alt

সারাদেশ

মসজিদে ঢুকে চার খুন আসামিদের ধরার ব্যাপারে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করছে না পুলিশ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, মাদারীপুর : বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫

‘স্বামী নাই, সন্তানরা নাই। সব শ্যাষ হয়ে গেছে। দুই সন্তানকে হত্যা করেও খুনিগো খ্যান্ত হয় নাই। মামলা তুলে নিতে খুনিরা এখন আমাকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। সন্তানদের চোখের সামনে খুন হতে দেখেছি। খুনিদের বিচার চাওয়া কি অন্যায়? আমি কি হত্যাকারীদের বিচার দেখে মরতে পারব না?’ ক্ষোভ নিয়ে এসব কথা বলছিলেন সুফিয়া বেগম (৬০)।

মাদারীপুরে মসজিদের মধ্যে ঢুকে চারজনকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলার বাদী সুফিয়া বেগম। গত মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে মাদারীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে সুফিয়া বেগম দুই সন্তানসহ চার হত্যাকারীদের বিচার দাবি করেন। ঘণ্টাব্যাপী কর্মসূচিতে ব্যানার ও ফেস্টুন হাতে নিয়ে অংশ নেন নিহত চারজনের স্বজন ও এলাকাবাসী। মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসক ইয়াসমিন আক্তারের কাছে ন্যায়বিচার দাবি করে স্মারকলিপি দেন তারা।

পূর্ববিরোধ ও বালু ব্যবসার জের ধরে গত ৮ মার্চ তিন ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষের লোকজন। নিহত ব্যক্তিরা হলেন দুই ভাই আতাউর রহমান সরদার ওরফে আতাবুর (৩৫), সাইফুল ইসলাম ওরফে হিটার সাইফুল (৩০), তাঁদের চাচাতো ভাই পলাশ সরদার (১৭)। আতাউর ও সাইফুল সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের সরদার বাড়ি এলাকার আজিবর সরদারের ছেলে ও পলাশ একই এলাকার মুজাম সরদারের ছেলে। নিহত সাইফুল খোয়াজপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত অলিল সরদার (৪০) ও তাজেল হাওলাদার (২০)। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তাজেল। আতাউর ও সাইফুলের প্রতিবেশী ছিলেন তাজেল। এ ঘটনায় গুরুতর আহত অলিল সরদার এখনো ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, মসজিদের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে অস্ত্রধারী নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। চারজনকে কুপিয়ে হত্যা করা দেশের ইতিহাসে বিরল ঘটনা। এই ঘটনার পরে আসামিরা আরও প্রভাব বিস্তার করছে। মামলা তুলে নিতে আসামিপক্ষের লোকজন বাদী ও নিহত ব্যক্তির স্বজনদের প্রতিনিয়ত হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হলেও গুরুত্ব দিচ্ছে না।

আসামিদের ধরার ব্যাপারেও পুলিশ দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করছে না। পুলিশের ভূমিকা আসামিপক্ষে রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন বক্তারা। এ সময় হত্যার ঘটনায় জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তার ও দ্রুত বিচার দাবি জানান তারা। মামলার বাদী সুফিয়া বেগমের তিন ছেলের ওপর হামলা হয়েছিল।

ঘটনাস্থলে তার দুই ছেলে নিহত হন। বেঁচে যান বড় ছেলে অলিল সরদার। তিনি বলেন, ‘আমি যে এখনো বেঁচে আছি, কখনো কখনো সেটা বিশ্বাস হয় না। ওরা আমাকে যেভাবে কুপিয়েছে, আমার শরীরে মাথায় যে পরিমাণ কোপের আঘাত রয়েছে, তাতে আমার বাঁচার কথা না। আলায় শুধু বাঁচাইছে। আমার আপন দুই ভাই ও চাচাতো দুই ভাইকে চোখের সামনে খুন হতে দেখেছি। হত্যাকারীদের দেখেছি। তাই ওরা আমাকেও খুন করতে হুমকি দিচ্ছে। আমার মাকে মামলা তুলে নিতে চাপ দিচ্ছে।’

এ সম্পর্কে মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় হোসেন সরদার, শাহজাহান খানসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে যারা এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, তাদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। বাদীকে হুমকির ব্যাপারে কেউ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেননি। তারা অভিযোগ জানালে বাদীকে সব ধরনের আইনি সহযোগিতা দেয়া হবে।’

মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার খোয়াজপুরের কীর্তিনাশা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছিলেন ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল সরদার। এ নিয়ে প্রতিবেশী জেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও জেলা যুব দলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক মো. শাহজাহান খান ও বালু ব্যবসায়ী হোসেন সরদারের সঙ্গে দ্বন্ধে জড়িয়ে পড়েন তিনি। এর জের ধরে গত ৮ মার্চ শাহজাহান খান ও হোসেন সরদারের নেতৃত্বে তার লোকজন সাইফুল ও তার ভাইদের কুপিয়ে হত্যা করেন। এ ঘটনার এক দিন পরেই সাইফুল ও আতাউর সরদারের মা সুফিয়া বেগম বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

মাদক প্রতিরোধে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত

ছবি

উলিপুরের ঐতিহ্যবাহী ক্ষীরমোহনের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলছে

ছবি

সাটুরিয়ায় সরকারি খাল দখলের মহোৎসব, নীরব প্রশাসন

খুলনায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে যুবক খুন

বাবার লাশ ঘরে রেখে পরীক্ষার হলে খাইরুল

মাদারগঞ্জে আল-আকাবা সমিতির পরিচালক গ্রেপ্তার

দোকানে তালা দেয়া নিয়ে বিরোধে বৃদ্ধ নিহত

ছবি

সুনামগঞ্জের হাওরে বোরো ধান কাটা, মাড়াইয়ে ব্যস্ত কৃষক

ছবি

চুয়াডাঙ্গায় মাঝারি তাপপ্রবাহে হাঁসফাঁস জনজীবন, কৃষিকাজেও প্রভাব

রাউজানে যুবককে গুলি করে হত্যা

২ জেলায় এসএসসি পরীক্ষার্থীসহ ২ ছাত্রীর আত্মহত্যা

চরফ্যাসনে পৃথক ঘটনায় তিনজনের মৃত্যু

২ জেলায় সড়কে নিহত ২

ছবি

বিএনপি নেতার পুকুরে বিষ প্রয়োগ, ১৬ লাখ টাকার মাছ নিধন

ঘোড়াঘাটে ব্যবসায়ীর ৫ গরু চুরি

গলাচিপায় বজ্রপাতে ৫ গরুর মৃত্যু

যৌথ বাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলি, গুলিবিদ্ধ ১

নিখোঁজের পরদিন বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার

চাটখিল-ঢাকা রোডে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়

ছবি

পাঁচ দিন ধরে পানি নেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, রোগীদের ভোগান্তি চরমে

পরিবেশ মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ইটভাটা মালিক আটক

বসতবাড়িতে ডাকাতি টাকা-স্বর্ণালংকার লুট

প্রবাসীর স্ত্রীকে গাছে বেঁধে নির্যাতন, গ্রেপ্তার ২

ছবি

আক্কেলপুরে আলুর কম দামে কৃষকের মাথায় হাত

ছবি

চকরিয়ায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে তিন পরিবারের বসতবাড়ি ভস্মীভূত

তাহিরপুর সীমান্তে ইয়াবাসহ ব্যবসায়ী আটক

ছবি

সিরাজগঞ্জে মৌমাছির আক্রমণ, আহত ২০

সিলেটে নিখোঁজ ৬ রাজমিস্ত্রি টেকনাফ থেকে উদ্ধার

বিএসসি কৃষিবিদদের প্রতি বৈষম্য নিরসনে ৫ দফা দাবিতে সমাবেশ

কসবায় গরু-ছাগল ও মহিষের হাট থেকে কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

ছবি

আম বাজারজাতকরণে মতবিনিময় সভা

‘৩৬ দিনের আন্দোলনে হাসিনা পালায়নি ১৬ বছর সংগ্রামের ফসল’

ছবি

বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের অবস্থান ধর্মঘট

ছবি

নড়াইলে দাড়ার খাল পুনঃখনন উদ্বোধন

নিখোঁজের তিন দিন পর বাল্কহেড শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার

ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি ছাত্রদলের প্রিজাইডিং অফিসার

tab

সারাদেশ

মসজিদে ঢুকে চার খুন আসামিদের ধরার ব্যাপারে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করছে না পুলিশ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, মাদারীপুর

বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫

‘স্বামী নাই, সন্তানরা নাই। সব শ্যাষ হয়ে গেছে। দুই সন্তানকে হত্যা করেও খুনিগো খ্যান্ত হয় নাই। মামলা তুলে নিতে খুনিরা এখন আমাকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। সন্তানদের চোখের সামনে খুন হতে দেখেছি। খুনিদের বিচার চাওয়া কি অন্যায়? আমি কি হত্যাকারীদের বিচার দেখে মরতে পারব না?’ ক্ষোভ নিয়ে এসব কথা বলছিলেন সুফিয়া বেগম (৬০)।

