alt

সারাদেশ

কর্মের চাকা ঘুরালেও, ঘুরে না ভাগ্যের চাকা বিলুপ্তির পথে ভৈরব-কুলিয়ারচরের মৃৎশিল্প

প্রতিনিধি, ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) : মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫

ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) : তেজষপত্র তৈরিতে ব্যস্ত মৃৎশিল্পী -সংবাদ

সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘেমে-নেয়ে কর্মের চাকা ঘুরালেও, ভাগ্যের চাকা কিছুতেই ঘুরে না মৃৎশিল্পীদের! ফলে দিনে দিনে বিলুপ্তির পথে কিশোরগঞ্জের ভৈরব ও কুলিয়ারচরের এ শিল্পটি! শত বাধা ডিঙিয়ে যে কয়েকটি পরিবার এখনও তাদের বাপ-দাদার পেশাটিকে ভালোবেসে আগলে রেখেছেন, তাদের দৈন্যতা প্রকট। অর্থকষ্ট তাদের প্রতিদিনের সঙ্গী। এই সংকট থেকে উত্তরণ এবং দেশের এই ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে তাই তারা সরকারের আর্থিক সহায়তা প্রত্যাশা করছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চল্লিশ বছর যাবত মৃৎশিল্পের সাথে জড়িয়ে জীবন যাপন করছেন কুলিয়ারচরের পালপাড়ার মনোরঞ্জন পাল। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গলদগর্ম হয়ে কর্মের চাকা ঘুরিয়ে তৈরি করেন নানান মৃৎশিল্প। তার হাড্ডিসার দেহই বলে দেয়, ভালো নেই এই পেশাকে আঁকড়ে ধরে। কর্মের চাকা ঘুরিয়ে পণ্য তৈরি করলেও, সুদীর্ঘ চল্লিশ বছরেও এতোটুকু ঘুরেনি ভাগ্যের চাকা। কাটেনি সংসারের ঘোর অমানিশা। আসেনি স্বচ্ছলতা।

একই চিত্র ভৈরবের টিনপট্টি এলাকার ভানু লাল পালের। কাদা-মাটি আর রংয়ের মিশ্রণে সুনিপুন হাতে তিনি তৈরি করেন হরেক রকমের পণ্য। হাতি-ঘোড়া, গরু-মহিষ আর পেঁপে-আনারস আম-কাঁঠাল নিখুঁতভাবে তৈরির পর প্রয়োজনীয় রঙে অবিকল রূপ দিতে পারলেও, রাঙাতে পারেননি নিজের জীবন-সংসার।

যৌবনে বাবার কাছে হাতেঘড়ি হওয়ার পর ৫০ বছর ধরে এই শিল্পচর্চা করে গেলেও, পেটে-ভাতে দিন পার করা ছাড়া আর কিছুই করতে পারেননি। এক সময় তাঁর মা-বাবাসহ তারা ৪ ভাই এই কাজের সাথে জড়িত ছিলেন। তখন বেশ রমরমা ছিলো এই কর্মের। বর্তমানে তিনি তার দুই ছেলেকে নিয়ে কোনোভাবে টিকে আছেন।

স্বদেশ চন্দ্র পাল, সাগর চন্দ্র পাল ও শ্যামল চন্দ্র পাল জানান, মৃৎশিল্পের প্রয়োজনীয় উপকরণ মাটি ও রঙসহ লাকড়ি-কয়লার মূল্য বৃদ্ধির ফলে উৎপাদিত দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধির বিপরীতে প্লাস্টিকসহ অন্যান্য আধুনিক উপকরণে তৈরি করা মজবুত-টেকশয় পণ্যের মূল্য কম থাকায় মৃৎশিল্প থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন ক্রেতারা। ফলে তাদের তৈরি শিল্পের বাজারদর ও কদর কমতে কমতে এখন তলানিতে এসে ঠেকেছে। ফলে কঠোর শ্রমে তৈরি পণ্য নিয়ে বাজারে গিয়ে বিমুখ হয়ে ফিরতে হয়। তাই এমন চৈত্র-বৈশাখ মাসে মেলা-বান্নির ভরা মৌসুমেও ব্যস্ততা নেই পালপাড়ায়। ৮ থেকে ১০টি বাড়িতে কিছু কিছু তৈজসপত্র তৈরি করতে দেখা গেলেও, অন্যান্য বাড়িতে নেই কোনো কর্মযজ্ঞ।

