ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) : উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের মৌটুপী গ্রামে আধিপত্য কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষ -সংবাদ
ভৈরবে একই গ্রামের দুপক্ষের আদিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ৩০ জন আহত হয়েছে। ১৫ এপ্রিল মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের মৌটুপী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ভৈরব-কুলিয়ারচর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার নাজমুস সাকিব।
এদের মধ্যে পাভেল মৃধা (৩০), মিলন মিয় (৬০), তানিম মিয়া (২০), আলি আহমদ (৭৫), মাসুকুর মিয়া (৪৫), আঙ্গুর মিয়া (৬০), বুলবুল মিয়া (৩২), রুবেল পান্ডা (৩৫), কারণ মিয়া (১৯), তৌহিদ (২২) ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। সবাই গুরুত্বর আহত থাকায় প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সবাইকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা ও কিশোরগঞ্জ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসক ডা. মেহেদী হাসান।
জানা যায়, ৫৬ বছর যাবৎ চলছে ভৈরবে দুই বংশের দ্বন্দ্ব। বংশ দুটি হলো উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের মৌটুপি গ্রামে কর্তা বাড়ি ও সরকার বাড়ি। সরকার বাড়ি পক্ষে নেতৃত্ব দেন ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা সরকার শেফায়াত উল্লাহ। আরেক পক্ষ কর্তা বাড়ির নেতৃত্ব দেন সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপির নেতা তোফাজ্জল হোসেন। দুই বংশের দ্বন্দ্বে দুই পক্ষের খুন হয়েছে ১৪ জন। গত বছর ১৬ জুন ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে দুই বংশের মধ্যে সংঘর্ষে কর্তা বাড়ির নাদিম গুরুত্বর আহত হলে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৯ জুন চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মৃত্যুবরণ করেন।
৬ আগস্ট ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সাদেকপুরের মেন্দিপুর পূর্ব পাড়া এলাকায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়। ৭ আগস্ট একই ঘটনায় সংঘর্ষে টেটার আঘাতে জহিরুল্লাহ নামে একজন নিহত হয়।
এসব ঘটনায় উভয় পক্ষ মামলায় জামিন পেলেও সরকার শেফায়াত উল্লাহ বংশ বাড়িতে অবস্থান করলেও তোফাজ্জল চেয়ারম্যানের বংশ দীর্ঘদিন বাড়িতে যায়নি। ১৫ দিন আগে মৌটুপী গ্রামসহ আশপাশের গ্রামের মুরুব্বিদের নিয়ে একটি শান্তি কমিটি হয়। উভয় পক্ষ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলেও গত ১৫ এপ্রিল শেফায়েত উল্লাহ বংশ বাড়িতে গেলে দুপুরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়ায়। এতে উভয় পক্ষের নারী পুরুষসহ ৩০ জন আহত হয়।
এ বিষয়ে সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা তোফাজ্জল হোসেন বলেন, পূর্ব শত্রুতা চলছে বহু বছর যাবত। আমি অতিষ্ঠ হয়ে ভৈরব শহরে দীর্ঘদিন যাবত বসবাস করছি। দুই মাস আগে জামিনে বের হয়েও বাড়ি যায়নি। এলাকার শান্তি বজায় রাখতে স্থানীয় নেতাদের নিয়ে শান্তি কমিটি করে আজ বাড়ি যায়। আজকে অতর্কিতভাবে শেফায়াত গ্রুপ আমাদের পক্ষের মানুষদের ওপর হামলা করেছে।
এ বিষয়ে কথা বলতে শেফায়াত চেয়ারম্যানকে একাধিক ফোন দিলে তার ব্যবহৃত ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। এ বিষয়ে শেফায়েত চেয়ারম্যানের ভাই মো. আল আমিন বলেন, শান্তি কমিটি হওয়ার পর অন্যান্য গ্রামসহ স্থানীয় নেতাদের নিয়ে গ্রামে আসার কথা। তা না করে তারা ভোর থেকে এলাকায় আসা শুরু করে। তখন আমরা কোন কিছু বলেনি। সকাল গড়িয়ে দুপুর হলেই তারা আমাদের বংশের লোকদের উপর হামলা চালায়। আমাদের পক্ষের ৭ জন আহত হয়েছে।
ভৈরব-কুলিয়ারচর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার নাজমুস সাকিব জানান, মৌটুপি গ্রামের মানুষ বংশ পরায়নভাবে শত্রুতা, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে যুগ যুগ ধরে ঝগড়া সংঘর্ষ করছে। পুলিশও তাদের দমন করতে পারে না। আজকে দুই বংশের সংঘর্ষে খবর পেয়ে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। উভয় পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) : উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের মৌটুপী গ্রামে আধিপত্য কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষ -সংবাদ
বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫
ভৈরবে একই গ্রামের দুপক্ষের আদিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ৩০ জন আহত হয়েছে। ১৫ এপ্রিল মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের মৌটুপী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ভৈরব-কুলিয়ারচর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার নাজমুস সাকিব।
এদের মধ্যে পাভেল মৃধা (৩০), মিলন মিয় (৬০), তানিম মিয়া (২০), আলি আহমদ (৭৫), মাসুকুর মিয়া (৪৫), আঙ্গুর মিয়া (৬০), বুলবুল মিয়া (৩২), রুবেল পান্ডা (৩৫), কারণ মিয়া (১৯), তৌহিদ (২২) ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। সবাই গুরুত্বর আহত থাকায় প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সবাইকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা ও কিশোরগঞ্জ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসক ডা. মেহেদী হাসান।
জানা যায়, ৫৬ বছর যাবৎ চলছে ভৈরবে দুই বংশের দ্বন্দ্ব। বংশ দুটি হলো উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের মৌটুপি গ্রামে কর্তা বাড়ি ও সরকার বাড়ি। সরকার বাড়ি পক্ষে নেতৃত্ব দেন ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা সরকার শেফায়াত উল্লাহ। আরেক পক্ষ কর্তা বাড়ির নেতৃত্ব দেন সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপির নেতা তোফাজ্জল হোসেন। দুই বংশের দ্বন্দ্বে দুই পক্ষের খুন হয়েছে ১৪ জন। গত বছর ১৬ জুন ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে দুই বংশের মধ্যে সংঘর্ষে কর্তা বাড়ির নাদিম গুরুত্বর আহত হলে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৯ জুন চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মৃত্যুবরণ করেন।
৬ আগস্ট ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সাদেকপুরের মেন্দিপুর পূর্ব পাড়া এলাকায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়। ৭ আগস্ট একই ঘটনায় সংঘর্ষে টেটার আঘাতে জহিরুল্লাহ নামে একজন নিহত হয়।
এসব ঘটনায় উভয় পক্ষ মামলায় জামিন পেলেও সরকার শেফায়াত উল্লাহ বংশ বাড়িতে অবস্থান করলেও তোফাজ্জল চেয়ারম্যানের বংশ দীর্ঘদিন বাড়িতে যায়নি। ১৫ দিন আগে মৌটুপী গ্রামসহ আশপাশের গ্রামের মুরুব্বিদের নিয়ে একটি শান্তি কমিটি হয়। উভয় পক্ষ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলেও গত ১৫ এপ্রিল শেফায়েত উল্লাহ বংশ বাড়িতে গেলে দুপুরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়ায়। এতে উভয় পক্ষের নারী পুরুষসহ ৩০ জন আহত হয়।
এ বিষয়ে সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা তোফাজ্জল হোসেন বলেন, পূর্ব শত্রুতা চলছে বহু বছর যাবত। আমি অতিষ্ঠ হয়ে ভৈরব শহরে দীর্ঘদিন যাবত বসবাস করছি। দুই মাস আগে জামিনে বের হয়েও বাড়ি যায়নি। এলাকার শান্তি বজায় রাখতে স্থানীয় নেতাদের নিয়ে শান্তি কমিটি করে আজ বাড়ি যায়। আজকে অতর্কিতভাবে শেফায়াত গ্রুপ আমাদের পক্ষের মানুষদের ওপর হামলা করেছে।
এ বিষয়ে কথা বলতে শেফায়াত চেয়ারম্যানকে একাধিক ফোন দিলে তার ব্যবহৃত ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। এ বিষয়ে শেফায়েত চেয়ারম্যানের ভাই মো. আল আমিন বলেন, শান্তি কমিটি হওয়ার পর অন্যান্য গ্রামসহ স্থানীয় নেতাদের নিয়ে গ্রামে আসার কথা। তা না করে তারা ভোর থেকে এলাকায় আসা শুরু করে। তখন আমরা কোন কিছু বলেনি। সকাল গড়িয়ে দুপুর হলেই তারা আমাদের বংশের লোকদের উপর হামলা চালায়। আমাদের পক্ষের ৭ জন আহত হয়েছে।
ভৈরব-কুলিয়ারচর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার নাজমুস সাকিব জানান, মৌটুপি গ্রামের মানুষ বংশ পরায়নভাবে শত্রুতা, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে যুগ যুগ ধরে ঝগড়া সংঘর্ষ করছে। পুলিশও তাদের দমন করতে পারে না। আজকে দুই বংশের সংঘর্ষে খবর পেয়ে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। উভয় পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।