সুনামগঞ্জে চলতি মৌসুমে সরকারিভাবে বোরো ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্র বৃদ্ধির দাবি জানানো হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে পুরাতন বাসস্টেশনের দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানায় বিএনপি ও কৃষক দল।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, হাওর অধ্যুষিত সুনামগঞ্জ জেলা একটি বোরো প্রধান এলাকা। ২৬ লাখ জনসংখ্যা অধ্যুষিত এখানকার প্রায় ৭০ ভাগ মানুষ প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে বোরো চাষের ওপর নির্ভরশীল। নিম্বাঞ্চল হওয়ায় বছরের একবার মাত্র ধান আবাদের সুযোগ পান কৃষকের। এবং এই বোরো ধানকে কেন্দ্র করে তাদের জীবনের যাবতীয় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়। ২০২৫ বোরো মৌসুমে প্রায় সোয়া ২ লাখ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়েছে।
এ বছর ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিকটন। অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে এই জেলা থেকে জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তায় বিপুল পরিমাণ যোগান দিয়ে থাকে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সুনামগঞ্জ জেলায় বিপুল বোরো আবাদ ও উৎপাদনের বিপরীতে কৃষকের নিকট থেকে ধান সংগ্রহের পরিমাণ একেবারে নগণ্য। অথচ জেলায় মোট কার্ডধারী কৃষকের সংখ্যা ৩ লাখ ৬৫ হাজার ৭৭৭ জন। এবার সুনামগঞ্জ জেলায় কৃষক পর্যায় থেকে মাত্র ১৪ হাজার ৬০০ মেট্রিকটন ধান সরকারিভাবে সংগ্রহ করা হবে, যা বিগত বছরের তুলনায় অর্ধেকেরও কম। এই হিসেবে পৌন চার লাখ কার্ডধারী কৃষকের মধ্য থেকে মাত্র সাড়ে ১৪ হাজার কৃষক সরকারি গোদামে ধান সরবরাহের সুযোগ পাবেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, বছর বছর এই জেলায় ধানের উৎপাদনের পরিমাণ বেড়েই চলছে। এই হিসেবে সাড়ে তিন লাখেরও বেশি কৃষকের মধ্যে একেবারে স্বল্পসংখ্যক সরকারিভাবে ধান সরবরাহের আওতায় আসবেন যা হাওর অধ্যুষিত পিছিয়ে পড়া একটি জেলার জন্য কিছুতেই কাম্য হতে পারে না। সেইসঙ্গে এমন উদ্যোগে বোরো ধান আবাদে কৃষকদের মাঝে অনিহা সৃষ্টি করবে বলে আমরা আশঙ্কিত। একইভাবে বিগত বছর মিলারদের কাছ ২৫ হাজার মেট্রিকটন চাল সংগ্রহ করা হয়েছে। এবারের সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা এখনও নির্ধারণ করা হয়নি। তবে এই অঞ্চলের মিলগুলোর বেশির ভাগ আতপ চাল উৎপাদন করায় চাল সংগ্রহের ক্ষেত্রে বিষয়টি নজরে রাখা প্রয়োজন যাতে সুযোগটির সুবিধা এষানকার কৃষকরা পান।
কৃষক পর্যায় থেকে বোরো ধান সংগ্রহের ক্ষেত্রে চার দফা দাবি তোলে বিএনপি ও কৃষক দল। সেগুলো হচ্ছে, হাওরাঞ্চলের প্রান্তিক কৃষেকের স্বার্থে চলতি বোরো ধান সংগ্রহ মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা কয়েকগুণ বাড়িয়ে সরকারিভাবে ধান বেশি করে ক্রয়ের উদ্যোগ নেয়া। অতিরিক্ত ধান গোদামজাত করতে প্রয়োজনে অন্য জেলার গোদামে পাঠানোর ব্যবস্থা করা। ফ্যাসিবাদ আমলে তৈরি কৃষিকার্ডগুলো পুনঃযাচাইয়ের উদ্যোগ নিতে হবে, যেগুলো অনেক ক্ষেত্রেই অকৃষক দলীয় কর্মীদের প্রদান করা হয়েছে। ধান-চাল ক্রয়ের ক্ষেত্রে হাওরের প্রকৃত প্রান্তিক কৃষদের অর্ন্তভুক্ত করা এবং ধান-চাল সরকারিভাবে সংগ্রহের ক্ষেত্রে কোনো সিন্ডিকেট যেন সুবিধা নিতে না পারে, সেই ব্যাপরে কর্তৃপক্ষকে সজাগ থাকা।
জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক আনিসুল হকের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আব্দুল ওয়াদুদের সঞ্চালনায় লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান জেলা বিএনপি স্বাক্ষরক্ষমতাপ্রাপ্ত সদস্য অ্যাডভোকেট আব্দুল হক।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপি নেতা মল্লিক মঈন উদ্দিন সোহেল, মাসুক আলম, শেরেনূর আলী, নূরুল ইসলাম নূরুল, মোনাজ্জির হোসেন সুজন, সাইফুল্লাহ হাসান জুনেদ, নজরুল ইসলাম, রাকাব উদ্দিন, আ ত ম মিসবাহ, মোর্শেদ আলম জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মুনাজ্জির হোসেন, সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর আলম, কৃষক দল নেতা সিরাজুল ইসলাম পলাশ, মুর্শেদ আলম, ফারুক আহমেদ লিলু, দিলু, মোহাম্মদ আলী, কালার চান, সুহেল মিয়া, তফাজ্জুল, সুজন মাহমুদ, রিপন, শাহজাহান, মন্টি প্রমুখ।
শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫
সুনামগঞ্জে চলতি মৌসুমে সরকারিভাবে বোরো ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্র বৃদ্ধির দাবি জানানো হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে পুরাতন বাসস্টেশনের দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানায় বিএনপি ও কৃষক দল।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, হাওর অধ্যুষিত সুনামগঞ্জ জেলা একটি বোরো প্রধান এলাকা। ২৬ লাখ জনসংখ্যা অধ্যুষিত এখানকার প্রায় ৭০ ভাগ মানুষ প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে বোরো চাষের ওপর নির্ভরশীল। নিম্বাঞ্চল হওয়ায় বছরের একবার মাত্র ধান আবাদের সুযোগ পান কৃষকের। এবং এই বোরো ধানকে কেন্দ্র করে তাদের জীবনের যাবতীয় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়। ২০২৫ বোরো মৌসুমে প্রায় সোয়া ২ লাখ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়েছে।
এ বছর ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিকটন। অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে এই জেলা থেকে জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তায় বিপুল পরিমাণ যোগান দিয়ে থাকে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সুনামগঞ্জ জেলায় বিপুল বোরো আবাদ ও উৎপাদনের বিপরীতে কৃষকের নিকট থেকে ধান সংগ্রহের পরিমাণ একেবারে নগণ্য। অথচ জেলায় মোট কার্ডধারী কৃষকের সংখ্যা ৩ লাখ ৬৫ হাজার ৭৭৭ জন। এবার সুনামগঞ্জ জেলায় কৃষক পর্যায় থেকে মাত্র ১৪ হাজার ৬০০ মেট্রিকটন ধান সরকারিভাবে সংগ্রহ করা হবে, যা বিগত বছরের তুলনায় অর্ধেকেরও কম। এই হিসেবে পৌন চার লাখ কার্ডধারী কৃষকের মধ্য থেকে মাত্র সাড়ে ১৪ হাজার কৃষক সরকারি গোদামে ধান সরবরাহের সুযোগ পাবেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, বছর বছর এই জেলায় ধানের উৎপাদনের পরিমাণ বেড়েই চলছে। এই হিসেবে সাড়ে তিন লাখেরও বেশি কৃষকের মধ্যে একেবারে স্বল্পসংখ্যক সরকারিভাবে ধান সরবরাহের আওতায় আসবেন যা হাওর অধ্যুষিত পিছিয়ে পড়া একটি জেলার জন্য কিছুতেই কাম্য হতে পারে না। সেইসঙ্গে এমন উদ্যোগে বোরো ধান আবাদে কৃষকদের মাঝে অনিহা সৃষ্টি করবে বলে আমরা আশঙ্কিত। একইভাবে বিগত বছর মিলারদের কাছ ২৫ হাজার মেট্রিকটন চাল সংগ্রহ করা হয়েছে। এবারের সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা এখনও নির্ধারণ করা হয়নি। তবে এই অঞ্চলের মিলগুলোর বেশির ভাগ আতপ চাল উৎপাদন করায় চাল সংগ্রহের ক্ষেত্রে বিষয়টি নজরে রাখা প্রয়োজন যাতে সুযোগটির সুবিধা এষানকার কৃষকরা পান।
কৃষক পর্যায় থেকে বোরো ধান সংগ্রহের ক্ষেত্রে চার দফা দাবি তোলে বিএনপি ও কৃষক দল। সেগুলো হচ্ছে, হাওরাঞ্চলের প্রান্তিক কৃষেকের স্বার্থে চলতি বোরো ধান সংগ্রহ মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা কয়েকগুণ বাড়িয়ে সরকারিভাবে ধান বেশি করে ক্রয়ের উদ্যোগ নেয়া। অতিরিক্ত ধান গোদামজাত করতে প্রয়োজনে অন্য জেলার গোদামে পাঠানোর ব্যবস্থা করা। ফ্যাসিবাদ আমলে তৈরি কৃষিকার্ডগুলো পুনঃযাচাইয়ের উদ্যোগ নিতে হবে, যেগুলো অনেক ক্ষেত্রেই অকৃষক দলীয় কর্মীদের প্রদান করা হয়েছে। ধান-চাল ক্রয়ের ক্ষেত্রে হাওরের প্রকৃত প্রান্তিক কৃষদের অর্ন্তভুক্ত করা এবং ধান-চাল সরকারিভাবে সংগ্রহের ক্ষেত্রে কোনো সিন্ডিকেট যেন সুবিধা নিতে না পারে, সেই ব্যাপরে কর্তৃপক্ষকে সজাগ থাকা।
জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক আনিসুল হকের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আব্দুল ওয়াদুদের সঞ্চালনায় লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান জেলা বিএনপি স্বাক্ষরক্ষমতাপ্রাপ্ত সদস্য অ্যাডভোকেট আব্দুল হক।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপি নেতা মল্লিক মঈন উদ্দিন সোহেল, মাসুক আলম, শেরেনূর আলী, নূরুল ইসলাম নূরুল, মোনাজ্জির হোসেন সুজন, সাইফুল্লাহ হাসান জুনেদ, নজরুল ইসলাম, রাকাব উদ্দিন, আ ত ম মিসবাহ, মোর্শেদ আলম জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মুনাজ্জির হোসেন, সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর আলম, কৃষক দল নেতা সিরাজুল ইসলাম পলাশ, মুর্শেদ আলম, ফারুক আহমেদ লিলু, দিলু, মোহাম্মদ আলী, কালার চান, সুহেল মিয়া, তফাজ্জুল, সুজন মাহমুদ, রিপন, শাহজাহান, মন্টি প্রমুখ।