নোয়াখালীর সদরের চর মটুয়া ডিগ্রি কলেজের সাধারণ সম্পাদক আহমদ উল্লাহ রিংকুর চাঁদা দাবির একটি ভয়েস রের্কড ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এক মিনিট ৫ সেকেন্ডের ওই ফোনালাপে সে জুয়েল নামে এক সৌদি প্রবাসীর কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করতে শোনা যায়।

গত বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে ফেসবুকে তার চাঁদা দাবির ভয়েস রেকর্ডটি ছড়িয়ে পডলে শনিবার রাতে এই ফোনালাপ এ প্রতিনিধির হাতে পৌঁছে। ভয়েস রের্কডটিতে চর মটুয়া ডিগ্রি কলেজের ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক আহমদ উল্লাহ রিংকুকে বলতে শোনা যায়, বন্ধু তুই আঁর সঙ্গে আওয়ামী লীগ বিএনপি মিলাইচ্ছা। টেয়া (টাকা) পঞ্চাশ হাজার হাডা। সাদ্দামের থেকে টেয়া কিছু লও। তোরে আই জীবনেও কিছু করিনাই। সাদ্দামারে আই আজায়ালামু (গুম করমু) মার্কেট আউট করি হালামু। কালকে সকালে আঁর সেনাবাহিনীর লগে ডিউটি আছে, বুইজ্জততি কলেজের সামনে। হিয়ানে যামু, আই অন ঘুম যামু, সকালে ৮টা বাজে উডি যাইতে অইবো। ৪টি ইউনিয়নের মধ্যে একটি কলেজ। ঢাকার যে সভাপতি ছাত্রদলে, হিগা আরে না করলেও প্রতিদিন কল দিব একবার। তোমার কি অবস্থা খোঁজ খবর নিব।

জানা যায়, ২৩ মার্চ ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব এবং সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন চর মটুয়া ডিগ্রি কলেজেসহ নোয়াখালীর ৩৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রদলের কমিটি অনুমোদন দেন। এতে রিংকুকে সাধারণ সম্পাদক করে ২৪ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়।

সৌদি প্রবাসী জুয়েল অভিযোগ করে বলেন, উপজেলার ১৯ নম্বর পূর্ব চর মটুয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আমি। গত ৬ মাস আগে জীবিকার তাগিদে সৌদিতে আসি। ১৯ নম্বর পূর্ব চর মটুয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য (মেম্বার) সাদ্দাম আমার চাচা। তিনি আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে কিছুটা সম্পৃক্ত ছিলেন। রিংকুও একই ইউনিয়নের বাসিন্দা। মূলত আমার চাচাকে এলাকা থেকে তাড়ানোর হুমকি দিয়ে আমার কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে ফেসবুক মেসেঞ্জারের ভয়েস রের্কড পাঠায়। এ ছাড়া আমার কাছে একটি মোটরসাইকেল দাবি করে। না হলে দেশে আসলে আমাকেও মারধর করার হুমকিও দেয়।

চর মটুয়া ডিগ্রি কলেজের সভাপতি সাজ্জাদুর রহমান শাহীন বলেন, এটা রিংকুর ভয়েস এটা ঠিক। লুকানোর কিছু নেই। ভাইরাল হওয়া ভয়েস রের্কড প্রায় ১০-১৫ জনে আমার কাছে পাঠিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে রেকর্ড ফাঁস হওয়ায় আমি রিংকুকে ২০-২৫ বার কল দিয়েছি। সে কল রিসিভ করেনি। পরে শুক্রবার দুপুরে রিংকে কল দিলে রিংকু কল রিসিভ করলে আমি তাকে বিষয়টি জিজ্ঞাসা করি তুমি এটার সঙ্গে সম্পৃক্ত আছো কিনা। তখন সে বলে ভাইয়া আমি এখন কি করতাম। এত টুকু কথা বলে ফোন কেটে দেয়।

তিনি আরও বলেন, আবার আওয়ামী লীগ যারা করে তারা আমাদের ওপর সব কিছু চাপিয়ে দেয়।ভুক্তভোগীর সঙ্গে আমি দুপুরে কথা বলেছি। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করেছি, এটা কি আপনার কাছে মজা করে চাইছে, নাকি সত্যিকারে চাইছে। ঊনারা আমাকে জানিয়েছে তাদেরকে ডাইরেক থ্রেট দিছে। আসলে আমি নিজেই হতবাক হয়ে গেছি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চর মটুয়া ডিগ্রি কলেজ ছাএ দলের সাধারণ সম্পাদক আহমদ উল্লাহ রিংকুর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তাই এ বিষয়ে তার কোনো মতামত পাওয়া যায়নি। তবে কিছুক্ষণ পর চর মটুয়া ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি শাহীন রিংকুর সঙ্গে কথা বলে জানান, রিংকু দাবি করেছে এ কণ্ঠটা তার না। তবে শাহীন বলেন, তিনি যে কন্ঠ শুনেছেন সেটি রিংকুর কণ্ঠের মতই লাগতেছে, এটা ঠিক।

এ বিষয়ে নোয়াখালী জেলা ছাত্রদলের সভাপতি প্রাথী মো. রাসেল বলেন, বিষয়টি জানার পর রিংকুকে আমি অনেকবার ফোন দিয়েছি। রিংকু ফোন রিসিভ করে নাই। পরে কলেজ ছাত্রদলের সভাপতির সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলি। কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি শাহীন আমাকে জানায় ভয়েসটা রিকংকুর কিনা সে পুরোপুরি বিষয়টি নিশ্চিত হতে পারেনি।