ড্রাইভিং লাইসেন্স দেয়ার নামে প্রশিক্ষণার্থীদের কাছে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে ঠাকুরগাঁও সরকারি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি)-এর বিরুদ্ধে। ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ পেয়ে এরই মধ্যে তদন্তে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত ঠাকুরগাঁও জেলা কার্যালয়।
গত কয়েক বছর ধরে লাইসেন্স বাবদ প্রত্যেক প্রশিক্ষণার্থীর কাছে ঘুষ হিসেবে ২৫০০ টাকা করে নিয়ে আসছেটিটিসি কর্তৃপক্ষ। এতে প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করলেও ভয়ে মুখ খুলেনি কেউ।
তবে প্রতিবাদ স্বরূপ সামাজিক মাধ্যম (ফেইসবুকে) পোস্ট করেন টিটিসির দেলোয়ার হোসেন নামে ইলেকট্রনিক্স বিভাগের এক প্রশিক্ষক। এতে নড়ে চরে বসে প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বরত কর্মকর্তাসহ অনেকে। খবরটি ছড়িয়ে পরে প্রশাসনিক দপ্তরগুলোতেও।
শুধু বিগত ব্যাচের ৭০ জন নন এযাবত পাসকৃত সব ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের পাসকৃত ছাত্রদের মোবাইল মারফত (যা প্রতিষ্ঠানে সংরক্ষিত আছে) এর সত্যতা পাওয়া যাবে। তবে এ ঘটনায় প্রতিবাদ জানানো প্রশিক্ষক দেলোয়ার হোসেনকে গেল (১৭ মে) শোকজ করেন প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সামছুর রহমান।
এ বিষয়ে দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, নিজেদের অনিয়ম-দুর্নীতি ঢাকতেই তারা সবাই একত্রিত হয়ে আমাকে শোকজ করেছে এবং তিন দিনের মধ্যে জবাব দিতে একটি নোটিসও দিয়েছেন। তবে আমি যা সত্য তাই বলেছি। দুদক তদন্ত করলেই সব বেড়িয়ে আসবে।
গত বুধবার (৭ মে) দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত ঠাকুরগাঁও জেলা কার্যালয়ের একটি দল বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) অফিসে অভিযান চালায়।
অভিযান শেষে দুদকের কর্মকর্তারা জানান, ঠাকুরগাঁও সরকারি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসির) ৭০ জন প্রশিক্ষণার্থী তিন মাসের একটি প্রশিক্ষণে অংশ নেন এবং তাদের প্রত্যেকের কাছে ২৫০০ টাকা করে মোট ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা লাইসেন্স দেয়া হবে মর্মেটিটিসি কর্তৃপক্ষ আদায় করে। দুদকের কর্মকর্তারা তথ্যের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে নেমেছে।
পরবর্তীতে খোজ নিয়ে জানা গেছে, ড্রাইভিং লাইসেন্সের নামে প্রত্যেক প্রশিক্ষণার্থীর কাছে থেকে ৪ হাজার টাকা করে চাওয়া হয়। ভারী যানবাহনের জন্য ৩৫০০ ও হাল্কা যানের জন্য ২৫০০ টাকা নেয় দেশ-বিদেশের খণ্ডকালীন প্রশিক্ষক ফারুক হোসেন। যারা টাকা দিয়েছে তারাই শুধু লাইসেন্সপ্রাপ্তি পরীক্ষায় পাস করে দেয়া হয়েছে। আর যারা দেয়নি তাদের অকৃতকার্য দেখনো হয়।
তবে সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে প্রতিষ্ঠান থেকে দ্রুত সটকে পড়েন ফারুক হোসেন ও অটোমোটিভ ট্রেডের প্রধান প্রশিক্ষক সাদেকুলসহ অন্যরা। তবে এ ঘটনায় কৌশলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সামছুর রহমান ড্রাইভিং লাইসেন্স দেয়ার নামে কোনো অর্থ নেয়া হয়নি মর্মে প্রশিক্ষণার্থীদের কাছে একটি লিখিত নেন।
