alt

সারাদেশ

গলাচিপায় নদীর তীর দখলের মহোৎসব

প্রতিনিধি, পটুয়াখালী : সোমবার, ০৭ এপ্রিল ২০২৫

পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার নদীর তীরের ভূমি দখলের চলছে মহোৎসব। দখলদাররা পুরাতন চর ও নদীর তীরে নতুন জেগে ওঠা চরের মাটি কেটে বাঁধ দিয়ে নিজেদের খেয়াল খুশিমতো দখল করে সেখানে তরমুজসহ বিভিন্ন কৃষি সবজীর আবাদ করে চরছে। আবার অনেকেই সেখানে নির্মাণ সামগ্রীর ভাগার হিসেবে ব্যবহার করে নিজেদের দখলে নিয়ে যাচ্ছে নদীর তীরভূমি। এসব দখল প্রক্রিয়ায় উপজেলা ভূমি কার্যালয়ের কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারীর সহযোগিতা রয়েছে বলে নানা অভিযোগ রয়েছে। এদিকে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) বরিশাল বিভাগীয় শাখা ও বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলর থেকে একটি প্রতিনিধি দল সমপ্রতি গলাচিপা রাবনাবাদ নদী তীরের মাটি কেটে দেয়া বাঁধের স্থান সরেজমিন পরিদর্শন করে নদীর তীরভূমি এভাবে দখল আইনসংঙ্গত নয় বলে মন্তব্য করেছেন।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, গলাচিপা উপজেলা শহরের লঞ্চঘাট সংলগ্ন রাবনাবাদ নদীর তীর ঘেঁসে চরের মাটি কেটে বাঁধ দেয়া হয়েছে। এভাবে গলাচিপার লঞ্চঘাট সংলগ্ন পূর্ব দিকে রাবনাবাদ নদীর তীরভূমি বাঁধ দিয়ে অধিকাংশ বেদখল হয়ে গেছে। চলতি মৌসুমে সেখানে তরমুজ চাষ করা হয়েছে। প্রকাশ্যে নদীর তীরের মাটি কেটে বাঁধ দিয়ে এভাবে নদীর চর দখল করলেও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন ধরনের বাঁধা দেয়া হয়নি।

চরের মাটি কেটে নদীর তীরভূমিতে বাঁধ দিয়ে তরমুজের আবাদ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এক তরমুজ চাষী জানান, গোলখালী ইউপি সদস্য তাসমিন আক্তার ঝুমুর উপজেলা প্রশাসন থেকে নদীর তীরের তিন একর জমি এ বছর বন্দোবস্ত নিয়ে তরমুজ চাষ করেছেন। তীরভূমির মাটি কেটে বাঁধ দেওয়া প্রসঙ্গে বলেন, বাঁধ না দিলে জোয়ারের পানিতে খেত নষ্ট হবে এ কারণে বাঁধ দিয়েছেন। কত বছরের জন্য এবং কত টাকা দিয়েছে জানতে চাইলে সাঈদ তালুকদার সঠিক কোন তথ্য দিতে অপরাগতা প্রকাশ করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন জানান, ভূমি কার্যালয়ের টাকা দিয়ে তাদের মৌসুমে তরমুজের আবাদ করতে হচ্ছে। তবে কত টাকা দিতে হচ্ছে তা বলতে অপরাগতা প্রকাশ করেন তিনি।

এদিকে গলাচিপার নদী দখল করে চলছে মার্কেট নির্মাণ’ শিরোনামে ২০০৯ সালের ২১ আগষ্ট বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশের পর ওই বছরই ১৬ নভেম্বর নৌপরিবহন মন্ত্রী তার মন্ত্রনালয়ের সচিবকে রাবনাবাদ নদীর তীর অবৈধভাবে দখল ও ভরাটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে ২০১০ সালের ৭ জানুয়ারি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের নদী রক্ষাবিষয়ক কমিটির জাতীয় ট্যাক্সফোর্সের বৈঠকে গলাচিপার রাবনাবাদ নদীর অবৈধস্থাপনা নির্মাণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া এবং অবৈধ স্থাপনা ভেঙে দখলমুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে রাবনাবাদ নদীর তীরভূমি দখলমুক্ত হলেও দীর্ঘদিন পর ধীবে ধীরে আবারো রাবনাবাদ নদী বেদখল হয়ে যাচ্ছে। তবে এবার নদীর তীরভূমি দখল হচ্ছে বন্দোবস্ত নিয়ে ।

