কক্সবাজারে রামু উপজেলার কচ্ছপিয়া গরু বাজার থেকে রশিদসহ গরু গন্তব্যে নিয়ে যাওয়ার সময় বিজিবি অভিযান চালিয়ে গরু জব্দের ঘটনায় ক্রেতা বিক্রিতা ও হাট ইজারাদারদের মাঝে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে। জানা গেছে, মায়ানমার সীমান্ত দিয়ে চোরাইপথে অবৈধভাবে গরু অনুপ্রবেশ করে জেলার অন্যতম শষ্য ভান্ডার হিসেবে খ্যাত গর্জনিয়া গরু বাজারে বিক্রি করার অভিযোগ এনে গত সোমবার গরু বাজারটি বন্ধ রাখার সিন্ধান্ত নেয় জেলা প্রশাসন। পরবর্তীতে এলাকার প্রান্তিক খামারি ও ব্যবসায়ীদের কথা বিবেচনা করে গত বুধবার জেলা প্রশাসক পবিত্র কোরবানির ঈদ উপলক্ষে গর্জনিয়া গরু বাজার থেকে আধা কিলোমিটার দূরে বেইলি ব্রীজের নিচে অস্থায়ীভাবে কচ্ছপিয়া গরু বাজার অনুমোদন দেন। গত বুধবার দুপুর থেকে ওই গরু বাজারের কার্যক্রম শুরু হয়। বিকেল ৪টা পর্যন্ত বাজারের সকল কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে চলে। বিকেল ৪টার পর হঠাৎ বিজিবি কচ্ছপিয়া গরু বাজারে উপস্থিত হয়ে মাইকিং করে বার্মিজ গরু না কেনার জন্য সবার প্রতি অনুরোধ করে। পরে কচ্ছপিয়া গরু বাজার এবং মইশকুমসহ কয়েকটি স্থানে অভিযান চালিয়ে ২২টি গরু জব্দ করে বিজিবি।
উপজেলার ঘুনধুম এলাকার বশির আলম জানান, আসন্ন কোরবানীর ঈদ উপলক্ষে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকায় কচ্ছপিয়া পশুর হাট থেকে একটি গৃহপালিত দেশীয় গরু ক্রয় করে বাড়িতে ফিরছিলেন তিনি। প্রথিমধ্যে বার্মিজ গরুর অজুহাতে তার গরুটি আটক করে নিয়ে যান বিজিবি সদস্যরা।
তাদেরকে বাজারের বৈধ রশিদ দেখানোর পরেও তারা গরুটি ছাড়েননি। পুর্ব রাজারকুল এলাকার হাজ্বি সুলতান আহমদ জানান, কোরবানীর জন্য ২ লাখ ৪০ হাজার টাকায় ২টি দেশীয় গরু ক্রয় করে বাড়িতে ফেরার পথে বিজিবি সদস্যরা গরুগুলো আটক করেন। এ সময় তাদেরকে বাজারের বৈধ রশিদ দেখাতে গেলে তারা উল্টো ক্ষিপ্ত হয়ে রশিদগুলো তার কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে যান। একইভাবে খরুলিয়া দরগাহ পাড়া এলাকার নুরুল হক ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা মূল্যের ৪টি, মিঠাছড়ির ওমখালী এলাকার আয়াত উল্লাহ ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা মূল্যের ৩টি এবং খরুলিয়া এলাকার আবু ছিদ্দিক ৭ লাখ ৬০ হাজার টাকা মূল্যের ৪টি দেশীয় গরু কিনে ফেরার পথে আটকে দেয় বিজিবি। এ সময় গরু ক্রয়ের বৈধ কাগজ দেখানোর চেষ্টা করা হলে বিজিবির সদস্যরা তাদেরকে বেধড়ক মারধর করেন।