ভুক্তভোগী কয়েকজন প্রশিক্ষণার্থী অভিযোগ করে জানান, ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে ঘুষ না দিলে অকৃতকার্য করা হতো। প্রশিক্ষনার্থীদের জন্য ২-৩ লিটার তেল বরাদ্দ থাকলেও টিটিসি কর্তৃপক্ষের আমাদের জন্য আধা লিটার তেলও খরচ করে না। তারা প্রতিটি কাজে অনিয়ম-দুর্নীতি করে আসছে যা দেখার কেউ নেই। এখানে সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়নে হরিলুট চলে। আমরা মনে করি প্রতিটি প্রকল্প বাস্তবায়ন কীভাবে হয়েছে তা সঠিক তদন্ত প্রয়োজন।
অভিযোগের বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের খণ্ডকালীন প্রশিক্ষক ফারুক হোসেন ও অটোমোটিভ ট্রেডের প্রধান প্রশিক্ষক সাদেকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ফারুক হোসেন অস্বীকার করে জানান, প্রশিক্ষণার্থীদের কাছে কোনো অর্থ নেয়া হয় না। কিছু শিক্ষক ও ছাত্ররা তার নামে মিথ্যা বানোয়াট কথা বলে বিভ্রান্ত ছড়াচ্ছে। আর যারা বিভ্রান্ত ছড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ারও কথা জানান তিনি।
এমন নানা অনিয়মের বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সরকারি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (টিটিসির) ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সামছুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কোনো প্রশিক্ষণার্থীর কাছে টাকা নেয়া হয়নি। কেউ যদি টাকা নিয়ে থাকে তা অজানা। আর যেই শিক্ষক অভিযোগ তুলে ফেসবুকে লিখেছে তাকে এরই মধ্যে শোকজ করা হয়েছে। সুনির্দিস্ট প্রমাণ করতে না পারলে নেয়া হবে ব্যবস্থা।
এ বিষয়ে দমন কমিশন সমন্বিত ঠাকুরগাঁও জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আজমির শরিফ মারজী বলেন, লাইসেন্স দেয়া বাবদ ৭০ জন প্রশিক্ষণার্থীর কাছে টাকা নিয়েছি টিটিসি কর্তৃপক্ষ এমন অভিযোগ আমরা পেয়েছি। আমাদের তদন্ত চলমান রয়েছে। তদন্ত শেষ হলে বিস্তারিত তুলে ধরা হবে।
রোববার, ২৫ মে ২০২৫
ড্রাইভিং লাইসেন্স দেয়ার নামে প্রশিক্ষণার্থীদের কাছে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে ঠাকুরগাঁও সরকারি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি)-এর বিরুদ্ধে। ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ পেয়ে এরই মধ্যে তদন্তে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত ঠাকুরগাঁও জেলা কার্যালয়।
গত কয়েক বছর ধরে লাইসেন্স বাবদ প্রত্যেক প্রশিক্ষণার্থীর কাছে ঘুষ হিসেবে ২৫০০ টাকা করে নিয়ে আসছেটিটিসি কর্তৃপক্ষ। এতে প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করলেও ভয়ে মুখ খুলেনি কেউ।
তবে প্রতিবাদ স্বরূপ সামাজিক মাধ্যম (ফেইসবুকে) পোস্ট করেন টিটিসির দেলোয়ার হোসেন নামে ইলেকট্রনিক্স বিভাগের এক প্রশিক্ষক। এতে নড়ে চরে বসে প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বরত কর্মকর্তাসহ অনেকে। খবরটি ছড়িয়ে পরে প্রশাসনিক দপ্তরগুলোতেও।
শুধু বিগত ব্যাচের ৭০ জন নন এযাবত পাসকৃত সব ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের পাসকৃত ছাত্রদের মোবাইল মারফত (যা প্রতিষ্ঠানে সংরক্ষিত আছে) এর সত্যতা পাওয়া যাবে। তবে এ ঘটনায় প্রতিবাদ জানানো প্রশিক্ষক দেলোয়ার হোসেনকে গেল (১৭ মে) শোকজ করেন প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সামছুর রহমান।
এ বিষয়ে দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, নিজেদের অনিয়ম-দুর্নীতি ঢাকতেই তারা সবাই একত্রিত হয়ে আমাকে শোকজ করেছে এবং তিন দিনের মধ্যে জবাব দিতে একটি নোটিসও দিয়েছেন। তবে আমি যা সত্য তাই বলেছি। দুদক তদন্ত করলেই সব বেড়িয়ে আসবে।
