রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) : সয়াবিন কাটা ও মাড়াইয়ের কাজে ব্যস্ত কৃষকরা -সংবাদ
‘দিন বদলের’ ফসল হিসেবে খ্যাত সয়াবিনের এবার বাম্পার ফলন হয়েছে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেরায়। বিভিন্ন দুর্যোগসহ অনুকূল আবহাওয়া, সময়মতো বীজ বপন ও সুষম সারের ব্যবহারের সয়াবিনের ফলন ভালো হয়েছে। মাঠ থেকে সয়াবিন কাটতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। তবে সয়াবিনের বাম্পার ফল নিয়ে খুশি হলেও দাম নিয়ে হতাশ কৃষকরা। গত বছরের তুলনায় অর্ধেক দামে বিক্রি হচ্ছে সয়াবিন।
সূত্রে জানা যায়, চলতি রবি মৌসুমে ৭ হাজার ৫৪০ হেক্টর জমিতে সয়াবিনের আবাদ হয়েছে। তবে কৃষকদের তথ্য মতে চলতি বছর চরাঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে বীজ সয়াবিন চাষ করা হয়েছে। ফলে গত মৌসুমের তুলনায় চার গুণ বেশি বীজ সয়াবিন উৎপাদন হয়েছে এবার। এতে এবছর সয়াবিন থেকে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা আয়ের সম্ভাবনা।
সরেজমিনে রায়পুর উপজেলার মোল্লার হাট, হায়দরগঞ্জ, চরকাছিয়া, মিয়ার বাজারসহ বেশ কয়েকটি ফসলের মাঠ ঘুরে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে রয়েছে সয়াবিনের ক্ষেত। দেশের উৎপাদিত সয়াবিনের প্রায় ৮০ ভাগ সয়াবিন উৎপাদন হয় এ জেলায়।
সয়াবিন চাষাবাদে উৎপাদনের খরচের তুলনায় লাভ বেশি হওয়ায় দিন দিন সয়াবিন চাষাবাদে ঝুঁকছেন চাষিরা। অনুকূল আবহাওয়া, উন্নত জাতের বীজ বপন ও সময়মতো সুষম সার ব্যবহার করতে পারায় এবার সয়াবিনের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলে দামও একেবারে কমে গেছে। তাই বাম্পার ফলনেও মলিন কৃষকের মুখ।
চাষিরা জানায়, মৌসুমে বৃষ্টিপাত না হওয়া ও তীব্র দাবদাহে সয়াবিনের ফলন নিয়ে শুরুতে শঙ্কা থাকলেও মাঠে রোগবালাইয়ের আক্রমণ না থাকায় সয়াবিনের ফলনে কোন ক্ষতি হয়নি। গেল বছরের চেয়েও ফলন ও বাজার দর ভালো থাকায় খুশি চাষিরা। এ অঞ্চলে সয়াবিনভিত্তিক প্রক্রিয়াজাত কারখানা গড়ে তোলা গেলে সয়াবিনের বাজার দর আরও ভালো পেতেন তারা। এছাড়াও এ অঞ্চলে তেমন কোনো ইন্ড্রাস্ট্রিজ বা শিল্প কলকারখানা না থাকায় কৃষকরা তাদের ন্যায্য দাম পাচ্ছে না। সয়াবিন ভিত্তিক শিল্প কারখানা স্থাপন করা হলে কৃষকদের ন্যায্য দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি লাগব হবে এ অঞ্চলের বেকার সমস্যা।
কামাল, আবদুর রহিম, মফিজ মাঝি, সালাহ উদ্দিনসহ কয়েকজন স্থানীয় কৃষক জানান, চলতি বছর বিভিন্ন দুর্যোগসহ বৃষ্টিপাত না থাকায় এবার সয়াবিনের ভালো ফলন হওয়ায় বেশ খুশি এ কৃষক। তবে আশানুরূপ দাম না পাওয়া হতাশা প্রকাশ করেন তিনি।
বর্তমান বাজারে মণ প্রতি ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা ধরে সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে। যা গত বছর এই সময় প্রতি মণ সয়াবিনন বাজারে বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকা পর্যন্ত।