ক্ষোভ প্রকাশ করে উপজেলার গরু ব্যবসায়ীরা জানান, ধার-কর্য করে লাভের আশায় বৈধ পন্থায় সরকারী অনুমোদিত বাজার থেকে গরু ক্রয় করছেন। ক্রয়ের যথাযথ কাগজপত্র থাকা স্বত্বেও বিজিবি তাদের বৈধ গরু আটক করছে। এভাবে চলতে থাকলে ক্রেতা সাধারনের পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের নিঃস্ব হয়ে পথে বসা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। একই সাথে মূলধন হারিয়ে অনেক ব্যবসায়ী পশু ব্যবসা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হবেন।
স্থানীয় সচেতন মহলের অভিযোগ, সীমান্ত দিয়ে আসা অবৈধ গরু-মহিষ আটকে বিজিবির কোন প্রকার তৎপরতা নেই। অথচ তারা সরকারীভাবে ইজারাকৃত বাজার থেকে ক্রয়কৃত বৈধ গরু আটক করছে প্রতিনিয়ত। তাদের অভিযোগ, প্রতিদিন সীমান্ত দিয়ে পাহাড়ী চোরাই পথে শত শত গরু প্রবেশ করছে। অথচ বিজিবি ঐ সমস্ত গরু আটকের ব্যাপারে সম্পূর্ণ উদাসীন। সীমান্তে গরু আটকে দেয়া হলে একটি গরুও বাজার পর্যন্ত আসার সুযোগ নেই। তারা কিন্তু সেটা করছে না। তারা বাজারের বৈধ রশিদের গরু আটকের মাধ্যমে সরকার এবং গরুরর ক্রেতাদেরকে মুখোমুখি দাড় করাচ্ছে। একই সাথে বিষয়টি অমানবিকও বটে। এতে করে গরুর ক্রেতা এবং ব্যবসায়ী লোকসানের কবলে পড়বেন। খামারীরা জানান, আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে তারা দেশীয় গরু হাটে তুলেছেন। হাট থেকে গরুগুলোর ক্রেতারা ইজারাদারের কাছ থেকে যথাযথ কাগজপত্র এবং ছাড়পত্র নিয়ে নিজ নিজ গন্তব্যে যাওয়ার সময় বিজিবি সদস্যরা অভিযান চালিয়ে গরুগুলোকে জব্দ করে তাদের ক্যাম্পে নিয়ে যান। খামারীরা গরুগুলোর যথাযথ বৈধ কাগজপত্র আছে বলে দাবি করেন। গরুর ক্রেতারা জানান, আমরা কচ্ছপিয়া গরু বাজার থেকে গরু কিনে নিয়ে যাচ্ছি। আমাদের কেনা এগুলো দেশীয় গরু, বার্মিজ গরু নয়। ইজারাদারের অভিযোগ, এমন ঘটনার ফলে অনেকেই একন হাটে গরু আনতে অনাগ্রহী হয়ে পড়ছেন। ইতোমধ্যেই ব্যবসায়িক ক্ষতি এবং দেনার দায়ে অনেকেরই পথে বসার উপক্রম হয়েছে।
নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ বিজিবির অধিনায়ক ও জোন কমান্ডার লে. কর্ণেল এসকেএম কফিল উদ্দিন কায়েস বলেন, আমরা খোঁজ-খবর নিয়ে দেখেছি যে জব্দকৃত গরুগুলো দেশীয় গরু নয়। এগুলো মায়ানমার থেকে চোরাইপথে আনা হয়েছে। চোরাইপথে প্রতিনিয়ত বাজারে বার্মিজ গরু এনে রশিদ নিয়ে বৈধ করে বাইরে নিযে যাওয়া হয় এমন তথ্য আমাদের কাছে রয়েছে। সীমান্তে গরুর চোরাচালান বন্ধ না করে কোরবানি পশুর হাট এবং রাস্তাঘাটে অভিযান চালিয়ে গরু জব্দ করার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে যে গরুগুলো বার্মিজ গরু। ওগুলো দেশীয় গরু নয়। তাই গরুগওলো জব্দ করা হচ্ছে। এছাড়া সীমান্তে গরু চোরাচালান ঠেকাতেও কঠোর অবস্থানে রয়েছে বিজিবি।
শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫
কক্সবাজারে রামু উপজেলার কচ্ছপিয়া গরু বাজার থেকে রশিদসহ গরু গন্তব্যে নিয়ে যাওয়ার সময় বিজিবি অভিযান চালিয়ে গরু জব্দের ঘটনায় ক্রেতা বিক্রিতা ও হাট ইজারাদারদের মাঝে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে। জানা গেছে, মায়ানমার সীমান্ত দিয়ে চোরাইপথে অবৈধভাবে গরু অনুপ্রবেশ করে জেলার অন্যতম শষ্য ভান্ডার হিসেবে খ্যাত গর্জনিয়া গরু বাজারে বিক্রি করার অভিযোগ এনে গত সোমবার গরু বাজারটি বন্ধ রাখার সিন্ধান্ত নেয় জেলা প্রশাসন। পরবর্তীতে এলাকার প্রান্তিক খামারি ও ব্যবসায়ীদের কথা বিবেচনা করে গত বুধবার জেলা প্রশাসক পবিত্র কোরবানির ঈদ উপলক্ষে গর্জনিয়া গরু বাজার থেকে আধা কিলোমিটার দূরে বেইলি ব্রীজের নিচে অস্থায়ীভাবে কচ্ছপিয়া গরু বাজার অনুমোদন দেন। গত বুধবার দুপুর থেকে ওই গরু বাজারের কার্যক্রম শুরু হয়। বিকেল ৪টা পর্যন্ত বাজারের সকল কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে চলে। বিকেল ৪টার পর হঠাৎ বিজিবি কচ্ছপিয়া গরু বাজারে উপস্থিত হয়ে মাইকিং করে বার্মিজ গরু না কেনার জন্য সবার প্রতি অনুরোধ করে। পরে কচ্ছপিয়া গরু বাজার এবং মইশকুমসহ কয়েকটি স্থানে অভিযান চালিয়ে ২২টি গরু জব্দ করে বিজিবি।
উপজেলার ঘুনধুম এলাকার বশির আলম জানান, আসন্ন কোরবানীর ঈদ উপলক্ষে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকায় কচ্ছপিয়া পশুর হাট থেকে একটি গৃহপালিত দেশীয় গরু ক্রয় করে বাড়িতে ফিরছিলেন তিনি। প্রথিমধ্যে বার্মিজ গরুর অজুহাতে তার গরুটি আটক করে নিয়ে যান বিজিবি সদস্যরা।
তাদেরকে বাজারের বৈধ রশিদ দেখানোর পরেও তারা গরুটি ছাড়েননি। পুর্ব রাজারকুল এলাকার হাজ্বি সুলতান আহমদ জানান, কোরবানীর জন্য ২ লাখ ৪০ হাজার টাকায় ২টি দেশীয় গরু ক্রয় করে বাড়িতে ফেরার পথে বিজিবি সদস্যরা গরুগুলো আটক করেন। এ সময় তাদেরকে বাজারের বৈধ রশিদ দেখাতে গেলে তারা উল্টো ক্ষিপ্ত হয়ে রশিদগুলো তার কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে যান। একইভাবে খরুলিয়া দরগাহ পাড়া এলাকার নুরুল হক ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা মূল্যের ৪টি, মিঠাছড়ির ওমখালী এলাকার আয়াত উল্লাহ ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা মূল্যের ৩টি এবং খরুলিয়া এলাকার আবু ছিদ্দিক ৭ লাখ ৬০ হাজার টাকা মূল্যের ৪টি দেশীয় গরু কিনে ফেরার পথে আটকে দেয় বিজিবি। এ সময় গরু ক্রয়ের বৈধ কাগজ দেখানোর চেষ্টা করা হলে বিজিবির সদস্যরা তাদেরকে বেধড়ক মারধর করেন।