তারপরও প্রয়োজনীয় মূলধন পেলে আধুনিক নকশা ও যন্ত্র কিনে এই ঐতিহ্য রক্ষায় প্রাণান্ত চেষ্টার আগ্রহের কথা জানালেন স্বদেশ চন্দ্র পাল ও সাগর চন্দ্র পাল। আর পেশায় না টিকতে পেরে ইতোমধ্যে ছেঁড়ে দিয়েছেন বলে জানালেন বৃদ্ধ শ্যামল চন্দ্র পাল।

কেউ ৬০-৭০, কেউবা ২০-৩০ বছর আগে পালবাড়ির বউ হিসেবে এসেছেন। সে থেকে স্বামীদের পাশে থেকে এই শিল্পকর্মটি করে যাচ্ছেন। শরীর-মন সাই দেয় না। এই কঠোর শ্রমের কর্ম আর ভালো লাগে না। তারপরও শুধুমাত্র পেটের দায়ে করেন। জানালেন, বৃদ্ধ পারুল রানী পাল ও সঞ্চিতা রানী পাল।

জন্মসূত্রে পালবাড়ির সন্তান হিসেবে বাধ্য হয়ে করে যাচ্ছেন এই কর্ম। তাদেরও অভিমত সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় আর্থিক সহায়তা পেলে ঘুরে দাঁড়াবে এই শিল্প। উন্নতি হবে তাদের জীবন মানের, অভিমত জবা রানী পাল ও পূজা রানী পালের।

সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় দেশের হারানো ঐতিহ্য আর গৌরব রক্ষায় কতোই না উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় হরহামেশা। গ্রাম-বাংলার এই বিচ্ছেদ্য শিল্প রক্ষায়ও সরকার এগিয়ে আসবে বলে প্রত্যাশা স্থানীয়দের।

স্ত্রীর পুতার আঘাতে স্বামীর মৃত্যু

দুই জেলায় বজ্রপাতে ২ জনের মৃত্যু

৫ জেলায় সড়কে নিহত ১০

দুই জেলায় ২ মরদেহ উদ্ধার

চট্টগ্রামে আগুনে পুড়ল কার্টনের গুদাম

সদর হাসপাতালে দেড় মাস ধরে বন্ধ এক্স-রে সেবা

স্কুলছাত্রীকে হত্যার প্রতিবাদে অভিযুক্তের বাড়িতে আগুন

প্রেমের ফাঁদে ফেলে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ, প্রেমিক আটক

ভারতে অনুপ্রবেশকালে দুই বাংলাদেশি আটক

মেজর পরিচয় দেয়া প্রতারক আটক

প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণ, কিশোর গ্রেপ্তার

মাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা, ছেলে গ্রেপ্তার

বড় ভাইয়ের হাতুড়ির আঘাতে ছোট ভাই নিহত

ছবি

পৌরসভার ওয়েস্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে আবর্জনা পুড়িয়ে বিষ ছড়ায় স্কেইট

মুন্সীগঞ্জে স্ত্রীকে খুন করে সন্তান নিয়ে উধাও

সুনামগঞ্জে বোরো সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা বৃদ্ধির দাবি

