alt

সারাদেশ

জীবন্ত গাছের শিকড় কেটে সড়ক নির্মাণের অভিযোগ

প্রতিনিধি, তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) : সোমবার, ২৬ মে ২০২৫

তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) : সড়ক নির্মাণের নামে জীবন্ত গাছের শিকড় কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদার ও এলজিইডি অফিসের বিরুদ্ধে -সংবাদ

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সড়ক নির্মাণের নামে জীবন্ত গাছের শিকড় কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদার এবং এলজিইডি অফিসের বিরুদ্ধে। মানুষের পা কেটে দেয়ার মতোই জীবন্ত গাছের সঙ্গে এমনটি ঘটিয়েছে ঠিকাদার এবং এলজিইডি, এমন অভিযোগ এলাকাবাসীর। এতে করে ঝুঁকিতে রয়েছে মানুষ এবং প্রকৃতি। উন্নয়নের নামে যখন গাছের শিকড় কেটে ফেলা হয়, তখন প্রকৃতি কাঁদে কিন্তু সেই কান্না কেউ শুনে না। সড়ক এখন যেন উন্নয়নের নামে এক নীরব নির্মমতার সাক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুক থেকে জানার পর দেশের সর্বউত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের সীমান্তবর্তী উপজেলা তেঁতুলিয়ার তিরনইহাট ইউনিয়নে সরেজমিনে গেলে এই ঘটনা চোখে পড়ে। ‘গাছ কাটিনি’ এই আশ্বাসে যখন মানুষ আশ্বস্ত, তখন বাস্তবে গাছের প্রাণ শিকড় কেটে নির্মাণ চলছে তেঁতুলিয়ার তিরনইহাট বাজার থেকে শালবাহান পর্যন্ত ১ হাজার ৮০০ মিটার দীর্ঘ সড়কে। গাছগুলো কাটা হয়নি কিন্তু শিকড় কেটে ফেলায় প্রকৃতির শ্বাসরুদ্ধ এক ছবি দেখা যাচ্ছে এখন প্রতিদিন। চলমান এই সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে (২০২৩-২০২৪ অর্থবছর) ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ৮৩ লাখ ১ হাজার ৫৭৭ টাকা আর চুক্তিমূল্য ১ কোটি ৭৩ লাখ ৯৯ হাজার ৯৮৩ টাকা। এলজিইডির বাস্তবায়নে নিয়োজিত মাহমুদা বেগম নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি সড়কটি নির্মাণ করছে গাছ না কেটে। শুনতে ভালো লাগলেও বাস্তবতা ভয়াবহ, গাছ না কেটে, কেটে ফেলা হয়েছে তাদের প্রাণ অর্থাৎ শিকড়। এই প্রশ্ন ও অভিযোগ এখন এলাকাবাসীর প্রতিজনের মুখে মুখে। ‘গাছ কাটা হয়নি’ এটা যেন লোক দেখানো মানবতা। অথচ শিকড় কেটে গাছ দাঁড়িয়ে রাখা হচ্ছে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়ার মতোই। ঝড়-বৃষ্টিতে যে কোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে এসব গাছ, আর তার নিচে চাপা পড়তে পারে মানুষ, দোকান এবং ঘরবাড়ি এমনই অভিযোগ স্থানীয় এলাকাবাসীর।

