ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো
সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে এবং মৌসুমী শ্রমিকদের ২২ দফা দাবি না মানায় দুদিন যাবত বহুজাতিক তামাক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান কুষ্টিয়া ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো লিফ ফ্যাক্টরির সামনে মৌসুমী শ্রমিকদের অবস্থান কর্মসূচিতে মৌসুমের প্রথম দিনের কার্যক্রম (তামাক প্রক্রিয়াজাতকরণ) শুরু করতে পারেনি কুষ্টিয়া লিফ ফ্যাক্টরি। গত বৃহস্পতিবার এবারের মৌসুম শুরুর প্রথম দিন ধার্য করা থাকলেও শ্রমিকদের কর্মসূচির কারণে ফ্যাক্টরির কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি বিএটিবি কর্তৃপক্ষ। গত বৃহস্পতিবার ভোর ৫টা থেকে শুরু করে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চৌড়হাস মোড় সংলগ্ন ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর কুষ্টিয়া লিফ ফ্যাক্টরির সামনে এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে তারা। তারা বলেন, গত বৃহস্পতিবার ভোর ৫টা থেকে এই কর্মসূচি শুরু করেছি যা রাত ১২টা পর্যন্ত চলবে। তারা জানাই আমাদের ২২ দফা দাবি না মানলে লাগাতার কর্মসূচি চলবে। এদিকে মৌসুমী শ্রমিকদের অবস্থান কর্মসূচির কারণ হিসেবে তারা বলেন, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর কুষ্টিয়া লিফ ফ্যাক্টরির মৌসুমী শ্রমিকদের ২২ দফা দাবির প্রেক্ষিতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করার পর গত ১৭ এপ্রিল শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে শ্রমিকদের দাবি-দাওয়াগুলো ৩ কর্মদিবসের (গত ২২ এপ্রিল) মধ্যে আইনগত ব্যবস্থা নিতে নিলুফা ইয়াসমিন উপসচিব স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে প্লান্ট ম্যানেজার, জিএলটি প্লান্ট বরাবর নির্দেশ প্রদান করা হয়। কিন্তু সরকারের দেয়া সেই নির্দেশনায় কর্ণপাত না করেই মৌসুমী শ্রমিকদের বাদ রেখে ঠিকাদারি শ্রমিকদের নিয়ে এবারের মৌসুম শুরু করার জন্য সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছিল ফ্যাক্টারিটি। মৌসুমী শ্রমিকদের অবস্থান কর্মসূচির কারণে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়েছে এবারের মৌসুম শুরুর দিন-তারিখ।
অবস্থান কর্মসূচিতে শ্রমিকদের পক্ষ থেকে বলা হয়, বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ অনুযায়ী ২০১২ সাল থেকে কোম্পানির পাওনা মুনাফা, প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্রাচুইটি, এক নিয়োগপত্র, আইন বহির্ভূত বাইরে রাখা শ্রমিকদের চাকরিতে পুনর্বহানসহ ২২ দফা দাবি পূরণ করতে হবে। একই দাবিতে গত বুধবারও দিনব্যাপী মৌসুমী শ্রমিকরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করা মৌসুমী শ্রমিকরা বলেন, গত ২৪ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে মৌসুমের কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু কর্তৃপক্ষ আমাদের ছাড়াই ঠিকাদারের শ্রমিক দিয়ে মৌসুম শুরু করার চিন্তাভাবনা করেছিল, কিন্তু আমরা আমাদের জীবন থাকতে এভাবে ফ্যাক্টরি চালু হতে দিতে পারি না। তারা বলেন, ফ্যাক্টরি চালু করতে হলে আমাদের ২২ দফা মেনে তারপর ফ্যাক্টরি চালু হবে, তার আগে ফ্যাক্টরি চালু হতে পারে না। কারণ সরকার স্পষ্টভাবে কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিয়েছে, ৩ কর্ম দিবসের মধ্যে অর্থাৎ ২২ এপ্রিলের মধ্যে আমাদের ২২ দফা মেনে নিতে হবে। কিন্তু সরকারের সেই নির্দেশনা অমান্য করে ফ্যাক্টরি তাদের ঠিকাদারি শ্রমিকদের দিয়েই কোম্পানি চালু করার প্রস্তুতি নিয়েছিল। তারা আরও বলেন, যতদিন ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানি আমাদের ২২ দফা দাবি না মানবে, ততদিন আমরা লাগাতার কর্মসূচি এভাবেই পালন করতে থাকব। পরবর্তীতে তারা তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়েও এই কর্মসূচি পালন করবেন বলে জানান। অবস্থান কর্মসূচি পালন করা শ্রমিকরা বলেন, আমাদের এই কর্মসূচির কারণে যদি কোনো অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটে, সেই ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ দায়ভার ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানির কর্মকর্তাদেরই নিতে হবে।