সালাহ উদ্দিন নামের এক কৃষক জানান, ৪ একর জমিতে সয়াবিনের আবাদ করেছেন। তার চাষকৃত এক একর জমিতেই সাড়ে ৩২ মণ সয়াবিন উৎপাদন হয়েছে। উৎপাদিত সয়াবিনের গুণগত মানও ভালো। বাকী তিন একরে ক্ষেত থেকে সয়াবিন তোলার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। ফলন ভালো হলেও দাম বাড়ে না। প্রতিবছর সার-কিটনাশকের দামসহ শ্রমিক খরচও বৃদ্ধি পায়। সে হারে সয়াবিনের বাজার দর বৃদ্ধি পাচ্ছে না। যার ফলে আশানুরূপ দাম পাওয়া যায় না। আশানুরূপ দাম পাওয়া গেলে কৃষকরা সয়াবিন চাষে আরও বেশি আগ্রহী হতেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মাজেদুল ইসলাম বলেন, চাষিরা উন্নতজাতের বীজ বপন ও সুষম সারের ব্যবহারের ফলে এবার রায়পুরে সয়াবিনের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষি বিভাগ থেকে সয়াবিনের ভালো জাত কৃষকদের মাঝে সরবরাহ করায় আগের চেয়ে ফলন অনেক বৃদ্ধি পাওয়ায় দামও কমের দিকে। উৎপাদিত সয়াবিন শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহার করা গেলে আমদানি নির্ভরতা কমার পাশাপাশি সাশ্রয় হবে সরকারের অর্থ।প্রতিনিধি, রায়পুর (লক্ষ্মীপুর)
‘দিন বদলের’ ফসল হিসেবে খ্যাত সয়াবিনের এবার বাম্পার ফলন হয়েছে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেরায়। বিভিন্ন দুর্যোগসহ অনুকূল আবহাওয়া, সময়মতো বীজ বপন ও সুষম সারের ব্যবহারের সয়াবিনের ফলন ভালো হয়েছে। মাঠ থেকে সয়াবিন কাটতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। তবে সয়াবিনের বাম্পার ফল নিয়ে খুশি হলেও দাম নিয়ে হতাশ কৃষকরা। গত বছরের তুলনায় অর্ধেক দামে বিক্রি হচ্ছে সয়াবিন।
সূত্রে জানা যায়, চলতি রবি মৌসুমে ৭ হাজার ৫৪০ হেক্টর জমিতে সয়াবিনের আবাদ হয়েছে। তবে কৃষকদের তথ্য মতে চলতি বছর চরাঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে বীজ সয়াবিন চাষ করা হয়েছে। ফলে গত মৌসুমের তুলনায় চার গুণ বেশি বীজ সয়াবিন উৎপাদন হয়েছে এবার। এতে এবছর সয়াবিন থেকে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা আয়ের সম্ভাবনা।
সরেজমিনে রায়পুর উপজেলার মোল্লার হাট, হায়দরগঞ্জ, চরকাছিয়া, মিয়ার বাজারসহ বেশ কয়েকটি ফসলের মাঠ ঘুরে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে রয়েছে সয়াবিনের ক্ষেত। দেশের উৎপাদিত সয়াবিনের প্রায় ৮০ ভাগ সয়াবিন উৎপাদন হয় এ জেলায়।
সয়াবিন চাষাবাদে উৎপাদনের খরচের তুলনায় লাভ বেশি হওয়ায় দিন দিন সয়াবিন চাষাবাদে ঝুঁকছেন চাষিরা। অনুকূল আবহাওয়া, উন্নত জাতের বীজ বপন ও সময়মতো সুষম সার ব্যবহার করতে পারায় এবার সয়াবিনের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলে দামও একেবারে কমে গেছে। তাই বাম্পার ফলনেও মলিন কৃষকের মুখ।
চাষিরা জানায়, মৌসুমে বৃষ্টিপাত না হওয়া ও তীব্র দাবদাহে সয়াবিনের ফলন নিয়ে শুরুতে শঙ্কা থাকলেও মাঠে রোগবালাইয়ের আক্রমণ না থাকায় সয়াবিনের ফলনে কোন ক্ষতি হয়নি। গেল বছরের চেয়েও ফলন ও বাজার দর ভালো থাকায় খুশি চাষিরা। এ অঞ্চলে সয়াবিনভিত্তিক প্রক্রিয়াজাত কারখানা গড়ে তোলা গেলে সয়াবিনের বাজার দর আরও ভালো পেতেন তারা। এছাড়াও এ অঞ্চলে তেমন কোনো ইন্ড্রাস্ট্রিজ বা শিল্প কলকারখানা না থাকায় কৃষকরা তাদের ন্যায্য দাম পাচ্ছে না। সয়াবিন ভিত্তিক শিল্প কারখানা স্থাপন করা হলে কৃষকদের ন্যায্য দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি লাগব হবে এ অঞ্চলের বেকার সমস্যা।
