দশমিনা (পটুয়াখালী) : উপজেলার তেঁতুলিয়া-বুড়াগৌরাঙ্গী নদীতে জাল ফেলে আশানুরূপ মাছ না পেয়ে হতাশ জেলেরা -সংবাদ
পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার প্রধান ২টি নদী তেঁতুলিয়া এবং বুড়াগৌরাঙ্গ নদীতে জেলেরা আশানারূপ ইলিশসহ অন্যান্য মাছ না পাওয়ায় জেলে পল্লীর জেলে পরিবারগুলো মানবেতর জীবনযাপনের পাশাপাশি দিশেহারা হয়ে পড়েছে। উপজেলার প্রধান এই দুইটি নদীতে মাছ না পেয়ে জেলেরা তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। আবার এই সুযোগে দাদন ব্যবসায়ীরা তাদের দাদনের টাকার জন্য জেলেদের প্রতিনিয়ত চাপ দিয়ে যাচ্ছেন। জেলে পল্লী হিসেবে খ্যাত উপজেলার উপকূলীয় এলাকা বাঁশবাড়িয়া, হাজীরহাট, গোলখালী, আউলিয়াপুর, রনগোপালদী ও আলীপুরা এলাকায় এখন জেলেদের মধ্যে দাদন ব্যবসায়ীদের কারণে ভীতি ও আতংক বিরাজ করছে। উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের হাট-বাজারগুলোতে দেশি প্রজাতির নানা ধরনের মাছ এখন দুস্প্রাপ্য হয়ে গেছে। বর্ষা মৌসুমে ডিমওয়ালা মাছ ডিম ছাড়ার আগেই জেলেদের জালে ধরা পড়েছে। ফলে মাছের বংশ বিস্তার হয়নি। এক শ্রেণীর অসাধু জেলেরা মাছ ধরার জন্য বিভিন্ন ধরনের জাল দিয়ে অবাধে মাছ শিকার করছে- যার কারণে উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে দেশি প্রজাতির মাছ দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। এদিকে উপজেলার প্রধান ২টি নদী তেঁতুলিয়া ও বুড়াগৌরাঙ্গ নদীতে জেলেরা জাল ফেলে ইলিশসহ অন্যান্য মাছ কম পেয়ে হতাশ হয়ে তীরে ফিরে আসছেন।
উপজেলায় মাছের ক্ষেত্র হিসাবে পরিচিত আলীপুরা, বাঁশবাড়িয়া, রনগোপালদী, চরবোরহান, দশমিনা, বেতাগী সানকিপুর ইউনিয়নের নদনদী, খালবিল এবং পুকুর-ডোবা এখন মাছশূন্য হয়ে গেছে। উল্লেখিত এলাকায় বোয়াল, মাগুর, শিং, কৈ, টেংরা, শোল, টাকি, পুটি, গজার, চাপিলা, খৈইলশা, পাবদা, আইড়, চিংড়ি, মলা, বাইন, বেলেসহ অর্ধশতাধিক প্রজাতির মাছ প্রায় বিলুপ্ত হওয়ার পথে রয়েছে। বিশেষ করে নদীর মাছ হিসেবে পরিচিত পোয়া, ইলিশ, আইড় এবং রিটা যার দেখা এখন অনেকটা ভাগ্যের ব্যাপার। উপজেলার সর্বত্র নিষিদ্ধ ঘোষিত জালের অবাধ ব্যবহার, কৃষি জমিতে সার ও কীটনাশকের ব্যাপক ব্যবহার, বর্ষাকালে প্রজনন মৌসুমে ডিমওয়ালা মা মাছসহ পোনা নিধন, শুস্ক মৌসুমে মাছ ধরার প্রবনতা এবং মাছের বিচরন ক্ষেত্র কমে যাওয়াসহ অন্যান্য কারণে এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক ফসল হিসেবে পরিচিত মৎস্যসম্পদ আজ বিলুপ্ত হতে চলছে। এ ছাড়া মাছের প্রজনন মৌসুম ও পোনা মাছের বৃদ্ধিকালীন সময় অবাধে ছোট-বড় মাছ ধরা এবং মৎস্য আইনের যথাযথ প্রয়োগ না থাকায় মৎস্য সম্পদ দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। বিগত ২০ বছর আগে গ্রামাঞ্চলে সর্বত্র দেশি প্রজাতির মাছ পাওয়া গেলেও এখন আর সেই অবস্থা নেই। উপজেলার হাট-বাজারগুলোতে এখন চাষকৃত কার্প জাতীয় রুই, কাতলা, পাঙ্গাস, হাইব্রিড শিং, মাগুর এবং থাই পুটি, কৈ ও তেলাপিয়াসহ নানা ধরনের মাছ বিক্রি হচ্ছে। চাষকৃত মাছের কাছে দেশি প্রজাতির মাছটিকতে না পেরে হারিয়ে গেছে।
