যশোরে আদালত চত্বর থেকে হাতকড়া খুলে হত্যা মামলা এক আসামি পালিয়েছে। সোমবার, (১৯ মে ২০২৫) বিকেল ৩টার দিকে যশোর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এ ঘটনা ঘটেছে। পালিয়ে যাওয়া হত্যা মামলার আসামি জুয়েল খান (২০) মাগুরার শালিখা উপজেলার রামপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর খানের ছেলে। জুয়েল যশোরের বাঘারপাড়া থানার ইজিবাইক চালক আল-আমিন হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি। হাজিরা শেষে আদালতের হাজতখানায় নেয়ার পথে হাতকড়া খুলে আসামি জুয়েল পালিয়ে যায়। তাকে ধরতে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে।
যশোর আদালত সূত্র ও পুলিশ জানিয়েছে, আসামি জুয়েল খান মাগুরার শালিখা উপজেলার হরিশপুর গ্রামের ইজিবাইক চালক আল-আমিন হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত প্রধান আসামি জুয়েল। ২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর মাগুরা থেকে আল-আমিনের ইজিবাইক ভাড়া করে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার বুধোপুর গ্রামে এনে তাকে হত্যা করে এবং ইজিবাইক নিয়ে চম্পট দেয় জুয়েলসহ তার সহযোগীরা। এ ঘটনায় বাঘারপাড়া থানায় মামলা হয়। ২০২১ সালের ১৫ ডিসেম্বর র্যাব-৬ খুলনার স্পেশাল টিম জুয়েলসহ মামলার চার আসামিকে আটক করে এবং তারা হত্যার ঘটনা স্বীকার করে। পরে তাদেরকে বাঘারপাড়া থানায় হস্তান্তর করা হয়। এরপর থেকে জুয়েল কারাগারে আটক ছিল। আদালত ও পুলিশ সূত্র আরও জানায়, গতকাল রোববার আল-আমিন হত্যা মামলা শুনানির তারিখ ধার্য ছিল। এ দিন সকালে জুয়েল ও অন্য আসামি হারুন অর রশিদকে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আদালতে আনা হয়। দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে তাদের হাজির করা হয়। পরে আদালত তাদের ফের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়। তখন মহিলা পুলিশ কনস্টেবল সোনালী তাদের দু’জনকে হাজতখানায় নিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় নিচতলার সিড়ির কাছে পৌঁছালে কৌশলে হাতকড়া খুলে জুয়েল খান পালিয়ে যায়। পরে কনস্টেবল সোনালী চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন তাকে তাড়া করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আসামি পলাতকের খবর শুনে তারা পিছু ধাওয়া করেন। এ সময় জুয়েল জজ আদালতের সামনের গেট দিয়ে বের হয়ে মসজিদের সামনে দিয়ে দৌড়ে আইনজীবী সহকারী সমিতির কার্যালয়ের পাশ দিয়ে খড়কির দিকে চলে যায়। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) নূর-ই-আলম সিদ্দিকী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) আবুল বাসার, কোতোয়ালি থানার ওসি আবুল হাসনাতসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আদালতে ছুটে যান। একই সঙ্গে পুলিশের একাধিক টিম জুয়েলকে খুঁজতে অভিযান শুরু করেছে।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) নূর-ই-আলম সিদ্দিকী বলেন, পালিয়ে যাওয়া আসামি জুয়েলকে ধরতে গোটা জেলায় অভিযান শুরু হয়েছে। জেলার সব থানা, ফাঁড়ি, ক্যাম্পে তথ্য দিয়ে তাদেরকে তৎপরতা শুরু করতে বলা হয়েছে। এছাড়া পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতেও বার্তা পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি সীমান্ত দিয়ে যাতে পালাতে না পারে সে ব্যাপারেও পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, এ ঘটনায় পুলিশের সংশ্লিষ্টদের কোনো দায়িত্বে অবহেলা আছে কিনা সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এজন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটিকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর ইজিবাইক ভাড়া করে খুনিরা চালক আল-আমিনকে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার বুধোপুর গ্রামে নিয়ে যায়। এরপর আল-আমিনের হাত-পা বেঁধে গলায় ফাঁস দিয়ে তাকে হত্যা করে। পরে টাকা ও ইজিবাইক নিয়ে পালিয়ে যায়। পরদিন পুলিশ বুধোপুর থেকে আল-আমিনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলার হরিশপুর গ্রামের বাসিন্দা মোস্তাফিজুর রহমান অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে বাঘারপাড়া থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্তে র্যাব সদস্যরা চার আসামি জুয়েল খান, আল-আমিন, হারুন অর রশিদ ও মো. রাসেলকে আটক করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে আল-আমিনের ইজিবাইকের ব্যাটারি, চাকা ও ছুরি উদ্ধার করা হয়।
মামলাটি তদন্ত শেষে ২০২২ সালের ১৪ ডিসেম্বর বাঘারপাড়া থানার এসআই হরষিত রায় আসামি জুয়েল ও একই গ্রামের সেলিম হোসেনের ছেলে হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলাটির বিচারকার্য চলছে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতে। এই মামলার ধার্য তারিখ গতকাল রোববার হাজিরা শেষে হাজতখানায় নেয়ার পথে আসামি জুয়েল পালিয়েছে।
