শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার বিলাসপুরে সংঘর্ষে শত শত ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা মামলায় কারাগারে আছেন বিলাসপুর ইউনিয়ন পরিষদের(ইউপি) চেয়ারম্যান কুদ্দুস বেপারী। তার মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। তার প্রতিষ্ঠিত বিলাসপুর কুদ্দুস বেপারী উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যানারে ওই মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
; বুধবার(১৬ এপ্রিল) শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ রেখে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা ওই কর্মসূচিতে অংশ নেন। অভিযোগ উঠেছে কুদ্দুস বেপারীর পরিবার বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাপ দিয়ে ওই মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে।
জাজিরা থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জাজিরার বিলাসপুরে দীর্ঘদিন যাবৎ সামাজিক অনুষ্ঠানে মন মত দাওয়াত না পাওয়া, চায়ের দোকানে কথা কাটাকাটি, খেলার মাঠে বাকবিতণ্ডার মত তুচ্ছ বিষয় সহ জমি সংক্রান্ত বিরোধ, পারিবারিক দন্দ্ব, গবাদি পশুর দ্বারা ফসলের ক্ষতি, রাজনৈতিক মতবিরোধ, চলাচলের সড়ক নিয়ে বিরোধ, বিচার শালিসে পক্ষপাতিত্ব, অপবাদ বা গুজব ছড়ানো, সামাজিক মাধ্যমে অপমানজনক মন্তব্য, ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে জয়-পরাজয়ের বিরোধ ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এলাকায় দুটি পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। এক পক্ষের নেতৃত্বে আছেন ইউপি চেয়ারম্যান কুদ্দুস বেপারী। আরেক পক্ষের নেতৃত্বে আছেন পরাজিত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী জলিল মাদবর। তারা দুজনই স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত।
ওই দুই পক্ষের সমর্থকেরা গত ৫ এপ্রিল এলাকায় সংঘর্ষে জড়ায়। তখন শতাধিক ককটেল বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। ওই ঘটনায় ১৫ জন আহত হন। তাদের মধ্যে একজনের হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং আরেকজনের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত সৃষ্টি হয়। তারা দুজন এখন ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ওই সংঘর্ষ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে জাজিরা থানায় বিস্ফোরক আইনে একটি মামলা দায়ের করে। ওই মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান কুদ্দুস বেপারীসহ ৮৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। পরে কুদ্দুস বেপারী গ্রেপ্তার হয়ে। বর্তমানে শরীয়তপুর জেলা কারাগারে রয়েছেন।
কুদ্দুস বেপারীর বাড়ি মুলাই বেপারী কান্দি গ্রামে। ২০০৪ সালে ওই এলাকায় তিনি নিজের নামে বিলাসপুর কুদ্দুস বেপারী উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। কুদ্দুস বেপারীর মুক্তির দাবিতে গতকাল ওই বিদ্যালয়ের ব্যানারে মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। বেলা ১১টার দিকে বিদ্যালয়ের মাঠে ও সড়কে ওই মানববন্ধন করা হয়। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক-কর্মচারী ও কুদ্দুস বেপারীর পরিবারের সদস্যরা অংশ নেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বি এম শাহজাহান কবির সংবাদকে বলেন, ‘‘একটি বেসরকারি টেলিভিশনের সংবাদে বলা হয়েছে, বিদ্যালয়ের কক্ষ ব্যবহার করে ককটেল তৈরি করা হয়। কোনো রকম প্রমাণ ছাড়া এমন তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। আমাদের বিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। আমরা ওই সংবাদের নিন্দা জানাতে মানববন্ধন করেছি। সেখানে কুদ্দুস বেপারীর পরিবারের সদস্যরা তার মুক্তি চেয়ে একটি ব্যানার নিয়ে দাঁড়িয়েছেন। আর মানববন্ধন করার কারণে শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ করা হয়নি।’’
কুদ্দুস বেপারীর মেয়ে মরিয়ম আক্তার অজান্তা মুঠোফোনে সংবাদকে বলেন, ৫ এপ্রিল সংঘর্ষের সময় আমার বাবা ঢাকায় ছিলেন। গত বছরের ৫ আগস্টের পর তিনি কারাগারে ছিলেন। জামিনে মুক্ত হয়ে তিনি ঢাকায় চলে যান, আর এলাকায় ফেরেননি। রাজনৈতিক কারণে তাকে ফাঁসানো হয়েছে। তার মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচিতে গ্রামের মানুষের সঙ্গে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা অংশগ্রহণ করেছেন।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে জাজিরা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকার্তা মো: সিরাদ্দৌলা সংবাদকে বলেন, মানববন্ধনের বিষয়ে আমাকে কিছু জানানো হয়নি। এবিষয়ে আমি অবগত নয়।
এ বিষয়ে জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাবেরী রায় সংবাদকে বলেন, বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ রেখে মামলার আসামির মুক্তি চেয়ে কর্মসূচি পালন করাটা ঠিক কাজ নয়। কোনো বিদ্যালয় এমন করে থাকলে, তাহলে আয়োজকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খতিয়ে দেখা হবে।
বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫
শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার বিলাসপুরে সংঘর্ষে শত শত ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা মামলায় কারাগারে আছেন বিলাসপুর ইউনিয়ন পরিষদের(ইউপি) চেয়ারম্যান কুদ্দুস বেপারী। তার মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। তার প্রতিষ্ঠিত বিলাসপুর কুদ্দুস বেপারী উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যানারে ওই মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
; বুধবার(১৬ এপ্রিল) শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ রেখে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা ওই কর্মসূচিতে অংশ নেন। অভিযোগ উঠেছে কুদ্দুস বেপারীর পরিবার বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাপ দিয়ে ওই মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে।
জাজিরা থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জাজিরার বিলাসপুরে দীর্ঘদিন যাবৎ সামাজিক অনুষ্ঠানে মন মত দাওয়াত না পাওয়া, চায়ের দোকানে কথা কাটাকাটি, খেলার মাঠে বাকবিতণ্ডার মত তুচ্ছ বিষয় সহ জমি সংক্রান্ত বিরোধ, পারিবারিক দন্দ্ব, গবাদি পশুর দ্বারা ফসলের ক্ষতি, রাজনৈতিক মতবিরোধ, চলাচলের সড়ক নিয়ে বিরোধ, বিচার শালিসে পক্ষপাতিত্ব, অপবাদ বা গুজব ছড়ানো, সামাজিক মাধ্যমে অপমানজনক মন্তব্য, ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে জয়-পরাজয়ের বিরোধ ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এলাকায় দুটি পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। এক পক্ষের নেতৃত্বে আছেন ইউপি চেয়ারম্যান কুদ্দুস বেপারী। আরেক পক্ষের নেতৃত্বে আছেন পরাজিত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী জলিল মাদবর। তারা দুজনই স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত।
ওই দুই পক্ষের সমর্থকেরা গত ৫ এপ্রিল এলাকায় সংঘর্ষে জড়ায়। তখন শতাধিক ককটেল বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। ওই ঘটনায় ১৫ জন আহত হন। তাদের মধ্যে একজনের হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং আরেকজনের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত সৃষ্টি হয়। তারা দুজন এখন ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ওই সংঘর্ষ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে জাজিরা থানায় বিস্ফোরক আইনে একটি মামলা দায়ের করে। ওই মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান কুদ্দুস বেপারীসহ ৮৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। পরে কুদ্দুস বেপারী গ্রেপ্তার হয়ে। বর্তমানে শরীয়তপুর জেলা কারাগারে রয়েছেন।
কুদ্দুস বেপারীর বাড়ি মুলাই বেপারী কান্দি গ্রামে। ২০০৪ সালে ওই এলাকায় তিনি নিজের নামে বিলাসপুর কুদ্দুস বেপারী উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। কুদ্দুস বেপারীর মুক্তির দাবিতে গতকাল ওই বিদ্যালয়ের ব্যানারে মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। বেলা ১১টার দিকে বিদ্যালয়ের মাঠে ও সড়কে ওই মানববন্ধন করা হয়। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক-কর্মচারী ও কুদ্দুস বেপারীর পরিবারের সদস্যরা অংশ নেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বি এম শাহজাহান কবির সংবাদকে বলেন, ‘‘একটি বেসরকারি টেলিভিশনের সংবাদে বলা হয়েছে, বিদ্যালয়ের কক্ষ ব্যবহার করে ককটেল তৈরি করা হয়। কোনো রকম প্রমাণ ছাড়া এমন তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। আমাদের বিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। আমরা ওই সংবাদের নিন্দা জানাতে মানববন্ধন করেছি। সেখানে কুদ্দুস বেপারীর পরিবারের সদস্যরা তার মুক্তি চেয়ে একটি ব্যানার নিয়ে দাঁড়িয়েছেন। আর মানববন্ধন করার কারণে শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ করা হয়নি।’’
কুদ্দুস বেপারীর মেয়ে মরিয়ম আক্তার অজান্তা মুঠোফোনে সংবাদকে বলেন, ৫ এপ্রিল সংঘর্ষের সময় আমার বাবা ঢাকায় ছিলেন। গত বছরের ৫ আগস্টের পর তিনি কারাগারে ছিলেন। জামিনে মুক্ত হয়ে তিনি ঢাকায় চলে যান, আর এলাকায় ফেরেননি। রাজনৈতিক কারণে তাকে ফাঁসানো হয়েছে। তার মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচিতে গ্রামের মানুষের সঙ্গে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা অংশগ্রহণ করেছেন।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে জাজিরা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকার্তা মো: সিরাদ্দৌলা সংবাদকে বলেন, মানববন্ধনের বিষয়ে আমাকে কিছু জানানো হয়নি। এবিষয়ে আমি অবগত নয়।
এ বিষয়ে জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাবেরী রায় সংবাদকে বলেন, বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ রেখে মামলার আসামির মুক্তি চেয়ে কর্মসূচি পালন করাটা ঠিক কাজ নয়। কোনো বিদ্যালয় এমন করে থাকলে, তাহলে আয়োজকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খতিয়ে দেখা হবে।