তিতাস এবং মেঘনা নবীনগর উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত দুটি প্রধান নদী। বিভিন্ন ফসলের জন্য নবীনগর উপজেলার মাটি অত্যন্ত উর্বর নদী অববাহিকায় কৃষক আবাদ করছে বাদাম, টমেটো, শাক সবজিসহ নানাবিধ ফসল। তারমধ্যে অন্যতম একটি ফসল হচ্ছে মিষ্টি আলু। উপজেলার সবচেয়ে বেশি মিষ্টি আলু আবাদ হয় নবীনগর পশ্চিম ইউনিয়নে। নবীপুর, লাপাং, চর লাপাং, দড়িলাপাং গ্রামের নদীর অববাহিকায় প্রায় ৫০ হেক্টর জমিতে মিষ্টি আলু আবাদ হয়েছে। তাছাড়া বীরগাঁও, কৃষ্ণনগর, সলিমগঞ্জ, পৌরসভার বিভিন্ন গ্রামে মিষ্টি আলু আবাদ হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায় চলতি মৌসুমে ২২৮ হেক্টর জমিতে মিষ্টি আলু আবাদ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় প্রায় ২৫ হেক্টর বেশি জমিতে আবাদ হয়েছে। কৃষকদের সরাসরি কৃষি বিভাগের কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্প, ফ্লাড রিকনস্ট্রাকশন ইমারজেন্সি এসিসট্যান্স প্রজেক্টের আওতায় সহায়তা করা হচ্ছে, দেওয়া হচ্ছে নতুন জাতের কাটিং এবং প্রযুক্তি, প্রশিক্ষণসহ নানান পরামর্শ। কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নবীনগর উপজেলায় গত তিন বছর ধরে আবাদ হচ্ছে জাপানি মিষ্টি আলু ওয়াকিনাওয়া”। রপ্তানি উপযোগী এই জাতের আলু ২০২১-২২ অর্থবছরে ০৫ জন কৃষকের মাঝে উৎপাদন করতে কৃষি বিভাগ থেকে কাটিং সরবরাহ করা হয়। চলতি বছরে গতবছরের এই জাতের মিষ্টি আলু দিয়ে চর লাপাং এবং নবীপুরে প্রায় ৩০ বিঘা জমিতে সম্প্রসারিত হয়েছে। স্থানীয় আলুর তুলনায় এই আলুর আকার বেশ বড় এবং ভিতরের অংশ কমলা রঙের। স্থানীয় কৃষক এবং ভোক্তা পর্যায়ে এই মিষ্টি আলু গাজর আলু হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে। নবীনগর উপজেলার কাটিং নিয়ে অনেক কৃষক মিষ্টি আলু আবাদ কওে আছ আশুগঞ্জ, বিজয়নগর উপজেলায়। চর লাপাং গ্রামের কৃষক অহিদ মিয়া জানান, অধিকাংশ জাত স্থানীয় জাত যা উৎপাদন কম হয়, ওয়াকিনওয়া জাতের মিষ্টি আলুর উৎপাদন প্রায় দ্বিগুণ, রোগ বালাই প্রকোপ কম। আমরা এই জাত নিয়ে আশাবাদী। কৃষি বিভাগ নিয়মিত মাঠে এসে তদারকি করছেন। নবীনগর পশ্চিম ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি অফিসার আকলিমা বেগম এনি জানান, স্থানীয় জাত পরিবর্তন করে আধুনিক জাত সম্প্রসারণ করছি, কাটিং উৎপাদন বৃদ্ধি করতে কৃষকদের নিয়ে সারাবছরই কাজ করতে হয়। যেহেতু ফসলটি নদীর অববাহিকায় হচ্ছে পরিবহন করা, সেচ দিতে সুবিধা হয়। বাজারদর মণ প্রতি গড়ে ১০০০ টাকা ধরে বিক্রি করা যাচ্ছে। নবীনগর পশ্চিম ইউনিয়নের নবীপুর গ্রামের কৃষক নুরুল আমীন জানান, আমরা এই মাটিতে মিষ্টি আলু আবাদ করে লাভবান। অল্প বিনিয়োগে ভালো ফলন পাচ্ছি। বিঘাপ্রতি ১০০ থেকে ১২৫ মণ পর্যন্ত ফলন পাচ্ছি। অন্য ফসলের তুলনায় উৎপাদন যেমন বেশি, বাজারদর ও ভালো। উপজেলা কৃষি অফিসার মো. জাহাঙ্গীর আলম লিটন জানান, মিষ্টি আলু খাদ্যচক্রে দারুণ সংযোজন। মিষ্টি আলু খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়, পুষ্টিগুণ ভালো, লোগ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স যুক্ত খাবার হওয়ায় সব বয়সের মানুষের জন্য এটি উপযোগী। মিষ্টি আলুর ক্ষেত্রে উৎপাদন বৃদ্ধি পায় এমন জাত যেমন বারি মিষ্টি আলু ৯, বারি মিষ্টি আলু ১৩, ওয়াকিনওয়া জাত এই উপজেলায় জনপ্রিয়। তারমধ্যে আমরা রপ্তানি উপযোগী ওয়াকিনওয়া নিয়ে বেশি কাজ করছি। এই মিষ্টিআলু সম্প্রসারিত হলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা যাবে। আগে সাধারণ মানের স্থানীয় জাতের মিষ্টি আলুর আবাদ করা হতো। সেগুলো তেমন পুষ্টিগুণসম্পন্ন ছিল না। ওয়াকিনাওয়া জাতের আলুতে প্রচুর পরিমাণ এন্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এটি ক্যান্সার প্রতিরোধ এবং উচ্চ রক্তচাপ ও রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা হ্রাস করে।
শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫
তিতাস এবং মেঘনা নবীনগর উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত দুটি প্রধান নদী। বিভিন্ন ফসলের জন্য নবীনগর উপজেলার মাটি অত্যন্ত উর্বর নদী অববাহিকায় কৃষক আবাদ করছে বাদাম, টমেটো, শাক সবজিসহ নানাবিধ ফসল। তারমধ্যে অন্যতম একটি ফসল হচ্ছে মিষ্টি আলু। উপজেলার সবচেয়ে বেশি মিষ্টি আলু আবাদ হয় নবীনগর পশ্চিম ইউনিয়নে। নবীপুর, লাপাং, চর লাপাং, দড়িলাপাং গ্রামের নদীর অববাহিকায় প্রায় ৫০ হেক্টর জমিতে মিষ্টি আলু আবাদ হয়েছে। তাছাড়া বীরগাঁও, কৃষ্ণনগর, সলিমগঞ্জ, পৌরসভার বিভিন্ন গ্রামে মিষ্টি আলু আবাদ হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায় চলতি মৌসুমে ২২৮ হেক্টর জমিতে মিষ্টি আলু আবাদ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় প্রায় ২৫ হেক্টর বেশি জমিতে আবাদ হয়েছে। কৃষকদের সরাসরি কৃষি বিভাগের কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্প, ফ্লাড রিকনস্ট্রাকশন ইমারজেন্সি এসিসট্যান্স প্রজেক্টের আওতায় সহায়তা করা হচ্ছে, দেওয়া হচ্ছে নতুন জাতের কাটিং এবং প্রযুক্তি, প্রশিক্ষণসহ নানান পরামর্শ। কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নবীনগর উপজেলায় গত তিন বছর ধরে আবাদ হচ্ছে জাপানি মিষ্টি আলু ওয়াকিনাওয়া”। রপ্তানি উপযোগী এই জাতের আলু ২০২১-২২ অর্থবছরে ০৫ জন কৃষকের মাঝে উৎপাদন করতে কৃষি বিভাগ থেকে কাটিং সরবরাহ করা হয়। চলতি বছরে গতবছরের এই জাতের মিষ্টি আলু দিয়ে চর লাপাং এবং নবীপুরে প্রায় ৩০ বিঘা জমিতে সম্প্রসারিত হয়েছে। স্থানীয় আলুর তুলনায় এই আলুর আকার বেশ বড় এবং ভিতরের অংশ কমলা রঙের। স্থানীয় কৃষক এবং ভোক্তা পর্যায়ে এই মিষ্টি আলু গাজর আলু হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে। নবীনগর উপজেলার কাটিং নিয়ে অনেক কৃষক মিষ্টি আলু আবাদ কওে আছ আশুগঞ্জ, বিজয়নগর উপজেলায়। চর লাপাং গ্রামের কৃষক অহিদ মিয়া জানান, অধিকাংশ জাত স্থানীয় জাত যা উৎপাদন কম হয়, ওয়াকিনওয়া জাতের মিষ্টি আলুর উৎপাদন প্রায় দ্বিগুণ, রোগ বালাই প্রকোপ কম। আমরা এই জাত নিয়ে আশাবাদী। কৃষি বিভাগ নিয়মিত মাঠে এসে তদারকি করছেন। নবীনগর পশ্চিম ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি অফিসার আকলিমা বেগম এনি জানান, স্থানীয় জাত পরিবর্তন করে আধুনিক জাত সম্প্রসারণ করছি, কাটিং উৎপাদন বৃদ্ধি করতে কৃষকদের নিয়ে সারাবছরই কাজ করতে হয়। যেহেতু ফসলটি নদীর অববাহিকায় হচ্ছে পরিবহন করা, সেচ দিতে সুবিধা হয়। বাজারদর মণ প্রতি গড়ে ১০০০ টাকা ধরে বিক্রি করা যাচ্ছে। নবীনগর পশ্চিম ইউনিয়নের নবীপুর গ্রামের কৃষক নুরুল আমীন জানান, আমরা এই মাটিতে মিষ্টি আলু আবাদ করে লাভবান। অল্প বিনিয়োগে ভালো ফলন পাচ্ছি। বিঘাপ্রতি ১০০ থেকে ১২৫ মণ পর্যন্ত ফলন পাচ্ছি। অন্য ফসলের তুলনায় উৎপাদন যেমন বেশি, বাজারদর ও ভালো। উপজেলা কৃষি অফিসার মো. জাহাঙ্গীর আলম লিটন জানান, মিষ্টি আলু খাদ্যচক্রে দারুণ সংযোজন। মিষ্টি আলু খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়, পুষ্টিগুণ ভালো, লোগ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স যুক্ত খাবার হওয়ায় সব বয়সের মানুষের জন্য এটি উপযোগী। মিষ্টি আলুর ক্ষেত্রে উৎপাদন বৃদ্ধি পায় এমন জাত যেমন বারি মিষ্টি আলু ৯, বারি মিষ্টি আলু ১৩, ওয়াকিনওয়া জাত এই উপজেলায় জনপ্রিয়। তারমধ্যে আমরা রপ্তানি উপযোগী ওয়াকিনওয়া নিয়ে বেশি কাজ করছি। এই মিষ্টিআলু সম্প্রসারিত হলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা যাবে। আগে সাধারণ মানের স্থানীয় জাতের মিষ্টি আলুর আবাদ করা হতো। সেগুলো তেমন পুষ্টিগুণসম্পন্ন ছিল না। ওয়াকিনাওয়া জাতের আলুতে প্রচুর পরিমাণ এন্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এটি ক্যান্সার প্রতিরোধ এবং উচ্চ রক্তচাপ ও রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা হ্রাস করে।