কামাল, আবদুর রহিম, মফিজ মাঝি, সালাহ উদ্দিনসহ কয়েকজন স্থানীয় কৃষক জানান, চলতি বছর বিভিন্ন দুর্যোগসহ বৃষ্টিপাত না থাকায় এবার সয়াবিনের ভালো ফলন হওয়ায় বেশ খুশি এ কৃষক। তবে আশানুরূপ দাম না পাওয়া হতাশা প্রকাশ করেন তিনি।
বর্তমান বাজারে মণ প্রতি ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা ধরে সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে। যা গত বছর এই সময় প্রতি মণ সয়াবিনন বাজারে বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকা পর্যন্ত।
সালাহ উদ্দিন নামের এক কৃষক জানান, ৪ একর জমিতে সয়াবিনের আবাদ করেছেন। তার চাষকৃত এক একর জমিতেই সাড়ে ৩২ মণ সয়াবিন উৎপাদন হয়েছে। উৎপাদিত সয়াবিনের গুণগত মানও ভালো। বাকী তিন একরে ক্ষেত থেকে সয়াবিন তোলার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। ফলন ভালো হলেও দাম বাড়ে না। প্রতিবছর সার-কিটনাশকের দামসহ শ্রমিক খরচও বৃদ্ধি পায়। সে হারে সয়াবিনের বাজার দর বৃদ্ধি পাচ্ছে না। যার ফলে আশানুরূপ দাম পাওয়া যায় না। আশানুরূপ দাম পাওয়া গেলে কৃষকরা সয়াবিন চাষে আরও বেশি আগ্রহী হতেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মাজেদুল ইসলাম বলেন, চাষিরা উন্নতজাতের বীজ বপন ও সুষম সারের ব্যবহারের ফলে এবার রায়পুরে সয়াবিনের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষি বিভাগ থেকে সয়াবিনের ভালো জাত কৃষকদের মাঝে সরবরাহ করায় আগের চেয়ে ফলন অনেক বৃদ্ধি পাওয়ায় দামও কমের দিকে। উৎপাদিত সয়াবিন শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহার করা গেলে আমদানি নির্ভরতা কমার পাশাপাশি সাশ্রয় হবে সরকারের অর্থ।
রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) : সয়াবিন কাটা ও মাড়াইয়ের কাজে ব্যস্ত কৃষকরা -সংবাদ
রোববার, ০৪ মে ২০২৫
‘দিন বদলের’ ফসল হিসেবে খ্যাত সয়াবিনের এবার বাম্পার ফলন হয়েছে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেরায়। বিভিন্ন দুর্যোগসহ অনুকূল আবহাওয়া, সময়মতো বীজ বপন ও সুষম সারের ব্যবহারের সয়াবিনের ফলন ভালো হয়েছে। মাঠ থেকে সয়াবিন কাটতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। তবে সয়াবিনের বাম্পার ফল নিয়ে খুশি হলেও দাম নিয়ে হতাশ কৃষকরা। গত বছরের তুলনায় অর্ধেক দামে বিক্রি হচ্ছে সয়াবিন।
সূত্রে জানা যায়, চলতি রবি মৌসুমে ৭ হাজার ৫৪০ হেক্টর জমিতে সয়াবিনের আবাদ হয়েছে। তবে কৃষকদের তথ্য মতে চলতি বছর চরাঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে বীজ সয়াবিন চাষ করা হয়েছে। ফলে গত মৌসুমের তুলনায় চার গুণ বেশি বীজ সয়াবিন উৎপাদন হয়েছে এবার। এতে এবছর সয়াবিন থেকে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা আয়ের সম্ভাবনা।
সরেজমিনে রায়পুর উপজেলার মোল্লার হাট, হায়দরগঞ্জ, চরকাছিয়া, মিয়ার বাজারসহ বেশ কয়েকটি ফসলের মাঠ ঘুরে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে রয়েছে সয়াবিনের ক্ষেত। দেশের উৎপাদিত সয়াবিনের প্রায় ৮০ ভাগ সয়াবিন উৎপাদন হয় এ জেলায়।
সয়াবিন চাষাবাদে উৎপাদনের খরচের তুলনায় লাভ বেশি হওয়ায় দিন দিন সয়াবিন চাষাবাদে ঝুঁকছেন চাষিরা। অনুকূল আবহাওয়া, উন্নত জাতের বীজ বপন ও সময়মতো সুষম সার ব্যবহার করতে পারায় এবার সয়াবিনের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলে দামও একেবারে কমে গেছে। তাই বাম্পার ফলনেও মলিন কৃষকের মুখ।
