অন্যথায় ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি
ছয় দফা দাবি আদায়ে সরকারকে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। এই সময়ের মধ্যে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেয়া না হলে ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
সোমবার, (২১ এপ্রিল) ঢাকা জেলার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোর শিক্ষার্থীদের ‘মহাসমাবেশে’ ৪৮ ঘণ্টার ‘আল্টিমেটাম’ দেয় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম কারিগরি ছাত্র আন্দোলন।
এর আগে দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সামনে ঢাকা জেলার ‘মহাসমাবেশ’ শুরু হয়। এতে ঢাকার বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটর শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়। তারা জুনিয়র ইন্সট্রাকটর পদে ক্রাফট ইন্সট্রাকটরদের প্রমোশনের হাইকোর্টের রায় বাতিলসহ ছয় দফা দাবি জানান।
‘মহাসমাবেশে’ ‘দেশ গড়ার হাতিয়ার/গর্জে ওঠো আরেকবার’, ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ/শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘কুমিল্লায় হামলা কেন/প্রশাসন জবাব চাই’, ‘এসি রুমের বৈঠক/আর নয় আর নয়’, ‘পলিটেকনিক এক হও, এক হও এক হও’ ইত্যাদি স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।
কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি ও ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী মাশফিক ইসলাম দেওয়ান বলেন, তাদের দাবি দাওয়া মেনে নিতে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছে; যদি এর মধ্যে দৃশ্যমান কর্মকাণ্ড না দেখানো হয় তাহলে ‘কঠোর থেকে কঠোর’ কর্মসূচি, প্রয়োজনে ‘লং মার্চ’ হবে।
তিনি সব শিক্ষার্থীকে সমাবেশে যোগদানের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আন্দোলন শুধু আমাদের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নয়। এটা সব শিক্ষক শিক্ষার্থী ইঞ্জিনিয়ার পেশাজীবী সবার আন্দোলন। সব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ভাইদের বলে দিতে চাই, সব কারিগরি শিক্ষার্থী ভাইদের বলে দিতে চাই, আমরা ৮৭ সালের আন্দোলন ভুলে যাই নাই; আমরা ১৩ সালের আন্দোলন ভুলে যাই নাই, আমার ভাইয়েরা রাজপথে রক্ত ঝরিয়েছে, আমরা ভুলে যাই নাই।’
জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে পদোন্নতির জন্য ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের পক্ষে যে রিট আবেদন করা হয়েছে, তাকে ‘কালো রিট’ আখ্যায়িত করে মাশফিক ইসলাম দেওয়ান বলেন, ‘এটি অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। যদি দ্রুত থেকে দ্রুততম সময়ে এই রিট বাতিল করা না হয়, তাহলে তো আজকে এ সমাবেশ হয়েছে, কালকে বিক্ষোভ হবে, পরশু দিন সারা বাংলাদেশ ব্লকেড হয়ে যাবে।’
পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবির মধ্যে প্রথমটি হলো জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের ৩০ শতাংশ প্রমোশন কোটা বাতিল করতে হবে। জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের অবৈধ পদোন্নতির রায় হাইকোর্ট কর্তৃক বাতিল করতে হবে। ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদবি পরিবর্তন, মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের চাকরিচ্যুত করতে হবে।
দ্বিতীয় দাবি, ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে যেকোনো বয়সে ভর্তির সুযোগ বাতিল করতে হবে। চার বছর মেয়াদি মানসম্পন্ন কারিকুলাম চালু করতে হবে এবং একাডেমিক কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে ইংরেজি মাধ্যমে করতে হবে।
তৃতীয়ত, উপসহকারী প্রকৌশলী ও সমমান (দশম গ্রেড) থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকা সত্ত্বেও যেসব সরকারি, রাষ্ট্রীয়, স্বায়ত্তশাসিত ও স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের নিম্ন পদে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
চতুর্থ দাবি, কারিগরি সেক্টর পরিচালনায় পরিচালক, সহকারী পরিচালক, বোর্ড চেয়ারম্যান, উপসচিব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, অধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সব পদে কারিগরি শিক্ষাবহির্ভূত জনবল নিয়োগ নিষিদ্ধ করতে হবে।
পঞ্চম দাবি, স্বতন্ত্র ‘কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা’ মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা ও ‘কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন’ গঠন করতে হবে।
ষষ্ঠ দাবি হলো- পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগের লক্ষ্যে একটি উন্নত মানের টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। পাশাপাশি নির্মাণাধীন চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে (নড়াইল, নাটোর, খাগড়াছড়ি ও ঠাকুরগাঁও) পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য অস্থায়ী ক্যাম্পাস এবং ডুয়েটের আওতাভুক্ত একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে আগামী সেশন থেকে শতভাগ আসনে ভর্তির সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
