alt

সারাদেশ

রাজবাড়ীতে ভাসমান হাসপাতাল ‘জীবন তরীতে’ রোগীদের ভিড়

প্রতিনিধি, রাজবাড়ী : রোববার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫

রাজবাড়ীতে নদী পাড়ের অস্বচ্ছল ও দরিদ্র মানুষের চিকিৎসাসেবা দিতে প্রায় তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে পদ্মা নদীতে অবস্থান করছে ইম্প্যাক্ট ‘জীবন তরি’ ভাসমান হাসপাতাল। এই হাসপাতালটি এখন মানুষের ভরসার স্থল হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্বল্প খরচে উন্নত চিকিৎসাসেবা পেতে প্রতিদিন শত শত রোগী এই হাসপাতালে সেবা নিতে আসছেন।

হাসপাতালের কার্যক্রম শুরুর দিকে রোগীর সংখ্যা কম থাকলেও এখন প্রতিদিনই বাড়ছে রোগী সংখ্যা। দিনে ৯০ থেকে ১০০ জন রোগীকে চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে। এ ছাড়া স্বল্প খরচে প্রতিনিয়ত চোখের বিভিন্ন সার্জারি করা হচ্ছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৯ সালে ইম্প্যাক্ট ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ভাসমান এই হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠিত হয়। গত ২৫ বছরে ৫০টি জেলায় এই হাসপাতালের পক্ষ থেকে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়েছে। চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের সোনাকান্দর মৌলভীঘাট এলাকায় আসে ভাসমান হাসপাতালটি।

গত ১৮ জানুয়ারি থেকে রোগী দেখার কার্যক্রম শুরু করে হাসপাতালটি। শুক্রবার ব্যতীত প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত রোগী দেখার কার্যক্রম চলে। তবে রমজান মাসে দুই ঘণ্টা কমিয়ে বিকেল ৩টা পর্যন্ত রোগী দেখার সময় নির্ধারণ করা হয়েছিল। রোগী দেখার রেজিস্ট্রেশন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে মাত্র ৫০ টাকা।

১২ শয্যা বিশিষ্ট এ হাসপাতালটিতে স্বল্পমূল্যে চক্ষু রোগের চিকিৎসা ও ছানি অপারেশন করা হয়। রোগীর চাহিদা অনুযায়ী লেন্স সংযোজন ও ফ্যাকো সার্জারির ব্যবস্থা আছে। এ হাসপাতালে নাক-কান-গলা রোগের চিকিৎসা ও অপারেশন করা হয়। এ ছাড়া জন্মগত মুগুর-পা, বাঁকা-পা, ঠোটকাটা, তালুকাটা রোগের অপারেশন করা হয়। অর্থোপেডিক সমস্যাজনিত শারীরিক ব্যথা, মাজা ব্যথা, মাথা ব্যথাসহ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা করা হয়। এখানে সার্বক্ষডুক ৩ জন মেডিকেল অফিসার, ৩ জন নার্স, ৭ জন মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্টসহ মোট ৩০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী ২৪ ঘণ্টা কর্মরত থাকেন। এ ছাড়া জরুরি রোগীদের জন একটি অ্যাম্বুলেন্স সবসময় প্রস্তুত থাকে। হাসপাতালটি ১২ শয্যার।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের সোনাকান্দর মৌলভীঘাট এলাকায় আকাশি-সাদা রঙের তিনতলা বিশিষ্ট হাসপাতালটি নোঙর করে রাখা হয়েছে। নদীর পারেটিকিটি কাউন্টার। টিকেট কাউন্টারের পাশেই ছোটটিনের চালার নিচে একটি অ্যাম্বুলেন্স। নদীর পার থেকে হাসপাতালে যাওয়ার জন্য অস্থায়ীভাবে বালুর বস্তা ও বাঁশের মাচা দিয়ে রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। ৩ তলা বিশিষ্ট এই হাসপাতালের ভেতরেরই রয়েছের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের থাকার জায়গা। চিকিৎসকের চেম্বার, প্যাথলজি ও এক্স-রে করার কক্ষ। দ্বিতীয় তলায় অপারেশন থিয়েটার ও রোগী থাকার বেড। তৃতীয় তলায় একপাশে ট্রেনিং অ্যান্ড রিসোর্স সেন্টার ও অন্যপাশে ফাঁকা। ছাদের ওপরেটিনের ছাউনি দেয়া।