বর্ষবরণ বিতর্কে জড়ালেন বেতাগীর ইউএনও

ছবি

মৌলভীবাজারে কৃষিজমি থেকে মাটি কাটার মহোৎসব চলছেই

ভোলায় যৌথবাহিনীর অভিযানে ইয়াবা ধ্বংস

কুড়িগ্রামে ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি গ্রেপ্তার

ছবি

বদলগাছীতে বীজ ও সার বিতরণ

মির্জাগঞ্জে বজ্রপাতে কৃষকের মৃত্যু

ছবি

সাতক্ষীরায় তিন বছরে ৭৭ হাজার টন বাগদা চিংড়ি উৎপাদন

ছবি

মহাদেবপুরে ইজারার মেয়াদ শেষ হলেও বন্ধ হয়নি বালু উত্তোলন ও বিক্রি

আমদানি বন্ধের অজুহাত বেড়েছে চালের দাম, বিপাকে পাইকাররা

ছবি

কেশবপুরে বিল সেচে বোরো আবাদ

শেরপুর কারাগারের পলাতক আসামি টঙ্গীতে গ্রেপ্তার

ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ব্যবসায়ীর স্বপ্ন ছাই

সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল নিয়োগে দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে দুদক

এলজিইডি দুর্নীতিকাণ্ডে জড়িত ৫ কর্মকর্তা গ্রেপ্তার

ছবি

বাগমারার কুম্ভীকা আলু রপ্তানি হচ্ছে বিদেশে

ছবি

পাহাড়ে পাঁচ চবি শিক্ষার্থী অপহরণ: উদ্ধারে যৌথ বাহিনীর অভিযান

ছবি

মেঘনা সেতুতে ট্রাক উল্টে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৩ ঘণ্টার যানজট

ছবি

পালাতে গিয়ে উড়ে গেল বাসের ছাদ, পাঁচ কিলোমিটার চালিয়ে নিয়ে গেলেন চালক

ছবি

হবিগঞ্জে ট্রাক-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ৪

ছবি

চট্টগ্রামে মুজিবনগর দিবসের মিছিলে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান, গ্রেপ্তার ৫

tab

সারাদেশ

কর্মের চাকা ঘুরালেও, ঘুরে না ভাগ্যের চাকা বিলুপ্তির পথে ভৈরব-কুলিয়ারচরের মৃৎশিল্প

প্রতিনিধি, ভৈরব (কিশোরগঞ্জ)

ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) : তেজষপত্র তৈরিতে ব্যস্ত মৃৎশিল্পী -সংবাদ

মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫

সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘেমে-নেয়ে কর্মের চাকা ঘুরালেও, ভাগ্যের চাকা কিছুতেই ঘুরে না মৃৎশিল্পীদের! ফলে দিনে দিনে বিলুপ্তির পথে কিশোরগঞ্জের ভৈরব ও কুলিয়ারচরের এ শিল্পটি! শত বাধা ডিঙিয়ে যে কয়েকটি পরিবার এখনও তাদের বাপ-দাদার পেশাটিকে ভালোবেসে আগলে রেখেছেন, তাদের দৈন্যতা প্রকট। অর্থকষ্ট তাদের প্রতিদিনের সঙ্গী। এই সংকট থেকে উত্তরণ এবং দেশের এই ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে তাই তারা সরকারের আর্থিক সহায়তা প্রত্যাশা করছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চল্লিশ বছর যাবত মৃৎশিল্পের সাথে জড়িয়ে জীবন যাপন করছেন কুলিয়ারচরের পালপাড়ার মনোরঞ্জন পাল। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গলদগর্ম হয়ে কর্মের চাকা ঘুরিয়ে তৈরি করেন নানান মৃৎশিল্প। তার হাড্ডিসার দেহই বলে দেয়, ভালো নেই এই পেশাকে আঁকড়ে ধরে। কর্মের চাকা ঘুরিয়ে পণ্য তৈরি করলেও, সুদীর্ঘ চল্লিশ বছরেও এতোটুকু ঘুরেনি ভাগ্যের চাকা। কাটেনি সংসারের ঘোর অমানিশা। আসেনি স্বচ্ছলতা।