সরেজমিনে দেখা যায়, তিরনইহাট বাজারসংলগ্ন সড়কের দুই পাশে ৩ ফুট বর্ধিত করা হচ্ছে। সড়ক বর্ধিত স্থানের দুই পাশে প্রায় ৭ থেকে ১১টি দামি গাছ দাঁড়িয়ে রয়েছে। কিন্তু গাছ না কেটে শুধু শিকড় কেটে করা হচ্ছে সড়কের কাজ। ফলে গাছের স্থানে গাছ দাঁড়িয়ে থাকছে শেকড় কাটা অবস্থায়। এতে বুঁকিতে গাছ ও মানুষ। জানা যায়, এই ঝুঁকিপূর্ণ গাছের ব্যবস্থা নিতে ওই এলাকার বীরমুক্তিযোদ্ধা ওবায়দুল হক গত ১৭ মে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে একটি লিখিত আবেদন করেন। এরপর বন বিভাগ থেকে সরেজমিনে এসে গাছ দেখে যাওয়ার পর কোনো ব্যবস্থা না নিয়েই জীবন্ত গাছের শিকড় কেটে কাজ করেন উপজেলা এলজিইডি ও ঠিকাদারের লোকজন। স্থানীয়দের অভিযোগ, অনেকবার বিষয়টি জানালেও কেউ ব্যবস্থা নেয়নি। তাই প্রশ্ন উঠেছে, প্রকৃতি যখন নিঃশব্দে মরছে, তখন প্রশাসন চুপ কেন? স্থানীয়রা ও সচেতন মহল বলছে, এই ঘটনা উন্নয়নের প্রকৃত রূপ দেখিয়ে দেয়। যেখানে পরিকল্পনার অভাব, সমন্বয়ের ঘাটতি ও দায়িত্বহীনতা একত্রে প্রকৃতিকে হত্যা করছে। স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা ওবায়দুল হক বলেন, উন্নয়ন চাই, কিন্তু গাছ মেরে নয়। গাছের শিকড় কেটে রাস্তা বানানো মানে মানুষের জীবনকেও বিপদে ফেলা। গাছ কর্তন করে সড়ক নির্মাণ করুক। কিন্তু গাছ রেখেছে অথচ তার শিকড় কেটে ফেলা হয়েছে। আমরা স্থানীয়রা একাধিকবার ঠিকাদার, এলজিইডি ও স্থানীয় প্রশাসনসহ জনপ্রতিনিধিদের জানিয়েছি। কিন্তু তারা কোন ব্যবস্থাই গ্রহণ করেনি। স্থানীয় দোকানদার রাজিউর রহমান তরুণ বলেন, আমার দোকানের ঠিক পাশেই গাছ। সেই গাছের শিকড় কেটে দিয়ে ঠিকাদার সড়ক নির্মাণের কাজ করছে। গাছ কাটার আগে ঠিকাদারকে আমরা অনেক বুঝিয়েছি কিন্তু তারা গাছ কাটেনি। সড়কটিকে নির্মাণ করার জন্য গাছ কাটা জরুরি। কিন্তু গাছ না কেটে কেটেছে গাছের শেকড়। এতে করে বর্তমানে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। যদি গাছ কোন সময় ভেঙে আমার দোকানের ওপরে পড়ে। এই দায়ভার কেউই নিচ্ছেন না। পথচারী মোস্তফা কামাল শিমূল বলেন, এই রাস্তা বানানো হচ্ছে মানুষের জন্য, কিন্তু এখন মানুষই সবচেয়ে বড় ঝুঁকিতে। গাছ রেখেই করা হচ্ছে সড়ক আর একটি জীবন্ত গাছের শিকড় কেটে দিয়ে তারা উন্নয়নের গান গাইছে। গাছেরও জীবন আছে। সড়কটি দুই পাশ বাড়াতে যদি গাছ কর্তন করার প্রয়োজন হয় তাহলে গাছ কর্তন করুক। তাই বলে এভাবে ঝুঁকিতে ফেলবে আমাদের। প্রতিদন শত শত মানুষ এবং যানবাহন চলাচল করে। ভবিষ্যতে কোন দুর্ঘটনা ঘটলে তার দায়ভার কে নেবে সেটা নিশ্চিত করুক আগে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদারের নিযুক্ত হেড মিস্ত্রী দেবারু বলেন, ১৮ ফুট প্রস্থের রাস্তা নির্মাণে ইঞ্জিনিয়ার অফিস থেকে তাকে অনুমতি দিয়েছে। তেঁতুলিয়া উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী ইদ্রিস আলী খান বলেন, গাছ কাটার মালিক ইউএনও ও বনবিভাগ। গাছ তো আমার না। আমাদের হচ্ছে রাস্তা। আমাদের গাছ কাটার অনুমতি না পেলে আমরা তো গাছ কাটতে পারবো না। গাছের শিকড় ঠিকাদারের লোকজন আমাদের না জানিয়ে কেটেছে। আমি খবর পেয়ে তৎক্ষণাৎ গিয়ে নিষেধ করেছি, যে গাছের শেকড় কাটা যাবে না। গাছের মালিক যারা তারা এটার ব্যবস্থা নেবেন। তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজ শাহীন খসরু বলেন, আমি গাছ কাটার অনুমতি দেইনি। গাছ কাটার অনুমতি দেয়ার এখতিয়ার আমার নেই। জেলা প্রশাসককে এই বিষয়ে জানানোর পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ছবি

