গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবা নিতে আসা রোগীদের বিনামুল্যে প্রদানের জন্য বরাদ্ধ করা ৫০ লাখ টাকা মূল্যের সরকারি ঔষধ মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব ঔষধ রোগীদের না দিয়ে অন্যত্র বিক্রি করে দেয়ার জন্য মজুদ করার পর সুযোগ মত পাচার করতে না পারায় হাসপাতালের স্টোরেই মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে।
সরকারি ঔষধ রোগীরা পেল না, অথচ হাসপাতালের স্টোরে পরে থেকে মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেল-এ জন্য বর্তমান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) ডা. মো. হাবিবুর রহমান, সাবেক উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা (বর্তমানে গাজীপুরের সিভিল সার্জন) ডা. মামুনুর রহমানকে দায়ী করেছেন। অপরদিকে, ডা. মামুনুর রহমান বিপুল টাকার সরকারি ঔষধ মেয়াদ উত্তীর্ণ যাওয়ার জন্য হাসপাতালের সাবেক স্টোর কিপারকে দায়ী করেছেন।
স্থানীয়দের দাবি, হাসপাতালটিতে উপজেলার হাজারো মানুষ চিকিৎসা সেবা নিতে আসে। তাদের মধ্যে অনেকই গরীব ও অসচ্ছল। তাদের অনেকে বিনামুল্যে চিকিৎসা ও ঔষধ পাওয়ার আশায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যায়। কিন্তু সরকারি বিনামূল্যের ঔষধ রোগীদের না দিয়ে স্টোরে মজুদ করে নষ্ট করা জন্য যারা দায়ী, তাদের খুজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। যাতে করে ভবিষ্যতে কোন অসাধ্য সরকারি চিকিৎসক, কর্মকর্তা/কর্মচারী অসুস্থ মানুষকে ঔষধ নাই বলে মিথ্যা কথা বলে চুরি করে ঔষধ অন্যত্র বিক্রির মতো অপরাধ করতে সাহস না পায়।
গত রোববার দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের স্টোরে ঔষধ রাখার রেক গুলোর প্রতিটি থাকে থাকে কার্টুন করে সাজিয়ে রাখা রয়েছে ওষুধগুলো। কিছু ঔষধ স্টোরের মেঝেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে। সবই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও অনেক দামি দামি ঔষধ যেমন, এন্টিবায়োটিক, সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য এনেসথেসিয়া সহ বিভিন্ন ইনজেকশন, ঠান্ডা, কাশি, জ্বর সর্দির নিরাময়সহ প্রয়োজনীয় ঔষধ। যা মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে রয়েছে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা সেবা দেয়ার এই ঔষধ গুলো মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে অযত্নে অবহেলায় স্টোরে ফেলে রাখা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়া ঔষধের মূল্য প্রায় ৫০ লাখ টাকার বেশী হবে।
অথচ, প্রতিদিনি শত শত গরীব ও অসহায় অসুস্থ মানুষ হাসপাতালে এসে সরকারি ঔষধ না পেয়ে খালি হাতে ফিরে গেছে। অনেকে টাকার অভাবে প্রয়োজনীয় ঔষধ কিনতে পারেনি।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা জোসনা বেগম জানান, আমি প্রায় সময় এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসি। এখানে চিকিৎসা নিতে আসলে অহেতুক কোন পরীক্ষা-নিরীক্ষা দেয় না। হাসপাতালে থেকে কিছু ঔষধ বিনামূল্যে দেয় তা ব্যবহার করলে অসুখ সেরে যায়। গত এক বছরে আমি কয়েকবারই এই হসপিটালে চিকিৎসা নিতে এসেছি কিন্তু তাঁরা কোন ঔষধ আমাকে সরবরাহ করতে পারেনি। অথচ জানতে পারলাম হসপিটালে বহু ঔষধ মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে নষ্ট হয়ে রয়েছে। আমরা যারা বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিতে পারি না। এই হাসপাতলে গরীব মানুষের জন্য সরকারিভাবে ভর্তুকি দিয়ে চিকিৎসা সেবা প্রদান করে। তাই এই হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নেই। সেই ঔষধ গুলো আমাদের না দিয়ে নষ্ট করে ফেলে রেখে নষ্ট করেছে। যারা এই অন্যায় কাজ করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার।
কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সপ্তাহে পাঁচ দিন সিজারিয়ান অপারেশনের ব্যবস্থা রয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে বারিষাব ইউনিয়নের বেলায়েত হোসেনের স্ত্রীর সিজারিয়ান অপারেশন হয়। সেই অপারেশনে তাঁদের পাঁচ হাজার টাকার মত চিকিৎসা ব্যয় হয়। তারমধ্যে আড়াই হাজার টাকার মত ঔষধ বাইরে থেকে কিনতে হয়েছে সিজারিয়া অপারেশনের জন্য। অথচ, হসপিটালের স্টোর রুমে সিজারিয়া অপারেশনের ঔষধ তখন পর্যাপ্ত পরিমাণে মজুদ ছিল। এত ওষুধ মজুদ থাকা সত্ত্বেও কেন রোগীদের সেবার কাজে ঔষধগুলো ব্যবহার করতে পারেনি-হসপিটাল কর্তৃপক্ষ তার কোন সদোত্তর দিতে পারেননি।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মো. হাবিবুর রহমান বলেন, আমি এই হাসপাতালে দায়িত্ব গ্রহণ করেছি প্রায় একমাস হয়েছে। আমি যোগদানের পর প্রায় ২০ লাখ টাকার ঔষধের চাহিদা দিয়েছি। আমি যোগদান করার পর থেকে এই হাসপাতালে যতগুলি সিজারিয়ান অপারেশন হয়েছে, তার জন্য কোন রোগীকে বাইরে থেকে কোন ঔষধ কিনতে হয়নি। সকল ঔষধ এই হাসপাতাল থেকে সরবরাহ করেছি। এখন যেসকল ঔষধ মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে স্টোরে রয়েছে, তা আমি যোগদান করার পূর্বে মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গিয়েছিল। পূর্বে যিনি দায়িত্বে ছিলেন, তিনি বর্তমানে গাজীপুরে সিভিল সার্জন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
তিনি আরো বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। শুনেছি এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির গঠন করা হবে। কি পরিমাণ ঔষধ মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে স্টোরে জমা রয়েছে, তার একটি তালিকা করা হবে এবং তদন্ত প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হবে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সাবেক উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা (বর্তমানে গাজীপুরের সিভিল সার্জন) গাজীপুর জেলার সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ মামুনুর রহমান ২০২২ সালের ১৪ মার্চ থেকে চলতি ২০২৫ সালের ৯ মার্চ পর্যন্ত কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি তিন বছরের অধিক সময় কাপাসিয়ায় দায়িত্ব পালন করেছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মচারী জানান, এই ঔষধগুলি মূলত বাহিরে বিক্রি করার জন্য হাসাপাতালে সেবা নিতে আসা রোগীদের না দিয়ে হাসপাতালের স্টোরে মজুদ করে রাখা হয়েছিল। ৫ই আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর সারাদেশের মতো এই হাসপাতালে পরিবেশেরও পরিবর্তন হয়। একারণে স্টোরে মজুদ করা সরকারি বিনামূল্যের ঔষধগুলি অন্যত্র বিক্রির জন্য বাহিরে বের করতে পারেনি। অপরদিকে, এত বেশী ঔষধ স্টোরে জমা ছিল, যা পরে ব্যবহার করেও শেষ করতে পারেনি। এরই মধ্যেই আগে যারা দায়িত্বে ছিলেন, তারা বদলী হয়ে গেছেন। আগে যিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তার দায়িত্বে ছিলেন, তিনি মূলত এই হাসপাতালটির যে সুনাম ছিল তা নষ্ট করে গেছেন।
গাজীপুরের সিভিল সার্জন (সাবেক কাপাসিয়ার ইউএইচএফপিও) ডাঃ মামুনুর রহমান সংবাদকে বলেন, আমি দায়িত্বে থাকাকালীন গত এক বছরে স্টোরে দায়িত্বে যিনি ছিলেন তিনি অন্যত্র বদলি হয়ে চলে যান। বদলি হয়ে যাওয়ার সময় শেষ স্টোরের কি পরিমান ঔষধ জমা রয়েছে, তার কোন হিসেব দিয়ে যাননি। যার ফলে স্টোরের মধ্যে কি পরিমান ঔষধ রয়েছে, তার কোন হিসেব রাখা সম্ভব হয়নি। বিষয়টি নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত করে দেখা হবে কি পরিমাণ ঔষধ জমা রয়েছে।
সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫
গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবা নিতে আসা রোগীদের বিনামুল্যে প্রদানের জন্য বরাদ্ধ করা ৫০ লাখ টাকা মূল্যের সরকারি ঔষধ মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব ঔষধ রোগীদের না দিয়ে অন্যত্র বিক্রি করে দেয়ার জন্য মজুদ করার পর সুযোগ মত পাচার করতে না পারায় হাসপাতালের স্টোরেই মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে।
সরকারি ঔষধ রোগীরা পেল না, অথচ হাসপাতালের স্টোরে পরে থেকে মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেল-এ জন্য বর্তমান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) ডা. মো. হাবিবুর রহমান, সাবেক উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা (বর্তমানে গাজীপুরের সিভিল সার্জন) ডা. মামুনুর রহমানকে দায়ী করেছেন। অপরদিকে, ডা. মামুনুর রহমান বিপুল টাকার সরকারি ঔষধ মেয়াদ উত্তীর্ণ যাওয়ার জন্য হাসপাতালের সাবেক স্টোর কিপারকে দায়ী করেছেন।
স্থানীয়দের দাবি, হাসপাতালটিতে উপজেলার হাজারো মানুষ চিকিৎসা সেবা নিতে আসে। তাদের মধ্যে অনেকই গরীব ও অসচ্ছল। তাদের অনেকে বিনামুল্যে চিকিৎসা ও ঔষধ পাওয়ার আশায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যায়। কিন্তু সরকারি বিনামূল্যের ঔষধ রোগীদের না দিয়ে স্টোরে মজুদ করে নষ্ট করা জন্য যারা দায়ী, তাদের খুজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। যাতে করে ভবিষ্যতে কোন অসাধ্য সরকারি চিকিৎসক, কর্মকর্তা/কর্মচারী অসুস্থ মানুষকে ঔষধ নাই বলে মিথ্যা কথা বলে চুরি করে ঔষধ অন্যত্র বিক্রির মতো অপরাধ করতে সাহস না পায়।
গত রোববার দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের স্টোরে ঔষধ রাখার রেক গুলোর প্রতিটি থাকে থাকে কার্টুন করে সাজিয়ে রাখা রয়েছে ওষুধগুলো। কিছু ঔষধ স্টোরের মেঝেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে। সবই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও অনেক দামি দামি ঔষধ যেমন, এন্টিবায়োটিক, সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য এনেসথেসিয়া সহ বিভিন্ন ইনজেকশন, ঠান্ডা, কাশি, জ্বর সর্দির নিরাময়সহ প্রয়োজনীয় ঔষধ। যা মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে রয়েছে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা সেবা দেয়ার এই ঔষধ গুলো মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে অযত্নে অবহেলায় স্টোরে ফেলে রাখা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়া ঔষধের মূল্য প্রায় ৫০ লাখ টাকার বেশী হবে।
অথচ, প্রতিদিনি শত শত গরীব ও অসহায় অসুস্থ মানুষ হাসপাতালে এসে সরকারি ঔষধ না পেয়ে খালি হাতে ফিরে গেছে। অনেকে টাকার অভাবে প্রয়োজনীয় ঔষধ কিনতে পারেনি।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা জোসনা বেগম জানান, আমি প্রায় সময় এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসি। এখানে চিকিৎসা নিতে আসলে অহেতুক কোন পরীক্ষা-নিরীক্ষা দেয় না। হাসপাতালে থেকে কিছু ঔষধ বিনামূল্যে দেয় তা ব্যবহার করলে অসুখ সেরে যায়। গত এক বছরে আমি কয়েকবারই এই হসপিটালে চিকিৎসা নিতে এসেছি কিন্তু তাঁরা কোন ঔষধ আমাকে সরবরাহ করতে পারেনি। অথচ জানতে পারলাম হসপিটালে বহু ঔষধ মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে নষ্ট হয়ে রয়েছে। আমরা যারা বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিতে পারি না। এই হাসপাতলে গরীব মানুষের জন্য সরকারিভাবে ভর্তুকি দিয়ে চিকিৎসা সেবা প্রদান করে। তাই এই হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নেই। সেই ঔষধ গুলো আমাদের না দিয়ে নষ্ট করে ফেলে রেখে নষ্ট করেছে। যারা এই অন্যায় কাজ করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার।
কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সপ্তাহে পাঁচ দিন সিজারিয়ান অপারেশনের ব্যবস্থা রয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে বারিষাব ইউনিয়নের বেলায়েত হোসেনের স্ত্রীর সিজারিয়ান অপারেশন হয়। সেই অপারেশনে তাঁদের পাঁচ হাজার টাকার মত চিকিৎসা ব্যয় হয়। তারমধ্যে আড়াই হাজার টাকার মত ঔষধ বাইরে থেকে কিনতে হয়েছে সিজারিয়া অপারেশনের জন্য। অথচ, হসপিটালের স্টোর রুমে সিজারিয়া অপারেশনের ঔষধ তখন পর্যাপ্ত পরিমাণে মজুদ ছিল। এত ওষুধ মজুদ থাকা সত্ত্বেও কেন রোগীদের সেবার কাজে ঔষধগুলো ব্যবহার করতে পারেনি-হসপিটাল কর্তৃপক্ষ তার কোন সদোত্তর দিতে পারেননি।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মো. হাবিবুর রহমান বলেন, আমি এই হাসপাতালে দায়িত্ব গ্রহণ করেছি প্রায় একমাস হয়েছে। আমি যোগদানের পর প্রায় ২০ লাখ টাকার ঔষধের চাহিদা দিয়েছি। আমি যোগদান করার পর থেকে এই হাসপাতালে যতগুলি সিজারিয়ান অপারেশন হয়েছে, তার জন্য কোন রোগীকে বাইরে থেকে কোন ঔষধ কিনতে হয়নি। সকল ঔষধ এই হাসপাতাল থেকে সরবরাহ করেছি। এখন যেসকল ঔষধ মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে স্টোরে রয়েছে, তা আমি যোগদান করার পূর্বে মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গিয়েছিল। পূর্বে যিনি দায়িত্বে ছিলেন, তিনি বর্তমানে গাজীপুরে সিভিল সার্জন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
তিনি আরো বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। শুনেছি এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির গঠন করা হবে। কি পরিমাণ ঔষধ মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে স্টোরে জমা রয়েছে, তার একটি তালিকা করা হবে এবং তদন্ত প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হবে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সাবেক উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা (বর্তমানে গাজীপুরের সিভিল সার্জন) গাজীপুর জেলার সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ মামুনুর রহমান ২০২২ সালের ১৪ মার্চ থেকে চলতি ২০২৫ সালের ৯ মার্চ পর্যন্ত কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি তিন বছরের অধিক সময় কাপাসিয়ায় দায়িত্ব পালন করেছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মচারী জানান, এই ঔষধগুলি মূলত বাহিরে বিক্রি করার জন্য হাসাপাতালে সেবা নিতে আসা রোগীদের না দিয়ে হাসপাতালের স্টোরে মজুদ করে রাখা হয়েছিল। ৫ই আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর সারাদেশের মতো এই হাসপাতালে পরিবেশেরও পরিবর্তন হয়। একারণে স্টোরে মজুদ করা সরকারি বিনামূল্যের ঔষধগুলি অন্যত্র বিক্রির জন্য বাহিরে বের করতে পারেনি। অপরদিকে, এত বেশী ঔষধ স্টোরে জমা ছিল, যা পরে ব্যবহার করেও শেষ করতে পারেনি। এরই মধ্যেই আগে যারা দায়িত্বে ছিলেন, তারা বদলী হয়ে গেছেন। আগে যিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তার দায়িত্বে ছিলেন, তিনি মূলত এই হাসপাতালটির যে সুনাম ছিল তা নষ্ট করে গেছেন।
গাজীপুরের সিভিল সার্জন (সাবেক কাপাসিয়ার ইউএইচএফপিও) ডাঃ মামুনুর রহমান সংবাদকে বলেন, আমি দায়িত্বে থাকাকালীন গত এক বছরে স্টোরে দায়িত্বে যিনি ছিলেন তিনি অন্যত্র বদলি হয়ে চলে যান। বদলি হয়ে যাওয়ার সময় শেষ স্টোরের কি পরিমান ঔষধ জমা রয়েছে, তার কোন হিসেব দিয়ে যাননি। যার ফলে স্টোরের মধ্যে কি পরিমান ঔষধ রয়েছে, তার কোন হিসেব রাখা সম্ভব হয়নি। বিষয়টি নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত করে দেখা হবে কি পরিমাণ ঔষধ জমা রয়েছে।