alt

সারাদেশ

ডিমলায় দুই গ্রামবাসীর একমাত্র ভরসা ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো

প্রতিনিধি, ডিমলা (নীলফামারী) : রোববার, ২০ এপ্রিল ২০২৫

ডিমলা (নীলফামারী) : নাউতারা নদীর উপর ব্রিজ না থাকায় নিজ উদ্যোগে নির্মিত বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে এলাকাবাসী -সংবাদ

নীলফামারীর ডিমলায় ২ গ্রামের মানুষের চলাচলের রাস্তার নাউতারা নদী পারাপারে বাঁশের সাঁকোই এক মাত্র ভরসা। গত এক যুগ ধরে একটি ব্রীজ তৈরির স্বপ্ন দেখছেন এলাকাবাসি। নিজেদের উদ্যোগে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে ঝুঁকি নিয়েই প্রতিদিন পারাপার করছেন হাজারো মানুষ ও কোমল মতি স্কুল কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা।

সরেজমিনে উপজেলার নাউতারা ইউনিয়নের গাছবাড়ী এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, নাউতারা নদীবেষ্টিত ২ গ্রামের প্রায় ৩ হাজারেরও বেশি পরিবার বসবাস করে আসছে । এলাকাবাসি নিজেরাই চাঁদা তুলে, বাঁশসংগ্রহ করে পর্যায়ক্রমে বাঁশের সাঁকো (পুল) নির্মাণ করে ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো চলাচল করছেন। এ অবস্থা চলছে তাদের প্রায় গত ১ যুগ ধরে। নির্বাচন আসলে প্রতিনিধিদের আশ্বাস পেয়েছেন ভূড়ি ভূড়ি ব্রীজ নির্মাণের কিন্তু নির্বাচিত হলে ব্রীজ নির্মাণের ব্যাপারে কোন প্রতিনিধ মাথা ঘামায় না। এলাকাবাসি জানিয়েছেন আশ্বাস তো আশ্বাসেই থেকে যায় পূরণ হয়নি দীর্ঘদিনেও। প্রতিনিয়ত ঘটছে দূর্ঘটনা, দুর্ঘটনায় পতিত হয়ে অনেককে পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয়েছে । এলাকাবাসি অভিযোগ করে বলেন, অসহনীয় দুর্গতির কথা। ব্রীজ নির্মাণের জন্য বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত আবেদন করেও পাননি কোন কাঙ্খিত ফলাফল ।

জানা গেছে, ওই এলাকার সকলেই প্রায় নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারে লোকজন বসবাস করে আসছে দীর্ঘদিন যাবত। গ্রামের শতকরা ৯৫ ভাগ লোক কৃষিজাত পণ্য উৎপাদন করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। আর্থ সামাজিক উন্নয়নে এই এলাকার যোগাযোগ ব্যাবস্থার ক্ষেত্রে ব্রীজটি নির্মাণ করা হলে উল্লেখযোগ্য অবদান কথা থাকলেও কর্তৃপক্ষের উদ্যোগের অভাবে তা সম্ভবপর হয়ে ওঠেনি ।

যাতায়াতের সড়কটির মাঝখানে নাউতারা নদী প্রতিবন্ধকতা হওয়ায় জনদুর্ভাগ্যে পড়ে ওই এলাকার মানুষজন। তারপর থেকে নানা ফসল উৎপাদন করলেও যাতায়াত ও পরিবহনের প্রতিকূলতার কারণে ফসলের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না এই এলাকার কৃষকেরা। এতে কৃষকদের বছরের পর বছর একদিক দুর্বিসহ জীবনযাপন করছে অপরদিকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। জানা গেছে, বিগত বছরের নির্বাচনগুলোতে প্রার্থীরা প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচিত হলেও আজ পর্যন্ত প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে এগিয়ে আসেননি কোন জনপ্রতিনিধি।

উপজেলা সদর, উপজেলা হাসপাতাল, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ইউনিয়ন পরিষদ,হাট-বাজারসহ জেলার সংযোগের এক মাত্র চলাচলের সড়কের পথ এই ব্রীজটি । এই ব্রীজ নির্মাণ করা হলে এলাকার মানুষ এটি ব্যবহার করে খুব সহজেই যাতায়াত করতে পারবেন যেকোনো জায়গায়। চলবে যানবাহন বাড়বে আর্থসামাজিক উন্নয়ন। নিশ্চিত হবে ওই এলাকার উৎপাদিত কৃষি পণ্যের বাজারদর।