মাদারীপুরে মসজিদের মধ্যে ঢুকে চারজনকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলার বাদী সুফিয়া বেগম। গত মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে মাদারীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে সুফিয়া বেগম দুই সন্তানসহ চার হত্যাকারীদের বিচার দাবি করেন। ঘণ্টাব্যাপী কর্মসূচিতে ব্যানার ও ফেস্টুন হাতে নিয়ে অংশ নেন নিহত চারজনের স্বজন ও এলাকাবাসী। মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসক ইয়াসমিন আক্তারের কাছে ন্যায়বিচার দাবি করে স্মারকলিপি দেন তারা।

পূর্ববিরোধ ও বালু ব্যবসার জের ধরে গত ৮ মার্চ তিন ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষের লোকজন। নিহত ব্যক্তিরা হলেন দুই ভাই আতাউর রহমান সরদার ওরফে আতাবুর (৩৫), সাইফুল ইসলাম ওরফে হিটার সাইফুল (৩০), তাঁদের চাচাতো ভাই পলাশ সরদার (১৭)। আতাউর ও সাইফুল সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের সরদার বাড়ি এলাকার আজিবর সরদারের ছেলে ও পলাশ একই এলাকার মুজাম সরদারের ছেলে। নিহত সাইফুল খোয়াজপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত অলিল সরদার (৪০) ও তাজেল হাওলাদার (২০)। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তাজেল। আতাউর ও সাইফুলের প্রতিবেশী ছিলেন তাজেল। এ ঘটনায় গুরুতর আহত অলিল সরদার এখনো ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, মসজিদের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে অস্ত্রধারী নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। চারজনকে কুপিয়ে হত্যা করা দেশের ইতিহাসে বিরল ঘটনা। এই ঘটনার পরে আসামিরা আরও প্রভাব বিস্তার করছে। মামলা তুলে নিতে আসামিপক্ষের লোকজন বাদী ও নিহত ব্যক্তির স্বজনদের প্রতিনিয়ত হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হলেও গুরুত্ব দিচ্ছে না।

আসামিদের ধরার ব্যাপারেও পুলিশ দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করছে না। পুলিশের ভূমিকা আসামিপক্ষে রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন বক্তারা। এ সময় হত্যার ঘটনায় জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তার ও দ্রুত বিচার দাবি জানান তারা। মামলার বাদী সুফিয়া বেগমের তিন ছেলের ওপর হামলা হয়েছিল।

ঘটনাস্থলে তার দুই ছেলে নিহত হন। বেঁচে যান বড় ছেলে অলিল সরদার। তিনি বলেন, ‘আমি যে এখনো বেঁচে আছি, কখনো কখনো সেটা বিশ্বাস হয় না। ওরা আমাকে যেভাবে কুপিয়েছে, আমার শরীরে মাথায় যে পরিমাণ কোপের আঘাত রয়েছে, তাতে আমার বাঁচার কথা না। আলায় শুধু বাঁচাইছে। আমার আপন দুই ভাই ও চাচাতো দুই ভাইকে চোখের সামনে খুন হতে দেখেছি। হত্যাকারীদের দেখেছি। তাই ওরা আমাকেও খুন করতে হুমকি দিচ্ছে। আমার মাকে মামলা তুলে নিতে চাপ দিচ্ছে।’

এ সম্পর্কে মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় হোসেন সরদার, শাহজাহান খানসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে যারা এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, তাদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। বাদীকে হুমকির ব্যাপারে কেউ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেননি। তারা অভিযোগ জানালে বাদীকে সব ধরনের আইনি সহযোগিতা দেয়া হবে।’

মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার খোয়াজপুরের কীর্তিনাশা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছিলেন ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল সরদার। এ নিয়ে প্রতিবেশী জেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও জেলা যুব দলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক মো. শাহজাহান খান ও বালু ব্যবসায়ী হোসেন সরদারের সঙ্গে দ্বন্ধে জড়িয়ে পড়েন তিনি। এর জের ধরে গত ৮ মার্চ শাহজাহান খান ও হোসেন সরদারের নেতৃত্বে তার লোকজন সাইফুল ও তার ভাইদের কুপিয়ে হত্যা করেন। এ ঘটনার এক দিন পরেই সাইফুল ও আতাউর সরদারের মা সুফিয়া বেগম বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

back to top