এদিকে নদীর তীরভূমি বন্দোবস্ত ও মাটি কেটে বাঁধ দিয়ে দখলের বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে উপজেলা ভূমি কার্যালয়ের সার্ভেয়ার হারুন-অর-রশিদ জানায়, বিষয়টি তাদের জানা নেই। তবে ইতিমধ্যে বেশ কিছু বন্দোবস্ত বাতিল করা হয়েছে। তিনি জানান, গলাচিপা ভূমি কার্যালয় থেকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি এক নোটিশে গলাচিপা খেয়াঘাট ও লঞ্চঘাট সংলগ্ন ১০৯ নং জেএলভূক্ত বদরপুর মৌজার ১ নং খাস খতিয়ানের জমির বিপরীতে খাস (রাজস্ব) আদায় সাপেক্ষে মো, আব্বাস হাওলাদার, দিপঙ্কর ও সোহেল শাহ কামাল গাজী, মো, বাহাদুর শাহ গংদের অনুকূলে প্রদানকৃত খাসজমি ব্যবহারের অনুমতিপত্র বাতিল করা হয়েছে।

তবে ভূমি কার্যালয় থেকে কয়েকজনের বন্দোবস্ত কাগজে কলমে বাতিল করলেও দখলমুক্ত হয়নি নদীর তীর। ইতিমধ্যে এই জমিতে আবাদ করা তরমুজ উঠে গেছে। কিন্তু নদীর তীরভূমির বাঁধ এখনও অপসারন করা হয়নি। দখলমুক্ত হয়নি নদীর তীর।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. রফিকুল আলম বলেন, নদীর তীর সিমানা (ফোরসোর) বিশেষ করে বন্দর এলাকায় বাইরে থাককে ৫ ফুট এবং ভিতরে থাকবে ৩০ ফুট । এছাড়াও উঁচু জোয়ারকালীন পানির সর্বশেষ যে সিমানা থাকবে তার পর থেকে ৫০ ফুট এর মধ্যে কেউ প্রবেশ করলে তাকে অনুপ্রবেশকারী বলা হবে। ফোরসোর আইন অনুযায়ী এই সিমানার মধ্যে সরকার বন্তোবস্ত দিতে পারে না।

নদ-নদীর তীরভূমির মাটি কেটে বাঁধ দেওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) বরিশাল বিভাগীয় সমন্বয়কারী লিংকন বায়েন বলেন, ‘নদ-নদী ও প্রবাহমান খালের পাড়ের তীর ভূমি থেকে মাটি কেটে এভাবে বাঁধ নির্মাণ কেউ করতে পারেনা। এটা আইনগতভাবে বৈধ নয়।’ ব্যক্তিগত লাভের আশায় বন্দোবস্তের মাধ্যমে নদী তীরভূমিতে বাঁধ দেওয়া হয়েছে। তবে পরবর্তীতে ভূমি কার্যালয় থেকে স্বারকের মাধ্যমে বেশ কিছু বন্দোবস্ত বাতিল করেছে। এখন বাঁধ কেটে নদীর তীরভূমি পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে গলাচিপা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ নাছিম রেজা বলেন, নদীর তীরভূমির মাটি কেটে বাঁধ দেওয়ার খবর তারা জানতেন না। তবে বিষয়টি জানার পর নদীর তীরভূমি থেকে মাটি কাটা বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, নদীর তীরে বেরিবাঁধ দেয়ার কোনা সুযোগ নেই। স্থানীয় কৃষকদের অস্থায়ীভাবে তরমুজ চাষের জন্য নদীর চরের কিছু জমি লীজ দেয়া হয়েছিল। তরমুজ ফলন সংগ্রহ শেষে ওই বেড়িবাঁধ অপসারনের কথা। বিষয়টিতে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শরণখোলা হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীর ভিড়, চিকিৎসা দিতে হিমশিম চিকিৎসক-নার্সরা

ছবি

সিলেটে আর্ন্তজাতিক যোগ দিবস উপলক্ষ্যে প্রস্তুতিমূলক যোগ সেশন অনুষ্ঠিত

পুলিশবাহী ট্রাককে ড্রাম ট্রাকের ধাক্কা, আহত ১৫ পুলিশ সদস্য, গ্রেফতার-১

নোয়াখালীর ধর্ষণের শিকার জমজ ২ বোনের পুনর্বাসন ও আইনি সহায়তা দিচ্ছেন তারেক রহমান

ছবি

দশমিনায় বোরোর বাম্পার ফলনে স্বপ্ন বুনছে কৃষক

পোরশায় ভাইবোনের মরদেহ উদ্ধার

ভোলায় পুকুরে ডুবে ভাইবোনের মৃত্যু

কালিয়াকৈরে শিশু ধর্ষণ চেষ্টায় যুবক আটক

মৌলভীবাজারে দুষ্কৃতকারীর হাতে আইনজীবী খুন

বাউফলে ট্রলির ধাক্কায় বাইক আরোহীর মৃত্যু

ছবি

বেদে পল্লীতে যুবক হত্যার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ

আট দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি

চুয়াডাঙ্গায় অস্ত্রসহ ডাকাত গ্রেপ্তার

সাটুরিয়ায় স্কুলছাত্রী ধর্ষণ, যুবক গ্রেপ্তার

চট্টগ্রামে রেলওয়ের উদ্যোগে বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযান

এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রের ১শ গজের মধ্যে অবৈধ বাণিজ্যমেলা

আদমদীঘিতে মাছের খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি, বন্ধ হয়ে যাচ্ছে একের পর এক খামার

প্যালেস্টাইনে ইসরায়েলের গণহত্যার প্রতিবাদে সারাদেশে বিক্ষোভ

ট্রান্সফর্মার চুরির দায়ে পলাশবাড়ীর নেসকো আবাসিক প্রকৌশলী বরখাস্ত

মুন্সীগঞ্জে স্ত্রীকে খুন করে সন্তানদের নিয়ে স্বামী উধাও

অস্ত্রসহ তালিকাভুক্ত দুই সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার

ছবি

কক্সবাজারে ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতির বিক্ষোভ মিছিলে ভাঙচুর, আহত কয়েকজন পর্যটক

হাসপাতালের হিসাবরক্ষণ অফিস থেকে টাকা চুরি

চাঁদাবাজির অভিযোগে বিএনপি নেতাকে শোকজ

কটিয়াদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকট, সেবা ব্যাহত

বোয়ালখালীতে মদক ও অস্ত্রসহ ৪ সন্ত্রাসী আটক

নলছিটিতে একই গাছে ঝুলন্ত মা-ছেলের মরদেহ

মুন্সীগঞ্জে নিখোঁজ অটোচালকের মরদেহ উদ্ধার

সিরাজগঞ্জে দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় আটক ৪

ছবি

উত্তরাঞ্চলে কাঁচা মরিচের কেজি ১০ টাকা : চরম বিপাকে চাষিরা

ছবি

চিতলমারীতে ৪ তলা ভবনে আগুন, মৃত্যু ১

মহেশপুর সীমান্তে আটক ২ বাংলাদেশিকে ফেরত দিলো বিএসএফ

ছবি

চট্টগ্রাম সওজ অফিসে লিফলেট বিতরণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ

‘কেন্দ্রীয় কৃষক দল নেতাকে এমপি বানাতে একাট্টা’

