মানিকগঞ্জ : দিগন্ত জোড়া বোরো ধানখেত -সংবাদ
মানিকগঞ্জের ৭টি উপজেলাতে বোরো ধানের মৌসুমে দিগন্ত জোড়া সবুজ ধানের শীষ কৃষকদের মন ভরিয়ে দিয়েছে। কৃষকের অক্লান্ত পরিশ্রম আর অনুকুল আবহাওয়ার কারণে এবার সারা দেশের মতো ভালো ফলনের আশায় তাদের মনে দেখা দিয়েছে রঙ্গীন সোনালী স্বপ্ন। বৈশাখ মাসের মৃদু মৃদু বাতাসের ডেউয়ে দোল খাচ্ছে সবুজ পাতা ও কাঁচা শীষ। মানিকগঞ্জের ঘিওর, দৌলতপুর, শিবালয়, সাটুরিয়া, হরিরামপুর সিংগাইর উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামাঅঞ্চলের বোরো ধানের শীষ দেখা দিয়েছে। তবে ৭টি উপজেলাতে চিকন ধানের আবাদ বেশি হয়েছে। ক্ষেতের ধান পেঁকে পরিপক্ষ হলেই সোনালী ফসল মনের আনন্দে কৃষকেরা ঘরে তুলবে। বৈশাখের বাতাসে ডেউয়ে দুলে উঠছে প্রকৃতি। সবুজ দিগন্ত জোড়া বোরো ধানের প্রকৃতিক সৌন্দয্যকে আরোর বিকাশিত করে তুলছে। তাই ইরি বোরো ধানের শীষ দোল খাচ্ছে। ধানের শীষের গোছা দেখে কৃষকেরা ফলন ভাল হবার স্বপ্ন দেখছে। হাট-বাজারগুলোতে ধানের দামও অন্যান্য বছরের তুলনায় ভাল। কাজেই বোরো মৌসুমে এবার কৃষকদের অর্থনেতিক ভাবে স্বাবলম্বী হবে। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া ও পরিবেশ অনুকুলে থাকায় ৭টি উপজেলা কৃষকেরা নিবিড় পরিচর্যা, জমিতে সার ও কীটনাশক প্রয়োগের কারনে ভালো ফলনের আশা করছেন কৃষককেরা।
জেলার ৭টি উপজেলাতে কৃষকদের প্রশিক্ষনের মাধ্যমে উন্নত জাতের বোরো ধানের চাষ করে বেশি ফলন পেতে বিনা মূল্যে সার বিজ , কীটনাশকসহ বিভিন্ন সহয়তা করেছে কৃষি বিভাগ। কৃষকদের সার্বক্ষনিক পরামর্শ দিয়ে আসছে। আর কয়েক দিন পরেই ধানের শীষ হলুদ বর্ণ ধারন করবে। মাঠের পর মাঠ সোনালী ধানের শীষে ঝলমল করবে । মাঠ ভরা ধান দেখে কৃষকদের মুখে হাসির ঝিলিক দেখা দিবে। রাশি রাশি সোনালী ধানে ভরে উঠবে কুষক কুষাণীদের শূন্যগোলা। ইরি বোরো মৌসুমে দিয়েই স্বপ্ন দেখে জেলার চাষিরা। এ বছর বিদ্যুত সরবরাহ ও সার, বীজ, কীটনাশকের সংকট ছিলনা। ফলে ধানের মাঠ অনেক সুন্দর হয়েছে। দৌলতপুর উপজেলার চকমীরপুর গ্রামের কৃষক আলমগীর জানান, প্রাকৃতিক কোনো ধরনের দুর্যোগ না হলে বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। আমাদের এলাকাতে ধানের ফলন ভালো হয়েছে। ঘিওর উপজেলার গোলাপনগর গ্রামের কৃষক রাজা মিয়া জানান, বৈশাখ মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে ধানা কাটা শুরু হবে। বিগত বছরের তুলনায় এবার ভালো ফলন হবে। তবে এবার বোরো ধানো কোন ধরনের রোগ বালাই দেখা দেয়নি। বোরো চাষের শুরু থেকেই কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা সব সময় পরামর্শ ও সহযোগিতা করেছে। আবাদকৃত বিভিন্ন জাতের ধানের মধ্যে রয়েছে উফসি, স্থানীয় এবং হাইব্রিড প্রজাতির ধান। সব চেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে ব্রি-ধান-২৮ ও ব্রি-ধান ২৯, ৫০, ৫৯, ৬২, ৬৩, ৬৪ ও ৭৪। হ্ইাব্রিড এসএলবিএইচ,হীরা, তেজ,পাইডনিয়ার ও জাগরন । এ ছাড়া আবাদ করা হয়েছে উন্নত জাতের ব্রি-ধান ৫৮। প্রতি বিঘায় ২৫/৩০ মন ধান হবে। সার,বীজ,কীটনাশক, আগাছা দমন, মাড়াই সহ প্রতিমন ধানের উৎপাদন খরচ প্রায় ৭শ’ টাকা থেকে ৮শ’ টাকা হলেও বর্তমানে ঘিওর হাট বাজারে প্রতি মন ধান বিক্রি হচ্ছে ১১শ’ ৫০ থেকে ১২শ’ টাকায়। পাবনা থেকে ধান কাটতে আসা শ্রমিক বকুল , শাজাহান, রফিক তারা জানান, প্রতিদিন ৬শ’ টাকা ৬৫০ টাকা রোজ হিসাবে তারা বোরো ধান কাটছে। এর পরে তিন বেলা খাবার সহ সব খরচ জমির মালিক দেন। হাতে তাদের প্রচুর কাজ। অন্যান্য বছরের তুলনায় তাদের এবার রোজগার ভাল বলে তারা জানান। এলাকার সাধারন কৃষকদের প্রাণের দাবি, দালাল, ফড়িয়া সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ধান না কিনে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয় করে তা হলে সরকারের মহৎ উদ্যোগ সফল হবে। এদিকে প্রতি বছর স্থানীয় এক শ্রেণির অসাধু, অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ী ও দালালচক্র কৃষকদের এই অসহায় অবস্থার সুযোগ নিয়ে ধানের বাজার নিয়ন্ত্রন করছে। সিন্ডেকেট তৈরী করে তারা ধানের দাম নির্ধারন করে। মানিকগঞ্জ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ মোশারফ হোসেন জানান, মানিকগঞ্জের ৭টি উপজেলাতে ৩ হাজার ৩৮ মেঃ টন ধান এবং ৫ হাজার ৬৩৩ মেঃ টন চাল বরাদ্দ পাওয়া গেছে।
ইতোমধ্যে চাল ক্রয় করা শুরু হয়েছে। সরকারি নিয়মনীতি মেনে ধান ও চাল ক্রয় করা হবে। মানিকগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর উপ-পরিচালক (খামারবাড়ি) ড. রবীআহ নূর আহম্মেদ জানান, মানিকগঞ্জ জেলাতে বোরো আবাদ একটু দেরিতে শুরু হয়। তবে পরিবেশ ও আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় বোরো আবাদ ভালো হয়েছে। আমরা কৃষকদের ধান কাটা মৌসুমে হারভেষ্টরসহ সকল প্রকার প্রয়োজনীয় উপকরন এবং কৃষকদের সাথে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ রাখা হয়েছে। জেলাতে চলতি মৌসুমে উপসী ৪৪ হাজার ২৪৮ হেক্টর, হাইব্রিড ৩ হাজার ৯৩৯ হেক্টও এবং অন্যান্য ৫৭৭ হেক্টর জমিতে আবাদ করা হয়েছে।
মানিকগঞ্জ : দিগন্ত জোড়া বোরো ধানখেত -সংবাদ
রোববার, ২৫ মে ২০২৫
মানিকগঞ্জের ৭টি উপজেলাতে বোরো ধানের মৌসুমে দিগন্ত জোড়া সবুজ ধানের শীষ কৃষকদের মন ভরিয়ে দিয়েছে। কৃষকের অক্লান্ত পরিশ্রম আর অনুকুল আবহাওয়ার কারণে এবার সারা দেশের মতো ভালো ফলনের আশায় তাদের মনে দেখা দিয়েছে রঙ্গীন সোনালী স্বপ্ন। বৈশাখ মাসের মৃদু মৃদু বাতাসের ডেউয়ে দোল খাচ্ছে সবুজ পাতা ও কাঁচা শীষ। মানিকগঞ্জের ঘিওর, দৌলতপুর, শিবালয়, সাটুরিয়া, হরিরামপুর সিংগাইর উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামাঅঞ্চলের বোরো ধানের শীষ দেখা দিয়েছে। তবে ৭টি উপজেলাতে চিকন ধানের আবাদ বেশি হয়েছে। ক্ষেতের ধান পেঁকে পরিপক্ষ হলেই সোনালী ফসল মনের আনন্দে কৃষকেরা ঘরে তুলবে। বৈশাখের বাতাসে ডেউয়ে দুলে উঠছে প্রকৃতি। সবুজ দিগন্ত জোড়া বোরো ধানের প্রকৃতিক সৌন্দয্যকে আরোর বিকাশিত করে তুলছে। তাই ইরি বোরো ধানের শীষ দোল খাচ্ছে। ধানের শীষের গোছা দেখে কৃষকেরা ফলন ভাল হবার স্বপ্ন দেখছে। হাট-বাজারগুলোতে ধানের দামও অন্যান্য বছরের তুলনায় ভাল। কাজেই বোরো মৌসুমে এবার কৃষকদের অর্থনেতিক ভাবে স্বাবলম্বী হবে। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া ও পরিবেশ অনুকুলে থাকায় ৭টি উপজেলা কৃষকেরা নিবিড় পরিচর্যা, জমিতে সার ও কীটনাশক প্রয়োগের কারনে ভালো ফলনের আশা করছেন কৃষককেরা।
