alt

সারাদেশ

উলিপুরের ঐতিহ্যবাহী ক্ষীরমোহনের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলছে

প্রতিনিধি, উলিপুর (কুড়িগ্রাম) : বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার তৈরি ঐতিহ্যবাহী ক্ষীরমোহনের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলছে। সুস্বাদু এই ক্ষীরমোহনের স্বাদ নিতে প্রতিদিনই দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন অনেকে। উলিপুর পৌর শহরে সড়কের দুই পাশে সারি সারি মিষ্টির দোকান চোখে পড়ে। সাইনবোর্ডে পাবনা মিষ্টান্ন ভাণ্ডার, ১ নম্বর পাবনা ভাগ্যলক্ষী মিষ্টান্ন ভাণ্ডার, মৌসুমী হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট, আসল পাবনা মিষ্টান্ন অ্যান্ড দধিঘর, ওকে হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট, পাবনা মিষ্টান্ন অ্যান্ড দধিঘর, শুভেচ্ছা হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট, পাবনা বনফুল মিষ্টান্ন ভান্ডার এমন অনেক নাম। তবে দোকানগুলোতে নেই কোনো বাহারি সাজসজ্জা। এসব দোকানে বিক্রি হয় সুস্বাদু ‘ক্ষীরমোহন’ মিষ্টি।

উলিপুরের প্রবীণ মিষ্টি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৯৮০’র দশকে পাবনার সিরাজগঞ্জ থেকে মিষ্টির কারিগর হিসাবে সুনিল চন্দ্র মদক উলিপুরে আসেন। সে সময় তিনি প্রথম ক্ষীরমোহন তৈরি করেন। অল্পদিনেই তার এই মিষ্টির সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। তার দেখাদেখি অনেকেই এই মিষ্টি বানাতে শুরু করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উলিপুরের ঐতিহ্যবাহী মিষ্টান্ন ‘ক্ষীরমোহন’ ক্ষীর ও মোহনের সংমিশ্রণে তৈরি। ক্ষীর হলো মিষ্টির রস। গাভীর দুধ দীর্ঘ সময় জ্বাল দিয়ে এর সঙ্গে নানা পদের সুস্বাদু মসলা মিশিয়ে তৈরি করা হয় এই রস। স্থানীয়ভাবে মিষ্টির এই রসকে ক্ষীর বলা হয়। অন্যদিকে মোহন বলতে মিষ্টির সাদা অংশকে বোঝানো হয়। দুধ দীর্ঘ সময় জ্বাল দিয়ে ছানা তৈরি করে নিয়ে এর সঙ্গে পরিমাণমতো চিনি ও সামান্য ময়দা মিশিয়ে তৈরি হয় এই মিষ্টি। এরপর চিনির শিরায় ডুবিয়ে আগুনের আঁচে জ্বাল দিতে হয়। পরে ক্ষীরের মধ্যে ডুবিয়ে সামান্য জ্বাল দিলেই তৈরি হয় ক্ষীরমোহন। দুধ যত খাঁটি হবে, ক্ষীরমোহন তত ভালো হবে। সুস্বাদু ক্ষীরমোহনের এটাই প্রকৃত রহস্য। এ এলাকার মানুষের কাছে ঈদ, পূজা, বিয়ে বা অন্য কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে অতিথি আপ্যায়ন ও আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে মিষ্টি নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রিয় নাম ‘ক্ষীরমোহন’।

আসল পাবনা মিষ্টান্ন অ্যান্ড দধিঘর এর যাত্রা ৩৪ বছর আগে। অল্প সময়েই এ দোকানের ক্ষীরমোহনের স্বাদ মানুষের মন ভুলিয়েছে। এই দোকানের মালিক হরিপদ ঘোষ বলেন, আগে পাবনার সিরাজগঞ্জে তাদের পূর্বপুরুষদের দইয়ের ব্যবসা ছিল। ১৯৮৯ সালে তিনি উলিপুরে এসে মিষ্টির ব্যবসা শুরু করেন। এক কেজি ক্ষীরমোহন তৈরি করতে চার থেকে সাড়ে চার কেজি খটি দুধ লাগে। তাই গরুর দুধের দামের ওপর ক্ষীরমোহনের বাজারমূল্য ওঠানামা করে। বর্তমানে এক কেজি ক্ষীরমোহন ৪০০ টাকায় বিক্রি হয়। ঈদ, পূজাসহ বিভিন্ন উৎসবে দৈনিক গড়ে ক্ষীরমোহন ২৫ থেকে ৩০ কেজি বিক্রি হয়। অন্যান্য দিনগুলোতে ১০ থেকে ১৫ কেজি ক্ষীরমোহন তার দোকানেই বিক্রি হয়ে থাকে। এছাড়া অন্যান্য মিষ্টির দোকানগুলোতে গড়ে প্রায় ৮ থেকে ১০ কেজি ক্ষীরমোহন বিক্রি হয়। এছাড়া মিষ্টির দোকানগুলোতে প্রতি পিস ক্ষীরমোহন চল্লিশ টাকা দরে বিক্রি হয়।