হাসপাতালে বাবাকে নিয়ে চোখের ডাক্তার দেখাতে এসেছিলেন গোলাম রাব্বানী নামের এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, জীবন তরি একটি উন্নতমানের হাসপাতাল। আমি বিভিন্ন জনের কাছে শুনে আমার বাবাকে নিয়ে এখানে এসেছি তার চোখের চিকিৎসা করাতে। এখানে এসে দেখলাম হাসপাতালের সব কর্মকর্তা কর্মচারীদের ব্যবহার খুবই ভালো। চিকিৎসকদের ব্যবহার খুব ভালো এবং তাদের ব্যবস্থাপনাও খুব ভালো। খুব যত্ন সহকারে রোগী দেখছেন। মাত্র ৫০ টাকা রেজিস্ট্রেশন ফ্রি দিয়ে বাবার চোখ দেখালাম। এ ছাড়া পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফি খুবই কম।

রোকসানা আক্তার বলেন, এই ভাসমান হাসপাতালটির পাশে আমাদের বাড়ি। এখানে এসে আমি ভালই চিকিৎসা পেয়েছি। আমার চোখের সমস্যা ছিল। প্রথমে দেখিয়েছিলাম, ভালোই উন্নতি হয়েছে চোখের। আজ দ্বিতীয়বার চেকআপে করতে এসেছি।

হাসপাতালের প্রশাসক এ কে এম শহিদুল হক বলেন, আমরা প্রায় তিন মাসের বেশি সময় ধরে রাজবাড়িতে। শুরুতে আমাদের রোগীদের উপস্থিতি খুব কম ছিল। কারণ তখন আমরা তাদের কাছে অপরিচিত ছিলাম। কিন্তু ধীরে ধীরে আমাদের রোগী সংখ্যা বেড়েছে। প্রতিদিন আমরা ৮০ থেকে ১০০ জন রোগীকে সেবা দিয়ে থাকি। চলতি মাসে আমরা ৮৫ জন রোগীকে সার্জারি করেছি।

আমরা ঢাকা থেকে নামির দামি বিশেষজ্ঞ ডাক্তার (প্রফেসর) দ্বারা রোগীদের অপারেশন করিয়ে থাকি। আগামী দুই একদিনের মধ্যে আমাদের এখানে আরও ৪০ থেকে ৫০ জনকে চোখের সার্জারি করা হবে।

জীবন তরী ভাসমান হাসপাতালটি সারা বাংলাদেশের নদী অববাহিকায় যেসব জায়গার মানুষ সহজে স্বাস্থ্য সেবা পায় না এইট্রিটমেন্টটা আমরা তাদেরকে দিচ্ছি। আমরা অত্যন্ত সুলভ মূল্যে চোখের সার্জারি করে দিচ্ছি। এ ছাড়াও নাক, কান, গলা, হাড়জোড়া, হাড়ভাঙা, পঙ্গু, জন্মগত ঠোঁটকাটা-তালুকাটা রোগীদের চিকিৎসা, প্লাস্টিক সার্জারিসহ অন্যান্য চিকিৎসাসেবা দেয়া হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, নদনদী তীরবর্তী এলাকার মানুষ বেশির ভাগই তুলনামূলক দরিদ্র হয়। তাদের পক্ষে বেশি টাকা খরচ করে শহরে গিয়ে আধুনিক চিকিৎসা নেয়া কঠিন, তাই তাদের সুবিধার্থে হাতের কাছেই আমরা চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছি। এক এক এলাকায় দুই থেকে ৬ মাস আমরা অবস্থান করে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করে থাকি।