জেলার ৭টি উপজেলাতে কৃষকদের প্রশিক্ষনের মাধ্যমে উন্নত জাতের বোরো ধানের চাষ করে বেশি ফলন পেতে বিনা মূল্যে সার বিজ , কীটনাশকসহ বিভিন্ন সহয়তা করেছে কৃষি বিভাগ। কৃষকদের সার্বক্ষনিক পরামর্শ দিয়ে আসছে। আর কয়েক দিন পরেই ধানের শীষ হলুদ বর্ণ ধারন করবে। মাঠের পর মাঠ সোনালী ধানের শীষে ঝলমল করবে । মাঠ ভরা ধান দেখে কৃষকদের মুখে হাসির ঝিলিক দেখা দিবে। রাশি রাশি সোনালী ধানে ভরে উঠবে কুষক কুষাণীদের শূন্যগোলা। ইরি বোরো মৌসুমে দিয়েই স্বপ্ন দেখে জেলার চাষিরা। এ বছর বিদ্যুত সরবরাহ ও সার, বীজ, কীটনাশকের সংকট ছিলনা। ফলে ধানের মাঠ অনেক সুন্দর হয়েছে। দৌলতপুর উপজেলার চকমীরপুর গ্রামের কৃষক আলমগীর জানান, প্রাকৃতিক কোনো ধরনের দুর্যোগ না হলে বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। আমাদের এলাকাতে ধানের ফলন ভালো হয়েছে। ঘিওর উপজেলার গোলাপনগর গ্রামের কৃষক রাজা মিয়া জানান, বৈশাখ মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে ধানা কাটা শুরু হবে। বিগত বছরের তুলনায় এবার ভালো ফলন হবে। তবে এবার বোরো ধানো কোন ধরনের রোগ বালাই দেখা দেয়নি। বোরো চাষের শুরু থেকেই কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা সব সময় পরামর্শ ও সহযোগিতা করেছে। আবাদকৃত বিভিন্ন জাতের ধানের মধ্যে রয়েছে উফসি, স্থানীয় এবং হাইব্রিড প্রজাতির ধান। সব চেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে ব্রি-ধান-২৮ ও ব্রি-ধান ২৯, ৫০, ৫৯, ৬২, ৬৩, ৬৪ ও ৭৪। হ্ইাব্রিড এসএলবিএইচ,হীরা, তেজ,পাইডনিয়ার ও জাগরন । এ ছাড়া আবাদ করা হয়েছে উন্নত জাতের ব্রি-ধান ৫৮। প্রতি বিঘায় ২৫/৩০ মন ধান হবে। সার,বীজ,কীটনাশক, আগাছা দমন, মাড়াই সহ প্রতিমন ধানের উৎপাদন খরচ প্রায় ৭শ’ টাকা থেকে ৮শ’ টাকা হলেও বর্তমানে ঘিওর হাট বাজারে প্রতি মন ধান বিক্রি হচ্ছে ১১শ’ ৫০ থেকে ১২শ’ টাকায়। পাবনা থেকে ধান কাটতে আসা শ্রমিক বকুল , শাজাহান, রফিক তারা জানান, প্রতিদিন ৬শ’ টাকা ৬৫০ টাকা রোজ হিসাবে তারা বোরো ধান কাটছে। এর পরে তিন বেলা খাবার সহ সব খরচ জমির মালিক দেন। হাতে তাদের প্রচুর কাজ। অন্যান্য বছরের তুলনায় তাদের এবার রোজগার ভাল বলে তারা জানান। এলাকার সাধারন কৃষকদের প্রাণের দাবি, দালাল, ফড়িয়া সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ধান না কিনে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয় করে তা হলে সরকারের মহৎ উদ্যোগ সফল হবে। এদিকে প্রতি বছর স্থানীয় এক শ্রেণির অসাধু, অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ী ও দালালচক্র কৃষকদের এই অসহায় অবস্থার সুযোগ নিয়ে ধানের বাজার নিয়ন্ত্রন করছে। সিন্ডেকেট তৈরী করে তারা ধানের দাম নির্ধারন করে। মানিকগঞ্জ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ মোশারফ হোসেন জানান, মানিকগঞ্জের ৭টি উপজেলাতে ৩ হাজার ৩৮ মেঃ টন ধান এবং ৫ হাজার ৬৩৩ মেঃ টন চাল বরাদ্দ পাওয়া গেছে।
ইতোমধ্যে চাল ক্রয় করা শুরু হয়েছে। সরকারি নিয়মনীতি মেনে ধান ও চাল ক্রয় করা হবে। মানিকগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর উপ-পরিচালক (খামারবাড়ি) ড. রবীআহ নূর আহম্মেদ জানান, মানিকগঞ্জ জেলাতে বোরো আবাদ একটু দেরিতে শুরু হয়। তবে পরিবেশ ও আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় বোরো আবাদ ভালো হয়েছে। আমরা কৃষকদের ধান কাটা মৌসুমে হারভেষ্টরসহ সকল প্রকার প্রয়োজনীয় উপকরন এবং কৃষকদের সাথে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ রাখা হয়েছে। জেলাতে চলতি মৌসুমে উপসী ৪৪ হাজার ২৪৮ হেক্টর, হাইব্রিড ৩ হাজার ৯৩৯ হেক্টও এবং অন্যান্য ৫৭৭ হেক্টর জমিতে আবাদ করা হয়েছে।