চাষিরা জানায়, মৌসুমে বৃষ্টিপাত না হওয়া ও তীব্র দাবদাহে সয়াবিনের ফলন নিয়ে শুরুতে শঙ্কা থাকলেও মাঠে রোগবালাইয়ের আক্রমণ না থাকায় সয়াবিনের ফলনে কোন ক্ষতি হয়নি। গেল বছরের চেয়েও ফলন ও বাজার দর ভালো থাকায় খুশি চাষিরা। এ অঞ্চলে সয়াবিনভিত্তিক প্রক্রিয়াজাত কারখানা গড়ে তোলা গেলে সয়াবিনের বাজার দর আরও ভালো পেতেন তারা। এছাড়াও এ অঞ্চলে তেমন কোনো ইন্ড্রাস্ট্রিজ বা শিল্প কলকারখানা না থাকায় কৃষকরা তাদের ন্যায্য দাম পাচ্ছে না। সয়াবিন ভিত্তিক শিল্প কারখানা স্থাপন করা হলে কৃষকদের ন্যায্য দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি লাগব হবে এ অঞ্চলের বেকার সমস্যা।
কামাল, আবদুর রহিম, মফিজ মাঝি, সালাহ উদ্দিনসহ কয়েকজন স্থানীয় কৃষক জানান, চলতি বছর বিভিন্ন দুর্যোগসহ বৃষ্টিপাত না থাকায় এবার সয়াবিনের ভালো ফলন হওয়ায় বেশ খুশি এ কৃষক। তবে আশানুরূপ দাম না পাওয়া হতাশা প্রকাশ করেন তিনি।
বর্তমান বাজারে মণ প্রতি ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা ধরে সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে। যা গত বছর এই সময় প্রতি মণ সয়াবিনন বাজারে বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকা পর্যন্ত।
সালাহ উদ্দিন নামের এক কৃষক জানান, ৪ একর জমিতে সয়াবিনের আবাদ করেছেন। তার চাষকৃত এক একর জমিতেই সাড়ে ৩২ মণ সয়াবিন উৎপাদন হয়েছে। উৎপাদিত সয়াবিনের গুণগত মানও ভালো। বাকী তিন একরে ক্ষেত থেকে সয়াবিন তোলার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। ফলন ভালো হলেও দাম বাড়ে না। প্রতিবছর সার-কিটনাশকের দামসহ শ্রমিক খরচও বৃদ্ধি পায়। সে হারে সয়াবিনের বাজার দর বৃদ্ধি পাচ্ছে না। যার ফলে আশানুরূপ দাম পাওয়া যায় না। আশানুরূপ দাম পাওয়া গেলে কৃষকরা সয়াবিন চাষে আরও বেশি আগ্রহী হতেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মাজেদুল ইসলাম বলেন, চাষিরা উন্নতজাতের বীজ বপন ও সুষম সারের ব্যবহারের ফলে এবার রায়পুরে সয়াবিনের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষি বিভাগ থেকে সয়াবিনের ভালো জাত কৃষকদের মাঝে সরবরাহ করায় আগের চেয়ে ফলন অনেক বৃদ্ধি পাওয়ায় দামও কমের দিকে। উৎপাদিত সয়াবিন শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহার করা গেলে আমদানি নির্ভরতা কমার পাশাপাশি সাশ্রয় হবে সরকারের অর্থ।প্রতিনিধি, রায়পুর (লক্ষ্মীপুর)
‘দিন বদলের’ ফসল হিসেবে খ্যাত সয়াবিনের এবার বাম্পার ফলন হয়েছে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেরায়। বিভিন্ন দুর্যোগসহ অনুকূল আবহাওয়া, সময়মতো বীজ বপন ও সুষম সারের ব্যবহারের সয়াবিনের ফলন ভালো হয়েছে। মাঠ থেকে সয়াবিন কাটতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। তবে সয়াবিনের বাম্পার ফল নিয়ে খুশি হলেও দাম নিয়ে হতাশ কৃষকরা। গত বছরের তুলনায় অর্ধেক দামে বিক্রি হচ্ছে সয়াবিন।
সূত্রে জানা যায়, চলতি রবি মৌসুমে ৭ হাজার ৫৪০ হেক্টর জমিতে সয়াবিনের আবাদ হয়েছে। তবে কৃষকদের তথ্য মতে চলতি বছর চরাঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে বীজ সয়াবিন চাষ করা হয়েছে। ফলে গত মৌসুমের তুলনায় চার গুণ বেশি বীজ সয়াবিন উৎপাদন হয়েছে এবার। এতে এবছর সয়াবিন থেকে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা আয়ের সম্ভাবনা।