আমাদের রাজবাড়ীতে আরও কিছু থাকার ইচ্ছা থাকলেও নদীর পানি বৃদ্ধি ও স্রোত বৃদ্ধির কারণে আমাদের রাজবাড়ী থেকে কিছু দিনের মধ্যেই চলে যেতে হবে। তবে রাজবাড়ীর মানুষের যে সহযোগিতা ও ভালোবাসা পেয়েছি তা আমরা ভুলবো না।

ভোট আয়োজনের বাইরে গেলেই সংকটে পড়তে পারে অন্তর্বর্তী সরকার: সিপিবি

ছবি

মাদারগঞ্জে ধান কাটার শ্রমিক সংকট

সড়কের খাদে উল্টে গেল মালবোঝাই ট্রাক

বাগেরহাটে প্রকাশ্যে যুবককে কুপিয়ে জখম

চুয়াডাঙ্গায় যুবকের মরদেহ উদ্ধার

কুষ্টিয়ায় সাড়ে ৬শ কোটি টাকার সড়ক প্রকল্পের কাজে অনিয়ম

পোরশায় স্বর্ণের লোভে ভাইবোনকে হত্যা করে ধর্মছেলে

ভূমি অফিসে ঘুষ লেনদেনের ভিডিও ভাইরাল, অভিযুক্ত কর্মচারী বদলি

ছবি

ডিঙি নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা

ছবি

সাটুরিয়ায় ভিক্ষুক পুনর্বাসন প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ

বোয়ালমারীতে প্রধান শিক্ষকের গায়ে হাত তুলল শিক্ষার্থীরা, ভিডিও ভাইরাল

কটিয়াদীতে সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক বাড়িতে বৈশাখী মেলা শুরু

ছবি

যাদুকাটার বালু-পাথর উত্তোলন বন্ধ মানবেতর জীবনে লক্ষাধিক শ্রমিক

ছবি

চাটখিলে অনুমতি ছাড়া খালের ওপরে ব্রিজ নির্মাণের হিড়িক

ছবি

চুনারুঘাটে বাল্লা রেলপথের দুপাশ দখল করে গড়ে উঠেছে দোকানপাট

ছবি

আগামী বছরের প্রথমদিকে উৎপাদনে যাবে আনোয়ারায় ৫৯০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র

৪৮ লাখ টাকার বিদেশি মুদ্রাসহ আটক ২

সীতাকুণ্ডে পালিয়ে আসা ৪০ রোহিঙ্গা আটক

৩ একর জমির লাউ গাছ কাটল দুর্বৃত্তরা

ইজিবাইকে যাত্রী ওঠানো নিয়ে সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত অর্ধশত

নাসিকে ইজিবাইক চালকদের হামলায় ২১ শিক্ষার্থী আহত

ঝিকরগাছায় পুকুরে ডুবে শিশুর মৃত্যু

চুয়াডাঙ্গায় কিশোরকে কুপিয়ে হত্যা

জমি বিরোধে যুবক খুন

কার্ভাডভ্যানের ধাক্কায় বৃদ্ধ নিহত

নাফ নদে মাছ ধরতে গিয়ে ২ জেলে গুলিবিদ্ধ

ছবি

অর্ধেকেরও কম জনবলে চলছে প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল

মুন্সীগঞ্জে চাকুসহ গ্রেপ্তার ১

কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সীমান্তে এক সপ্তাহে ৪কোটি টাকার পণ্য জব্দ

ছবি

৩২ বছরেও সংস্কার হয়নি ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি ব্রিজ

ছবি

ধোবাউড়ায় লক্ষ্যমাত্রার বেশি বোরোর উৎপাদন

অজান্তেই হয়রানির শিকার ছাত্রীরা

সোনারগাঁ আ.লীগের সহ-সভাপতি গ্রেপ্তার

সিরাজদিখানে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু

ছবি

চাঁদপুর সড়ক বহরিয়া-হরিণা রাস্তা সংস্কারে জনমনে স্বস্তি

সরকারি অনুদানের গরু ফেরত পেলেন দুই আদিবাসী

tab

সারাদেশ

রাজবাড়ীতে ভাসমান হাসপাতাল ‘জীবন তরীতে’ রোগীদের ভিড়

প্রতিনিধি, রাজবাড়ী

রোববার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫

রাজবাড়ীতে নদী পাড়ের অস্বচ্ছল ও দরিদ্র মানুষের চিকিৎসাসেবা দিতে প্রায় তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে পদ্মা নদীতে অবস্থান করছে ইম্প্যাক্ট ‘জীবন তরি’ ভাসমান হাসপাতাল। এই হাসপাতালটি এখন মানুষের ভরসার স্থল হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্বল্প খরচে উন্নত চিকিৎসাসেবা পেতে প্রতিদিন শত শত রোগী এই হাসপাতালে সেবা নিতে আসছেন।