‘জামালপুর এক্সপ্রেস’-এর ইঞ্জিনে আগুন, ৩ ঘণ্টা পর যাত্রা

ছবি

সৈয়দপুরে বেওয়ারিশ কুকুরের হামলায় আহত ১১ পথচারী

ছবি

শ্রীপুরে তুচ্ছ ঘটনায় যুবক খুন

ছবি

সিলেটে ছাদ থেকে ফেলে প্রবাসীকে হত্যা: গ্রেপ্তার দুই

ছবি

এমআরটি লাইনের রামপুরা স্টেশন বাতিলসহ উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দাবি

ছবি

রাতে অনিরাপদ চকরিয়ার তিনটি রেলস্টেশন

ছবি

হবিগঞ্জ আলিয়াছড়া খাসিয়াপুঞ্জীতে এখন পান তোলার ব্যস্ততা

ছবি

মৌলভীবাজারে বিশ্ব আদিবাসি দিবসে দাবি, পাহাড়, নদী, বন, প্রকৃতি-আদিবাসিদের সংস্কৃতি

ছবি

ফরিদপুরে হাউজিং স্টেট থেকে এক তরুণীর লাশ উদ্ধার

ছবি

কিন্ডারগার্টেনের বৃত্তি পরীক্ষা বাতিল করে বৈষম্য করেছে আমলারা : শিক্ষক সমাবেশে গিয়াস উদ্দিন

ছবি

সাতক্ষীরায় কীটনাশক ব্যবহারে অসুস্থ হচ্ছেন কৃষকরা

সিলেটে চোরাকারবারী ধরতে গিয়ে নৌকাডুবিতে বিজিবি সদস্য নিখোঁজ

ছবি

শেরপুরে করতোয়ার ভাঙনে নদীতে বাড়ি-আবাদি জমি

ছবি

মাদারগঞ্জে ৬ শিক্ষকের এক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী নেই কেউ

ছবি

চিতলমারীতে চুরি যাওয়া ৫০ লাখ টাকার স্বর্ণ উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৩

ছবি

অসহায় রোগীদের পাশে ভাসমান হাসপাতাল ‘জীবন তরী’

ছবি

শাজাহানপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২

ছবি

‘বিএনপির পরিচয়ে চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজির স্থান নাই’

ছবি

গোয়ালন্দে দুই তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার ৩

ছবি

সাতক্ষীরায় আদার দাম বেড়েছে কেজিতে ৬০-৬৫ টাকা

ছবি

ধামইরহাটে ১৪ বাংলাদেশিকে পুশইন

ছবি

দাদন ব্যবসায়ীর রোষানলে নিঃস্ব এলাকাবাসীর মানববন্ধন

ছবি

নবাবগঞ্জে ট্রিপল মার্ডার মামলায় দুজন গ্রেপ্তার

ছবি

রামপালে ৫০ লাখ টাকার স্বর্ণসহ গ্রেপ্তার ৩

ছবি

কুমিল্লা ৯২ এসএসসি পরীক্ষার্থীদের মিলনমেলা

চাটখিলে ৪ মাদকসেবী দণ্ডিত

ছবি

নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ভৈরবে তদারকি নেই পাখির হাটে

ছবি

সাটুরিয়ায় শহীদ সাদের প্রথমমৃত্যু বার্ষিকী পালিত

ছবি

শাল্লায় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য নৌকা বাইচ

ছবি

শ্রীমঙ্গলে অজগর সাপ উদ্ধার

ছবি

সেতুর পাশ থেকে বালু উত্তোলন, ১৪ কর্মকর্তাকে লিগ্যাল নোটিস

ছবি

রংপুরে সাবেক পুলিশ কমিশনারের প্রভাব খাটিয়ে জমি দখলের অভিযোগ

নেত্রকোনায় ৬৪ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রদলের কমিটি নিয়ে বিতর্ক

ছবি

সরিষাবাড়ীতে বেহাল রাস্তায় জনদুর্ভোগ

ছবি

সিলেটে ছিনতাইকারীদের হাতে যুবক খুন

ছবি

জনবহুল জনপদ আবুতোরাব স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নেই কোন চিকিৎসক-ঔষধ

tab

সারাদেশ

জীবন্ত গাছের শিকড় কেটে সড়ক নির্মাণের অভিযোগ

প্রতিনিধি, তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়)

তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) : সড়ক নির্মাণের নামে জীবন্ত গাছের শিকড় কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদার ও এলজিইডি অফিসের বিরুদ্ধে -সংবাদ

সোমবার, ২৬ মে ২০২৫

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সড়ক নির্মাণের নামে জীবন্ত গাছের শিকড় কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদার এবং এলজিইডি অফিসের বিরুদ্ধে। মানুষের পা কেটে দেয়ার মতোই জীবন্ত গাছের সঙ্গে এমনটি ঘটিয়েছে ঠিকাদার এবং এলজিইডি, এমন অভিযোগ এলাকাবাসীর। এতে করে ঝুঁকিতে রয়েছে মানুষ এবং প্রকৃতি। উন্নয়নের নামে যখন গাছের শিকড় কেটে ফেলা হয়, তখন প্রকৃতি কাঁদে কিন্তু সেই কান্না কেউ শুনে না। সড়ক এখন যেন উন্নয়নের নামে এক নীরব নির্মমতার সাক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুক থেকে জানার পর দেশের সর্বউত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের সীমান্তবর্তী উপজেলা তেঁতুলিয়ার তিরনইহাট ইউনিয়নে সরেজমিনে গেলে এই ঘটনা চোখে পড়ে। ‘গাছ কাটিনি’ এই আশ্বাসে যখন মানুষ আশ্বস্ত, তখন বাস্তবে গাছের প্রাণ শিকড় কেটে নির্মাণ চলছে তেঁতুলিয়ার তিরনইহাট বাজার থেকে শালবাহান পর্যন্ত ১ হাজার ৮০০ মিটার দীর্ঘ সড়কে। গাছগুলো কাটা হয়নি কিন্তু শিকড় কেটে ফেলায় প্রকৃতির শ্বাসরুদ্ধ এক ছবি দেখা যাচ্ছে এখন প্রতিদিন। চলমান এই সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে (২০২৩-২০২৪ অর্থবছর) ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ৮৩ লাখ ১ হাজার ৫৭৭ টাকা আর চুক্তিমূল্য ১ কোটি ৭৩ লাখ ৯৯ হাজার ৯৮৩ টাকা। এলজিইডির বাস্তবায়নে নিয়োজিত মাহমুদা বেগম নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি সড়কটি নির্মাণ করছে গাছ না কেটে। শুনতে ভালো লাগলেও বাস্তবতা ভয়াবহ, গাছ না কেটে, কেটে ফেলা হয়েছে তাদের প্রাণ অর্থাৎ শিকড়। এই প্রশ্ন ও অভিযোগ এখন এলাকাবাসীর প্রতিজনের মুখে মুখে। ‘গাছ কাটা হয়নি’ এটা যেন লোক দেখানো মানবতা। অথচ শিকড় কেটে গাছ দাঁড়িয়ে রাখা হচ্ছে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়ার মতোই। ঝড়-বৃষ্টিতে যে কোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে এসব গাছ, আর তার নিচে চাপা পড়তে পারে মানুষ, দোকান এবং ঘরবাড়ি এমনই অভিযোগ স্থানীয় এলাকাবাসীর।

