেশে বিক্ষোভ

ট্রান্সফর্মার চুরির দায়ে পলাশবাড়ীর নেসকো আবাসিক প্রকৌশলী বরখাস্ত

মুন্সীগঞ্জে স্ত্রীকে খুন করে সন্তানদের নিয়ে স্বামী উধাও

tab

সারাদেশ

রান্নায় কাঠখড়ির ব্যবহারে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পরিবেশ

প্রতিনিধি, গাইবান্ধা

গাইবান্ধা : রান্নার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে লাকড়ি -সংবাদ

রোববার, ০৬ এপ্রিল ২০২৫

গাইবান্ধার রান্না ও অন্যান্যকাজে কাঠ,খড়ি ও লাকড়ি ব্যবহারকারী পরিবারের সংখ্যা ৪লাখ ৯৬হাজার ৫৪৩। মোট পরিবারের প্রায় ৭২ শতাংশই কাঠ-খড়ি দিয়ে জ্বালানি চাহিদা পূরন করে থাকে। এতে করে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে পরিবেশে ও বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) এর ২০২২ সালের তথ্য অনুযায়ী গাইবান্ধা জেলার মোট পরিবার সংখ্যা ৬লাখ ৯৭হাজার ৩২০টি। এরমধ্যে কাঠ-খড়ি-লাকড়ি ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৪লাখ ৯৬হাজার ৫৪৩, এলপিজি গ্যাস ব্যবহারকারী ৩৪হাজার ৯২২, বায়োগ্যাস ৬৫০, ইলেকট্রিসিটি ৫১১ ও ৩ শতাধিক পরিবার নানা কিছু ব্যবহার করে রান্না করে থাকেন। তবে রান্নায় জ্বালানি ব্যবহারকারী পরিবারের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি সুন্দরগগঞ্জ উপজেলায়। এই উপজেলার মোট পরিবারের ৯৬ শতাংশই কাঠ-খড়ির উপর নির্ভরশীল। সবচেয়ে কম জ্বালানি ব্যবহার করে সাঘাটা উপজেলায় এবং এই উপজেলায় মোট পরিবারের ৫৭ শতাংশ কাঠ-খড়ির উপর নির্ভরশীল। গাইবান্ধা জেলায় এলপিজি ব্যবহার করে রান্নার কাজ করে ৫ শতাংশ পরিবার। সবচেয়ে বেশি এলপিজি ব্যবহারকারী পরিবারের সংখ্যা গাইবান্ধা সদর উপজেলায়। এই উপজেলার এলপিজি ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১২ শতাংশ। এছাড়াও ১৮.৪৪ শতাংশ পরিবার খড়, গাছপালার শুকনো পাতা, তুষ, ভুষি ব্যবহার করে থাকে।

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার চর কাপাসিয়া গ্রামের সালেহা বেগম জানান, অভাব-অনটনের সংসার জ্বালানি হিসেবে গাছের পাতা,খড়ি দিয়ে রান্না করে থাকি। এই গ্রামের মর্জিনা বেওয়া বলেন, জন্ম থেকেই দেখছে খড়ি দিয়ে রান্না করা হয়, আমরাও এভাবে করছি। তবে, জ্বালানিতে রান্নায় স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে তার কোন ধারনা নেই।

সাঘাটা উপজেলার হাসিলকান্দি গ্রামের সাবিনা বেগম বলেন, আর্থিক দন্যতা ও সুযোগ-সুবিধা না থাকায় রান্নায় জ্বালানি হিসেবে লাকড়ি ব্যবহার করি। এতে করে তাপমাত্রায় অনেক সমস্যা কথা তার জানা থাকলে উপায়ন্তরহীন এই নারীর বিকল্প কিছু নেই বলে তিনি জানান।

এদিকে, সাঘাটা দক্ষিন দিঘলকান্দি চরের গ্রামের নুর ইসলাম প্রামানিক জানান, চলতি এপ্রিল মাসেই অধিক তাপমাত্রায় চলাফেরা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। প্রতিনিয়ত তাপমাত্রা বাড়ছে বলে তিনি জানান।

কালুরপাড়া গ্রামের মানিকজান বেওয়া বলেন, সারাদিন বিভিন্ন চরে খড়ি সংগ্র করে রান্নার জন্য যোগার করতে হয়। তবে এই দায়িত্বভার নারীদের বলে তিনি জানান। রান্নার ধোয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হলেও কিছুই করার নেই এই মানিকজান বেওয়ার। কেননা চরে প্রেক্ষাপটে বিকল্প কিছু করার সামর্থ্য নেই। প্রায় ২০ বছর ধরে শ্বাসকষ্ট নিয়ে তিনি জীবনযাপন করছেন।

এ প্রসংগে জ্বালানি গবেষক জিয়াউল হক মুক্তা জানান, যেকোন ধরণের তাপ ও ধোয়া জীববৈচিত্র্যের জন্য ক্ষতিকর। বিশেষ করে জ্বালানি হিসেবে কাঠ, খড়ি, লাকড়ি এগুলো থেকে যে ধরনের ধোয়া বের হয় তা পরিবেশ ও মানবজীবনের জন্য মারাত্মক ক্ষতি করে। এজন্য তিনি সৌরতাপ ব্যবহারের জন্য পরামর্শ প্রদান করেন।

উন্নয়ন গবেষক ও গণউন্নয়ন কেন্দ্রের নির্বাহী প্রধান এম. আবদুস্্ সালাম জানান, দারিদ্রতা ও ভৌগোলিক প্রেক্ষাপটে গাইবান্ধার বেশিরভাগ পরিবারে রান্নায় জ্বালানি ব্যবহার করে। এতে করে সবচেয়ে বেশি নারীই স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ে। এছাড়াও রান্না থেকে নির্গত কালো ধোয়া পরিবেশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তিনি জানান, জ্বালানিতে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারলে নারীর স্বাস্থ্যঝুকি হ্রাস পাবে এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা পাবে।

জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ড, আইনুন নিশাত জানান, পরিবেশ দুষনের কারণে এখন শান্তিমতো নিঃশ্বাস নিতে পারিনা। এরজন্য আমরাই দায়ী, পরিবেশ রক্ষায় আইন থাকলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এজন্য তিনি আইন বাস্তবায়নের পাশাপাশি সঠিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পরামর্শ প্রদান করেন।

back to top