হাসপাতালের কার্যক্রম শুরুর দিকে রোগীর সংখ্যা কম থাকলেও এখন প্রতিদিনই বাড়ছে রোগী সংখ্যা। দিনে ৯০ থেকে ১০০ জন রোগীকে চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে। এ ছাড়া স্বল্প খরচে প্রতিনিয়ত চোখের বিভিন্ন সার্জারি করা হচ্ছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৯ সালে ইম্প্যাক্ট ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ভাসমান এই হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠিত হয়। গত ২৫ বছরে ৫০টি জেলায় এই হাসপাতালের পক্ষ থেকে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়েছে। চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের সোনাকান্দর মৌলভীঘাট এলাকায় আসে ভাসমান হাসপাতালটি।

গত ১৮ জানুয়ারি থেকে রোগী দেখার কার্যক্রম শুরু করে হাসপাতালটি। শুক্রবার ব্যতীত প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত রোগী দেখার কার্যক্রম চলে। তবে রমজান মাসে দুই ঘণ্টা কমিয়ে বিকেল ৩টা পর্যন্ত রোগী দেখার সময় নির্ধারণ করা হয়েছিল। রোগী দেখার রেজিস্ট্রেশন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে মাত্র ৫০ টাকা।

১২ শয্যা বিশিষ্ট এ হাসপাতালটিতে স্বল্পমূল্যে চক্ষু রোগের চিকিৎসা ও ছানি অপারেশন করা হয়। রোগীর চাহিদা অনুযায়ী লেন্স সংযোজন ও ফ্যাকো সার্জারির ব্যবস্থা আছে। এ হাসপাতালে নাক-কান-গলা রোগের চিকিৎসা ও অপারেশন করা হয়। এ ছাড়া জন্মগত মুগুর-পা, বাঁকা-পা, ঠোটকাটা, তালুকাটা রোগের অপারেশন করা হয়। অর্থোপেডিক সমস্যাজনিত শারীরিক ব্যথা, মাজা ব্যথা, মাথা ব্যথাসহ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা করা হয়। এখানে সার্বক্ষডুক ৩ জন মেডিকেল অফিসার, ৩ জন নার্স, ৭ জন মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্টসহ মোট ৩০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী ২৪ ঘণ্টা কর্মরত থাকেন। এ ছাড়া জরুরি রোগীদের জন একটি অ্যাম্বুলেন্স সবসময় প্রস্তুত থাকে। হাসপাতালটি ১২ শয্যার।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের সোনাকান্দর মৌলভীঘাট এলাকায় আকাশি-সাদা রঙের তিনতলা বিশিষ্ট হাসপাতালটি নোঙর করে রাখা হয়েছে। নদীর পারেটিকিটি কাউন্টার। টিকেট কাউন্টারের পাশেই ছোটটিনের চালার নিচে একটি অ্যাম্বুলেন্স। নদীর পার থেকে হাসপাতালে যাওয়ার জন্য অস্থায়ীভাবে বালুর বস্তা ও বাঁশের মাচা দিয়ে রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। ৩ তলা বিশিষ্ট এই হাসপাতালের ভেতরেরই রয়েছের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের থাকার জায়গা। চিকিৎসকের চেম্বার, প্যাথলজি ও এক্স-রে করার কক্ষ। দ্বিতীয় তলায় অপারেশন থিয়েটার ও রোগী থাকার বেড। তৃতীয় তলায় একপাশে ট্রেনিং অ্যান্ড রিসোর্স সেন্টার ও অন্যপাশে ফাঁকা। ছাদের ওপরেটিনের ছাউনি দেয়া।

