দিনাজপুর : বাংলাদেশ রেলওয়ে পার্বতীপুর -সংবাদ
দেশের একমাত্র ও বৃহত্তম কেন্দ্রীয় লোকোমোটিভ (কেলোকা) কারখানায় রেল ইঞ্জিনের ভারী মেরামতের জেনারেল ওভারহোলিং আউটটার্নে বা উৎপাদনে অভাবনীয় সাফল্য দেখিয়েছে। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অক্লান্ত পরিশ্রমে নির্ধারিত সময়ের আগেই ২৩টি রেল ইঞ্জিন আউটটার্ন দেয়া হয়েছে।
সৌদি সরকারের ২০৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৯৯২ সালে দিনাজপুরের পার্বতীপুরে ১১১ একর জমির ওপর ডিজেলচালিত রেল ইঞ্জিনের জিওএইচ করে কার্যক্ষম করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ের কেন্দ্রীয় লোকোমোটিভ কারখানা স্থাপন করা হয়।
কারখানা সূত্র জানিয়েছে, আগামী দেড় মাসে আরও ৫টি রেল ইঞ্জিন আউটটার্ন বা উৎপাদনের অপেক্ষায় রয়েছে। চলতি (২০২৪-২৫) অর্থবছরে এই কারখানায় ২১টি রেল ইঞ্জিনের ভারী মেরামতের (জেনারেল ওভারহোলিং) আউটটার্ন বা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত ছিল। রেল ইঞ্জিনের খুচরা যন্ত্রাংশ তৈরিসহ ইঞ্জিন মেরামতের জন্য কারখানাটিতে মেকানিক্যাল (কারিগরি) সেকশনে মঞ্জুরিপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী বরাদ্দ রয়েছে ৫৫৯ জন। কিন্তু বর্তমানে কর্মরত আছে মাত্র ১৩৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী। প্রতিমাসে ১/২ জন করে অবসরে যাচ্ছেন। চলতি মে মাসে আরও দুইজন অবসরে যাচ্ছেন।
প্রয়োজনীয় বাজেট সংকট ও স্বল্পসংখ্যক জনবল দিয়ে কারখানাটির আউটটার্ন ধরে রাখতে হচ্ছে। ভারী মেরামত শেষে আউটটার্ন করা হয়েছে গত জুন থেকে ২৩ মে পর্যন্ত ২৩টি। এরমধ্যে ৫ থেকে ৮ বছর ধরে পড়ে থাকা কয়েকটি অকেজো ভারী রেল ইঞ্জিন মেরামত করে চলাচল উপযোগী করা হয়েছে। দেশে চলমান যাত্রী ও মালবাহী ট্রেনে ব্যবহৃত প্রতিটি ইঞ্জিন ৬ বছর পরপর পূর্বনির্ধারিত শিডিউল মোতাবেক জেনারেল ওভার হোলিং বা ভারী মেরামত করতে হয়।
কারখানা সূত্র জানায়, একটি রেল ইঞ্জিনের স্বাভাবিক আয়ুষ্কাল ২০ বছর।
আয়ুষ্কাল পেরিয়ে যাওয়া প্রতিটি রেল ইঞ্জিনকে ৬ বছর পরপর জেনারেল ওভার হোলিংয়ে (জিওএইচ) জন্য পার্বতীপুরে কেলোকায় পাঠানো হয়। পরে কারখানায় লোকোমোটিভ জিওএইচ করে কার্যক্ষম করে তোলা হয়। জেনারেল ওভার হোলিংয়ের জন্য প্রতিটি ক্রটিপূর্ণ যন্ত্রাংশগুলো পরিবর্তন করে নতুন যন্ত্রাংশ সংযোজন ও অকেজো অংশ মেরামত করে সচল করা হয়। একটি রেল ইঞ্জিনে ৩৪ হাজারের বেশি যন্ত্রাংশ রয়েছে। এসব ইঞ্জিন মেরামতের জন্য বিভিন্ন দেশ থেকে খুচরা যন্ত্রাংশ সংগ্রহ করতে হয়।
