বগুড়া চার্চ্চেস অব গড মিশন
বগুড়া : মানবসেবায় কাজ করছে খ্রিস্টান ধর্মের একটি প্রতিষ্ঠান -সংবাদ
মানুষ তার বিবেক, বুদ্ধিমত্তা ও মানবিক গুণাবলির মাধ্যমে সৃষ্টির সেরা জীব। এই শ্রেষ্ঠত্বকে টিকিয়ে রাখতে হলে সমাজকল্যাণে আত্মনিয়োগই শ্রেষ্ঠতম দায়িত্ব। এমন মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই ১৮৯৮ সালে বগুড়ায় সূচনা ঘটে চার্চ্চেস অফ গড মিশনের, যা সময়ের পরিক্রমায় হয়ে উঠেছে এক আদর্শ মানবসেবামূলক প্রতিষ্ঠান।
বগুড়া চার্চ্চেস অফ গড মিশন দেড় শতাব্দী ধরে বাংলাদেশের বগুড়া অঞ্চলে কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং সমাজসেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।
শিক্ষা ক্ষেত্রে, মিশনটি স্কুল পরিচালনা করছে যেখানে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা গ্রহণ করে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে উচ্চ শিক্ষা নিয়ে দেশ ও দেশের বাইরে বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত রয়েছে। স্বাস্থ্যসেবায়, বগুড়া মিশন হাসপাতাল এবং খঞ্জনপুর স্বাস্থ্য ও চক্ষু ক্লিনিক প্রতি বছর লক্ষাধিক রোগীকে সেবা প্রদান সহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যক্যাম্প পরিচালনা করছে যা দেশের বিভিন্ন স্থানে স্বাস্থ্যসেবায় অবদান রাখছে।
শুরুতে ধর্মীয় শিক্ষা ও সেবার মাধ্যমে কাজ শুরু করলেও, অল্প সময়েই এটি শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং সমাজ উন্নয়নের অনন্য মিশনে রূপ নেয়। আমেরিকান জেনারেল কনফারেন্সের হোম বোর্ড কর্তৃক পরিচালিত এই মিশন প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে বগুড়া অঞ্চলের দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষের জীবনে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়।
১৯০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় খ্রিস্টান মিশন প্রাথমিক বিদ্যালয়, যা তখনকার অবহেলিত জনগণের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেয়। এরপর ১৯৪১ সালে মিশন চত্বরে গড়ে তোলা হয় খ্রীষ্টিয়ান মিশন হাসপাতাল, যা স্বাস্থ্যসেবার পাশাপাশি মানুষের মাঝে মানবিক মূল্যবোধ ছড়িয়ে দিতে থাকে।
চার্চ্চেস অফ গড মিশনের অন্যতম অনবদ্য দিক হলো, এটি দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, শিক্ষক, প্রশাসনিক কর্মকর্তার এইসব পেশাজীবীর জন্য একটি নির্ভরযোগ্য কর্মসংস্থান কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে আসছে। শুধু বগুড়া নয়, এর প্রভাব বিস্তৃত হয়েছে জয়পুরহাটসহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায়। খঞ্জনপুরে স্থাপিত হাসপাতাল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও অনুন্নত এলাকার জনগণের জন্য অমূল্য অবদান রেখে চলেছে।
প্রশাসনিক কর্মকর্তা ডোনাল্ড দাস জানান, বগুড়া চার্চেস অব গড মিশন শুধুই একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নয় বরং এটি এক যুগান্তকারী মানবসেবার নাম। মা ও শিশু স্বাস্থ্যসেবায় যার অবদান অপরিসীম। আমরা বিশ্বাস করি, আগামী দিনগুলোতে এই মিশনের সেবার পরিসর আরও বিস্তৃত হবে। প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই চার্চেস অব গড মিশন দরিদ্র, অসহায় ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছে। ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প আয়োজন, টিকাদান কর্মসূচি, চোখের চিকিৎসা, প্রসূতি সেবার এসব কিছুই তাদের আন্তরিকতা ও দায়বদ্ধতার বহিঃপ্রকাশ। এছাড়াও ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের পুনরায় শিক্ষায় সম্পৃক্ত করার মতো কাজগুলো এ অঞ্চলের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করছে।
দেড় শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও কর্মসংস্থানের মাধ্যমে বগুড়া চার্চ্চেস অফ গড মিশন যে অবদান রেখে চলেছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয় ও অনুকরণীয়। মানবসেবার এই আলো উত্তরবঙ্গে প্রজ্জ্বলিত রেখেছে এক আশাবাদের দীপ্তি যেখানে মানুষ, মানবতা ও মমত্ববোধই মুখ্য। আগামী দিনে এ মিশনের সেবার পরিধি আরও প্রসারিত হবে। বগুড়া চার্চেস অব গড মিশনের এই দীর্ঘমেয়াদি প্রচেষ্টা স্থানীয় জনগণের জীবনমান উন্নয়নে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