সরেজমিনে দেখা যায়, তিরনইহাট বাজারসংলগ্ন সড়কের দুই পাশে ৩ ফুট বর্ধিত করা হচ্ছে। সড়ক বর্ধিত স্থানের দুই পাশে প্রায় ৭ থেকে ১১টি দামি গাছ দাঁড়িয়ে রয়েছে। কিন্তু গাছ না কেটে শুধু শিকড় কেটে করা হচ্ছে সড়কের কাজ। ফলে গাছের স্থানে গাছ দাঁড়িয়ে থাকছে শেকড় কাটা অবস্থায়। এতে বুঁকিতে গাছ ও মানুষ। জানা যায়, এই ঝুঁকিপূর্ণ গাছের ব্যবস্থা নিতে ওই এলাকার বীরমুক্তিযোদ্ধা ওবায়দুল হক গত ১৭ মে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে একটি লিখিত আবেদন করেন। এরপর বন বিভাগ থেকে সরেজমিনে এসে গাছ দেখে যাওয়ার পর কোনো ব্যবস্থা না নিয়েই জীবন্ত গাছের শিকড় কেটে কাজ করেন উপজেলা এলজিইডি ও ঠিকাদারের লোকজন। স্থানীয়দের অভিযোগ, অনেকবার বিষয়টি জানালেও কেউ ব্যবস্থা নেয়নি। তাই প্রশ্ন উঠেছে, প্রকৃতি যখন নিঃশব্দে মরছে, তখন প্রশাসন চুপ কেন? স্থানীয়রা ও সচেতন মহল বলছে, এই ঘটনা উন্নয়নের প্রকৃত রূপ দেখিয়ে দেয়। যেখানে পরিকল্পনার অভাব, সমন্বয়ের ঘাটতি ও দায়িত্বহীনতা একত্রে প্রকৃতিকে হত্যা করছে। স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা ওবায়দুল হক বলেন, উন্নয়ন চাই, কিন্তু গাছ মেরে নয়। গাছের শিকড় কেটে রাস্তা বানানো মানে মানুষের জীবনকেও বিপদে ফেলা। গাছ কর্তন করে সড়ক নির্মাণ করুক। কিন্তু গাছ রেখেছে অথচ তার শিকড় কেটে ফেলা হয়েছে। আমরা স্থানীয়রা একাধিকবার ঠিকাদার, এলজিইডি ও স্থানীয় প্রশাসনসহ জনপ্রতিনিধিদের জানিয়েছি। কিন্তু তারা কোন ব্যবস্থাই গ্রহণ করেনি। স্থানীয় দোকানদার রাজিউর রহমান তরুণ বলেন, আমার দোকানের ঠিক পাশেই গাছ। সেই গাছের শিকড় কেটে দিয়ে ঠিকাদার সড়ক নির্মাণের কাজ করছে। গাছ কাটার আগে ঠিকাদারকে আমরা অনেক বুঝিয়েছি কিন্তু তারা গাছ কাটেনি। সড়কটিকে নির্মাণ করার জন্য গাছ কাটা জরুরি। কিন্তু গাছ না কেটে কেটেছে গাছের শেকড়। এতে করে বর্তমানে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। যদি গাছ কোন সময় ভেঙে আমার দোকানের ওপরে পড়ে। এই দায়ভার কেউই নিচ্ছেন না। পথচারী মোস্তফা কামাল শিমূল বলেন, এই রাস্তা বানানো হচ্ছে মানুষের জন্য, কিন্তু এখন মানুষই সবচেয়ে বড় ঝুঁকিতে। গাছ রেখেই করা হচ্ছে সড়ক আর একটি জীবন্ত গাছের শিকড় কেটে দিয়ে তারা উন্নয়নের গান গাইছে। গাছেরও জীবন আছে। সড়কটি দুই পাশ বাড়াতে যদি গাছ কর্তন করার প্রয়োজন হয় তাহলে গাছ কর্তন করুক। তাই বলে এভাবে ঝুঁকিতে ফেলবে আমাদের। প্রতিদন শত শত মানুষ এবং যানবাহন চলাচল করে। ভবিষ্যতে কোন দুর্ঘটনা ঘটলে তার দায়ভার কে নেবে সেটা নিশ্চিত করুক আগে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদারের নিযুক্ত হেড মিস্ত্রী দেবারু বলেন, ১৮ ফুট প্রস্থের রাস্তা নির্মাণে ইঞ্জিনিয়ার অফিস থেকে তাকে অনুমতি দিয়েছে। তেঁতুলিয়া উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী ইদ্রিস আলী খান বলেন, গাছ কাটার মালিক ইউএনও ও বনবিভাগ। গাছ তো আমার না। আমাদের হচ্ছে রাস্তা। আমাদের গাছ কাটার অনুমতি না পেলে আমরা তো গাছ কাটতে পারবো না। গাছের শিকড় ঠিকাদারের লোকজন আমাদের না জানিয়ে কেটেছে। আমি খবর পেয়ে তৎক্ষণাৎ গিয়ে নিষেধ করেছি, যে গাছের শেকড় কাটা যাবে না। গাছের মালিক যারা তারা এটার ব্যবস্থা নেবেন। তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজ শাহীন খসরু বলেন, আমি গাছ কাটার অনুমতি দেইনি। গাছ কাটার অনুমতি দেয়ার এখতিয়ার আমার নেই। জেলা প্রশাসককে এই বিষয়ে জানানোর পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

back to top