বাংলাদেশ রেলওয়ের বহরে রেল ইঞ্জিন রয়েছে ২৯৪টি (ব্রডগেজ ১০৮, মিটারগেজ ১৮৬)। ইতোমধ্যে ১৩০টি ইঞ্জিনের আয়ুষ্কাল পেরিয়ে গেছে। এর মধ্যে ব্রডগেজ ৬০টি ও মিটারগেজ ৮০টি। রেল বহরে ৬৭ বছর পুরনো ৮টি মিটারগেজ রেল ইঞ্জিন চালু অবস্থায় রয়েছে। আয়ুষ্কাল পেরিয়ে যাওয়া ইঞ্জিনগুলোকে বছরের পর বছর ধরে জেনারেল ওভারহোলিং করে সচল রাখা হয়েছে। প্রতিটি রেল ইঞ্জিনকে ৬ বছর পরপর জিওএইচ করার জন্য পার্বতীপুরে কেলোকায় পাঠানো হয়। বর্তমানে এ কেলোকায় বাজেট ও জনবল সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে।
এ বিষয়ে পার্বতীপুর কেন্দ্রীয় লোকোমোটিভ কারখানার প্রধান নির্বাহী (সিইএক্স) প্রকৌশলী মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, কারখানায় বাজেট ও স্বল্পসংখ্যক জনবল দিয়েই অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে ২৩ রেল ইঞ্জিনের আউটটার্ন দেয়া হয়েছে। বাজেট ও জনবল সংকট থাকলেও কাজের গতি থেমে নেই। কারখানাটি দেশের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সচল রেখেছে। গুরুত্বপূর্ণ এ কারখানায় দীর্ঘদিন ধরে বাজেট ও জনবল সংকট অব্যাহত রয়েছে।
প্রয়োজনীয় বাজেট ও জনবল পেলে প্রতি মাসে তিনটি আউটটার্ন দেয়া সম্ভব হবে বলে সংশ্লিষ্টরা অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
দিনাজপুর : বাংলাদেশ রেলওয়ে পার্বতীপুর -সংবাদ
রোববার, ২৫ মে ২০২৫
দেশের একমাত্র ও বৃহত্তম কেন্দ্রীয় লোকোমোটিভ (কেলোকা) কারখানায় রেল ইঞ্জিনের ভারী মেরামতের জেনারেল ওভারহোলিং আউটটার্নে বা উৎপাদনে অভাবনীয় সাফল্য দেখিয়েছে। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অক্লান্ত পরিশ্রমে নির্ধারিত সময়ের আগেই ২৩টি রেল ইঞ্জিন আউটটার্ন দেয়া হয়েছে।
সৌদি সরকারের ২০৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৯৯২ সালে দিনাজপুরের পার্বতীপুরে ১১১ একর জমির ওপর ডিজেলচালিত রেল ইঞ্জিনের জিওএইচ করে কার্যক্ষম করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ের কেন্দ্রীয় লোকোমোটিভ কারখানা স্থাপন করা হয়।
কারখানা সূত্র জানিয়েছে, আগামী দেড় মাসে আরও ৫টি রেল ইঞ্জিন আউটটার্ন বা উৎপাদনের অপেক্ষায় রয়েছে। চলতি (২০২৪-২৫) অর্থবছরে এই কারখানায় ২১টি রেল ইঞ্জিনের ভারী মেরামতের (জেনারেল ওভারহোলিং) আউটটার্ন বা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত ছিল। রেল ইঞ্জিনের খুচরা যন্ত্রাংশ তৈরিসহ ইঞ্জিন মেরামতের জন্য কারখানাটিতে মেকানিক্যাল (কারিগরি) সেকশনে মঞ্জুরিপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী বরাদ্দ রয়েছে ৫৫৯ জন। কিন্তু বর্তমানে কর্মরত আছে মাত্র ১৩৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী। প্রতিমাসে ১/২ জন করে অবসরে যাচ্ছেন। চলতি মে মাসে আরও দুইজন অবসরে যাচ্ছেন।