এলাকার স্থানীয় ব্যক্তি ইউনুস আলী বলেন, প্রতিদিন ওই সড়ক দিয়ে দুই গ্রামের স্কুল পড়ুয়া কোনলমতি শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয়ে যাওয়া আসা করে থাকে। আমরা অভিভাবকরা ছেলে মেয়েদের বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে দিয়ে বাড়িতে না ফেরা পর্যন্ত দুশ্চিন্তায় থাকি না জানি কোন দুর্ঘটনার সংবাদ আসে। আশপাশের এলাকার স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা পড়ুয়া শতাধিক শিক্ষার্থীসহ প্রতিদিন কমপক্ষে হাজারো মানুষজন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে । বর্ষা মৌসুমে নাউতারা নদীর বন্যায় এই অঞ্চলে পলি পরে জমির উর্বরতা বৃদ্ধি পায় কয়েক গুণ। ধান, গম, ভুট্টা, মরিচ, বাদাম, মিষ্টি আলু, গাজর, পেঁয়াজ, রসুন প্রভৃতি কৃষিপন্য উজাড় করে দেয় প্রকৃতি। সড়কে একটি ব্রিজের অভাবে বাজার মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে প্রায় প্রায় ১২ বছর যাবত। আরো জানান, বাজার মূল্য থেকে বঞ্চিত হন তা নয়, বর্ষা মৌসুমে শিশুদের এই ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের পুলের ওপর দিয়ে স্কুলে পাঠাতে ভয় হয়। তারা পানিতে পড়ে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

একই এলাকার পঞ্চম শ্রেণী পড়ুয়া শিক্ষার্থী মারুফ ও মমিনা সহ আরো একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে আমাদের বিদ্যালয় যেতে অনেক সমস্যা হয়। আমরা অনেক ঝুকি নিয়ে সাঁকো পাড় হয়ে বিদ্যালয়ে যাই। সড়কের ওই নদীর উপর একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবী জানাচ্ছি যাতে আমরা নির্দ্বিধায় স্কুল কলেজে যেতে পারি ।

ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা সহিমু্দ্দূন বলেন, শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের সাঁকো দিয়ে কোন রকম এই নদীটি পারাপার হলেও বর্ষাকাল বন্যার স্রোতে বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়। অনেক দুর্ঘটনাও ঘটে থাকে এখানে।

স্থানীয় বাসিন্দা গোলজার হোসেন,ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গত বছর আমার ছেলে সাঁকো থেকে পড়ে আহত হয়। আমরা অনেক কষ্ট করে যাতায়াত করি। কৃষকদের যত মালামাল এই ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার করতে হয়।

তিনি আরো বলেন, আমাদের দুঃখ-কষ্টের কথা কেউ শোনে না। বর্ষার সময় সাঁকোটি পাড় হওয়া অনেক কষ্টকর। ওই সময় এই নদীতে পানিতে টই টম্বুর হয়ে থাকে। থাকে অনেক স্রোত। তখন সাঁকোটি নড়বড়ে হয়ে যায়।

আমাদের কষ্ট কেউ বুঝে না। ১২ বছর থেকে শুনছি এখানে একটি ব্রীজ হবে। এখনো হলো না! আর হবে কি না, সেটাও জানি না!

স্থানীয় বাসিন্দ সাদ্দাম হোসেন বলেন, এখানে আমরা অনেক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। বৃহৎ একটি এলাকা আজ অবরুদ্ধ। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। সার্বিক উন্নয়ন থেকে আমরা বঞ্চিত। আমরা এখানে একটি ব্রীজ নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।

নাউতারা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. ইয়াছিন আলী বলেন, তিস্তা বেষ্টিতে নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত এই এলাকার স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী, দরিদ্র কৃষক ও হাজারো পথচারীর চলাচলের সুবিধার্থে এখানে একটি ব্রীজ নির্মাণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অনুরোধ করেও লাভ হয়নি।

