টাঙ্গাইলে একদিকে সরকারিভাবে কৃষকদের বিনামূল্যে ভুট্টার বীজ ও সার প্রদান সেইসঙ্গে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার বাম্বার ফলন হয়েছে। এছাড়া চলতি রবি মৌসুমে হাইব্রিড জাতের ভুট্টার আবাদ লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি জমিতে হয়েছে। টাঙ্গাইল জেলার ১২টি উপজেলায় বিশেষ করে চরাঞ্চলজুড়ে এখন শুধু ভুট্টার চাষ বাড়ছে দিন দিন। ভালো ফলনের আশায় কৃষকরাও অধীর আগ্রহে কাজ করছে জমিতে।
টাঙ্গাইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি রবি মৌসুমে কৃষি বিভাগ ভুট্টা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিল ৭ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে। আর জমিতে আবাদ হয়েছে ৮ হাজার ৮১৫ হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে জমিতে আবাদ হয়েছে ১ হাজার ২৫১ হেক্টর বেশি। চরাঞ্চলে অন্য ফসলের তুলনায় ভুট্টা চাষ বেশি হওয়ায় লাভবান হচ্ছেন ভুট্টা চাষিরা।
ভুট্টা গো-খাদ্য হিসেবেও ব্যবহার হয়। তাছাড়া পোল্ট্রি শিল্পের জন্যও এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। যেখানে প্রতি বিঘা জমিতে ১৫ থেকে ১৬ মণ ধান আবাদ হয়। সেখানে প্রতি বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ হয় ৪০ থেকে ৪৫ মণ। বিঘা প্রতি ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ করে চাষিরা। আর বিক্রি করতে পারেন ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকার ভুট্টা। গোপালপুর উপজেলার হায়দার আলী নামে এক কৃষক বলেন, আমি দুই বিঘা জমিতে প্রণোদনার যুবরাজ ও গঙ্গা পদ্মা জাতের হাইব্রিড ভুট্টা চাষ করেছি। এতে ওজন ও ফলন ভালো পেয়েছি।
ঘাটাইল উপজেলার ভুট্টা চাষি হাছেন আলীর অনার্স পড়ুয়া ছেলে রাকিবকে সঙ্গে নিয়ে জমি থেকে সংরক্ষণ করছেন ভুট্টা। তিনি বলেন, এই সব জমিতে ধান চাষ হতো না। আমি এক বিঘা জমি বর্গা নিয়ে দুই বছর যাবত ভুট্টা চাষ করেছি। এ বছর ভুট্টা খুব ভালো ফলন হয়েছে। এ সময় এক বাধা ভুট্টার ওজন দেখা গিয়েছে ৪৩০ গ্রাম। অর্থাৎ ৯৩টি ভুট্টার বাধায় ওজন এসেছে এক মণ।
সখীপুর উপজেলার যাদবপুর ইউনিয়নের ঘেচুয়া গ্রামের কৃষক নুরুল ইসলাম বলেন, এক বিঘা জমিতে গত বছরও ভুট্টা চাষ করছিলাম। তবে গত বছরের চেয়ে এ বছর ফলন ভালো হয়েছে।
গোপালপুর উপজেলার আলমনগর ইউনিয়নের বাগুয়াটা ব্লক উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বলেন, বিগত কয়েকবছর ধরে ক্রমাগতভাবে ভুট্টার আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। নতুন ফসল হিসেবে কৃষক যেন চাষাবাদের ক্ষেত্রে সমস্যায় না পড়ে সেজন্য আমরা সরাসরি কৃষককে সঠিকভাবে ভুট্টাচাষ করার পদ্ধতি শিখিয়ে দিচ্ছি। ভুট্টায় বিভিন্ন রোগ ও পোকা আক্রমণ করলে সেগুলো দমনে কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
কালিহাতী উপজেলা কৃষি অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) উজ্জ্বল হোসেন জানান, প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় একশ’ কৃষককে দুই কেজি করে ভুট্টার বীজ দেয়া হয়েছে বিনামূল্যে। এছাড়াও ২০ কেজি করে ডি.এ.পি সার এবং ১০ কেজি করে এম.ও.পি সার দেয়া হয়েছে বিনামূল্যে। অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে এ মৌসুমে বৃহৎ পরিমাণের ভুট্টার প্রণোদনা পেয়েছেন কৃষক।
টাঙ্গাইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আশেক পারভেজ জানান, চলতি মৌসুমে জেলায় ভুট্টার টার্গেট ৭ হাজার ৮০০ হেক্টর, অর্জিত হয়েছে ৮ হাজার ৮১৫ হেক্টর। আর উৎপাদন হয়েছে ৮৩ হাজার ৬৬৩ মেট্রিক টন। গতবছর অর্জন ৭ হাজার ৭৫৬ হেক্টর, গতবছর উৎপাদন ৭৩ হাজার ৩২০ মেট্রিক টন। এছাড়াও এ বছর প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে ১ হাজার ৫০০ জন কৃষককে।