এই বিষয়ে কথা বলার জন্য ট্রেড ইউনিয়ন নেতাদের তাদের মোবাইলফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও, তারা কেউই ফোন রিসিভ করেননি। বিষয়টি নিয়ে এখন পর্যন্ত কোম্পানি কর্তৃপক্ষ বা ট্রেড ইউনিয়নের কোনো ব্যক্তিরা শ্রমিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি। শ্রমিকদের আন্দোলনের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বিএটি বাংলাদেশের একজন মুখপাত্র লিখিত বক্তব্যে জানান, একটি দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিএটি বাংলাদেশ দেশের প্রযোজ্য সব আইন, বিধি-বিধান এবং নীতিমালা মেনে চলতে দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কিছু মৌসুমী শ্রমিক বিএটি বাংলাদেশের কাছে কিছু দাবি উত্থাপন করেছেন। আমরা আমাদের কর্মীদের যৌক্তিক দাবিগুলো গুরুত্ব সহকারে শুনেছি এবং পর্যালোচনা করেছি। একটি দায়িত্বশীল করপোরেট প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমরা এই দেশে গত ১১৫ বছর ধরে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছি। দেশের আইনি কাঠামোর আওতায় সব কর্মী যেন যথাযথভাবে তাদের প্রাপ্য সুবিধা লাভ করেন, সেটি নিশ্চিত করতে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ।
ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো
শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫
সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে এবং মৌসুমী শ্রমিকদের ২২ দফা দাবি না মানায় দুদিন যাবত বহুজাতিক তামাক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান কুষ্টিয়া ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো লিফ ফ্যাক্টরির সামনে মৌসুমী শ্রমিকদের অবস্থান কর্মসূচিতে মৌসুমের প্রথম দিনের কার্যক্রম (তামাক প্রক্রিয়াজাতকরণ) শুরু করতে পারেনি কুষ্টিয়া লিফ ফ্যাক্টরি। গত বৃহস্পতিবার এবারের মৌসুম শুরুর প্রথম দিন ধার্য করা থাকলেও শ্রমিকদের কর্মসূচির কারণে ফ্যাক্টরির কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি বিএটিবি কর্তৃপক্ষ। গত বৃহস্পতিবার ভোর ৫টা থেকে শুরু করে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চৌড়হাস মোড় সংলগ্ন ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর কুষ্টিয়া লিফ ফ্যাক্টরির সামনে এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে তারা। তারা বলেন, গত বৃহস্পতিবার ভোর ৫টা থেকে এই কর্মসূচি শুরু করেছি যা রাত ১২টা পর্যন্ত চলবে। তারা জানাই আমাদের ২২ দফা দাবি না মানলে লাগাতার কর্মসূচি চলবে। এদিকে মৌসুমী শ্রমিকদের অবস্থান কর্মসূচির কারণ হিসেবে তারা বলেন, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর কুষ্টিয়া লিফ ফ্যাক্টরির মৌসুমী শ্রমিকদের ২২ দফা দাবির প্রেক্ষিতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করার পর গত ১৭ এপ্রিল শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে শ্রমিকদের দাবি-দাওয়াগুলো ৩ কর্মদিবসের (গত ২২ এপ্রিল) মধ্যে আইনগত ব্যবস্থা নিতে নিলুফা ইয়াসমিন উপসচিব স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে প্লান্ট ম্যানেজার, জিএলটি প্লান্ট বরাবর নির্দেশ প্রদান করা হয়। কিন্তু সরকারের দেয়া সেই নির্দেশনায় কর্ণপাত না করেই মৌসুমী শ্রমিকদের বাদ রেখে ঠিকাদারি শ্রমিকদের নিয়ে এবারের মৌসুম শুরু করার জন্য সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছিল ফ্যাক্টারিটি। মৌসুমী শ্রমিকদের অবস্থান কর্মসূচির কারণে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়েছে এবারের মৌসুম শুরুর দিন-তারিখ।