মিষ্টির দোকানগুলোর মধ্যে ‘ওকে হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট’ তুলনামূলক পুরোনো। এই প্রতিষ্ঠানের মালিক সামছুল আলম জানান, এলাকার লোকজনের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে উলিপুরে ঘুরতে আসা লোকজন এখানে ক্ষীরমোহন খান। প্যাকেটে করে বাসার জন্য নিয়ে যান। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পরিচিতি রয়েছে সুস্বাদু উলিপুরের ক্ষীরমোহনের। দেশের বাহিরে প্রতিবেশী দেশ ভারতসহ বিভিন্ন দেশে এই ক্ষীরমোহন প্যাকেট করে বিশেষ ব্যবস্থায় ফ্রিজআপ করে নিয়ে যাওয়া হয় বলে দাবি করেন তিনি।

মাদক প্রতিরোধে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত

ছবি

সাটুরিয়ায় সরকারি খাল দখলের মহোৎসব, নীরব প্রশাসন

খুলনায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে যুবক খুন

বাবার লাশ ঘরে রেখে পরীক্ষার হলে খাইরুল

মাদারগঞ্জে আল-আকাবা সমিতির পরিচালক গ্রেপ্তার

দোকানে তালা দেয়া নিয়ে বিরোধে বৃদ্ধ নিহত

ছবি

সুনামগঞ্জের হাওরে বোরো ধান কাটা, মাড়াইয়ে ব্যস্ত কৃষক

ছবি

চুয়াডাঙ্গায় মাঝারি তাপপ্রবাহে হাঁসফাঁস জনজীবন, কৃষিকাজেও প্রভাব

রাউজানে যুবককে গুলি করে হত্যা

২ জেলায় এসএসসি পরীক্ষার্থীসহ ২ ছাত্রীর আত্মহত্যা

চরফ্যাসনে পৃথক ঘটনায় তিনজনের মৃত্যু

২ জেলায় সড়কে নিহত ২

ছবি

বিএনপি নেতার পুকুরে বিষ প্রয়োগ, ১৬ লাখ টাকার মাছ নিধন

ঘোড়াঘাটে ব্যবসায়ীর ৫ গরু চুরি

গলাচিপায় বজ্রপাতে ৫ গরুর মৃত্যু

যৌথ বাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলি, গুলিবিদ্ধ ১

নিখোঁজের পরদিন বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার

চাটখিল-ঢাকা রোডে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়

ছবি

পাঁচ দিন ধরে পানি নেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, রোগীদের ভোগান্তি চরমে

পরিবেশ মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ইটভাটা মালিক আটক

বসতবাড়িতে ডাকাতি টাকা-স্বর্ণালংকার লুট

প্রবাসীর স্ত্রীকে গাছে বেঁধে নির্যাতন, গ্রেপ্তার ২

ছবি

আক্কেলপুরে আলুর কম দামে কৃষকের মাথায় হাত

ছবি

চকরিয়ায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে তিন পরিবারের বসতবাড়ি ভস্মীভূত

তাহিরপুর সীমান্তে ইয়াবাসহ ব্যবসায়ী আটক

ছবি

সিরাজগঞ্জে মৌমাছির আক্রমণ, আহত ২০

সিলেটে নিখোঁজ ৬ রাজমিস্ত্রি টেকনাফ থেকে উদ্ধার

বিএসসি কৃষিবিদদের প্রতি বৈষম্য নিরসনে ৫ দফা দাবিতে সমাবেশ

কসবায় গরু-ছাগল ও মহিষের হাট থেকে কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

ছবি

আম বাজারজাতকরণে মতবিনিময় সভা

‘৩৬ দিনের আন্দোলনে হাসিনা পালায়নি ১৬ বছর সংগ্রামের ফসল’

ছবি

বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের অবস্থান ধর্মঘট

ছবি

নড়াইলে দাড়ার খাল পুনঃখনন উদ্বোধন

মসজিদে ঢুকে চার খুন আসামিদের ধরার ব্যাপারে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করছে না পুলিশ

নিখোঁজের তিন দিন পর বাল্কহেড শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার

ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি ছাত্রদলের প্রিজাইডিং অফিসার

tab

সারাদেশ

উলিপুরের ঐতিহ্যবাহী ক্ষীরমোহনের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলছে

প্রতিনিধি, উলিপুর (কুড়িগ্রাম)

বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার তৈরি ঐতিহ্যবাহী ক্ষীরমোহনের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলছে। সুস্বাদু এই ক্ষীরমোহনের স্বাদ নিতে প্রতিদিনই দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন অনেকে। উলিপুর পৌর শহরে সড়কের দুই পাশে সারি সারি মিষ্টির দোকান চোখে পড়ে। সাইনবোর্ডে পাবনা মিষ্টান্ন ভাণ্ডার, ১ নম্বর পাবনা ভাগ্যলক্ষী মিষ্টান্ন ভাণ্ডার, মৌসুমী হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট, আসল পাবনা মিষ্টান্ন অ্যান্ড দধিঘর, ওকে হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট, পাবনা মিষ্টান্ন অ্যান্ড দধিঘর, শুভেচ্ছা হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট, পাবনা বনফুল মিষ্টান্ন ভান্ডার এমন অনেক নাম। তবে দোকানগুলোতে নেই কোনো বাহারি সাজসজ্জা। এসব দোকানে বিক্রি হয় সুস্বাদু ‘ক্ষীরমোহন’ মিষ্টি।

উলিপুরের প্রবীণ মিষ্টি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৯৮০’র দশকে পাবনার সিরাজগঞ্জ থেকে মিষ্টির কারিগর হিসাবে সুনিল চন্দ্র মদক উলিপুরে আসেন। সে সময় তিনি প্রথম ক্ষীরমোহন তৈরি করেন। অল্পদিনেই তার এই মিষ্টির সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। তার দেখাদেখি অনেকেই এই মিষ্টি বানাতে শুরু করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উলিপুরের ঐতিহ্যবাহী মিষ্টান্ন ‘ক্ষীরমোহন’ ক্ষীর ও মোহনের সংমিশ্রণে তৈরি। ক্ষীর হলো মিষ্টির রস। গাভীর দুধ দীর্ঘ সময় জ্বাল দিয়ে এর সঙ্গে নানা পদের সুস্বাদু মসলা মিশিয়ে তৈরি করা হয় এই রস। স্থানীয়ভাবে মিষ্টির এই রসকে ক্ষীর বলা হয়। অন্যদিকে মোহন বলতে মিষ্টির সাদা অংশকে বোঝানো হয়। দুধ দীর্ঘ সময় জ্বাল দিয়ে ছানা তৈরি করে নিয়ে এর সঙ্গে পরিমাণমতো চিনি ও সামান্য ময়দা মিশিয়ে তৈরি হয় এই মিষ্টি। এরপর চিনির শিরায় ডুবিয়ে আগুনের আঁচে জ্বাল দিতে হয়। পরে ক্ষীরের মধ্যে ডুবিয়ে সামান্য জ্বাল দিলেই তৈরি হয় ক্ষীরমোহন। দুধ যত খাঁটি হবে, ক্ষীরমোহন তত ভালো হবে। সুস্বাদু ক্ষীরমোহনের এটাই প্রকৃত রহস্য। এ এলাকার মানুষের কাছে ঈদ, পূজা, বিয়ে বা অন্য কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে অতিথি আপ্যায়ন ও আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে মিষ্টি নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রিয় নাম ‘ক্ষীরমোহন’।

আসল পাবনা মিষ্টান্ন অ্যান্ড দধিঘর এর যাত্রা ৩৪ বছর আগে। অল্প সময়েই এ দোকানের ক্ষীরমোহনের স্বাদ মানুষের মন ভুলিয়েছে। এই দোকানের মালিক হরিপদ ঘোষ বলেন, আগে পাবনার সিরাজগঞ্জে তাদের পূর্বপুরুষদের দইয়ের ব্যবসা ছিল। ১৯৮৯ সালে তিনি উলিপুরে এসে মিষ্টির ব্যবসা শুরু করেন। এক কেজি ক্ষীরমোহন তৈরি করতে চার থেকে সাড়ে চার কেজি খটি দুধ লাগে। তাই গরুর দুধের দামের ওপর ক্ষীরমোহনের বাজারমূল্য ওঠানামা করে। বর্তমানে এক কেজি ক্ষীরমোহন ৪০০ টাকায় বিক্রি হয়। ঈদ, পূজাসহ বিভিন্ন উৎসবে দৈনিক গড়ে ক্ষীরমোহন ২৫ থেকে ৩০ কেজি বিক্রি হয়। অন্যান্য দিনগুলোতে ১০ থেকে ১৫ কেজি ক্ষীরমোহন তার দোকানেই বিক্রি হয়ে থাকে। এছাড়া অন্যান্য মিষ্টির দোকানগুলোতে গড়ে প্রায় ৮ থেকে ১০ কেজি ক্ষীরমোহন বিক্রি হয়। এছাড়া মিষ্টির দোকানগুলোতে প্রতি পিস ক্ষীরমোহন চল্লিশ টাকা দরে বিক্রি হয়।

মিষ্টির দোকানগুলোর মধ্যে ‘ওকে হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট’ তুলনামূলক পুরোনো। এই প্রতিষ্ঠানের মালিক সামছুল আলম জানান, এলাকার লোকজনের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে উলিপুরে ঘুরতে আসা লোকজন এখানে ক্ষীরমোহন খান। প্যাকেটে করে বাসার জন্য নিয়ে যান। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পরিচিতি রয়েছে সুস্বাদু উলিপুরের ক্ষীরমোহনের। দেশের বাহিরে প্রতিবেশী দেশ ভারতসহ বিভিন্ন দেশে এই ক্ষীরমোহন প্যাকেট করে বিশেষ ব্যবস্থায় ফ্রিজআপ করে নিয়ে যাওয়া হয় বলে দাবি করেন তিনি।

back to top