সোমবার, ১৯ মে ২০২৫
টাঙ্গাইলে একদিকে সরকারিভাবে কৃষকদের বিনামূল্যে ভুট্টার বীজ ও সার প্রদান সেইসঙ্গে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার বাম্বার ফলন হয়েছে। এছাড়া চলতি রবি মৌসুমে হাইব্রিড জাতের ভুট্টার আবাদ লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি জমিতে হয়েছে। টাঙ্গাইল জেলার ১২টি উপজেলায় বিশেষ করে চরাঞ্চলজুড়ে এখন শুধু ভুট্টার চাষ বাড়ছে দিন দিন। ভালো ফলনের আশায় কৃষকরাও অধীর আগ্রহে কাজ করছে জমিতে।
টাঙ্গাইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি রবি মৌসুমে কৃষি বিভাগ ভুট্টা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিল ৭ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে। আর জমিতে আবাদ হয়েছে ৮ হাজার ৮১৫ হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে জমিতে আবাদ হয়েছে ১ হাজার ২৫১ হেক্টর বেশি। চরাঞ্চলে অন্য ফসলের তুলনায় ভুট্টা চাষ বেশি হওয়ায় লাভবান হচ্ছেন ভুট্টা চাষিরা।
ভুট্টা গো-খাদ্য হিসেবেও ব্যবহার হয়। তাছাড়া পোল্ট্রি শিল্পের জন্যও এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। যেখানে প্রতি বিঘা জমিতে ১৫ থেকে ১৬ মণ ধান আবাদ হয়। সেখানে প্রতি বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ হয় ৪০ থেকে ৪৫ মণ। বিঘা প্রতি ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ করে চাষিরা। আর বিক্রি করতে পারেন ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকার ভুট্টা। গোপালপুর উপজেলার হায়দার আলী নামে এক কৃষক বলেন, আমি দুই বিঘা জমিতে প্রণোদনার যুবরাজ ও গঙ্গা পদ্মা জাতের হাইব্রিড ভুট্টা চাষ করেছি। এতে ওজন ও ফলন ভালো পেয়েছি।
ঘাটাইল উপজেলার ভুট্টা চাষি হাছেন আলীর অনার্স পড়ুয়া ছেলে রাকিবকে সঙ্গে নিয়ে জমি থেকে সংরক্ষণ করছেন ভুট্টা। তিনি বলেন, এই সব জমিতে ধান চাষ হতো না। আমি এক বিঘা জমি বর্গা নিয়ে দুই বছর যাবত ভুট্টা চাষ করেছি। এ বছর ভুট্টা খুব ভালো ফলন হয়েছে। এ সময় এক বাধা ভুট্টার ওজন দেখা গিয়েছে ৪৩০ গ্রাম। অর্থাৎ ৯৩টি ভুট্টার বাধায় ওজন এসেছে এক মণ।
সখীপুর উপজেলার যাদবপুর ইউনিয়নের ঘেচুয়া গ্রামের কৃষক নুরুল ইসলাম বলেন, এক বিঘা জমিতে গত বছরও ভুট্টা চাষ করছিলাম। তবে গত বছরের চেয়ে এ বছর ফলন ভালো হয়েছে।
গোপালপুর উপজেলার আলমনগর ইউনিয়নের বাগুয়াটা ব্লক উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বলেন, বিগত কয়েকবছর ধরে ক্রমাগতভাবে ভুট্টার আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। নতুন ফসল হিসেবে কৃষক যেন চাষাবাদের ক্ষেত্রে সমস্যায় না পড়ে সেজন্য আমরা সরাসরি কৃষককে সঠিকভাবে ভুট্টাচাষ করার পদ্ধতি শিখিয়ে দিচ্ছি। ভুট্টায় বিভিন্ন রোগ ও পোকা আক্রমণ করলে সেগুলো দমনে কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
কালিহাতী উপজেলা কৃষি অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) উজ্জ্বল হোসেন জানান, প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় একশ’ কৃষককে দুই কেজি করে ভুট্টার বীজ দেয়া হয়েছে বিনামূল্যে। এছাড়াও ২০ কেজি করে ডি.এ.পি সার এবং ১০ কেজি করে এম.ও.পি সার দেয়া হয়েছে বিনামূল্যে। অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে এ মৌসুমে বৃহৎ পরিমাণের ভুট্টার প্রণোদনা পেয়েছেন কৃষক।
টাঙ্গাইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আশেক পারভেজ জানান, চলতি মৌসুমে জেলায় ভুট্টার টার্গেট ৭ হাজার ৮০০ হেক্টর, অর্জিত হয়েছে ৮ হাজার ৮১৫ হেক্টর। আর উৎপাদন হয়েছে ৮৩ হাজার ৬৬৩ মেট্রিক টন। গতবছর অর্জন ৭ হাজার ৭৫৬ হেক্টর, গতবছর উৎপাদন ৭৩ হাজার ৩২০ মেট্রিক টন। এছাড়াও এ বছর প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে ১ হাজার ৫০০ জন কৃষককে।