গত বুধবার (৭ মে) দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত ঠাকুরগাঁও জেলা কার্যালয়ের একটি দল বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) অফিসে অভিযান চালায়।
অভিযান শেষে দুদকের কর্মকর্তারা জানান, ঠাকুরগাঁও সরকারি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসির) ৭০ জন প্রশিক্ষণার্থী তিন মাসের একটি প্রশিক্ষণে অংশ নেন এবং তাদের প্রত্যেকের কাছে ২৫০০ টাকা করে মোট ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা লাইসেন্স দেয়া হবে মর্মেটিটিসি কর্তৃপক্ষ আদায় করে। দুদকের কর্মকর্তারা তথ্যের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে নেমেছে।
পরবর্তীতে খোজ নিয়ে জানা গেছে, ড্রাইভিং লাইসেন্সের নামে প্রত্যেক প্রশিক্ষণার্থীর কাছে থেকে ৪ হাজার টাকা করে চাওয়া হয়। ভারী যানবাহনের জন্য ৩৫০০ ও হাল্কা যানের জন্য ২৫০০ টাকা নেয় দেশ-বিদেশের খণ্ডকালীন প্রশিক্ষক ফারুক হোসেন। যারা টাকা দিয়েছে তারাই শুধু লাইসেন্সপ্রাপ্তি পরীক্ষায় পাস করে দেয়া হয়েছে। আর যারা দেয়নি তাদের অকৃতকার্য দেখনো হয়।
তবে সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে প্রতিষ্ঠান থেকে দ্রুত সটকে পড়েন ফারুক হোসেন ও অটোমোটিভ ট্রেডের প্রধান প্রশিক্ষক সাদেকুলসহ অন্যরা। তবে এ ঘটনায় কৌশলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সামছুর রহমান ড্রাইভিং লাইসেন্স দেয়ার নামে কোনো অর্থ নেয়া হয়নি মর্মে প্রশিক্ষণার্থীদের কাছে একটি লিখিত নেন।
ভুক্তভোগী কয়েকজন প্রশিক্ষণার্থী অভিযোগ করে জানান, ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে ঘুষ না দিলে অকৃতকার্য করা হতো। প্রশিক্ষনার্থীদের জন্য ২-৩ লিটার তেল বরাদ্দ থাকলেও টিটিসি কর্তৃপক্ষের আমাদের জন্য আধা লিটার তেলও খরচ করে না। তারা প্রতিটি কাজে অনিয়ম-দুর্নীতি করে আসছে যা দেখার কেউ নেই। এখানে সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়নে হরিলুট চলে। আমরা মনে করি প্রতিটি প্রকল্প বাস্তবায়ন কীভাবে হয়েছে তা সঠিক তদন্ত প্রয়োজন।
অভিযোগের বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের খণ্ডকালীন প্রশিক্ষক ফারুক হোসেন ও অটোমোটিভ ট্রেডের প্রধান প্রশিক্ষক সাদেকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ফারুক হোসেন অস্বীকার করে জানান, প্রশিক্ষণার্থীদের কাছে কোনো অর্থ নেয়া হয় না। কিছু শিক্ষক ও ছাত্ররা তার নামে মিথ্যা বানোয়াট কথা বলে বিভ্রান্ত ছড়াচ্ছে। আর যারা বিভ্রান্ত ছড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ারও কথা জানান তিনি।
এমন নানা অনিয়মের বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সরকারি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (টিটিসির) ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সামছুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কোনো প্রশিক্ষণার্থীর কাছে টাকা নেয়া হয়নি। কেউ যদি টাকা নিয়ে থাকে তা অজানা। আর যেই শিক্ষক অভিযোগ তুলে ফেসবুকে লিখেছে তাকে এরই মধ্যে শোকজ করা হয়েছে। সুনির্দিস্ট প্রমাণ করতে না পারলে নেয়া হবে ব্যবস্থা।
এ বিষয়ে দমন কমিশন সমন্বিত ঠাকুরগাঁও জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আজমির শরিফ মারজী বলেন, লাইসেন্স দেয়া বাবদ ৭০ জন প্রশিক্ষণার্থীর কাছে টাকা নিয়েছি টিটিসি কর্তৃপক্ষ এমন অভিযোগ আমরা পেয়েছি। আমাদের তদন্ত চলমান রয়েছে। তদন্ত শেষ হলে বিস্তারিত তুলে ধরা হবে।