বিরামপুর (দিনাজপুর) : এভাবেই যত্রতত্র পশু জবাই হয় -সংবাদ
দিনাজপুরের বিরামপুরে প্রাণিসম্পদ বিভাগ কর্তৃক স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও ছাড়পত্র ছাড়াই অবাধে গবাদিপশু যত্রতত্র জবাই করে মাংস বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। বিরামপুর পৌরশহরে নির্দিষ্ট জবাই খানা থাকার পরেও যমুনা ছোট নদীর পাড়সহ বসত বাড়িসংলগ্ন এলাকায় এসব পশু জবাই করছেন মাংস বিক্রেতারা। জবাই করা পশুর শরীরে কোনো রোগবালাই রয়েছে কিনা, এমন কোনো ধারণাও রাখেন না ক্রেতা-বিক্রেতারা। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে স্যানেটারি ইন্সপেক্টরের উপস্থিতি ও আইনপ্রয়োগের দায়িত্ব প্রাডুসম্পদ ও প্রশাসনের হলেও তাদের কোনো তৎপরতা নেই বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। এ ছাড়া প্রশাসনের মনিটরিং না থাকায় মূল্য নির্ধারণ করেন মাংস বিক্রেতারাই। এতে প্রতারিত হচ্ছেন সাধারণ ক্রেতারা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পৌরশহরে প্রতি শনি ও মঙ্গলবার সাপ্তাহিক হাট বসে। প্রতিটি হাটে অন্তত ৮টি গরু, ১৫টি ছাগল ও ভেড়া জবাই করা হয়। প্রতিটি গবাদিপশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার দায়িত্বে একজন চিকিৎসক ও স্যানেটারি ইন্সপেক্টর থাকার কথা থাকলেও এই নিয়ম মানা হচ্ছে না। এ ছাড়া পশু হাটে নির্দিষ্ট জবাই খানা থাকলেও এক থেকে দুজন ছাড়া কেউই সেখানে পশু জবাই করে না। হাটের দিন বাদে অন্যান্য দিন ৪-৫টি গরু জবাই করা হয় ব্যাবসায়ীদের মনএত জায়গায়। কোন কোন ব্যাবসায়ী তার নিজ বাড়িতেই পশু জবাই করেন। কেউ আবার নদীর পাড়ে, কেউ জঙ্গলের মাঝে। এভাবেই পশু জবেহ আইন অমান্য করে দিনের পর দিন পশু জবাই করে ব্যাবসা চালিয়ে যাচ্ছেন কিছু মাংস বিক্রেতা। পশু জবাই ও মাংসের মান নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১১ বলা হয়েছে, জবাই খানার বাহিরে পশু জবাই নিষিদ্ধ। এআইনের ধারা ৩ বলা হয়েছে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে বিক্রির জন্য কোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা জবাইখানার বাহিরে কোন পশু জবাই করিতে পারবেন না। গবাদিপশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার কোনো ছাড়পত্র আছে কী নেই, এমন প্রশ্নের জবাবে বেশিরভাগ মাংস ব্যবসায়ী বলেন, বেশির ভাগ গরু ভালো থাকায় ছাড়পত্র নেয়া হয় না। আর মাংসের দাম স্যারেরা না আসার কারণে আমরা নিজেরাই নির্ধারণ করে থাকি।
এ ছাড়া তারা জানান, পৌরসভা থেকে রশীদ ছাড়াই প্রতি গরু জবাইয়ের জন্য ১০০ টাকা ও ছাগলের জন্য ৫০-২০ টাকা দিতে হয়। পৌরশহরের বাসিন্দা নুর আলম, রাজীব ও পশু হাট এলাকার বাসিন্দা রেজোয়ান ইসলাম বলেন, বর্তমানে কোনো পশু ল্যাম্পি স্কিন ডিজিজ এবং র্যাবিসে আক্রান্ত কিনা এ ছাড়াও অসুস্থ নাকি সুস্থ ছিল, তাও জানেন না তারা। নিয়ম অনুযায়ী পশু জবাই করার আগে চিকিৎসক দ্বারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ছাড়পত্র এবং পশুর শরীরে সিল দেবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো ধরনের তদারকি না থাকায় লোকজন মারা যাওয়া পশুর মাংস, নাকি রোগাক্রান্ত গরু-মহিষ, ছাগল-ভেড়ার মাংস খাচ্ছে, তা বোঝার কোনো উপায় নেই। অথচ প্রশাসনের নাকের ডগায় হচ্ছে এসব বেচা-কেনা।