সোমবার, ১৯ মে ২০২৫
যশোরে আদালত চত্বর থেকে হাতকড়া খুলে হত্যা মামলা এক আসামি পালিয়েছে। সোমবার, (১৯ মে ২০২৫) বিকেল ৩টার দিকে যশোর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এ ঘটনা ঘটেছে। পালিয়ে যাওয়া হত্যা মামলার আসামি জুয়েল খান (২০) মাগুরার শালিখা উপজেলার রামপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর খানের ছেলে। জুয়েল যশোরের বাঘারপাড়া থানার ইজিবাইক চালক আল-আমিন হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি। হাজিরা শেষে আদালতের হাজতখানায় নেয়ার পথে হাতকড়া খুলে আসামি জুয়েল পালিয়ে যায়। তাকে ধরতে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে।
যশোর আদালত সূত্র ও পুলিশ জানিয়েছে, আসামি জুয়েল খান মাগুরার শালিখা উপজেলার হরিশপুর গ্রামের ইজিবাইক চালক আল-আমিন হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত প্রধান আসামি জুয়েল। ২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর মাগুরা থেকে আল-আমিনের ইজিবাইক ভাড়া করে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার বুধোপুর গ্রামে এনে তাকে হত্যা করে এবং ইজিবাইক নিয়ে চম্পট দেয় জুয়েলসহ তার সহযোগীরা। এ ঘটনায় বাঘারপাড়া থানায় মামলা হয়। ২০২১ সালের ১৫ ডিসেম্বর র্যাব-৬ খুলনার স্পেশাল টিম জুয়েলসহ মামলার চার আসামিকে আটক করে এবং তারা হত্যার ঘটনা স্বীকার করে। পরে তাদেরকে বাঘারপাড়া থানায় হস্তান্তর করা হয়। এরপর থেকে জুয়েল কারাগারে আটক ছিল। আদালত ও পুলিশ সূত্র আরও জানায়, গতকাল রোববার আল-আমিন হত্যা মামলা শুনানির তারিখ ধার্য ছিল। এ দিন সকালে জুয়েল ও অন্য আসামি হারুন অর রশিদকে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আদালতে আনা হয়। দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে তাদের হাজির করা হয়। পরে আদালত তাদের ফের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়। তখন মহিলা পুলিশ কনস্টেবল সোনালী তাদের দু’জনকে হাজতখানায় নিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় নিচতলার সিড়ির কাছে পৌঁছালে কৌশলে হাতকড়া খুলে জুয়েল খান পালিয়ে যায়। পরে কনস্টেবল সোনালী চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন তাকে তাড়া করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আসামি পলাতকের খবর শুনে তারা পিছু ধাওয়া করেন। এ সময় জুয়েল জজ আদালতের সামনের গেট দিয়ে বের হয়ে মসজিদের সামনে দিয়ে দৌড়ে আইনজীবী সহকারী সমিতির কার্যালয়ের পাশ দিয়ে খড়কির দিকে চলে যায়। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) নূর-ই-আলম সিদ্দিকী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) আবুল বাসার, কোতোয়ালি থানার ওসি আবুল হাসনাতসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আদালতে ছুটে যান। একই সঙ্গে পুলিশের একাধিক টিম জুয়েলকে খুঁজতে অভিযান শুরু করেছে।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) নূর-ই-আলম সিদ্দিকী বলেন, পালিয়ে যাওয়া আসামি জুয়েলকে ধরতে গোটা জেলায় অভিযান শুরু হয়েছে। জেলার সব থানা, ফাঁড়ি, ক্যাম্পে তথ্য দিয়ে তাদেরকে তৎপরতা শুরু করতে বলা হয়েছে। এছাড়া পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতেও বার্তা পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি সীমান্ত দিয়ে যাতে পালাতে না পারে সে ব্যাপারেও পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, এ ঘটনায় পুলিশের সংশ্লিষ্টদের কোনো দায়িত্বে অবহেলা আছে কিনা সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এজন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটিকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর ইজিবাইক ভাড়া করে খুনিরা চালক আল-আমিনকে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার বুধোপুর গ্রামে নিয়ে যায়। এরপর আল-আমিনের হাত-পা বেঁধে গলায় ফাঁস দিয়ে তাকে হত্যা করে। পরে টাকা ও ইজিবাইক নিয়ে পালিয়ে যায়। পরদিন পুলিশ বুধোপুর থেকে আল-আমিনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলার হরিশপুর গ্রামের বাসিন্দা মোস্তাফিজুর রহমান অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে বাঘারপাড়া থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্তে র্যাব সদস্যরা চার আসামি জুয়েল খান, আল-আমিন, হারুন অর রশিদ ও মো. রাসেলকে আটক করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে আল-আমিনের ইজিবাইকের ব্যাটারি, চাকা ও ছুরি উদ্ধার করা হয়।
মামলাটি তদন্ত শেষে ২০২২ সালের ১৪ ডিসেম্বর বাঘারপাড়া থানার এসআই হরষিত রায় আসামি জুয়েল ও একই গ্রামের সেলিম হোসেনের ছেলে হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলাটির বিচারকার্য চলছে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতে। এই মামলার ধার্য তারিখ গতকাল রোববার হাজিরা শেষে হাজতখানায় নেয়ার পথে আসামি জুয়েল পালিয়েছে।