যশোর : প্রাতিষ্ঠানিক ভিশন ও মিশন অনুযায়ী কার্যক্রম নেই বহুমুখী পাটশিল্প উদ্যোক্তা সেবা কেন্দ্রে -সংবাদ
যশোরে প্রাতিষ্ঠানিক ভিশন ও মিশন অনুযায়ী কার্যক্রম নেই বহুমুখী পাটশিল্প উদ্যোক্তা সেবা কেন্দ্রে (জেইএসসি)। ফলে কেন্দ্রটির সহায়তায় উৎপাদনে বৈচিত্র এনে বহুমুখী পাটপণ্যের প্রসারে উদ্যোক্তাদের দেখা স্বপ্ন বাস্তব রূপ পায়নি। শুধু কর্মশালা আয়োজন ও মেলায় উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখা ছাড়া বেশির ভাগ কার্যক্রম বাস্তবায়ন হচ্ছে না যশোরের এই কেন্দ্রটিতে। এখানকার তালিকাভুক্ত উদ্যোক্তাদের ভাষ্যমতে, জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টারের (জেডিপিসি) আওতাধীন এই কেন্দ্রটি চলছে ধুঁকে ধুঁকে। উদ্যোক্তারা জানান, চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন প্রকার উপকরণ, কাঁচামাল ও সহায়ক পণ্য ঠিকমতো সরবরাহ করতে পারে না কেন্দ্রটি। ব্যবসায় সম্প্রসারণে ঋণের ক্ষেত্রে ব্যাংক লোন পেতে কেন্দ্রটি থেকে কোনো ধরনের সহযোগিতা ও ডিজাইন উন্নয়নে সহায়তা পান না। এ ছাড়া উৎপাদিত পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রে উৎপাদনকারী ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরিতে ভূমিকা রাখছে না। অথচ জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টারের ওয়েব সাইটে উদ্যোক্তা সেবা কেন্দ্রের বিভিন্ন কার্যক্রমের তালিকায় এসব ব্যাপারে পাটপণ্য উৎপাদনকারীদের সহযোগিতা করার কথা বলা হয়েছে।
তালিকাভুক্ত উদ্যোক্তাদের সঙ্গে আলাপচারিতায় জানা গেছে, জেডিপিসির ভিশন বা রূপকল্পনা বহুমুখী পাটপণ্যের উৎপাদন, ব্যবহার, সম্প্রসারণ নিশ্চিত; কোনোটাই যশোরের উদ্যোক্তা সেবা কেন্দ্র ঘিরে পরিচালিত হচ্ছে না। অন্যদিকে, মিশন অর্থাৎ অভিলক্ষ্য উদ্যোক্তা তৈরি, নতুন ডিজাইন ও লাগসই প্রযুক্তি উদ্ভাবনসহ বাজারজাতকরণ কৌশল উন্নয়নের মাধ্যমে পাটপণ্যের ব্যবহার এবং সম্প্রসারণও হচ্ছে না। কেন্দ্রটির তালিকাভুক্ত উদ্যোক্তা গ্রিন নারী কল্যাণ ফাউন্ডেশনের পরিচালক সাকেরা বানু জানান, যশোর কেন্দ্রে জুট ফেব্রিক্স যত্ন করে সংরক্ষণ করা হয় না। জুট ফ্রেব্রিক্সের ডিসপ্লে বা প্রদর্শনের ব্যাপারে কেন্দ্র সংশ্লিষ্টদের যত্নশীল হতে হবে। তিনি জানান, পাটপণ্য উৎপাদনে যা কিছু করেন বেশির ভাগ নিজেদের উদ্যোগে। যশোর কেন্দ্রটি তাদের এই কাজে একদমই সহায়ক না। যেভাবে কেন্দ্রটি পরিচালিত হচ্ছে সেটি সরকারি অর্থের অপচয়। প্রশিক্ষণ ও মেলায় উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণে ভূমিকা রাখা ছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রমের কোনোটাই কেন্দ্রটি থেকে পরিচালিত হয় না। অপরাজিতা হ্যান্ডিক্রাফটসের নির্বাহী পরিচালক আক্তার জাহান বলেন, শুধু উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ ছাড়া কেন্দ্রটি থেকে কোনো ধরনের সহযোগিতা পাই না আমরা। আবার যে ধরনের প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয় সেটিও প্রাথমিক পর্যায়ে থাকা উদ্যোক্তাদের উপযোগী। প্রয়োজন মাফিক কাঁচামাল সরবরাহ, বাজার সম্প্রসারণ ও ব্যাংক ঋত-প্রাপ্তির ক্ষেত্রে সহযোগিতা পেলে বহুমুখী পাটপণ্য উৎপাদনের মাধ্যমে ব্যবসায় সম্প্রসারণ করা সম্ভব হতো। যশোর শহরের হরিনাথ দত্ত লেনের বাসিন্দা পাটপণ্যের উদ্যোক্তা মেরী