হাসপাতালে বাবাকে নিয়ে চোখের ডাক্তার দেখাতে এসেছিলেন গোলাম রাব্বানী নামের এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, জীবন তরি একটি উন্নতমানের হাসপাতাল। আমি বিভিন্ন জনের কাছে শুনে আমার বাবাকে নিয়ে এখানে এসেছি তার চোখের চিকিৎসা করাতে। এখানে এসে দেখলাম হাসপাতালের সব কর্মকর্তা কর্মচারীদের ব্যবহার খুবই ভালো। চিকিৎসকদের ব্যবহার খুব ভালো এবং তাদের ব্যবস্থাপনাও খুব ভালো। খুব যত্ন সহকারে রোগী দেখছেন। মাত্র ৫০ টাকা রেজিস্ট্রেশন ফ্রি দিয়ে বাবার চোখ দেখালাম। এ ছাড়া পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফি খুবই কম।

রোকসানা আক্তার বলেন, এই ভাসমান হাসপাতালটির পাশে আমাদের বাড়ি। এখানে এসে আমি ভালই চিকিৎসা পেয়েছি। আমার চোখের সমস্যা ছিল। প্রথমে দেখিয়েছিলাম, ভালোই উন্নতি হয়েছে চোখের। আজ দ্বিতীয়বার চেকআপে করতে এসেছি।

হাসপাতালের প্রশাসক এ কে এম শহিদুল হক বলেন, আমরা প্রায় তিন মাসের বেশি সময় ধরে রাজবাড়িতে। শুরুতে আমাদের রোগীদের উপস্থিতি খুব কম ছিল। কারণ তখন আমরা তাদের কাছে অপরিচিত ছিলাম। কিন্তু ধীরে ধীরে আমাদের রোগী সংখ্যা বেড়েছে। প্রতিদিন আমরা ৮০ থেকে ১০০ জন রোগীকে সেবা দিয়ে থাকি। চলতি মাসে আমরা ৮৫ জন রোগীকে সার্জারি করেছি।

আমরা ঢাকা থেকে নামির দামি বিশেষজ্ঞ ডাক্তার (প্রফেসর) দ্বারা রোগীদের অপারেশন করিয়ে থাকি। আগামী দুই একদিনের মধ্যে আমাদের এখানে আরও ৪০ থেকে ৫০ জনকে চোখের সার্জারি করা হবে।

জীবন তরী ভাসমান হাসপাতালটি সারা বাংলাদেশের নদী অববাহিকায় যেসব জায়গার মানুষ সহজে স্বাস্থ্য সেবা পায় না এইট্রিটমেন্টটা আমরা তাদেরকে দিচ্ছি। আমরা অত্যন্ত সুলভ মূল্যে চোখের সার্জারি করে দিচ্ছি। এ ছাড়াও নাক, কান, গলা, হাড়জোড়া, হাড়ভাঙা, পঙ্গু, জন্মগত ঠোঁটকাটা-তালুকাটা রোগীদের চিকিৎসা, প্লাস্টিক সার্জারিসহ অন্যান্য চিকিৎসাসেবা দেয়া হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, নদনদী তীরবর্তী এলাকার মানুষ বেশির ভাগই তুলনামূলক দরিদ্র হয়। তাদের পক্ষে বেশি টাকা খরচ করে শহরে গিয়ে আধুনিক চিকিৎসা নেয়া কঠিন, তাই তাদের সুবিধার্থে হাতের কাছেই আমরা চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছি। এক এক এলাকায় দুই থেকে ৬ মাস আমরা অবস্থান করে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করে থাকি।

আমাদের রাজবাড়ীতে আরও কিছু থাকার ইচ্ছা থাকলেও নদীর পানি বৃদ্ধি ও স্রোত বৃদ্ধির কারণে আমাদের রাজবাড়ী থেকে কিছু দিনের মধ্যেই চলে যেতে হবে। তবে রাজবাড়ীর মানুষের যে সহযোগিতা ও ভালোবাসা পেয়েছি তা আমরা ভুলবো না।

back to top