alt

সারাদেশ

তিস্তা-যমুনার ভাঙনে বাড়ছে বালু চর, হ্র্রাস পাচ্ছে আবাদি জমি

প্রতিনিধি, গাইবান্ধা : শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫

গাইবান্ধা : চরের বালু সরিয়ে ধান রোপণ করা হচ্ছে -সংবাদ

প্রতিনিয়তি নদীভাঙন তিস্তা-যুমনায় বাড়ছে বালু চরে সংখ্যা, হ্রাস পাচ্ছে আবাদি জমি। আর এর প্রভাব পড়ছে কৃষিনির্ভর পরিবারের জীবন জীবিকায়। বেসরকারি সংস্থা গণউন্নয়ন কেন্দ্র (জিইউকে) এর তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, যমুনার চর জরিপ অনুযায়ী দুই দশক আগে গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, রংপুর, লালমনিরহাট, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, জামালপুর জেলায় চর সংখ্যা ছিল ৯শ’ ৮৬টি। বর্তমানে চর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে প্রায় ১১শ’। তবে শতাধিক চরের নাম থাকলেও বসতি নেই। প্রতিনিয়ত নদীভাঙনে চরের সংখ্যা বাড়ছে এবং নদীর তলদেশে ভরাট হয়ে বালু চরে পরিণত হচ্ছে। এতে করে আবাদি জমি ভেঙে বালুতে পরিণত হয়।

বন্যা পরবর্তী তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র যমুনা চরের সেচ সুবিধা না থাকায় অন্ততপক্ষে ২০ হাজার হেক্টর জমি পতিত রয়েছে। এদিকে, পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়া, গভীর নলকূপ সুবিধা. ডিজেল মূল্য বৃদ্ধি, নাব্যসংকট ও প্রযুক্তির ব্যবহার না থাকায় এমন পরিস্থিতি রয়েছে বলে জানান চরাঞ্চলের চাষিরা।

গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার গাবগাছি গ্রামের চাষি নুর ইসলাম জানান, চার বিঘা জমির মধ্যে এক বিঘা জমিতে মরিচের চাষ করতে পেরেছি। অন্যজমিগুলো বালুময় হওয়ায় সেচ সুবিধা না থাকায় পতিত আছে। তিনি বলেন, পানির ব্যবস্থা থাকলে পতিত জমিতে ভুট্টা, মরিচ চাষাবাদ করা যেতো।

ফুলছড়ি উপজেলার দক্ষিণ খাটিয়ামারী গ্রামের আবু হানিফ মিয়া জানান, চরের বেশিরভাগ এলাকা বেলে দো-আঁশ মাটি। একারণে জমিতে পানিও বেশি লাগে। শস্য উৎপাদন খরচ বেশি হয়। তিনি বলেন, সরকারিভাবে সেচ সুবিধার ব্যবস্থা থাকলে এই পতিত থাকা জমিগুলো চাষাবাদের আওতায় নিয়ে আসা যেতো।

সাঘাটার সার বীজ ডিলার আখতারুজ্জামান বলেন, চরাঞ্চলের মাঠে এখন শস্য চাষাবাদে বেশ উপযোগী। জমির তুলনায় চাষির সংখ্যা অনেক কম। সেচ সুযোগ-সুবিধা না থাকায় বেশিরভাগ জমি অনাবাদি থাকে ।

সাঘাটার হাসিলকান্দি গ্রামের হাফিজার রহমান মোল্লা বলেন, বালু মাটি সরিয়ে জমিগুলো চাষাবাদ যোগ্য করা যায়, তবে শ্রমিকের অভাবে জমিগুলো শস্যচাষে উপযোগী করা যায় না। এছাড়াও জমিতে প্রচুর পরিমাণে পানির প্রয়োজন হওয়ায় পানি নির্ভর শস্য উৎপাদন করা সম্ভব হয়ে ওঠে না।

গাইবান্ধার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) একেএম হেদায়েতুল ইসলাম বলেন, চরের জমি শস্য চাষাবাদের জন্য উপযোগী। তবে, প্রযুক্তির প্রয়োগ খুব বেশি না থাকায় জমিগুলো চাষাবাদ উপযোগী করা যায় না।

ফুলছড়ি উপজেলা কৃষি অফিসার মিন্টু মিয়া বলেন, বন্যা পরবর্তীতে চরের জমিগুলো বালি পড়ে। একারণে চাষযোগ্য জমি নির্ণয় করা কঠিন হয়ে পড়ে। তিনি বলেন, সেচ ব্যবস্থা সচল করতে পাইপ ব্যবহার করা হচ্ছে।

গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক, খোরশেদ আলম জানান, পতিত জমি ব্যবহারে চাষীদের নিয়মিতভাবে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। তবে, পানি ও সেচ সমস্যা কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ব্যাপক সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও প্রযুক্তি নির্ভর না হওয়ায় কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।

কৃষি গবেষক মোজ্জাম্মেল হক জানান, চরের ব্যাপকভাবে মরিচ, ভুট্টা, বাদাম, বেগুন, পিঁয়াজসহ নানা ধরণের সবজি উৎপাদন হয়, যা দেশের সার্বিক খাদ্য চাহিদা পূরণে প্রভাব পড়ে। তবে, চরাঞ্চলে কৃষিতে প্রযুক্তির ব্যবহার তেমন না থাকায় চাষাবাদে মারাত্মক প্রভাব পড়ছে।

তিনি জানান যথাযথ পরিকল্পা গ্রহণ করে চরাঞ্চলের জমি সর্বাত্মক ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারলে দেশের শস্য ঘাটতি পূরণে যথেষ্ট প্রভাব রাখবে।

পানি গবেষক ড, আইনুন নিশাত জানান, নদীর স্বাভাবিক গতি প্রকৃতি পরিবর্তন হওয়ায় প্রভাব পড়ছে কৃষিতে। উজানের বালু এসে নদীর তলদেশে ভর্তি হয়ে অনাবাদি জমির পরিমান বাড়ছে।

এতে করে কৃষি নির্ভর মানুষজন আরো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হোচ্ছে। এজন্য তিনি নদীর গতি প্রকৃতি বুঝে ব্যবস্থাগ্রহণের পরামর্শ দেন।

ছবি

রামু থানার সাবেক এস আই শামসুল আরেফিন তোহার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী

ছবি

‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে যোগ না দেওয়ায় ২ পোশাক কারখানায় ভাঙচুর, ৪৫ জন আটক

গাজীপুরে ইসরাইল বিরোধী মিছিল থেকে কারখানায হামলা

ছবি

প্লাস্টিকসামগ্রীর দাপটে ঐতিহ্য হারাচ্ছে বাঁশ-বেত শিল্প

ছবি

উপমহাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন চা-বাগান মালনীছড়া

যশোরে সেপটিক ট্যাংক থেকে গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার ভিসেরা প্রতিবেদনের তথ্য ‘ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা’

তরমুজ লাল না হওয়ায় দুজনকে কুপিয়ে জখম

হবিগঞ্জে প্রতিবন্ধীকে ধর্ষণের অভিযোগে বৃদ্ধ গ্রেপ্তার

সুনামগঞ্জে জীবাশ্ম জ্বালানি পরিহার করে নবায়নযোগ্য শক্তিতে বিনিয়োগ দাবি

রাবির ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা শুরু, প্রতি আসনে লড়ছে ৭৬ জন

লিচু ও লাউয়ের নতুন পোকার জাত শনাক্ত

ছবি

নানা কারণে কদর কমেছে মাটির তৈরি তৈজসপত্রের

নারায়ণগঞ্জে ‘রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে’ কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ

আশুগঞ্জে কুচিয়া ধরতে গিয়ে নিখোঁজ করিমগঞ্জের শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার

মতলব উত্তরে গৃহবধূর আত্মহত্যা

মসজিদের পুরস্কার আত্মসাৎ, কেশবপুরে বিদ্যুতের পরিচালকের অপসারণ দাবি

ভাঙ্গায় পুকুর থেকে নারীর মরদেহ উদ্ধার

ছবি

একটি সেতুর জন্য চার জেলার লক্ষাধিক মানুষের হাহাকার

ছবি

চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির সব পদে বিএনপি-জামায়াতপন্থিদের প্রার্থিতা চূড়ান্ত, ভোট ছাড়াই নির্বাচিত

ছবি

ভালুকায় পানির স্তর নিচে নামায় নষ্ট হচ্ছে সাবমার্সিবল, বাড়ছে দুর্র্ভোগ

মিষ্টি আলুর আবাদ করে লাভবান নবীনগরের কৃষক

ঘিওরে বৈশাখের বাজার সামনে রেখে ব্যস্ততা বেড়েছে কুটির ও মৃৎশিল্পীদের

চাটখিলে লুটপাটের ঘটনায় পুলিশি ব্যবস্থা না নেয়ার অভিযোগ

দাউদকান্দিতে কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে সার-বীজ বিতরণ

জগন্নাথপুরে ৭ দোকান ছাই

ঝিকরগাছায় ছুরিকাঘাতে দুই কিশোর আহত

লক্ষ্মীপুর বিএনপিতে সংঘর্ষ, বহিষ্কার ১৬

আমতলীতে কলাগাছ কাটাকে কেন্দ্র করে নিহত এক

দামুড়হুদায় ভুট্টার বাম্পার ফলন চাষিদের মুখে হাসির ঝিলিক

বগুড়া সিটি করপোরেশন গঠনের প্রক্রিয়া শুরু

ঈশ্বরদী এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত, তিন ঘণ্টা বন্ধ ট্রেন চলাচল

সিলেটে ছাত্রলীগ নেতার হামলায় স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা হাসপাতালে

কমলগঞ্জে হত্যা চেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার এক

কালিয়াকৈরে প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণ চেষ্টায় যুবক আটক

নাটোরে আদালতের মালখানা থেকে ৬১ লাখ টাকাসহ আটক ৫

বোয়ালখালীতে প্রবাসীর ঘরে দুর্ধর্ষ ডাকাতি

tab

সারাদেশ

তিস্তা-যমুনার ভাঙনে বাড়ছে বালু চর, হ্র্রাস পাচ্ছে আবাদি জমি

প্রতিনিধি, গাইবান্ধা

গাইবান্ধা : চরের বালু সরিয়ে ধান রোপণ করা হচ্ছে -সংবাদ

শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫

প্রতিনিয়তি নদীভাঙন তিস্তা-যুমনায় বাড়ছে বালু চরে সংখ্যা, হ্রাস পাচ্ছে আবাদি জমি। আর এর প্রভাব পড়ছে কৃষিনির্ভর পরিবারের জীবন জীবিকায়। বেসরকারি সংস্থা গণউন্নয়ন কেন্দ্র (জিইউকে) এর তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, যমুনার চর জরিপ অনুযায়ী দুই দশক আগে গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, রংপুর, লালমনিরহাট, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, জামালপুর জেলায় চর সংখ্যা ছিল ৯শ’ ৮৬টি। বর্তমানে চর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে প্রায় ১১শ’। তবে শতাধিক চরের নাম থাকলেও বসতি নেই। প্রতিনিয়ত নদীভাঙনে চরের সংখ্যা বাড়ছে এবং নদীর তলদেশে ভরাট হয়ে বালু চরে পরিণত হচ্ছে। এতে করে আবাদি জমি ভেঙে বালুতে পরিণত হয়।

বন্যা পরবর্তী তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র যমুনা চরের সেচ সুবিধা না থাকায় অন্ততপক্ষে ২০ হাজার হেক্টর জমি পতিত রয়েছে। এদিকে, পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়া, গভীর নলকূপ সুবিধা. ডিজেল মূল্য বৃদ্ধি, নাব্যসংকট ও প্রযুক্তির ব্যবহার না থাকায় এমন পরিস্থিতি রয়েছে বলে জানান চরাঞ্চলের চাষিরা।

গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার গাবগাছি গ্রামের চাষি নুর ইসলাম জানান, চার বিঘা জমির মধ্যে এক বিঘা জমিতে মরিচের চাষ করতে পেরেছি। অন্যজমিগুলো বালুময় হওয়ায় সেচ সুবিধা না থাকায় পতিত আছে। তিনি বলেন, পানির ব্যবস্থা থাকলে পতিত জমিতে ভুট্টা, মরিচ চাষাবাদ করা যেতো।

ফুলছড়ি উপজেলার দক্ষিণ খাটিয়ামারী গ্রামের আবু হানিফ মিয়া জানান, চরের বেশিরভাগ এলাকা বেলে দো-আঁশ মাটি। একারণে জমিতে পানিও বেশি লাগে। শস্য উৎপাদন খরচ বেশি হয়। তিনি বলেন, সরকারিভাবে সেচ সুবিধার ব্যবস্থা থাকলে এই পতিত থাকা জমিগুলো চাষাবাদের আওতায় নিয়ে আসা যেতো।

সাঘাটার সার বীজ ডিলার আখতারুজ্জামান বলেন, চরাঞ্চলের মাঠে এখন শস্য চাষাবাদে বেশ উপযোগী। জমির তুলনায় চাষির সংখ্যা অনেক কম। সেচ সুযোগ-সুবিধা না থাকায় বেশিরভাগ জমি অনাবাদি থাকে ।

সাঘাটার হাসিলকান্দি গ্রামের হাফিজার রহমান মোল্লা বলেন, বালু মাটি সরিয়ে জমিগুলো চাষাবাদ যোগ্য করা যায়, তবে শ্রমিকের অভাবে জমিগুলো শস্যচাষে উপযোগী করা যায় না। এছাড়াও জমিতে প্রচুর পরিমাণে পানির প্রয়োজন হওয়ায় পানি নির্ভর শস্য উৎপাদন করা সম্ভব হয়ে ওঠে না।

গাইবান্ধার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) একেএম হেদায়েতুল ইসলাম বলেন, চরের জমি শস্য চাষাবাদের জন্য উপযোগী। তবে, প্রযুক্তির প্রয়োগ খুব বেশি না থাকায় জমিগুলো চাষাবাদ উপযোগী করা যায় না।

ফুলছড়ি উপজেলা কৃষি অফিসার মিন্টু মিয়া বলেন, বন্যা পরবর্তীতে চরের জমিগুলো বালি পড়ে। একারণে চাষযোগ্য জমি নির্ণয় করা কঠিন হয়ে পড়ে। তিনি বলেন, সেচ ব্যবস্থা সচল করতে পাইপ ব্যবহার করা হচ্ছে।

গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক, খোরশেদ আলম জানান, পতিত জমি ব্যবহারে চাষীদের নিয়মিতভাবে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। তবে, পানি ও সেচ সমস্যা কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ব্যাপক সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও প্রযুক্তি নির্ভর না হওয়ায় কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।

কৃষি গবেষক মোজ্জাম্মেল হক জানান, চরের ব্যাপকভাবে মরিচ, ভুট্টা, বাদাম, বেগুন, পিঁয়াজসহ নানা ধরণের সবজি উৎপাদন হয়, যা দেশের সার্বিক খাদ্য চাহিদা পূরণে প্রভাব পড়ে। তবে, চরাঞ্চলে কৃষিতে প্রযুক্তির ব্যবহার তেমন না থাকায় চাষাবাদে মারাত্মক প্রভাব পড়ছে।

তিনি জানান যথাযথ পরিকল্পা গ্রহণ করে চরাঞ্চলের জমি সর্বাত্মক ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারলে দেশের শস্য ঘাটতি পূরণে যথেষ্ট প্রভাব রাখবে।

পানি গবেষক ড, আইনুন নিশাত জানান, নদীর স্বাভাবিক গতি প্রকৃতি পরিবর্তন হওয়ায় প্রভাব পড়ছে কৃষিতে। উজানের বালু এসে নদীর তলদেশে ভর্তি হয়ে অনাবাদি জমির পরিমান বাড়ছে।

এতে করে কৃষি নির্ভর মানুষজন আরো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হোচ্ছে। এজন্য তিনি নদীর গতি প্রকৃতি বুঝে ব্যবস্থাগ্রহণের পরামর্শ দেন।

back to top