অবস্থান কর্মসূচিতে শ্রমিকদের পক্ষ থেকে বলা হয়, বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ অনুযায়ী ২০১২ সাল থেকে কোম্পানির পাওনা মুনাফা, প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্রাচুইটি, এক নিয়োগপত্র, আইন বহির্ভূত বাইরে রাখা শ্রমিকদের চাকরিতে পুনর্বহানসহ ২২ দফা দাবি পূরণ করতে হবে। একই দাবিতে গত বুধবারও দিনব্যাপী মৌসুমী শ্রমিকরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করা মৌসুমী শ্রমিকরা বলেন, গত ২৪ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে মৌসুমের কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু কর্তৃপক্ষ আমাদের ছাড়াই ঠিকাদারের শ্রমিক দিয়ে মৌসুম শুরু করার চিন্তাভাবনা করেছিল, কিন্তু আমরা আমাদের জীবন থাকতে এভাবে ফ্যাক্টরি চালু হতে দিতে পারি না। তারা বলেন, ফ্যাক্টরি চালু করতে হলে আমাদের ২২ দফা মেনে তারপর ফ্যাক্টরি চালু হবে, তার আগে ফ্যাক্টরি চালু হতে পারে না। কারণ সরকার স্পষ্টভাবে কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিয়েছে, ৩ কর্ম দিবসের মধ্যে অর্থাৎ ২২ এপ্রিলের মধ্যে আমাদের ২২ দফা মেনে নিতে হবে। কিন্তু সরকারের সেই নির্দেশনা অমান্য করে ফ্যাক্টরি তাদের ঠিকাদারি শ্রমিকদের দিয়েই কোম্পানি চালু করার প্রস্তুতি নিয়েছিল। তারা আরও বলেন, যতদিন ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানি আমাদের ২২ দফা দাবি না মানবে, ততদিন আমরা লাগাতার কর্মসূচি এভাবেই পালন করতে থাকব। পরবর্তীতে তারা তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়েও এই কর্মসূচি পালন করবেন বলে জানান। অবস্থান কর্মসূচি পালন করা শ্রমিকরা বলেন, আমাদের এই কর্মসূচির কারণে যদি কোনো অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটে, সেই ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ দায়ভার ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানির কর্মকর্তাদেরই নিতে হবে।
এই বিষয়ে কথা বলার জন্য ট্রেড ইউনিয়ন নেতাদের তাদের মোবাইলফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও, তারা কেউই ফোন রিসিভ করেননি। বিষয়টি নিয়ে এখন পর্যন্ত কোম্পানি কর্তৃপক্ষ বা ট্রেড ইউনিয়নের কোনো ব্যক্তিরা শ্রমিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি। শ্রমিকদের আন্দোলনের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বিএটি বাংলাদেশের একজন মুখপাত্র লিখিত বক্তব্যে জানান, একটি দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিএটি বাংলাদেশ দেশের প্রযোজ্য সব আইন, বিধি-বিধান এবং নীতিমালা মেনে চলতে দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কিছু মৌসুমী শ্রমিক বিএটি বাংলাদেশের কাছে কিছু দাবি উত্থাপন করেছেন। আমরা আমাদের কর্মীদের যৌক্তিক দাবিগুলো গুরুত্ব সহকারে শুনেছি এবং পর্যালোচনা করেছি। একটি দায়িত্বশীল করপোরেট প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমরা এই দেশে গত ১১৫ বছর ধরে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছি। দেশের আইনি কাঠামোর আওতায় সব কর্মী যেন যথাযথভাবে তাদের প্রাপ্য সুবিধা লাভ করেন, সেটি নিশ্চিত করতে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ।