alt

সারাদেশ

বরগুনা কক্ষের অভাবে এজলাস ভাগাভাগি করে চলছে বিচার কাজ, বাড়ছে মামলা জট

নিজস্ব বার্তা পেরিবেশক, বরগুনা : বুধবার, ২১ মে ২০২৫

পর্যাপ্ত অবকাঠামো সংকটে ভুগছে বরগুনার আদালতপাড়া। কক্ষ সংকটে বসার জায়গা পাচ্ছেন না বিচারকরা। ফলে একই এজলাস ভাগাভাগি করে ব্যবহার করতে হচ্ছে। বিচার পেতে এসে উল্টো বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে ভুক্তভোগীদের।

বরগুনা আদালত ভবনে গিয়ে দেখা যায়, পর্যাপ্ত জায়গা নেই। আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের জন্য ভবনের অভাবে পুরাতন ভবনও ব্যাবহার করতে হচ্ছে। আদালত সূত্রে জানা গেছে, বরগুনায় প্রায় ২৬ হাজার মামলা বিচারাধীন। জেলার ২১ জন বিচারকের পদের মধ্যে ৬টিই শূন্য। এছাড়াও সংকটের কারণে একই এজলাস দুইজন বিচারক পালাক্রমে ব্যবহার করেন। এতে বাড়ছে মামলার দীর্ঘসূত্রতা।

আইনজীবীদের তথ্য অনুযায়ী, বরগুনায় প্রতিদিন গড়ে দুই হাজারের বেশি মানুষ আদালত সংশ্লিষ্ট কাজে আসেন। কিন্তু পর্যাপ্ত বসার জায়গা না থাকায় নারী, শিশু ও বৃদ্ধরা খোলা মাঠ ধান খেত বা বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য হন ঘণ্টার পর ঘণ্টা।

দেখা গেছে, জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বারান্দায় গাদাগাদি করে দাঁড়িয়ে আছেন কয়েকশ বিচারপ্রার্থী। তিল ধারণের ঠাঁই নেই সেখানে। সদর উপজেলা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের বারান্দায় দাঁড়ানোর জায়গা না থাকায় অনেকে তপ্ত রোদের মধ্যে অপেক্ষা করছেন। কোন কোন নারী বিচারপ্রার্থীদের সঙ্গে শিশুরা থাকায় চরম বিপাকে পড়ছেন তারা। অন্যদিকে স্থান সংকটের কারণে একটি এজলাসের মধ্যে দাপ্তরিক কাজকর্ম সারছেন চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা। এছাড়া যত্রতত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র। এর মধ্যে ভিড় ঠেলে কোনো রকমে আদালত কক্ষে ঢুকছেন আইনজীবীরা।

বেতাগী উপজেলার বাসিন্দা জামাল ইবনে মুসার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, ২০০৭ সালে জমিজমা সংক্রান্ত একটি বিরোধ নিষ্পত্তি করতে আদালতের দ্বারস্থ হন তিনি, এরপর পেরিয়ে গেছে ১৮ বছর। এখন পর্যন্ত এ মামলার কোনো সুরাহা হয়নি। দীর্ঘ সময় আদালতে ঘুরে ঘুরে হতাশ তিনি।

আদালতের বারান্দায় কথা হয় কাজল রেখা নামের পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ থেকে আসা এক বিচারপ্রার্থীর সঙ্গে। তিনি জানান, ২০১২ সালে বেতাগীতে তার মায়ের জমি সংক্রান্ত বিষয়ে মামলা করেছিলেন সেটি এখনো সুরাহা হয়নি। দীর্ঘ ১৩ বছর কেটে গেলেও বিচারক সংকটসহ নানা জটিলতায় এখনো তিনি বিচার পাচ্ছেন না।

