রাজশাহীর লিচু স্বাদে ও গন্ধে অতুলনীয়। জেলার প্রায় সব উপজেলাতেই রয়েছে লিচুর বাগান। বর্তমানে এই বাগানগুলোর লিচুর গাছে দেখা মিলেছে গুটির। প্রতি বছর জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে লিচু গাছে মুকুল আসে এবং মে মাসের শেষে বা জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে পরিপক্ক লিচু বাজারজাত করার উপযুক্ত হয়ে থাকে। লিচু চাষিরা সারা বছর তাদের লিচু গাছের যত্ন নেন বছরের এই স্বল্প সময়ে ফল বিক্রির জন্য। গুটির পর থেকে মাত্র দুই মাস থেকে তিন মাসের মধ্যে লিচু বাজারজাত করার উপযোগী হয়ে থাকে। এই সময়ের মধ্যে লাভজনক মূল্যে লিচু বাজারজাত করতে না পারলে অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হবেন তারা। এসব বাগানে ফলন আশানুরূপ হলেও, দ্রুত পচনশীল লিচু সঠিক সময়ে বাজারজাত করাটাই এই মৌসুমের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে জানিয়েছেন লিচু চাষিরা।
এই জেলার অধিকাংশ চাষি ও কৃষি বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, আবহাওয়া অনুকুল থাকায় এবার লিচুর উৎপাদন হবে ভালো। এ বছর রাজশাহীতে ৫৩০ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ হচ্ছে প্রায় ৩ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাগমারাতে ১১৫ হেক্টর জমিতে লিচু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ৮২৫ মেট্রিক টন। এছাড়াও সবচেয়ে কম নগরীর বোয়ালিয়া থানায় ১০ হেক্টর জমিতে লিচুর লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ৭০ মেট্রিক টন। এছাড়াও পুঠিয়ায় ৭৮ হেক্টর, পবায় ৭৫ হেক্টর, দূর্গাপুরে ৭০ হেক্টর, মোহনপুরে ৫২ হেক্টর, চারঘাটে ৪৫ হেক্টর, তানোরে ৩০ হেক্টর, বাঘাতে ২৮ হেক্টর, মতিহারে ২০ হেক্টর এবং গোদাগাড়ীতে ১৯ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ হয়েছে।
এবিষয়ে রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোছা. উম্মে ছালমা বলেন, রাজশাহীর লিচু স্বাদে ও গন্ধে অতুলনীয় হওয়ায় এই জেলার প্রায় সব উপজেলাতেই রয়েছে লিচুর বাগান। তাই এই ফলের চাষ খুবই লাভজনক। তবে কোন মৌসুমে ফলন একটু কম আবার কোনো মৌসুমে বেশি হয়। তবে প্রতিবছর লিচুর আবাদ বাড়ছে। এ বছর রাজশাহীতে ৫৩০ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ৩৮শো মেট্রিক টন। বর্তমানে লিচু গাছে দেখা মিলেছে গুটির। এই গুটি টিকিয়ে রাখতে চাষিরা পরিচর্যার কোন কমতি রাখছেন না।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর রাজশাহী কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক বছরে শুধু লিচু চাষ করে জেলার কয়েকশো চাষি স্বনির্ভর হয়েছেন। ফলে প্রতি বছর লিচুর চাষ বাড়ছে। বাগান ছাড়াও বসতবাড়িতে দেশি লিচুর পাশাপাশি উচ্চফলনশীল চায়না-৩ এবং বোম্বে ও মাদ্রাজি জাতের লিচুর চাষ হচ্ছে।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বলছে, এ বছর লিচুর চাষ হয়েছে ৫৩০ হেক্টর জমিতে। আর ২০১৬-১৭ মৌসুমে জেলায় মোট লিচুর চাষ হয়েছে ৪৮৯ হেক্টর জমিতে। এতে উৎপাদন হয়েছিল ২ হাজার ৫১০ মেট্রিক টন। ২০১৭-১৮ সালে এক একর বেড়ে মোট চাষের জমি দাঁড়ায় ৪৯০ হেক্টরে। ২০১৮-১৯ মৌসুমে চাষের জমি বাড়ে আট হেক্টর। মোট ৪৯৮ হেক্টর জমিতে আবাদ হয় ২ হাজার ৮৭৬ মেট্রিক টন। সে বছর হেক্টর প্রতি উৎপাদন ছিল ৫ দশমিক ৭৮ মেট্রিক টন। ২০১৯-২০ মৌসুমে লিচুর আবাদ আরও দুই হেক্টর বৃদ্ধি পেয়ে মোট ৫০০ হেক্টরে দাঁড়ায়। অপরদিকে ২০২০-২১ মৌসুমে ১৯ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ বৃদ্ধি পেয়ে মোট চাষের জমি দাঁড়ায় ৫১৯ হেক্টরে।
সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন লিচুবাগান ঘুরে দেখা গেছে, চাষিরা গুটির পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। গাছের গোড়ায় ড্রেন করা, পানি দেওয়া, স্প্রে করা সহ লিচু গাছের পরিচর্যা হচ্ছে। কীটনাশকসহ বিভিন্ন ভিটামিন স্প্রে করছেন তারা। এছাড়াও লিচু মোটা করতে মাটিতে জৈব সার, হরমোনসহ বিভিন্ন রাসায়নিক সার প্রয়োগ করবেন তারা। বাগান মালিকরা জানান যে- তারা জানুয়ারি মাসের শেষে লিচু গাছে ভালো ফুল দেখতে পেয়েছিলেন এবং আবহাওয়াও ছিল অনুকুলে। এখন লিচুর গুটি বেশ বড়ো হয়েছে। কোন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে মে মাসের শেষের দিকে কৃষকরা গাছ থেকে লিচুপাড়া শুরু এবং বাজারজাত করবেন।
চাপাইনবাবগঞ্জ থেকে আসা লিচু ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম বলেন, আমি দীর্ঘ ১২ বছর ধরে লিচুর ব্যবসা করি। এ বছর আশানুরূপ লিচুর ফলন হয়েছে। প্রতি বছর লিচু দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় সরবরাহ করে থাকি। লিচুর ব্যবসা লাভজনক হওয়ায়, প্রতিবছরই লিচু চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে, লিচুর ভালো ফলন হয় বলে জানিয়েছেন তিনি।
পবা উপজেলার নগর পারিলা এলাকার লিচু চাষি এরশাদ আলী জানান, তার বাগানে বোম্বে জাতের ৫০টি লিচু গাছ আছে। গত বছর দেড় লাখ টাকার লিচু বিক্রি করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার দুই লাখ টাকা বিক্রির আশা করছেন তিনি।
শালবাগান বাজারের লিচু ব্যবসায়ী ইয়াসিন আলী জানান, তিনি ১০ বছর ধরে এই লিচু ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এবার প্রায় ১০ একর বাগান লিজ নিয়েছেন। বাগানগুলোতে চায়না-৩, বোম্বে ও মাদ্রাজি জাতের লিচুর ফলন ভালো হয়েছে। ইতোমধ্যে ঢাকার পাইকাররা আগাম গাছের লিচু কিনতে শুরু করেছেন।
তিনি আরও জানান, প্রতিদিন ৪০ জন শ্রমিক লিচু বাগানে কাজ করে যাচ্ছেন। তাদের তিন বেলা খাবার ও পকেট খরচসহ শ্রমিকপ্রতি ৫০০-৬০০ টাকা দিতে হয়। নিয়মিত পরিচর্যা ও বালাইনাশক ওষুধ দিতে হয়। এ বছর খরচ বেশি হওয়ায়, লিচুর দামটাও একটু বেশি হবে।
জেলার পবা উপজেলার বড়গাছি গ্রামের লিচুর চাষি সুলতান বলেন, আবহাওয়া যদি শেষ পর্যন্ত ভালো থাকে তবে এবার লিচুর ফলনও ভালো হবে। গাছ থেকে লিচু যেন পড়ে না যায়, সে জন্য পর্যাপ্ত পানি দেয়া হচ্ছে। কাঠবিড়ালি আর বাদুড় যাতে নষ্ট করতে না পারে, সে জন্য জালের ব্যবস্থা করা হবে। লিচুর পরাগায়ণ বৃদ্ধি করতে বাগানে একজন মৌচাষীকে মৌ-বাক্সও বসাতে দিয়েছি। পুঠিয়া উপজেলার জিউপাড়া এলাকার লিচু চাষী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এ বছর লিচু গাছে মুকুলের পরিমাণ বেশি এসেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবং সময় মতো পরিচর্যা করা হলে চলতি মৌসুমে লিচুর ভালো ফলন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ বছরে লিচুর মুকুল আসার সময় হালকা বৃষ্টি হওয়ার কারণে পূর্ণাঙ্গ মুকুল বের হয়েছে। এসব মুকুল থেকে গুটি ফুটে বড়ো আকার ধারণ করতে শুরু করেছে।
বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫
রাজশাহীর লিচু স্বাদে ও গন্ধে অতুলনীয়। জেলার প্রায় সব উপজেলাতেই রয়েছে লিচুর বাগান। বর্তমানে এই বাগানগুলোর লিচুর গাছে দেখা মিলেছে গুটির। প্রতি বছর জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে লিচু গাছে মুকুল আসে এবং মে মাসের শেষে বা জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে পরিপক্ক লিচু বাজারজাত করার উপযুক্ত হয়ে থাকে। লিচু চাষিরা সারা বছর তাদের লিচু গাছের যত্ন নেন বছরের এই স্বল্প সময়ে ফল বিক্রির জন্য। গুটির পর থেকে মাত্র দুই মাস থেকে তিন মাসের মধ্যে লিচু বাজারজাত করার উপযোগী হয়ে থাকে। এই সময়ের মধ্যে লাভজনক মূল্যে লিচু বাজারজাত করতে না পারলে অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হবেন তারা। এসব বাগানে ফলন আশানুরূপ হলেও, দ্রুত পচনশীল লিচু সঠিক সময়ে বাজারজাত করাটাই এই মৌসুমের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে জানিয়েছেন লিচু চাষিরা।
এই জেলার অধিকাংশ চাষি ও কৃষি বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, আবহাওয়া অনুকুল থাকায় এবার লিচুর উৎপাদন হবে ভালো। এ বছর রাজশাহীতে ৫৩০ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ হচ্ছে প্রায় ৩ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাগমারাতে ১১৫ হেক্টর জমিতে লিচু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ৮২৫ মেট্রিক টন। এছাড়াও সবচেয়ে কম নগরীর বোয়ালিয়া থানায় ১০ হেক্টর জমিতে লিচুর লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ৭০ মেট্রিক টন। এছাড়াও পুঠিয়ায় ৭৮ হেক্টর, পবায় ৭৫ হেক্টর, দূর্গাপুরে ৭০ হেক্টর, মোহনপুরে ৫২ হেক্টর, চারঘাটে ৪৫ হেক্টর, তানোরে ৩০ হেক্টর, বাঘাতে ২৮ হেক্টর, মতিহারে ২০ হেক্টর এবং গোদাগাড়ীতে ১৯ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ হয়েছে।
এবিষয়ে রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোছা. উম্মে ছালমা বলেন, রাজশাহীর লিচু স্বাদে ও গন্ধে অতুলনীয় হওয়ায় এই জেলার প্রায় সব উপজেলাতেই রয়েছে লিচুর বাগান। তাই এই ফলের চাষ খুবই লাভজনক। তবে কোন মৌসুমে ফলন একটু কম আবার কোনো মৌসুমে বেশি হয়। তবে প্রতিবছর লিচুর আবাদ বাড়ছে। এ বছর রাজশাহীতে ৫৩০ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ৩৮শো মেট্রিক টন। বর্তমানে লিচু গাছে দেখা মিলেছে গুটির। এই গুটি টিকিয়ে রাখতে চাষিরা পরিচর্যার কোন কমতি রাখছেন না।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর রাজশাহী কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক বছরে শুধু লিচু চাষ করে জেলার কয়েকশো চাষি স্বনির্ভর হয়েছেন। ফলে প্রতি বছর লিচুর চাষ বাড়ছে। বাগান ছাড়াও বসতবাড়িতে দেশি লিচুর পাশাপাশি উচ্চফলনশীল চায়না-৩ এবং বোম্বে ও মাদ্রাজি জাতের লিচুর চাষ হচ্ছে।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বলছে, এ বছর লিচুর চাষ হয়েছে ৫৩০ হেক্টর জমিতে। আর ২০১৬-১৭ মৌসুমে জেলায় মোট লিচুর চাষ হয়েছে ৪৮৯ হেক্টর জমিতে। এতে উৎপাদন হয়েছিল ২ হাজার ৫১০ মেট্রিক টন। ২০১৭-১৮ সালে এক একর বেড়ে মোট চাষের জমি দাঁড়ায় ৪৯০ হেক্টরে। ২০১৮-১৯ মৌসুমে চাষের জমি বাড়ে আট হেক্টর। মোট ৪৯৮ হেক্টর জমিতে আবাদ হয় ২ হাজার ৮৭৬ মেট্রিক টন। সে বছর হেক্টর প্রতি উৎপাদন ছিল ৫ দশমিক ৭৮ মেট্রিক টন। ২০১৯-২০ মৌসুমে লিচুর আবাদ আরও দুই হেক্টর বৃদ্ধি পেয়ে মোট ৫০০ হেক্টরে দাঁড়ায়। অপরদিকে ২০২০-২১ মৌসুমে ১৯ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ বৃদ্ধি পেয়ে মোট চাষের জমি দাঁড়ায় ৫১৯ হেক্টরে।
সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন লিচুবাগান ঘুরে দেখা গেছে, চাষিরা গুটির পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। গাছের গোড়ায় ড্রেন করা, পানি দেওয়া, স্প্রে করা সহ লিচু গাছের পরিচর্যা হচ্ছে। কীটনাশকসহ বিভিন্ন ভিটামিন স্প্রে করছেন তারা। এছাড়াও লিচু মোটা করতে মাটিতে জৈব সার, হরমোনসহ বিভিন্ন রাসায়নিক সার প্রয়োগ করবেন তারা। বাগান মালিকরা জানান যে- তারা জানুয়ারি মাসের শেষে লিচু গাছে ভালো ফুল দেখতে পেয়েছিলেন এবং আবহাওয়াও ছিল অনুকুলে। এখন লিচুর গুটি বেশ বড়ো হয়েছে। কোন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে মে মাসের শেষের দিকে কৃষকরা গাছ থেকে লিচুপাড়া শুরু এবং বাজারজাত করবেন।
চাপাইনবাবগঞ্জ থেকে আসা লিচু ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম বলেন, আমি দীর্ঘ ১২ বছর ধরে লিচুর ব্যবসা করি। এ বছর আশানুরূপ লিচুর ফলন হয়েছে। প্রতি বছর লিচু দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় সরবরাহ করে থাকি। লিচুর ব্যবসা লাভজনক হওয়ায়, প্রতিবছরই লিচু চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে, লিচুর ভালো ফলন হয় বলে জানিয়েছেন তিনি।
পবা উপজেলার নগর পারিলা এলাকার লিচু চাষি এরশাদ আলী জানান, তার বাগানে বোম্বে জাতের ৫০টি লিচু গাছ আছে। গত বছর দেড় লাখ টাকার লিচু বিক্রি করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার দুই লাখ টাকা বিক্রির আশা করছেন তিনি।
শালবাগান বাজারের লিচু ব্যবসায়ী ইয়াসিন আলী জানান, তিনি ১০ বছর ধরে এই লিচু ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এবার প্রায় ১০ একর বাগান লিজ নিয়েছেন। বাগানগুলোতে চায়না-৩, বোম্বে ও মাদ্রাজি জাতের লিচুর ফলন ভালো হয়েছে। ইতোমধ্যে ঢাকার পাইকাররা আগাম গাছের লিচু কিনতে শুরু করেছেন।
তিনি আরও জানান, প্রতিদিন ৪০ জন শ্রমিক লিচু বাগানে কাজ করে যাচ্ছেন। তাদের তিন বেলা খাবার ও পকেট খরচসহ শ্রমিকপ্রতি ৫০০-৬০০ টাকা দিতে হয়। নিয়মিত পরিচর্যা ও বালাইনাশক ওষুধ দিতে হয়। এ বছর খরচ বেশি হওয়ায়, লিচুর দামটাও একটু বেশি হবে।
জেলার পবা উপজেলার বড়গাছি গ্রামের লিচুর চাষি সুলতান বলেন, আবহাওয়া যদি শেষ পর্যন্ত ভালো থাকে তবে এবার লিচুর ফলনও ভালো হবে। গাছ থেকে লিচু যেন পড়ে না যায়, সে জন্য পর্যাপ্ত পানি দেয়া হচ্ছে। কাঠবিড়ালি আর বাদুড় যাতে নষ্ট করতে না পারে, সে জন্য জালের ব্যবস্থা করা হবে। লিচুর পরাগায়ণ বৃদ্ধি করতে বাগানে একজন মৌচাষীকে মৌ-বাক্সও বসাতে দিয়েছি। পুঠিয়া উপজেলার জিউপাড়া এলাকার লিচু চাষী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এ বছর লিচু গাছে মুকুলের পরিমাণ বেশি এসেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবং সময় মতো পরিচর্যা করা হলে চলতি মৌসুমে লিচুর ভালো ফলন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ বছরে লিচুর মুকুল আসার সময় হালকা বৃষ্টি হওয়ার কারণে পূর্ণাঙ্গ মুকুল বের হয়েছে। এসব মুকুল থেকে গুটি ফুটে বড়ো আকার ধারণ করতে শুরু করেছে।