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে বিরামপুর পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) কামাল হোসেন বলেন, আপাতত রশীদ ছাড়াই খাঁস কালেকশন করা হচ্ছে। পরবর্তীতে টেন্ডারের মাধ্যমে এটি নেয়া হবে। বিরামপুর উপজেলা নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শকের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ও স্যানেটারি ইন্সপেক্টর ইসমাইল হোসেন বলেন, ব্যাবসায়ীরা আমাদের কোন কথা শোনেন না। তারা যে যার এত যত্রতত্র পশু জবাই করেন। একাধিকবার মাংস বিক্রেতাদের নিয়ে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করণের লক্ষ্যে আলোচনা করা হলেও তারা আমাদের কোন কথা শোনেন না। এই বিষয়ে তাদের আইনের আওতায় আনতে মামলা দিতে আমার প্রাণনাশের ভয় হয়। বিরামপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বিপুল কুমার চক্রবর্তী বলেন, প্রতিদিন যদি নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট স্থানে পশু জবাই করা হয় তাহলে সঠিক নিয়মে পরীক্ষা করা সম্ভব হবে। অথবা মাংস বিক্রেতারা প্রাণিসম্পদ অফিসে এসেও পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে ছাড়পত্র নিয়ে যেতে পারবেন। বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নুজহাত তাসনীম আওন বলেন, পৌরশহরে যত্রতত্র পশু জবেহ করার ব্যাপারে আমরা অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
বিরামপুর (দিনাজপুর) : এভাবেই যত্রতত্র পশু জবাই হয় -সংবাদ
শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫
দিনাজপুরের বিরামপুরে প্রাণিসম্পদ বিভাগ কর্তৃক স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও ছাড়পত্র ছাড়াই অবাধে গবাদিপশু যত্রতত্র জবাই করে মাংস বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। বিরামপুর পৌরশহরে নির্দিষ্ট জবাই খানা থাকার পরেও যমুনা ছোট নদীর পাড়সহ বসত বাড়িসংলগ্ন এলাকায় এসব পশু জবাই করছেন মাংস বিক্রেতারা। জবাই করা পশুর শরীরে কোনো রোগবালাই রয়েছে কিনা, এমন কোনো ধারণাও রাখেন না ক্রেতা-বিক্রেতারা। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে স্যানেটারি ইন্সপেক্টরের উপস্থিতি ও আইনপ্রয়োগের দায়িত্ব প্রাডুসম্পদ ও প্রশাসনের হলেও তাদের কোনো তৎপরতা নেই বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। এ ছাড়া প্রশাসনের মনিটরিং না থাকায় মূল্য নির্ধারণ করেন মাংস বিক্রেতারাই। এতে প্রতারিত হচ্ছেন সাধারণ ক্রেতারা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পৌরশহরে প্রতি শনি ও মঙ্গলবার সাপ্তাহিক হাট বসে। প্রতিটি হাটে অন্তত ৮টি গরু, ১৫টি ছাগল ও ভেড়া জবাই করা হয়। প্রতিটি গবাদিপশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার দায়িত্বে একজন চিকিৎসক ও স্যানেটারি ইন্সপেক্টর থাকার কথা থাকলেও এই নিয়ম মানা হচ্ছে না। এ ছাড়া পশু হাটে নির্দিষ্ট জবাই খানা থাকলেও এক থেকে দুজন ছাড়া কেউই সেখানে পশু জবাই করে না। হাটের দিন বাদে অন্যান্য দিন ৪-৫টি গরু জবাই করা হয় ব্যাবসায়ীদের মনএত