বিচারক না থাকায় মামলা জট বাড়ছে জানিয়ে অ্যাডভোকেট রুহুল আমিন বলেন, বরগুনাতে সব আদালতে বিচারক নেই বিধায় মামলার জটিলতা বাড়ছে। যদি বিচারকের শূন্যতা কেটে যায় তবে বিচার ব্যবস্থাও ত্বরান্বিত হবে। আমরা আশাকরি, অতি দ্রুতই শূন্য পদে বিচারক প্রদানের মাধ্যমে বরগুনার মানুষের দুর্দশা কাটবে।

চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের জন্য ভবন নির্মাণের দাবি জানিয়ে বরগুনা নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনালের সাবেক সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল বলেন, বৃষ্টির দিনে আদালতে আসা মানুষজনকে ভিজে বাইরে দাঁড়িযে থাকতে হয়। আবার গরমের সময়ও একইভাবে এই মাঠে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। বর্তমান সরকারের কাছে একটাই দাবি যাতে এখানে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের জন্য একটি ভবন নির্মাণ করা হয়। এতে বিচার ব্যবস্থা ত্বরান্বিত হবে।

চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. আকতার হোসেন বলেন, এজলাস সংকট ও বিচারক পদ শূন্য থাকার ফলে প্রতিদিন মামলার কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এতে মামলা জটও বাড়ছে। এছাড়া আদালতের দাপ্তরিক কাজেও বিঘ্ন ঘটছে। নতুন একটি ভবন হলে আমাদের সব সমস্যা সমাধান হবে।

বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট নুরুল আমিন বলেন, পার্শ্ববর্তী জেলায় চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ভবন আছে কিন্তু বরগুনার সাবেক জনপ্রতিনিধিরা বরগুনার জন্য কিছুই করতে পারেননি। শুধু একটি ভবন না থাকায় বিচারক ও আইনজীবীরা ভোগান্তিতে আছেন। সংকট নিরসনে ও বিচারিক প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতেন তারা।

সম্মিলিতভাবে কাজ করছেন। পাশাপাশি চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন নির্মাণের জন্য সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলে আলোচনা চলছে।

ছবি

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ফায়ার সার্ভিসের প্রশিক্ষণে ইউএস মেরিন

সাদুল্লাপুরে বজ্রপাতে প্রাণ গেল যুবকের

ছবি

তালের শাঁসের বিক্রি বেড়েছে মধুপুরে

নাতিকে বস্তাবন্দি দাদাকে হত্যা করে গরু ডাকাতি

ছবি

গোয়ালন্দে সমলয় পদ্ধতিতে ধান কর্তন উদ্বোধন

ছবি

পলাশে গাছেগাছে শোভা পাচ্ছে রসালো ফল কাঁঠাল

জেলেদের মাঝে বকনা বাছুর বিতরণ

ছবি

আনোয়ারায় জমজমাট তৈলারদ্বীপ পশুর হাট

দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষ নিহত ১, আহত ১০

ছবি

টাঙ্গাইলে পল্লী বিদ্যুতের ট্রান্সফরমার চুরির হিড়িক সেচ-সংকটে পুড়ছে ধান

দোহারে গৃহবধূর আত্মহত্যা

আমগাছ থেকে পড়ে গ্রিল মিস্ত্রির মৃত্যু

শেষ বর্ষের পরীক্ষার ফরম পূরণ করতে পারেনি ৪০০ শিক্ষার্থী বরিশাল নার্সিং কলেজ

সমুদ্রসৈকতে প্যারাসেইলিং থেকে ছিটকে পড়লেন পর্যটক দম্পতি

তিন জেলায় সড়কে ও রেলে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাসহ চারজন নিহত

টর্চলাইট চার্জ দিতে গিয়ে যুবকের মৃত্যু

ছবি

সরকারি জমির অর্ধশতবর্ষী বটগাছ কেটে ফেললেন বিএনপি নেতা

কুমিল্লায় ডোবায় ডুবে মামা-ভাগনের মৃত্যু

মশার কয়েলের আগুনে পুড়ে মারা গেল কোরবানির ৩ গরু

ছবি

চাঁদপুরে সড়ক নির্মাণকাজ বন্ধ দুর্ভোগে শতাধিক পরিবার

মোরেলগঞ্জে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে জনবল সংকট, কার্যক্রম ব্যাহত