ক্ষোভ প্রকাশ করে উপজেলার গরু ব্যবসায়ীরা জানান, ধার-কর্য করে লাভের আশায় বৈধ পন্থায় সরকারী অনুমোদিত বাজার থেকে গরু ক্রয় করছেন। ক্রয়ের যথাযথ কাগজপত্র থাকা স্বত্বেও বিজিবি তাদের বৈধ গরু আটক করছে। এভাবে চলতে থাকলে ক্রেতা সাধারনের পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের নিঃস্ব হয়ে পথে বসা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। একই সাথে মূলধন হারিয়ে অনেক ব্যবসায়ী পশু ব্যবসা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হবেন।
স্থানীয় সচেতন মহলের অভিযোগ, সীমান্ত দিয়ে আসা অবৈধ গরু-মহিষ আটকে বিজিবির কোন প্রকার তৎপরতা নেই। অথচ তারা সরকারীভাবে ইজারাকৃত বাজার থেকে ক্রয়কৃত বৈধ গরু আটক করছে প্রতিনিয়ত। তাদের অভিযোগ, প্রতিদিন সীমান্ত দিয়ে পাহাড়ী চোরাই পথে শত শত গরু প্রবেশ করছে। অথচ বিজিবি ঐ সমস্ত গরু আটকের ব্যাপারে সম্পূর্ণ উদাসীন। সীমান্তে গরু আটকে দেয়া হলে একটি গরুও বাজার পর্যন্ত আসার সুযোগ নেই। তারা কিন্তু সেটা করছে না। তারা বাজারের বৈধ রশিদের গরু আটকের মাধ্যমে সরকার এবং গরুরর ক্রেতাদেরকে মুখোমুখি দাড় করাচ্ছে। একই সাথে বিষয়টি অমানবিকও বটে। এতে করে গরুর ক্রেতা এবং ব্যবসায়ী লোকসানের কবলে পড়বেন। খামারীরা জানান, আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে তারা দেশীয় গরু হাটে তুলেছেন। হাট থেকে গরুগুলোর ক্রেতারা ইজারাদারের কাছ থেকে যথাযথ কাগজপত্র এবং ছাড়পত্র নিয়ে নিজ নিজ গন্তব্যে যাওয়ার সময় বিজিবি সদস্যরা অভিযান চালিয়ে গরুগুলোকে জব্দ করে তাদের ক্যাম্পে নিয়ে যান। খামারীরা গরুগুলোর যথাযথ বৈধ কাগজপত্র আছে বলে দাবি করেন। গরুর ক্রেতারা জানান, আমরা কচ্ছপিয়া গরু বাজার থেকে গরু কিনে নিয়ে যাচ্ছি। আমাদের কেনা এগুলো দেশীয় গরু, বার্মিজ গরু নয়। ইজারাদারের অভিযোগ, এমন ঘটনার ফলে অনেকেই একন হাটে গরু আনতে অনাগ্রহী হয়ে পড়ছেন। ইতোমধ্যেই ব্যবসায়িক ক্ষতি এবং দেনার দায়ে অনেকেরই পথে বসার উপক্রম হয়েছে।
নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ বিজিবির অধিনায়ক ও জোন কমান্ডার লে. কর্ণেল এসকেএম কফিল উদ্দিন কায়েস বলেন, আমরা খোঁজ-খবর নিয়ে দেখেছি যে জব্দকৃত গরুগুলো দেশীয় গরু নয়। এগুলো মায়ানমার থেকে চোরাইপথে আনা হয়েছে। চোরাইপথে প্রতিনিয়ত বাজারে বার্মিজ গরু এনে রশিদ নিয়ে বৈধ করে বাইরে নিযে যাওয়া হয় এমন তথ্য আমাদের কাছে রয়েছে। সীমান্তে গরুর চোরাচালান বন্ধ না করে কোরবানি পশুর হাট এবং রাস্তাঘাটে অভিযান চালিয়ে গরু জব্দ করার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে যে গরুগুলো বার্মিজ গরু। ওগুলো দেশীয় গরু নয়। তাই গরুগওলো জব্দ করা হচ্ছে। এছাড়া সীমান্তে গরু চোরাচালান ঠেকাতেও কঠোর অবস্থানে রয়েছে বিজিবি।