সরেজমিনে রায়পুর উপজেলার মোল্লার হাট, হায়দরগঞ্জ, চরকাছিয়া, মিয়ার বাজারসহ বেশ কয়েকটি ফসলের মাঠ ঘুরে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে রয়েছে সয়াবিনের ক্ষেত। দেশের উৎপাদিত সয়াবিনের প্রায় ৮০ ভাগ সয়াবিন উৎপাদন হয় এ জেলায়।
সয়াবিন চাষাবাদে উৎপাদনের খরচের তুলনায় লাভ বেশি হওয়ায় দিন দিন সয়াবিন চাষাবাদে ঝুঁকছেন চাষিরা। অনুকূল আবহাওয়া, উন্নত জাতের বীজ বপন ও সময়মতো সুষম সার ব্যবহার করতে পারায় এবার সয়াবিনের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলে দামও একেবারে কমে গেছে। তাই বাম্পার ফলনেও মলিন কৃষকের মুখ।
চাষিরা জানায়, মৌসুমে বৃষ্টিপাত না হওয়া ও তীব্র দাবদাহে সয়াবিনের ফলন নিয়ে শুরুতে শঙ্কা থাকলেও মাঠে রোগবালাইয়ের আক্রমণ না থাকায় সয়াবিনের ফলনে কোন ক্ষতি হয়নি। গেল বছরের চেয়েও ফলন ও বাজার দর ভালো থাকায় খুশি চাষিরা। এ অঞ্চলে সয়াবিনভিত্তিক প্রক্রিয়াজাত কারখানা গড়ে তোলা গেলে সয়াবিনের বাজার দর আরও ভালো পেতেন তারা। এছাড়াও এ অঞ্চলে তেমন কোনো ইন্ড্রাস্ট্রিজ বা শিল্প কলকারখানা না থাকায় কৃষকরা তাদের ন্যায্য দাম পাচ্ছে না। সয়াবিন ভিত্তিক শিল্প কারখানা স্থাপন করা হলে কৃষকদের ন্যায্য দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি লাগব হবে এ অঞ্চলের বেকার সমস্যা।
কামাল, আবদুর রহিম, মফিজ মাঝি, সালাহ উদ্দিনসহ কয়েকজন স্থানীয় কৃষক জানান, চলতি বছর বিভিন্ন দুর্যোগসহ বৃষ্টিপাত না থাকায় এবার সয়াবিনের ভালো ফলন হওয়ায় বেশ খুশি এ কৃষক। তবে আশানুরূপ দাম না পাওয়া হতাশা প্রকাশ করেন তিনি।
বর্তমান বাজারে মণ প্রতি ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা ধরে সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে। যা গত বছর এই সময় প্রতি মণ সয়াবিনন বাজারে বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকা পর্যন্ত।
সালাহ উদ্দিন নামের এক কৃষক জানান, ৪ একর জমিতে সয়াবিনের আবাদ করেছেন। তার চাষকৃত এক একর জমিতেই সাড়ে ৩২ মণ সয়াবিন উৎপাদন হয়েছে। উৎপাদিত সয়াবিনের গুণগত মানও ভালো। বাকী তিন একরে ক্ষেত থেকে সয়াবিন তোলার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। ফলন ভালো হলেও দাম বাড়ে না। প্রতিবছর সার-কিটনাশকের দামসহ শ্রমিক খরচও বৃদ্ধি পায়। সে হারে সয়াবিনের বাজার দর বৃদ্ধি পাচ্ছে না। যার ফলে আশানুরূপ দাম পাওয়া যায় না। আশানুরূপ দাম পাওয়া গেলে কৃষকরা সয়াবিন চাষে আরও বেশি আগ্রহী হতেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মাজেদুল ইসলাম বলেন, চাষিরা উন্নতজাতের বীজ বপন ও সুষম সারের ব্যবহারের ফলে এবার রায়পুরে সয়াবিনের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষি বিভাগ থেকে সয়াবিনের ভালো জাত কৃষকদের মাঝে সরবরাহ করায় আগের চেয়ে ফলন অনেক বৃদ্ধি পাওয়ায় দামও কমের দিকে। উৎপাদিত সয়াবিন শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহার করা গেলে আমদানি নির্ভরতা কমার পাশাপাশি সাশ্রয় হবে সরকারের অর্থ।