৮ বছরেও নির্মাণকাজ শেষ হয়নি লালমাই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেরং

ছবি

খানাখন্দে ভরা ফখরুদ্দিন রোড সংস্কারে দায়িত্ব নিতে চায় না কেউ

ডোমারে বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা

পাকুন্দিয়ায় কৃষক প্রশিক্ষণ

পুলিশ কনস্টেবলের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, এক মাস পর মামলা

কোরবানির জন্য ৬৮ হাজার পশু প্রস্তুত বাগাতিপাড়ায়

ছবি

যমুনার পাড়ে ৪২ কোটি টাকার বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্প ৭ বছরেও চালু হয়নি

ছবি

টাঙ্গাইলে রংপুরগামী বাসে ডাকাতদল লুটপাট চালিয়ে পালিয়েছে

চুনারুঘাটে গাড়িচাপায় হনুমান শাবকের মৃত্যু, আহত মায়ের নীরব কান্না

চাঁদাবাজির অভিযোগে ছাত্রদলের ৪ নেতা গ্রেপ্তার

ছবি

ভাঙনকবলে আতংকিত নদীপাড়ের মানুষ

ছবি

ভ্রাম্যমাণ আদালতের পৃথক অভিযানে ৬৩ হাজার টাকা জরিমানা

বিদ্যুৎস্পৃষ্টে শ্রমিকের মৃত্যু

ড্রাম ট্রাক চাপায় পিকআপচালক নিহত

ছবি

সাটুরিয়ার যমুনা ব্রিকসের কার্যক্রম বন্ধ, কৃষকের ক্ষতিপুরণের নির্দেশ

tab

সারাদেশ

বরগুনা কক্ষের অভাবে এজলাস ভাগাভাগি করে চলছে বিচার কাজ, বাড়ছে মামলা জট

নিজস্ব বার্তা পেরিবেশক, বরগুনা

বুধবার, ২১ মে ২০২৫

পর্যাপ্ত অবকাঠামো সংকটে ভুগছে বরগুনার আদালতপাড়া। কক্ষ সংকটে বসার জায়গা পাচ্ছেন না বিচারকরা। ফলে একই এজলাস ভাগাভাগি করে ব্যবহার করতে হচ্ছে। বিচার পেতে এসে উল্টো বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে ভুক্তভোগীদের।

বরগুনা আদালত ভবনে গিয়ে দেখা যায়, পর্যাপ্ত জায়গা নেই। আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের জন্য ভবনের অভাবে পুরাতন ভবনও ব্যাবহার করতে হচ্ছে। আদালত সূত্রে জানা গেছে, বরগুনায় প্রায় ২৬ হাজার মামলা বিচারাধীন। জেলার ২১ জন বিচারকের পদের মধ্যে ৬টিই শূন্য। এছাড়াও সংকটের কারণে একই এজলাস দুইজন বিচারক পালাক্রমে ব্যবহার করেন। এতে বাড়ছে মামলার দীর্ঘসূত্রতা।

আইনজীবীদের তথ্য অনুযায়ী, বরগুনায় প্রতিদিন গড়ে দুই হাজারের বেশি মানুষ আদালত সংশ্লিষ্ট কাজে আসেন। কিন্তু পর্যাপ্ত বসার জায়গা না থাকায় নারী, শিশু ও বৃদ্ধরা খোলা মাঠ ধান খেত বা বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য হন ঘণ্টার পর ঘণ্টা।

দেখা গেছে, জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বারান্দায় গাদাগাদি করে দাঁড়িয়ে আছেন কয়েকশ বিচারপ্রার্থী। তিল ধারণের ঠাঁই নেই সেখানে। সদর উপজেলা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের বারান্দায় দাঁড়ানোর জায়গা না থাকায় অনেকে তপ্ত রোদের মধ্যে অপেক্ষা করছেন। কোন কোন নারী বিচারপ্রার্থীদের সঙ্গে শিশুরা থাকায় চরম বিপাকে পড়ছেন তারা। অন্যদিকে স্থান সংকটের কারণে একটি এজলাসের মধ্যে দাপ্তরিক কাজকর্ম সারছেন চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা। এছাড়া যত্রতত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র। এর মধ্যে ভিড় ঠেলে কোনো রকমে আদালত কক্ষে ঢুকছেন আইনজীবীরা।

বেতাগী উপজেলার বাসিন্দা জামাল ইবনে মুসার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, ২০০৭ সালে জমিজমা সংক্রান্ত একটি বিরোধ নিষ্পত্তি করতে আদালতের দ্বারস্থ হন তিনি, এরপর পেরিয়ে গেছে ১৮ বছর। এখন পর্যন্ত এ মামলার কোনো সুরাহা হয়নি। দীর্ঘ সময় আদালতে ঘুরে ঘুরে হতাশ তিনি।

আদালতের বারান্দায় কথা হয় কাজল রেখা নামের পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ থেকে আসা এক বিচারপ্রার্থীর সঙ্গে। তিনি জানান, ২০১২ সালে বেতাগীতে তার মায়ের জমি সংক্রান্ত বিষয়ে মামলা করেছিলেন সেটি এখনো সুরাহা হয়নি। দীর্ঘ ১৩ বছর কেটে গেলেও বিচারক সংকটসহ নানা জটিলতায় এখনো তিনি বিচার পাচ্ছেন না।

বিচারক না থাকায় মামলা জট বাড়ছে জানিয়ে অ্যাডভোকেট রুহুল আমিন বলেন, বরগুনাতে সব আদালতে বিচারক নেই বিধায় মামলার জটিলতা বাড়ছে। যদি বিচারকের শূন্যতা কেটে যায় তবে বিচার ব্যবস্থাও ত্বরান্বিত হবে। আমরা আশাকরি, অতি দ্রুতই শূন্য পদে বিচারক প্রদানের মাধ্যমে বরগুনার মানুষের দুর্দশা কাটবে।

চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের জন্য ভবন নির্মাণের দাবি জানিয়ে বরগুনা নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনালের সাবেক সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল বলেন, বৃষ্টির দিনে আদালতে আসা মানুষজনকে ভিজে বাইরে দাঁড়িযে থাকতে হয়। আবার গরমের সময়ও একইভাবে এই মাঠে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। বর্তমান সরকারের কাছে একটাই দাবি যাতে এখানে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের জন্য একটি ভবন নির্মাণ করা হয়। এতে বিচার ব্যবস্থা ত্বরান্বিত হবে।

চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. আকতার হোসেন বলেন, এজলাস সংকট ও বিচারক পদ শূন্য থাকার ফলে প্রতিদিন মামলার কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এতে মামলা জটও বাড়ছে। এছাড়া আদালতের দাপ্তরিক কাজেও বিঘ্ন ঘটছে। নতুন একটি ভবন হলে আমাদের সব সমস্যা সমাধান হবে।

বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট নুরুল আমিন বলেন, পার্শ্ববর্তী জেলায় চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ভবন আছে কিন্তু বরগুনার সাবেক জনপ্রতিনিধিরা বরগুনার জন্য কিছুই করতে পারেননি। শুধু একটি ভবন না থাকায় বিচারক ও আইনজীবীরা ভোগান্তিতে আছেন। সংকট নিরসনে ও বিচারিক প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতেন তারা।

সম্মিলিতভাবে কাজ করছেন। পাশাপাশি চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন নির্মাণের জন্য সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলে আলোচনা চলছে।

back to top