ঘটনা ২০১৪ সালের জিয়াউর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে কাঙালিভোজের রান্না করা খাবার ফেলে দেয় আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা। বিএনপি ক্ষমতায় না আসলে আর কোনো দিন ভাত খাবেন না সেই প্রতিজ্ঞা থেকে প্রায় ১১ বছর আর ভাত খান না এক বিএনপিকর্মী। ভাতের বদলে খাচ্ছেন রুটি-কলা। ফলে তার শরীরে নানা রোগ বাসা বাঁধে। তারপর তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হন ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

গত বুধবার সেখান থেকে তাকে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজধানী ঢাকার পিজি হাসপাতালে নেয়া হয়।

প্রায়য় ১১ বছর ভাত না খাওয়ার দাবি করে আলোচনায় আসা ওই ব্যক্তির নাম নিজাম উদ্দিন মন্ডল। তিনি ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার বাশবাড়িয়া গ্রামের মৃত নুর বস্ক্র ছেলে এবং স্থানীয়ভাবে বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত।

নিজামের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালে ঝিনাইদহের মহেশপুরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে কাঙালিভোজের আয়োজন করা হয়। ওই অনুষ্ঠান আওয়ামী লীগের হামলায় পন্ড হয়ে যায় এবং রান্না করা খিচুরি নষ্ট করা দেখে ভাত না খাওয়ার প্রতিজ্ঞা করেন নিজাম উদ্দিন। এরপর থেকে তিনি শুধু রুটি কলা খেয়ে আসছেন। পরিবারে সদস্যদের অনেক অনুরোধের পরও তিনি ভাত মুখে তোলেননি। সিরাজুল ইসলাম বলেন, দলের প্রতি ভালোবাসা ও ত্যাগের কারণেই নিজাম উদ্দীন চাচা ১১ বছর ধরে ভাত না খেয়ে রুটি কলা খেয়ে বেঁচে আছে। নিজাম উদ্দীনের বৌমা (ছেলের বৌ) রাজিয়া খাতুন বলেন, দীর্ঘ ১১ বছর ধরে তার শ্বশুর ভাত না খেয়ে রুটি কলা, বিস্কুট খেয়ে আসছেন। অনেক বার চেষ্টা করা করেছি কিন্তু কোনো মতে আমার শ্বশুরকে আমরা ভাত খাওয়াতে পারি নাই। ভাত না খেতে থাকায় অসুস্থ হয়ে পরেছে এবং বর্তমানে ঢাকার পিজি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

স্থানীয় বিএনপির ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান বলেন, নিজাম উদ্ধীন বিএনপির একজন ত্যাগী কর্মী জিয়াউর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে কাঙালিভোজের রান্না করা খাবার স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা ফেলে দেয়ার কারণে প্রতিজ্ঞা করেন বিএনপি সরকার ক্ষমতায় না অসা পর্যন্ত তিনি ভাত খাবেন না। সেই থেকে তিনি আজওবদি ভাত খাননি। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পরলে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এই খবরটি আমাদের নেতা তারেক রহমানের নজরে পরলে তার নির্দেশে নিজাম উদ্দিনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়।

গত ঈদের পর থেকে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। এর মধ্যে গত সোমবার বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন পরিবারের সদস্যরা। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে আলোচনা শুরু হলে তাকে দেখতে ফরিদপুর মেডিকেলে ছুটে আসেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা। এরপর তারেক রহমানের নির্দেশে খোঁজ খবর নেয়া পর চিকিৎসকদের পরামর্শে গত বুধবার তাকে ঢাকার পিজি হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়।