জায়গায়। কোন কোন ব্যাবসায়ী তার নিজ বাড়িতেই পশু জবাই করেন। কেউ আবার নদীর পাড়ে, কেউ জঙ্গলের মাঝে। এভাবেই পশু জবেহ আইন অমান্য করে দিনের পর দিন পশু জবাই করে ব্যাবসা চালিয়ে যাচ্ছেন কিছু মাংস বিক্রেতা। পশু জবাই ও মাংসের মান নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১১ বলা হয়েছে, জবাই খানার বাহিরে পশু জবাই নিষিদ্ধ। এআইনের ধারা ৩ বলা হয়েছে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে বিক্রির জন্য কোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা জবাইখানার বাহিরে কোন পশু জবাই করিতে পারবেন না। গবাদিপশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার কোনো ছাড়পত্র আছে কী নেই, এমন প্রশ্নের জবাবে বেশিরভাগ মাংস ব্যবসায়ী বলেন, বেশির ভাগ গরু ভালো থাকায় ছাড়পত্র নেয়া হয় না। আর মাংসের দাম স্যারেরা না আসার কারণে আমরা নিজেরাই নির্ধারণ করে থাকি।
এ ছাড়া তারা জানান, পৌরসভা থেকে রশীদ ছাড়াই প্রতি গরু জবাইয়ের জন্য ১০০ টাকা ও ছাগলের জন্য ৫০-২০ টাকা দিতে হয়। পৌরশহরের বাসিন্দা নুর আলম, রাজীব ও পশু হাট এলাকার বাসিন্দা রেজোয়ান ইসলাম বলেন, বর্তমানে কোনো পশু ল্যাম্পি স্কিন ডিজিজ এবং র্যাবিসে আক্রান্ত কিনা এ ছাড়াও অসুস্থ নাকি সুস্থ ছিল, তাও জানেন না তারা। নিয়ম অনুযায়ী পশু জবাই করার আগে চিকিৎসক দ্বারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ছাড়পত্র এবং পশুর শরীরে সিল দেবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো ধরনের তদারকি না থাকায় লোকজন মারা যাওয়া পশুর মাংস, নাকি রোগাক্রান্ত গরু-মহিষ, ছাগল-ভেড়ার মাংস খাচ্ছে, তা বোঝার কোনো উপায় নেই। অথচ প্রশাসনের নাকের ডগায় হচ্ছে এসব বেচা-কেনা।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে বিরামপুর পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) কামাল হোসেন বলেন, আপাতত রশীদ ছাড়াই খাঁস কালেকশন করা হচ্ছে। পরবর্তীতে টেন্ডারের মাধ্যমে এটি নেয়া হবে। বিরামপুর উপজেলা নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শকের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ও স্যানেটারি ইন্সপেক্টর ইসমাইল হোসেন বলেন, ব্যাবসায়ীরা আমাদের কোন কথা শোনেন না। তারা যে যার এত যত্রতত্র পশু জবাই করেন। একাধিকবার মাংস বিক্রেতাদের নিয়ে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করণের লক্ষ্যে আলোচনা করা হলেও তারা আমাদের কোন কথা শোনেন না। এই বিষয়ে তাদের আইনের আওতায় আনতে মামলা দিতে আমার প্রাণনাশের ভয় হয়। বিরামপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বিপুল কুমার চক্রবর্তী বলেন, প্রতিদিন যদি নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট স্থানে পশু জবাই করা হয় তাহলে সঠিক নিয়মে পরীক্ষা করা সম্ভব হবে। অথবা মাংস বিক্রেতারা প্রাণিসম্পদ অফিসে এসেও পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে ছাড়পত্র নিয়ে যেতে পারবেন। বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নুজহাত তাসনীম আওন বলেন, পৌরশহরে যত্রতত্র পশু জবেহ করার ব্যাপারে আমরা অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।