ডিমলা উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) সফিউল ইসলাম বলেন, ইতিমধ্যে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে । আগামীতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ব্রীজটি নির্মাণ করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. রাসেল মিয়া বলেন, নাউতারা নদীর উপর ব্রিজ নির্মাণের বিষয়ে আমি অবগত আছি । উপজেলা প্রকৌশলীর সাথে আলোচনা করে ওখানে একটা ব্রীজ নির্মাণের ব্যাপারে খুব শিগগিরই উদ্যোগ নেয়া হবে।

নরসিংদীতে ট্রেনের ধাক্কায় স্কুল ছাত্রী নিহত

ছবি

গাজীপুরের কাপাসিয়ায় ৫০ লাখ টাকার সরকারি ঔষধ মেয়াদ উত্তীর্ণ

মধুখালীতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত দুই

সোনাইমুড়িতে আগুনে পুড়ল ৮ দোকান

ছবি

নগরকান্দায় সড়কের জায়গায় পাকা ঘর নির্মাণের অভিযোগ

মোরেলগঞ্জে মৃত ভাইয়ের লাশ দেখতে এসে সড়কে প্রাণ গেল এক ভাইয়ের

সোনাইমুড়ীতে জমি বিবাদে বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যা

ছবি

দামুড়হুদায় হেলিপ্যাড এখন ভুট্টার চাতাল

ছবি

উলিপুরে ব্রিজের মুখে মাটি, ক্ষতির মুখে ফসলি জমি

টুঙ্গিপাড়ায় থানার পাশে দোকানে চুরি

কিশোরগঞ্জ-মরিচখালী বাজার সড়কে অটোর ভাড়া বৃদ্ধিতে ভোগান্তি

অবৈধভাবে মাটি পরিবহনের সময় ১০ ট্রাক জব্দ

নির্বাচন ছাড়া কোন সরকার দীর্ঘদিন থাকলে স্বৈরাচার জন্ম নেয়-আব্দুস সালাম

চাঁদপুরে আগুনে পুড়ল ১১ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান

সিরাজগঞ্জে জলাশয়ে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু

মতলবে ভিমরুলের কামড়ে মৃত্যু এক, স্ত্রী ও সন্তান আইসিইউতে

স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক ঐক্যজোটের মানববন্ধন

ছবি

ভুট্টা চাষে সফল নবীনগরের কৃষক

ছবি

ইতিহাসের সাক্ষী নকিপুর জমিদার বাড়ি

তরমুজ চাষ করে ক্ষতিগ্রস্ত শরণখোলার শিপন

মোরেলগঞ্জে ৩০ বছর ধরে পাখা বিক্রি করে চলে যাদের জীবন

দৌলতদিয়ায় নদী থেকে বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার

চাঁদপুরে পাইপ গান ও কার্তুজ উদ্ধার

রাঙ্গুনিয়ায় ওয়ালটন শো-রুমের মালামাল পুড়ে ছাই

ছবি

পাহাড়, নদী, ঝরনা আর পাথরে সৌন্দর্যের লীলাভূমি বিছনাকান্দি

ছবি

দর্শনার্থীদের নজর কেড়েছে ভালুকার গ্রীণ অরণ্য পার্ক

ছবি

নিক্সন চৌধুরীর স্ত্রী তারিন হোসেনের গুলশানের ফ্ল্যাট জব্দের আদেশ

রংপুরের গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ২ আসামি নারায়ণগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার

জগন্নাথপুরে সাজাপ্রাপ্ত আসামিসহ গ্রেপ্তার ৭

বড়াইগ্রামে খ্রিস্টান ধর্মপল্লীতে স্টার সানডে পালিত

বাগেরহাটের সুন্দরবনে হরিণের মাংস জব্দ

বেগমগঞ্জে দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার

রাজশাহীতে মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদে বাবাকে হত্যার আসামি গ্রেপ্তার

চান্দিনায় শীর্ষ ডাকাত কাউছার আটক

রাউজানে যুবদল কর্মীকে গুলি করে হত্যা

ছবি

প্রাকৃতিক দুর্যোগের আগাম বার্তা দেয়া ‘হিরালি’ পরিবারগুলোর চরম কষ্টে দিন কাটছে

tab

সারাদেশ

ডিমলায় দুই গ্রামবাসীর একমাত্র ভরসা ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো

প্রতিনিধি, ডিমলা (নীলফামারী)

ডিমলা (নীলফামারী) : নাউতারা নদীর উপর ব্রিজ না থাকায় নিজ উদ্যোগে নির্মিত বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে এলাকাবাসী -সংবাদ

রোববার, ২০ এপ্রিল ২০২৫

নীলফামারীর ডিমলায় ২ গ্রামের মানুষের চলাচলের রাস্তার নাউতারা নদী পারাপারে বাঁশের সাঁকোই এক মাত্র ভরসা। গত এক যুগ ধরে একটি ব্রীজ তৈরির স্বপ্ন দেখছেন এলাকাবাসি। নিজেদের উদ্যোগে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে ঝুঁকি নিয়েই প্রতিদিন পারাপার করছেন হাজারো মানুষ ও কোমল মতি স্কুল কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা।

সরেজমিনে উপজেলার নাউতারা ইউনিয়নের গাছবাড়ী এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, নাউতারা নদীবেষ্টিত ২ গ্রামের প্রায় ৩ হাজারেরও বেশি পরিবার বসবাস করে আসছে । এলাকাবাসি নিজেরাই চাঁদা তুলে, বাঁশসংগ্রহ করে পর্যায়ক্রমে বাঁশের সাঁকো (পুল) নির্মাণ করে ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো চলাচল করছেন। এ অবস্থা চলছে তাদের প্রায় গত ১ যুগ ধরে। নির্বাচন আসলে প্রতিনিধিদের আশ্বাস পেয়েছেন ভূড়ি ভূড়ি ব্রীজ নির্মাণের কিন্তু নির্বাচিত হলে ব্রীজ নির্মাণের ব্যাপারে কোন প্রতিনিধ মাথা ঘামায় না। এলাকাবাসি জানিয়েছেন আশ্বাস তো আশ্বাসেই থেকে যায় পূরণ হয়নি দীর্ঘদিনেও। প্রতিনিয়ত ঘটছে দূর্ঘটনা, দুর্ঘটনায় পতিত হয়ে অনেককে পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয়েছে । এলাকাবাসি অভিযোগ করে বলেন, অসহনীয় দুর্গতির কথা। ব্রীজ নির্মাণের জন্য বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত আবেদন করেও পাননি কোন কাঙ্খিত ফলাফল ।

জানা গেছে, ওই এলাকার সকলেই প্রায় নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারে লোকজন বসবাস করে আসছে দীর্ঘদিন যাবত। গ্রামের শতকরা ৯৫ ভাগ লোক কৃষিজাত পণ্য উৎপাদন করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। আর্থ সামাজিক উন্নয়নে এই এলাকার যোগাযোগ ব্যাবস্থার ক্ষেত্রে ব্রীজটি নির্মাণ করা হলে উল্লেখযোগ্য অবদান কথা থাকলেও কর্তৃপক্ষের উদ্যোগের অভাবে তা সম্ভবপর হয়ে ওঠেনি ।

যাতায়াতের সড়কটির মাঝখানে নাউতারা নদী প্রতিবন্ধকতা হওয়ায় জনদুর্ভাগ্যে পড়ে ওই এলাকার মানুষজন। তারপর থেকে নানা ফসল উৎপাদন করলেও যাতায়াত ও পরিবহনের প্রতিকূলতার কারণে ফসলের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না এই এলাকার কৃষকেরা। এতে কৃষকদের বছরের পর বছর একদিক দুর্বিসহ জীবনযাপন করছে অপরদিকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। জানা গেছে, বিগত বছরের নির্বাচনগুলোতে প্রার্থীরা প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচিত হলেও আজ পর্যন্ত প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে এগিয়ে আসেননি কোন জনপ্রতিনিধি।

উপজেলা সদর, উপজেলা হাসপাতাল, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ইউনিয়ন পরিষদ,হাট-বাজারসহ জেলার সংযোগের এক মাত্র চলাচলের সড়কের পথ এই ব্রীজটি । এই ব্রীজ নির্মাণ করা হলে এলাকার মানুষ এটি ব্যবহার করে খুব সহজেই যাতায়াত করতে পারবেন যেকোনো জায়গায়। চলবে যানবাহন বাড়বে আর্থসামাজিক উন্নয়ন। নিশ্চিত হবে ওই এলাকার উৎপাদিত কৃষি পণ্যের বাজারদর।