প্রয়োজনীয় বাজেট সংকট ও স্বল্পসংখ্যক জনবল দিয়ে কারখানাটির আউটটার্ন ধরে রাখতে হচ্ছে। ভারী মেরামত শেষে আউটটার্ন করা হয়েছে গত জুন থেকে ২৩ মে পর্যন্ত ২৩টি। এরমধ্যে ৫ থেকে ৮ বছর ধরে পড়ে থাকা কয়েকটি অকেজো ভারী রেল ইঞ্জিন মেরামত করে চলাচল উপযোগী করা হয়েছে। দেশে চলমান যাত্রী ও মালবাহী ট্রেনে ব্যবহৃত প্রতিটি ইঞ্জিন ৬ বছর পরপর পূর্বনির্ধারিত শিডিউল মোতাবেক জেনারেল ওভার হোলিং বা ভারী মেরামত করতে হয়।
কারখানা সূত্র জানায়, একটি রেল ইঞ্জিনের স্বাভাবিক আয়ুষ্কাল ২০ বছর।
আয়ুষ্কাল পেরিয়ে যাওয়া প্রতিটি রেল ইঞ্জিনকে ৬ বছর পরপর জেনারেল ওভার হোলিংয়ে (জিওএইচ) জন্য পার্বতীপুরে কেলোকায় পাঠানো হয়। পরে কারখানায় লোকোমোটিভ জিওএইচ করে কার্যক্ষম করে তোলা হয়। জেনারেল ওভার হোলিংয়ের জন্য প্রতিটি ক্রটিপূর্ণ যন্ত্রাংশগুলো পরিবর্তন করে নতুন যন্ত্রাংশ সংযোজন ও অকেজো অংশ মেরামত করে সচল করা হয়। একটি রেল ইঞ্জিনে ৩৪ হাজারের বেশি যন্ত্রাংশ রয়েছে। এসব ইঞ্জিন মেরামতের জন্য বিভিন্ন দেশ থেকে খুচরা যন্ত্রাংশ সংগ্রহ করতে হয়।
বাংলাদেশ রেলওয়ের বহরে রেল ইঞ্জিন রয়েছে ২৯৪টি (ব্রডগেজ ১০৮, মিটারগেজ ১৮৬)। ইতোমধ্যে ১৩০টি ইঞ্জিনের আয়ুষ্কাল পেরিয়ে গেছে। এর মধ্যে ব্রডগেজ ৬০টি ও মিটারগেজ ৮০টি। রেল বহরে ৬৭ বছর পুরনো ৮টি মিটারগেজ রেল ইঞ্জিন চালু অবস্থায় রয়েছে। আয়ুষ্কাল পেরিয়ে যাওয়া ইঞ্জিনগুলোকে বছরের পর বছর ধরে জেনারেল ওভারহোলিং করে সচল রাখা হয়েছে। প্রতিটি রেল ইঞ্জিনকে ৬ বছর পরপর জিওএইচ করার জন্য পার্বতীপুরে কেলোকায় পাঠানো হয়। বর্তমানে এ কেলোকায় বাজেট ও জনবল সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে।
এ বিষয়ে পার্বতীপুর কেন্দ্রীয় লোকোমোটিভ কারখানার প্রধান নির্বাহী (সিইএক্স) প্রকৌশলী মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, কারখানায় বাজেট ও স্বল্পসংখ্যক জনবল দিয়েই অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে ২৩ রেল ইঞ্জিনের আউটটার্ন দেয়া হয়েছে। বাজেট ও জনবল সংকট থাকলেও কাজের গতি থেমে নেই। কারখানাটি দেশের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সচল রেখেছে। গুরুত্বপূর্ণ এ কারখানায় দীর্ঘদিন ধরে বাজেট ও জনবল সংকট অব্যাহত রয়েছে।
প্রয়োজনীয় বাজেট ও জনবল পেলে প্রতি মাসে তিনটি আউটটার্ন দেয়া সম্ভব হবে বলে সংশ্লিষ্টরা অভিমত ব্যক্ত করেছেন।