* দীর্ঘ যানজটে যাত্রীদের চরম ভোগান্তি, ফাঁকাগুলি ছুড়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক
৬ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে কুমিল্লায় পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে। এসময় জেলার বিভিন্ন এলাকার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরাও আন্দোলনে অংশ নেয়। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী মহাসড়কের জেলার কোটবাড়ি বিশ^রোড এলাকায় সমবেত হয়। একপর্যায়ে তারা মহাসড়কে বসে পড়ে। শিক্ষার্থীদের প্রায় আড়াই ঘন্টার অবরোধে মহাসড়কের উভয় লেনে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং উভয়দিকে অন্তত ২০ কিলোমিটার এলাকায় যানবাহন চলাচল স্থবির হয়ে পড়ে। তীব্র যানজটে শত শত যানবাহনের যাত্রীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। প্রচন্ড গরমে যানজটে কবলে পড়ে গাড়ির চালক-যাত্রীরা অসহনীয় দুর্ভোগের শিকার হন।
এদিকে অবরোধের খবর পেয়ে হাইওয়ে ও থানা পুলিশ এবং পরে সেনাবাহিনী অবরোধস্থলে আসে। এসময় জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও পুলিশের পক্ষ থেকে অবরোধ তুলে নেয়ার জন্য বারবার বলা হলেও শিক্ষার্থীরা অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার করেনি। এতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ধাওয়া দিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এসময় কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। এসময় লাঠিচার্জ ও ধাওয়া খেয়ে কয়েকজন আহত হয় এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দুই জনকে আটক করেছে বলে জানা গেছে। দুপুর ২টার দিকে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়ে আসে।
আন্দোলনকারী কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, বৈষম্যহীন বাংলাদেশে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের এসব দাবি যৌক্তিক। তাই আমাদের দাবিগুলো না মানলে আরও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।
কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক সার্জন ডা. আবদুল করিম খন্দকার বলেন, আমাদের এখানে আহত হয়ে কয়েকজন এসেছিলেন। তার মাঝে ফয়সাল নামের এক শিক্ষার্থী বেশি আহত হয়েছেন। অন্যরা রেজিস্ট্রিভুক্ত না করেই প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে যান। ফয়সালও সেবা নিয়ে চলে গেছেন।
এদিকে সেনাবাহিনীর কুমিল্লা সদর ক্যাম্প থেকে গণমাধ্যমে প্রেরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কুমিল্লা পলিটেকনিক ও এর অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠানের প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী পলিটেকনিক্যাল প্রতিষ্ঠানের প্রশিক্ষকদের নিয়োগ সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় প্রত্যাহার এবং ছয় দফা দাবিতে কুমিল্লা সদর উপজেলার কোটবাড়ি এলাকায় অবরোধ সৃষ্টি করে। প্রাথমিকভাবে অবরোধটি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোটবাড়ি বিশ্বরোড পর্যন্ত বিস্তৃত থাকলেও পরবর্তীতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক পর্যন্ত বিস্তৃতি লাভ করে। ২ ঘণ্টাব্যাপী এ অবরোধ কার্যক্রমে মহাসড়কে তীব্র যানজট ও জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয়। জেলা প্রশাসন, পুলিশ এবং টেকনিক্যাল বোর্ড কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ সত্ত্বেও অবরোধ কর্মসূচি চলমান থাকে এবং তা ক্রমান্বয়ে বিশৃঙ্খলায় রূপ নেয়। প্রাথমিকভাবে শান্তিপূর্ণ সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে অধিক মাত্রায় ক্ষয়ক্ষতি রোধ এবং জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অবরোধ ছত্রভঙ্গের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এরই প্রেক্ষিতে সেনাবাহিনীর টহল দল আকাশে ফাঁকা গুলির মাধ্যমে উত্তেজিত শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে। এতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়। অভিযান চলাকালীন অবরোধে নেতৃত্ব প্রদানের জন্য সাইমুন ইসলাম নোমান নামে এক ছাত্রকে গ্রেফতার করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।
ময়নামতি হাইওয়ে থানার ওসি মো. ইকবাল বাহার মজুমদার বলেন, আমরা যানজটে মানুষের ভোগান্তির বিষয়টি শিক্ষার্থীদের বুঝানোর চেষ্টা করেছি। এরপরও তারা সড়ক থেকে সরে যায়নি। পরে সেনাবাহিনীর সহায়তায় শিক্ষার্থীদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। এতে দুপুরের দিকে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সাইফুল মালিক বলেন, শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে তাদেরকে ক্যাম্পাসে ফিরে যাওয়ার কথা বললেও তারা মানেনি। পরে সেনাবাহিনী এসে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫
* দীর্ঘ যানজটে যাত্রীদের চরম ভোগান্তি, ফাঁকাগুলি ছুড়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক
৬ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে কুমিল্লায় পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে। এসময় জেলার বিভিন্ন এলাকার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরাও আন্দোলনে অংশ নেয়। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী মহাসড়কের জেলার কোটবাড়ি বিশ^রোড এলাকায় সমবেত হয়। একপর্যায়ে তারা মহাসড়কে বসে পড়ে। শিক্ষার্থীদের প্রায় আড়াই ঘন্টার অবরোধে মহাসড়কের উভয় লেনে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং উভয়দিকে অন্তত ২০ কিলোমিটার এলাকায় যানবাহন চলাচল স্থবির হয়ে পড়ে। তীব্র যানজটে শত শত যানবাহনের যাত্রীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। প্রচন্ড গরমে যানজটে কবলে পড়ে গাড়ির চালক-যাত্রীরা অসহনীয় দুর্ভোগের শিকার হন।
এদিকে অবরোধের খবর পেয়ে হাইওয়ে ও থানা পুলিশ এবং পরে সেনাবাহিনী অবরোধস্থলে আসে। এসময় জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও পুলিশের পক্ষ থেকে অবরোধ তুলে নেয়ার জন্য বারবার বলা হলেও শিক্ষার্থীরা অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার করেনি। এতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ধাওয়া দিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এসময় কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। এসময় লাঠিচার্জ ও ধাওয়া খেয়ে কয়েকজন আহত হয় এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দুই জনকে আটক করেছে বলে জানা গেছে। দুপুর ২টার দিকে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়ে আসে।
আন্দোলনকারী কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, বৈষম্যহীন বাংলাদেশে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের এসব দাবি যৌক্তিক। তাই আমাদের দাবিগুলো না মানলে আরও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।
কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক সার্জন ডা. আবদুল করিম খন্দকার বলেন, আমাদের এখানে আহত হয়ে কয়েকজন এসেছিলেন। তার মাঝে ফয়সাল নামের এক শিক্ষার্থী বেশি আহত হয়েছেন। অন্যরা রেজিস্ট্রিভুক্ত না করেই প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে যান। ফয়সালও সেবা নিয়ে চলে গেছেন।
এদিকে সেনাবাহিনীর কুমিল্লা সদর ক্যাম্প থেকে গণমাধ্যমে প্রেরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কুমিল্লা পলিটেকনিক ও এর অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠানের প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী পলিটেকনিক্যাল প্রতিষ্ঠানের প্রশিক্ষকদের নিয়োগ সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় প্রত্যাহার এবং ছয় দফা দাবিতে কুমিল্লা সদর উপজেলার কোটবাড়ি এলাকায় অবরোধ সৃষ্টি করে। প্রাথমিকভাবে অবরোধটি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোটবাড়ি বিশ্বরোড পর্যন্ত বিস্তৃত থাকলেও পরবর্তীতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক পর্যন্ত বিস্তৃতি লাভ করে। ২ ঘণ্টাব্যাপী এ অবরোধ কার্যক্রমে মহাসড়কে তীব্র যানজট ও জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয়। জেলা প্রশাসন, পুলিশ এবং টেকনিক্যাল বোর্ড কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ সত্ত্বেও অবরোধ কর্মসূচি চলমান থাকে এবং তা ক্রমান্বয়ে বিশৃঙ্খলায় রূপ নেয়। প্রাথমিকভাবে শান্তিপূর্ণ সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে অধিক মাত্রায় ক্ষয়ক্ষতি রোধ এবং জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অবরোধ ছত্রভঙ্গের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এরই প্রেক্ষিতে সেনাবাহিনীর টহল দল আকাশে ফাঁকা গুলির মাধ্যমে উত্তেজিত শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে। এতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়। অভিযান চলাকালীন অবরোধে নেতৃত্ব প্রদানের জন্য সাইমুন ইসলাম নোমান নামে এক ছাত্রকে গ্রেফতার করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।
ময়নামতি হাইওয়ে থানার ওসি মো. ইকবাল বাহার মজুমদার বলেন, আমরা যানজটে মানুষের ভোগান্তির বিষয়টি শিক্ষার্থীদের বুঝানোর চেষ্টা করেছি। এরপরও তারা সড়ক থেকে সরে যায়নি। পরে সেনাবাহিনীর সহায়তায় শিক্ষার্থীদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। এতে দুপুরের দিকে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সাইফুল মালিক বলেন, শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে তাদেরকে ক্যাম্পাসে ফিরে যাওয়ার কথা বললেও তারা মানেনি। পরে সেনাবাহিনী এসে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।