কুষ্টিয়ায় ভাতের হোটেলের নামে দেহব্যবসা, পুড়িয়ে দিলো এলাকাবাসী

জুয়ার আসর উচ্ছেদ করতে গিয়ে হামলার শিকার পুলিশ

tab

সারাদেশ

গলাচিপায় নদীর তীর দখলের মহোৎসব

প্রতিনিধি, পটুয়াখালী

সোমবার, ০৭ এপ্রিল ২০২৫

পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার নদীর তীরের ভূমি দখলের চলছে মহোৎসব। দখলদাররা পুরাতন চর ও নদীর তীরে নতুন জেগে ওঠা চরের মাটি কেটে বাঁধ দিয়ে নিজেদের খেয়াল খুশিমতো দখল করে সেখানে তরমুজসহ বিভিন্ন কৃষি সবজীর আবাদ করে চরছে। আবার অনেকেই সেখানে নির্মাণ সামগ্রীর ভাগার হিসেবে ব্যবহার করে নিজেদের দখলে নিয়ে যাচ্ছে নদীর তীরভূমি। এসব দখল প্রক্রিয়ায় উপজেলা ভূমি কার্যালয়ের কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারীর সহযোগিতা রয়েছে বলে নানা অভিযোগ রয়েছে। এদিকে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) বরিশাল বিভাগীয় শাখা ও বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলর থেকে একটি প্রতিনিধি দল সমপ্রতি গলাচিপা রাবনাবাদ নদী তীরের মাটি কেটে দেয়া বাঁধের স্থান সরেজমিন পরিদর্শন করে নদীর তীরভূমি এভাবে দখল আইনসংঙ্গত নয় বলে মন্তব্য করেছেন।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, গলাচিপা উপজেলা শহরের লঞ্চঘাট সংলগ্ন রাবনাবাদ নদীর তীর ঘেঁসে চরের মাটি কেটে বাঁধ দেয়া হয়েছে। এভাবে গলাচিপার লঞ্চঘাট সংলগ্ন পূর্ব দিকে রাবনাবাদ নদীর তীরভূমি বাঁধ দিয়ে অধিকাংশ বেদখল হয়ে গেছে। চলতি মৌসুমে সেখানে তরমুজ চাষ করা হয়েছে। প্রকাশ্যে নদীর তীরের মাটি কেটে বাঁধ দিয়ে এভাবে নদীর চর দখল করলেও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন ধরনের বাঁধা দেয়া হয়নি।

চরের মাটি কেটে নদীর তীরভূমিতে বাঁধ দিয়ে তরমুজের আবাদ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এক তরমুজ চাষী জানান, গোলখালী ইউপি সদস্য তাসমিন আক্তার ঝুমুর উপজেলা প্রশাসন থেকে নদীর তীরের তিন একর জমি এ বছর বন্দোবস্ত নিয়ে তরমুজ চাষ করেছেন। তীরভূমির মাটি কেটে বাঁধ দেওয়া প্রসঙ্গে বলেন, বাঁধ না দিলে জোয়ারের পানিতে খেত নষ্ট হবে এ কারণে বাঁধ দিয়েছেন। কত বছরের জন্য এবং কত টাকা দিয়েছে জানতে চাইলে সাঈদ তালুকদার সঠিক কোন তথ্য দিতে অপরাগতা প্রকাশ করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন জানান, ভূমি কার্যালয়ের টাকা দিয়ে তাদের মৌসুমে তরমুজের আবাদ করতে হচ্ছে। তবে কত টাকা দিতে হচ্ছে তা বলতে অপরাগতা প্রকাশ করেন তিনি।

এদিকে গলাচিপার নদী দখল করে চলছে মার্কেট নির্মাণ’ শিরোনামে ২০০৯ সালের ২১ আগষ্ট বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশের পর ওই বছরই ১৬ নভেম্বর নৌপরিবহন মন্ত্রী তার মন্ত্রনালয়ের সচিবকে রাবনাবাদ নদীর তীর অবৈধভাবে দখল ও ভরাটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে ২০১০ সালের ৭ জানুয়ারি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের নদী রক্ষাবিষয়ক কমিটির জাতীয় ট্যাক্সফোর্সের বৈঠকে গলাচিপার রাবনাবাদ নদীর অবৈধস্থাপনা নির্মাণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া এবং অবৈধ স্থাপনা ভেঙে দখলমুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে রাবনাবাদ নদীর তীরভূমি দখলমুক্ত হলেও দীর্ঘদিন পর ধীবে ধীরে আবারো রাবনাবাদ নদী বেদখল হয়ে যাচ্ছে। তবে এবার নদীর তীরভূমি দখল হচ্ছে বন্দোবস্ত নিয়ে ।