এলাকার স্থানীয় ব্যক্তি ইউনুস আলী বলেন, প্রতিদিন ওই সড়ক দিয়ে দুই গ্রামের স্কুল পড়ুয়া কোনলমতি শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয়ে যাওয়া আসা করে থাকে। আমরা অভিভাবকরা ছেলে মেয়েদের বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে দিয়ে বাড়িতে না ফেরা পর্যন্ত দুশ্চিন্তায় থাকি না জানি কোন দুর্ঘটনার সংবাদ আসে। আশপাশের এলাকার স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা পড়ুয়া শতাধিক শিক্ষার্থীসহ প্রতিদিন কমপক্ষে হাজারো মানুষজন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে । বর্ষা মৌসুমে নাউতারা নদীর বন্যায় এই অঞ্চলে পলি পরে জমির উর্বরতা বৃদ্ধি পায় কয়েক গুণ। ধান, গম, ভুট্টা, মরিচ, বাদাম, মিষ্টি আলু, গাজর, পেঁয়াজ, রসুন প্রভৃতি কৃষিপন্য উজাড় করে দেয় প্রকৃতি। সড়কে একটি ব্রিজের অভাবে বাজার মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে প্রায় প্রায় ১২ বছর যাবত। আরো জানান, বাজার মূল্য থেকে বঞ্চিত হন তা নয়, বর্ষা মৌসুমে শিশুদের এই ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের পুলের ওপর দিয়ে স্কুলে পাঠাতে ভয় হয়। তারা পানিতে পড়ে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

একই এলাকার পঞ্চম শ্রেণী পড়ুয়া শিক্ষার্থী মারুফ ও মমিনা সহ আরো একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে আমাদের বিদ্যালয় যেতে অনেক সমস্যা হয়। আমরা অনেক ঝুকি নিয়ে সাঁকো পাড় হয়ে বিদ্যালয়ে যাই। সড়কের ওই নদীর উপর একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবী জানাচ্ছি যাতে আমরা নির্দ্বিধায় স্কুল কলেজে যেতে পারি ।

ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা সহিমু্দ্দূন বলেন, শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের সাঁকো দিয়ে কোন রকম এই নদীটি পারাপার হলেও বর্ষাকাল বন্যার স্রোতে বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়। অনেক দুর্ঘটনাও ঘটে থাকে এখানে।

স্থানীয় বাসিন্দা গোলজার হোসেন,ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গত বছর আমার ছেলে সাঁকো থেকে পড়ে আহত হয়। আমরা অনেক কষ্ট করে যাতায়াত করি। কৃষকদের যত মালামাল এই ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার করতে হয়।

তিনি আরো বলেন, আমাদের দুঃখ-কষ্টের কথা কেউ শোনে না। বর্ষার সময় সাঁকোটি পাড় হওয়া অনেক কষ্টকর। ওই সময় এই নদীতে পানিতে টই টম্বুর হয়ে থাকে। থাকে অনেক স্রোত। তখন সাঁকোটি নড়বড়ে হয়ে যায়।

আমাদের কষ্ট কেউ বুঝে না। ১২ বছর থেকে শুনছি এখানে একটি ব্রীজ হবে। এখনো হলো না! আর হবে কি না, সেটাও জানি না!

স্থানীয় বাসিন্দ সাদ্দাম হোসেন বলেন, এখানে আমরা অনেক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। বৃহৎ একটি এলাকা আজ অবরুদ্ধ। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। সার্বিক উন্নয়ন থেকে আমরা বঞ্চিত। আমরা এখানে একটি ব্রীজ নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।

নাউতারা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. ইয়াছিন আলী বলেন, তিস্তা বেষ্টিতে নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত এই এলাকার স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী, দরিদ্র কৃষক ও হাজারো পথচারীর চলাচলের সুবিধার্থে এখানে একটি ব্রীজ নির্মাণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অনুরোধ করেও লাভ হয়নি।

ডিমলা উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) সফিউল ইসলাম বলেন, ইতিমধ্যে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে । আগামীতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ব্রীজটি নির্মাণ করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. রাসেল মিয়া বলেন, নাউতারা নদীর উপর ব্রিজ নির্মাণের বিষয়ে আমি অবগত আছি । উপজেলা প্রকৌশলীর সাথে আলোচনা করে ওখানে একটা ব্রীজ নির্মাণের ব্যাপারে খুব শিগগিরই উদ্যোগ নেয়া হবে।

back to top