একই চিত্র ভৈরবের টিনপট্টি এলাকার ভানু লাল পালের। কাদা-মাটি আর রংয়ের মিশ্রণে সুনিপুন হাতে তিনি তৈরি করেন হরেক রকমের পণ্য। হাতি-ঘোড়া, গরু-মহিষ আর পেঁপে-আনারস আম-কাঁঠাল নিখুঁতভাবে তৈরির পর প্রয়োজনীয় রঙে অবিকল রূপ দিতে পারলেও, রাঙাতে পারেননি নিজের জীবন-সংসার।

যৌবনে বাবার কাছে হাতেঘড়ি হওয়ার পর ৫০ বছর ধরে এই শিল্পচর্চা করে গেলেও, পেটে-ভাতে দিন পার করা ছাড়া আর কিছুই করতে পারেননি। এক সময় তাঁর মা-বাবাসহ তারা ৪ ভাই এই কাজের সাথে জড়িত ছিলেন। তখন বেশ রমরমা ছিলো এই কর্মের। বর্তমানে তিনি তার দুই ছেলেকে নিয়ে কোনোভাবে টিকে আছেন।

স্বদেশ চন্দ্র পাল, সাগর চন্দ্র পাল ও শ্যামল চন্দ্র পাল জানান, মৃৎশিল্পের প্রয়োজনীয় উপকরণ মাটি ও রঙসহ লাকড়ি-কয়লার মূল্য বৃদ্ধির ফলে উৎপাদিত দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধির বিপরীতে প্লাস্টিকসহ অন্যান্য আধুনিক উপকরণে তৈরি করা মজবুত-টেকশয় পণ্যের মূল্য কম থাকায় মৃৎশিল্প থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন ক্রেতারা। ফলে তাদের তৈরি শিল্পের বাজারদর ও কদর কমতে কমতে এখন তলানিতে এসে ঠেকেছে। ফলে কঠোর শ্রমে তৈরি পণ্য নিয়ে বাজারে গিয়ে বিমুখ হয়ে ফিরতে হয়। তাই এমন চৈত্র-বৈশাখ মাসে মেলা-বান্নির ভরা মৌসুমেও ব্যস্ততা নেই পালপাড়ায়। ৮ থেকে ১০টি বাড়িতে কিছু কিছু তৈজসপত্র তৈরি করতে দেখা গেলেও, অন্যান্য বাড়িতে নেই কোনো কর্মযজ্ঞ।

তারপরও প্রয়োজনীয় মূলধন পেলে আধুনিক নকশা ও যন্ত্র কিনে এই ঐতিহ্য রক্ষায় প্রাণান্ত চেষ্টার আগ্রহের কথা জানালেন স্বদেশ চন্দ্র পাল ও সাগর চন্দ্র পাল। আর পেশায় না টিকতে পেরে ইতোমধ্যে ছেঁড়ে দিয়েছেন বলে জানালেন বৃদ্ধ শ্যামল চন্দ্র পাল।

কেউ ৬০-৭০, কেউবা ২০-৩০ বছর আগে পালবাড়ির বউ হিসেবে এসেছেন। সে থেকে স্বামীদের পাশে থেকে এই শিল্পকর্মটি করে যাচ্ছেন। শরীর-মন সাই দেয় না। এই কঠোর শ্রমের কর্ম আর ভালো লাগে না। তারপরও শুধুমাত্র পেটের দায়ে করেন। জানালেন, বৃদ্ধ পারুল রানী পাল ও সঞ্চিতা রানী পাল।

জন্মসূত্রে পালবাড়ির সন্তান হিসেবে বাধ্য হয়ে করে যাচ্ছেন এই কর্ম। তাদেরও অভিমত সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় আর্থিক সহায়তা পেলে ঘুরে দাঁড়াবে এই শিল্প। উন্নতি হবে তাদের জীবন মানের, অভিমত জবা রানী পাল ও পূজা রানী পালের।

সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় দেশের হারানো ঐতিহ্য আর গৌরব রক্ষায় কতোই না উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় হরহামেশা। গ্রাম-বাংলার এই বিচ্ছেদ্য শিল্প রক্ষায়ও সরকার এগিয়ে আসবে বলে প্রত্যাশা স্থানীয়দের।

back to top