অন্যথায় ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি
সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫
ছয় দফা দাবি আদায়ে সরকারকে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। এই সময়ের মধ্যে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেয়া না হলে ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
সোমবার, (২১ এপ্রিল) ঢাকা জেলার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোর শিক্ষার্থীদের ‘মহাসমাবেশে’ ৪৮ ঘণ্টার ‘আল্টিমেটাম’ দেয় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম কারিগরি ছাত্র আন্দোলন।
এর আগে দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সামনে ঢাকা জেলার ‘মহাসমাবেশ’ শুরু হয়। এতে ঢাকার বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটর শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়। তারা জুনিয়র ইন্সট্রাকটর পদে ক্রাফট ইন্সট্রাকটরদের প্রমোশনের হাইকোর্টের রায় বাতিলসহ ছয় দফা দাবি জানান।
‘মহাসমাবেশে’ ‘দেশ গড়ার হাতিয়ার/গর্জে ওঠো আরেকবার’, ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ/শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘কুমিল্লায় হামলা কেন/প্রশাসন জবাব চাই’, ‘এসি রুমের বৈঠক/আর নয় আর নয়’, ‘পলিটেকনিক এক হও, এক হও এক হও’ ইত্যাদি স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।
কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি ও ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী মাশফিক ইসলাম দেওয়ান বলেন, তাদের দাবি দাওয়া মেনে নিতে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছে; যদি এর মধ্যে দৃশ্যমান কর্মকাণ্ড না দেখানো হয় তাহলে ‘কঠোর থেকে কঠোর’ কর্মসূচি, প্রয়োজনে ‘লং মার্চ’ হবে।
তিনি সব শিক্ষার্থীকে সমাবেশে যোগদানের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আন্দোলন শুধু আমাদের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নয়। এটা সব শিক্ষক শিক্ষার্থী ইঞ্জিনিয়ার পেশাজীবী সবার আন্দোলন। সব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ভাইদের বলে দিতে চাই, সব কারিগরি শিক্ষার্থী ভাইদের বলে দিতে চাই, আমরা ৮৭ সালের আন্দোলন ভুলে যাই নাই; আমরা ১৩ সালের আন্দোলন ভুলে যাই নাই, আমার ভাইয়েরা রাজপথে রক্ত ঝরিয়েছে, আমরা ভুলে যাই নাই।’
জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে পদোন্নতির জন্য ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের পক্ষে যে রিট আবেদন করা হয়েছে, তাকে ‘কালো রিট’ আখ্যায়িত করে মাশফিক ইসলাম দেওয়ান বলেন, ‘এটি অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। যদি দ্রুত থেকে দ্রুততম সময়ে এই রিট বাতিল করা না হয়, তাহলে তো আজকে এ সমাবেশ হয়েছে, কালকে বিক্ষোভ হবে, পরশু দিন সারা বাংলাদেশ ব্লকেড হয়ে যাবে।’
পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবির মধ্যে প্রথমটি হলো জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের ৩০ শতাংশ প্রমোশন কোটা বাতিল করতে হবে। জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের অবৈধ পদোন্নতির রায় হাইকোর্ট কর্তৃক বাতিল করতে হবে। ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদবি পরিবর্তন, মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের চাকরিচ্যুত করতে হবে।
দ্বিতীয় দাবি, ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে যেকোনো বয়সে ভর্তির সুযোগ বাতিল করতে হবে। চার বছর মেয়াদি মানসম্পন্ন কারিকুলাম চালু করতে হবে এবং একাডেমিক কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে ইংরেজি মাধ্যমে করতে হবে।
তৃতীয়ত, উপসহকারী প্রকৌশলী ও সমমান (দশম গ্রেড) থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকা সত্ত্বেও যেসব সরকারি, রাষ্ট্রীয়, স্বায়ত্তশাসিত ও স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের নিম্ন পদে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
চতুর্থ দাবি, কারিগরি সেক্টর পরিচালনায় পরিচালক, সহকারী পরিচালক, বোর্ড চেয়ারম্যান, উপসচিব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, অধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সব পদে কারিগরি শিক্ষাবহির্ভূত জনবল নিয়োগ নিষিদ্ধ করতে হবে।
পঞ্চম দাবি, স্বতন্ত্র ‘কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা’ মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা ও ‘কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন’ গঠন করতে হবে।
ষষ্ঠ দাবি হলো- পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগের লক্ষ্যে একটি উন্নত মানের টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। পাশাপাশি নির্মাণাধীন চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে (নড়াইল, নাটোর, খাগড়াছড়ি ও ঠাকুরগাঁও) পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য অস্থায়ী ক্যাম্পাস এবং ডুয়েটের আওতাভুক্ত একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে আগামী সেশন থেকে শতভাগ আসনে ভর্তির সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।