মার্টের স্বত্বাধিকারী নাজনিন আক্তার মেরী জানান, উৎপাদিত পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে হয় তাদের। অনেক ক্ষেত্রে ক্রেতা ও কোনো বিক্রয় প্রতিষ্ঠান খুঁজে পাওয়া মুশকিল হয়ে যায়। উৎপাদিত পণ্য বিপণনে যশোর কেন্দ্র সহযোগিতা করলে তার মতো অন্য উদ্যোক্তাদেরও অনেক উপকার হতো। ব্যবসায় সম্প্রসারণে ব্যাংক ঋণপ্রাপ্তিতে কেন্দ্র থেকে কোনো ধরনের সহযোগিতা করা হয় কী না এমন প্রশ্নে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন এমন ধরনের সুযোগ-সুবিধা বহুমুখী পাটশিল্প উদ্যোক্তা সেবা কেন্দ্রের (জেইএসসি) মাধ্যমে পাওয়া যায় কখনও শুনিনি।
যশোর শহরের চারখাম্বা এলাকায় বহুমুখী পাটশিল্প উদ্যোক্তা সেবা কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, কেন্দ্রটিতে দুজন মাত্র কর্মরত। তাদের একজন অফিস ইনচার্জ ও অন্যজন বিপণন সম্প্রসারণ ও বিপণন সহকারী। অফিস ইনচার্জের কক্ষটি এলোমেলো ও অগোছালো। পাশের কক্ষটি বিক্রয় কেন্দ্র। সেখানে জুট ফেব্রিক্সের বেশ কয়েকটি রোল রাখা। দীর্ঘদিন পড়ে থাকায় ধুলো জমেছে। পাশে দুটি সেলাই মেশিন। যশোর সেন্টারের ইনচার্জ মাজিদুর রহমান ভূঁইয়া জানান, এই কেন্দ্রের সুবিধাভোগী উদ্যোক্তাদের যারা পাটের ব্যাগ তৈরি করেন এখান থেকে ভর্তুকি মূল্যে জুট ফেব্রিক্স কেনার সুযোগ পান। ব্যাগ তৈরির এই উপকরণের বাৎসরিক চাহিদা এক হাজার গজ। বর্তমানে সরবরাহ ঘাটতি আছে। প্রতিদিন ও মাসে কী পরিমাণ জুট ফেব্রিক্স বিক্রি হয় এমন প্রশ্নে বলেন, ঢাকা অফিস থেকে এ সংক্রান্ত তথ্য না দিতে বলা হয়েছে। তার ভাষ্যমতে, মালামাল বিক্রির তথ্য দেয়া যাবে না।
যশোর : প্রাতিষ্ঠানিক ভিশন ও মিশন অনুযায়ী কার্যক্রম নেই বহুমুখী পাটশিল্প উদ্যোক্তা সেবা কেন্দ্রে -সংবাদ
রোববার, ০৬ এপ্রিল ২০২৫
যশোরে প্রাতিষ্ঠানিক ভিশন ও মিশন অনুযায়ী কার্যক্রম নেই বহুমুখী পাটশিল্প উদ্যোক্তা সেবা কেন্দ্রে (জেইএসসি)। ফলে কেন্দ্রটির সহায়তায় উৎপাদনে বৈচিত্র এনে বহুমুখী পাটপণ্যের প্রসারে উদ্যোক্তাদের দেখা স্বপ্ন বাস্তব রূপ পায়নি। শুধু কর্মশালা আয়োজন ও মেলায় উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখা ছাড়া বেশির ভাগ কার্যক্রম বাস্তবায়ন হচ্ছে না যশোরের এই কেন্দ্রটিতে। এখানকার তালিকাভুক্ত উদ্যোক্তাদের ভাষ্যমতে, জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টারের (জেডিপিসি) আওতাধীন এই কেন্দ্রটি চলছে ধুঁকে ধুঁকে। উদ্যোক্তারা জানান, চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন প্রকার উপকরণ, কাঁচামাল ও সহায়ক পণ্য ঠিকমতো সরবরাহ করতে পারে না কেন্দ্রটি। ব্যবসায় সম্প্রসারণে ঋণের ক্ষেত্রে ব্যাংক লোন পেতে কেন্দ্রটি থেকে কোনো ধরনের সহযোগিতা ও ডিজাইন উন্নয়নে সহায়তা পান না। এ ছাড়া উৎপাদিত পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রে উৎপাদনকারী ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরিতে ভূমিকা রাখছে না। অথচ জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টারের ওয়েব সাইটে উদ্যোক্তা সেবা কেন্দ্রের বিভিন্ন কার্যক্রমের তালিকায় এসব ব্যাপারে পাটপণ্য উৎপাদনকারীদের সহযোগিতা করার কথা বলা হয়েছে।