বগুড়া চার্চ্চেস অব গড মিশন
বগুড়া : মানবসেবায় কাজ করছে খ্রিস্টান ধর্মের একটি প্রতিষ্ঠান -সংবাদ
রোববার, ২০ এপ্রিল ২০২৫
মানুষ তার বিবেক, বুদ্ধিমত্তা ও মানবিক গুণাবলির মাধ্যমে সৃষ্টির সেরা জীব। এই শ্রেষ্ঠত্বকে টিকিয়ে রাখতে হলে সমাজকল্যাণে আত্মনিয়োগই শ্রেষ্ঠতম দায়িত্ব। এমন মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই ১৮৯৮ সালে বগুড়ায় সূচনা ঘটে চার্চ্চেস অফ গড মিশনের, যা সময়ের পরিক্রমায় হয়ে উঠেছে এক আদর্শ মানবসেবামূলক প্রতিষ্ঠান।
বগুড়া চার্চ্চেস অফ গড মিশন দেড় শতাব্দী ধরে বাংলাদেশের বগুড়া অঞ্চলে কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং সমাজসেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।
শিক্ষা ক্ষেত্রে, মিশনটি স্কুল পরিচালনা করছে যেখানে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা গ্রহণ করে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে উচ্চ শিক্ষা নিয়ে দেশ ও দেশের বাইরে বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত রয়েছে। স্বাস্থ্যসেবায়, বগুড়া মিশন হাসপাতাল এবং খঞ্জনপুর স্বাস্থ্য ও চক্ষু ক্লিনিক প্রতি বছর লক্ষাধিক রোগীকে সেবা প্রদান সহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যক্যাম্প পরিচালনা করছে যা দেশের বিভিন্ন স্থানে স্বাস্থ্যসেবায় অবদান রাখছে।
শুরুতে ধর্মীয় শিক্ষা ও সেবার মাধ্যমে কাজ শুরু করলেও, অল্প সময়েই এটি শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং সমাজ উন্নয়নের অনন্য মিশনে রূপ নেয়। আমেরিকান জেনারেল কনফারেন্সের হোম বোর্ড কর্তৃক পরিচালিত এই মিশন প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে বগুড়া অঞ্চলের দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষের জীবনে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়।
১৯০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় খ্রিস্টান মিশন প্রাথমিক বিদ্যালয়, যা তখনকার অবহেলিত জনগণের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেয়। এরপর ১৯৪১ সালে মিশন চত্বরে গড়ে তোলা হয় খ্রীষ্টিয়ান মিশন হাসপাতাল, যা স্বাস্থ্যসেবার পাশাপাশি মানুষের মাঝে মানবিক মূল্যবোধ ছড়িয়ে দিতে থাকে।
চার্চ্চেস অফ গড মিশনের অন্যতম অনবদ্য দিক হলো, এটি দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, শিক্ষক, প্রশাসনিক কর্মকর্তার এইসব পেশাজীবীর জন্য একটি নির্ভরযোগ্য কর্মসংস্থান কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে আসছে। শুধু বগুড়া নয়, এর প্রভাব বিস্তৃত হয়েছে জয়পুরহাটসহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায়। খঞ্জনপুরে স্থাপিত হাসপাতাল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও অনুন্নত এলাকার জনগণের জন্য অমূল্য অবদান রেখে চলেছে।
প্রশাসনিক কর্মকর্তা ডোনাল্ড দাস জানান, বগুড়া চার্চেস অব গড মিশন শুধুই একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নয় বরং এটি এক যুগান্তকারী মানবসেবার নাম। মা ও শিশু স্বাস্থ্যসেবায় যার অবদান অপরিসীম। আমরা বিশ্বাস করি, আগামী দিনগুলোতে এই মিশনের সেবার পরিসর আরও বিস্তৃত হবে। প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই চার্চেস অব গড মিশন দরিদ্র, অসহায় ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছে। ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প আয়োজন, টিকাদান কর্মসূচি, চোখের চিকিৎসা, প্রসূতি সেবার এসব কিছুই তাদের আন্তরিকতা ও দায়বদ্ধতার বহিঃপ্রকাশ। এছাড়াও ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের পুনরায় শিক্ষায় সম্পৃক্ত করার মতো কাজগুলো এ অঞ্চলের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করছে।
দেড় শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও কর্মসংস্থানের মাধ্যমে বগুড়া চার্চ্চেস অফ গড মিশন যে অবদান রেখে চলেছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয় ও অনুকরণীয়। মানবসেবার এই আলো উত্তরবঙ্গে প্রজ্জ্বলিত রেখেছে এক আশাবাদের দীপ্তি যেখানে মানুষ, মানবতা ও মমত্ববোধই মুখ্য। আগামী দিনে এ মিশনের সেবার পরিধি আরও প্রসারিত হবে। বগুড়া চার্চেস অব গড মিশনের এই দীর্ঘমেয়াদি প্রচেষ্টা স্থানীয় জনগণের জীবনমান উন্নয়নে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।