এদিকে নদীর তীরভূমি বন্দোবস্ত ও মাটি কেটে বাঁধ দিয়ে দখলের বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে উপজেলা ভূমি কার্যালয়ের সার্ভেয়ার হারুন-অর-রশিদ জানায়, বিষয়টি তাদের জানা নেই। তবে ইতিমধ্যে বেশ কিছু বন্দোবস্ত বাতিল করা হয়েছে। তিনি জানান, গলাচিপা ভূমি কার্যালয় থেকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি এক নোটিশে গলাচিপা খেয়াঘাট ও লঞ্চঘাট সংলগ্ন ১০৯ নং জেএলভূক্ত বদরপুর মৌজার ১ নং খাস খতিয়ানের জমির বিপরীতে খাস (রাজস্ব) আদায় সাপেক্ষে মো, আব্বাস হাওলাদার, দিপঙ্কর ও সোহেল শাহ কামাল গাজী, মো, বাহাদুর শাহ গংদের অনুকূলে প্রদানকৃত খাসজমি ব্যবহারের অনুমতিপত্র বাতিল করা হয়েছে।

তবে ভূমি কার্যালয় থেকে কয়েকজনের বন্দোবস্ত কাগজে কলমে বাতিল করলেও দখলমুক্ত হয়নি নদীর তীর। ইতিমধ্যে এই জমিতে আবাদ করা তরমুজ উঠে গেছে। কিন্তু নদীর তীরভূমির বাঁধ এখনও অপসারন করা হয়নি। দখলমুক্ত হয়নি নদীর তীর।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. রফিকুল আলম বলেন, নদীর তীর সিমানা (ফোরসোর) বিশেষ করে বন্দর এলাকায় বাইরে থাককে ৫ ফুট এবং ভিতরে থাকবে ৩০ ফুট । এছাড়াও উঁচু জোয়ারকালীন পানির সর্বশেষ যে সিমানা থাকবে তার পর থেকে ৫০ ফুট এর মধ্যে কেউ প্রবেশ করলে তাকে অনুপ্রবেশকারী বলা হবে। ফোরসোর আইন অনুযায়ী এই সিমানার মধ্যে সরকার বন্তোবস্ত দিতে পারে না।

নদ-নদীর তীরভূমির মাটি কেটে বাঁধ দেওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) বরিশাল বিভাগীয় সমন্বয়কারী লিংকন বায়েন বলেন, ‘নদ-নদী ও প্রবাহমান খালের পাড়ের তীর ভূমি থেকে মাটি কেটে এভাবে বাঁধ নির্মাণ কেউ করতে পারেনা। এটা আইনগতভাবে বৈধ নয়।’ ব্যক্তিগত লাভের আশায় বন্দোবস্তের মাধ্যমে নদী তীরভূমিতে বাঁধ দেওয়া হয়েছে। তবে পরবর্তীতে ভূমি কার্যালয় থেকে স্বারকের মাধ্যমে বেশ কিছু বন্দোবস্ত বাতিল করেছে। এখন বাঁধ কেটে নদীর তীরভূমি পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে গলাচিপা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ নাছিম রেজা বলেন, নদীর তীরভূমির মাটি কেটে বাঁধ দেওয়ার খবর তারা জানতেন না। তবে বিষয়টি জানার পর নদীর তীরভূমি থেকে মাটি কাটা বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, নদীর তীরে বেরিবাঁধ দেয়ার কোনা সুযোগ নেই। স্থানীয় কৃষকদের অস্থায়ীভাবে তরমুজ চাষের জন্য নদীর চরের কিছু জমি লীজ দেয়া হয়েছিল। তরমুজ ফলন সংগ্রহ শেষে ওই বেড়িবাঁধ অপসারনের কথা। বিষয়টিতে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

back to top