তালিকাভুক্ত উদ্যোক্তাদের সঙ্গে আলাপচারিতায় জানা গেছে, জেডিপিসির ভিশন বা রূপকল্পনা বহুমুখী পাটপণ্যের উৎপাদন, ব্যবহার, সম্প্রসারণ নিশ্চিত; কোনোটাই যশোরের উদ্যোক্তা সেবা কেন্দ্র ঘিরে পরিচালিত হচ্ছে না। অন্যদিকে, মিশন অর্থাৎ অভিলক্ষ্য উদ্যোক্তা তৈরি, নতুন ডিজাইন ও লাগসই প্রযুক্তি উদ্ভাবনসহ বাজারজাতকরণ কৌশল উন্নয়নের মাধ্যমে পাটপণ্যের ব্যবহার এবং সম্প্রসারণও হচ্ছে না। কেন্দ্রটির তালিকাভুক্ত উদ্যোক্তা গ্রিন নারী কল্যাণ ফাউন্ডেশনের পরিচালক সাকেরা বানু জানান, যশোর কেন্দ্রে জুট ফেব্রিক্স যত্ন করে সংরক্ষণ করা হয় না। জুট ফ্রেব্রিক্সের ডিসপ্লে বা প্রদর্শনের ব্যাপারে কেন্দ্র সংশ্লিষ্টদের যত্নশীল হতে হবে। তিনি জানান, পাটপণ্য উৎপাদনে যা কিছু করেন বেশির ভাগ নিজেদের উদ্যোগে। যশোর কেন্দ্রটি তাদের এই কাজে একদমই সহায়ক না। যেভাবে কেন্দ্রটি পরিচালিত হচ্ছে সেটি সরকারি অর্থের অপচয়। প্রশিক্ষণ ও মেলায় উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণে ভূমিকা রাখা ছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রমের কোনোটাই কেন্দ্রটি থেকে পরিচালিত হয় না। অপরাজিতা হ্যান্ডিক্রাফটসের নির্বাহী পরিচালক আক্তার জাহান বলেন, শুধু উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ ছাড়া কেন্দ্রটি থেকে কোনো ধরনের সহযোগিতা পাই না আমরা। আবার যে ধরনের প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয় সেটিও প্রাথমিক পর্যায়ে থাকা উদ্যোক্তাদের উপযোগী। প্রয়োজন মাফিক কাঁচামাল সরবরাহ, বাজার সম্প্রসারণ ও ব্যাংক ঋত-প্রাপ্তির ক্ষেত্রে সহযোগিতা পেলে বহুমুখী পাটপণ্য উৎপাদনের মাধ্যমে ব্যবসায় সম্প্রসারণ করা সম্ভব হতো। যশোর শহরের হরিনাথ দত্ত লেনের বাসিন্দা পাটপণ্যের উদ্যোক্তা মেরী মার্টের স্বত্বাধিকারী নাজনিন আক্তার মেরী জানান, উৎপাদিত পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে হয় তাদের। অনেক ক্ষেত্রে ক্রেতা ও কোনো বিক্রয় প্রতিষ্ঠান খুঁজে পাওয়া মুশকিল হয়ে যায়। উৎপাদিত পণ্য বিপণনে যশোর কেন্দ্র সহযোগিতা করলে তার মতো অন্য উদ্যোক্তাদেরও অনেক উপকার হতো। ব্যবসায় সম্প্রসারণে ব্যাংক ঋণপ্রাপ্তিতে কেন্দ্র থেকে কোনো ধরনের সহযোগিতা করা হয় কী না এমন প্রশ্নে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন এমন ধরনের সুযোগ-সুবিধা বহুমুখী পাটশিল্প উদ্যোক্তা সেবা কেন্দ্রের (জেইএসসি) মাধ্যমে পাওয়া যায় কখনও শুনিনি।
যশোর শহরের চারখাম্বা এলাকায় বহুমুখী পাটশিল্প উদ্যোক্তা সেবা কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, কেন্দ্রটিতে দুজন মাত্র কর্মরত। তাদের একজন অফিস ইনচার্জ ও অন্যজন বিপণন সম্প্রসারণ ও বিপণন সহকারী। অফিস ইনচার্জের কক্ষটি এলোমেলো ও অগোছালো। পাশের কক্ষটি বিক্রয় কেন্দ্র। সেখানে জুট ফেব্রিক্সের বেশ কয়েকটি রোল রাখা। দীর্ঘদিন পড়ে থাকায় ধুলো জমেছে। পাশে দুটি সেলাই মেশিন। যশোর সেন্টারের ইনচার্জ মাজিদুর রহমান ভূঁইয়া জানান, এই কেন্দ্রের সুবিধাভোগী উদ্যোক্তাদের যারা পাটের ব্যাগ তৈরি করেন এখান থেকে ভর্তুকি মূল্যে জুট ফেব্রিক্স কেনার সুযোগ পান। ব্যাগ তৈরির এই উপকরণের বাৎসরিক চাহিদা এক হাজার গজ। বর্তমানে সরবরাহ ঘাটতি আছে। প্রতিদিন ও মাসে কী পরিমাণ জুট ফেব্রিক্স বিক্রি হয় এমন প্রশ্নে বলেন, ঢাকা অফিস থেকে এ সংক্রান্ত তথ্য না দিতে বলা হয়েছে। তার ভাষ্যমতে, মালামাল বিক্রির তথ্য দেয়া যাবে না।