জেলেরা জানান, দারিদ্র্যের কারণে তারা মাছ শিকার করতে বাধ্য হচ্ছেন। অভিজ্ঞ মহলের মতে, সমন্বিত মৎস্যসম্পদ ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ গ্রহণ, কৃষি জমিতে স্বল্প মাত্রায় কীটনাশক ব্যবহার এবং প্রজনন মৌসুমে মাছ ধরা বন্ধ করা হলে জাতীয় মৎস্য সম্পদ রক্ষা করা সম্ভব হবে। বর্তমানে বিদেশি চাষকৃত মাছের কাছে দেশীয় প্রজাতির মাছ মার খেয়ে গেছে। এমন অবস্থায় দেশি মাছ বিলুপ্তি হলে উপজেলার ৫ শতাধিক জেলে পরিবারের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে যাবে। এদিকে উপজেলার প্রধান দুটি নদী তেঁতুলিয়া ও বুড়াগৌরাঙ্গে জেলেরা জাল ফেলে ইলিশসহ অন্যান্য মাছ কম পাওয়ার কারণে হতাশ হয়ে তীরে ফিরে আসছেন। ভরা মৌসুমেও কাঙ্খিত মাছ না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তারা। নদীতে জাল ফেলে যৎসামান্য মাছ পেয়ে নদীর তীরে নৌকা নিয়ে ফিরে আসছেন জেলেরা।
দশমিনা (পটুয়াখালী) : উপজেলার তেঁতুলিয়া-বুড়াগৌরাঙ্গী নদীতে জাল ফেলে আশানুরূপ মাছ না পেয়ে হতাশ জেলেরা -সংবাদ
সোমবার, ২৬ মে ২০২৫
পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার প্রধান ২টি নদী তেঁতুলিয়া এবং বুড়াগৌরাঙ্গ নদীতে জেলেরা আশানারূপ ইলিশসহ অন্যান্য মাছ না পাওয়ায় জেলে পল্লীর জেলে পরিবারগুলো মানবেতর জীবনযাপনের পাশাপাশি দিশেহারা হয়ে পড়েছে। উপজেলার প্রধান এই দুইটি নদীতে মাছ না পেয়ে জেলেরা তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। আবার এই সুযোগে দাদন ব্যবসায়ীরা তাদের দাদনের টাকার জন্য জেলেদের প্রতিনিয়ত চাপ দিয়ে যাচ্ছেন। জেলে পল্লী হিসেবে খ্যাত উপজেলার উপকূলীয় এলাকা বাঁশবাড়িয়া, হাজীরহাট, গোলখালী, আউলিয়াপুর, রনগোপালদী ও আলীপুরা এলাকায় এখন জেলেদের মধ্যে দাদন ব্যবসায়ীদের কারণে ভীতি ও আতংক বিরাজ করছে। উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের হাট-বাজারগুলোতে দেশি প্রজাতির নানা ধরনের মাছ এখন দুস্প্রাপ্য হয়ে গেছে। বর্ষা মৌসুমে ডিমওয়ালা মাছ ডিম ছাড়ার আগেই জেলেদের জালে ধরা পড়েছে। ফলে মাছের বংশ বিস্তার হয়নি। এক শ্রেণীর অসাধু জেলেরা মাছ ধরার জন্য বিভিন্ন ধরনের জাল দিয়ে অবাধে মাছ শিকার করছে- যার কারণে উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে দেশি প্রজাতির মাছ দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। এদিকে উপজেলার প্রধান ২টি নদী তেঁতুলিয়া ও বুড়াগৌরাঙ্গ নদীতে জেলেরা জাল ফেলে ইলিশসহ অন্যান্য মাছ কম পেয়ে হতাশ হয়ে তীরে ফিরে আসছেন।
উপজেলায় মাছের ক্ষেত্র হিসাবে পরিচিত আলীপুরা, বাঁশবাড়িয়া, রনগোপালদী, চরবোরহান, দশমিনা, বেতাগী সানকিপুর ইউনিয়নের নদনদী, খালবিল এবং পুকুর-ডোবা এখন মাছশূন্য হয়ে গেছে। উল্লেখিত এলাকায় বোয়াল, মাগুর, শিং, কৈ, টেংরা, শোল, টাকি, পুটি, গজার, চাপিলা, খৈইলশা, পাবদা, আইড়, চিংড়ি, মলা, বাইন, বেলেসহ অর্ধশতাধিক প্রজাতির মাছ প্রায় বিলুপ্ত হওয়ার পথে রয়েছে। বিশেষ করে নদীর মাছ হিসেবে পরিচিত পোয়া, ইলিশ, আইড় এবং রিটা যার দেখা এখন অনেকটা ভাগ্যের ব্যাপার। উপজেলার সর্বত্র নিষিদ্ধ ঘোষিত জালের অবাধ ব্যবহার, কৃষি জমিতে সার ও কীটনাশকের ব্যাপক ব্যবহার, বর্ষাকালে প্রজনন মৌসুমে ডিমওয়ালা মা মাছসহ পোনা নিধন, শুস্ক মৌসুমে মাছ ধরার প্রবনতা এবং মাছের বিচরন ক্ষেত্র কমে যাওয়াসহ অন্যান্য কারণে এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক ফসল হিসেবে পরিচিত মৎস্যসম্পদ আজ বিলুপ্ত হতে চলছে। এ ছাড়া মাছের প্রজনন মৌসুম ও পোনা মাছের বৃদ্ধিকালীন সময় অবাধে ছোট-বড় মাছ ধরা এবং মৎস্য আইনের যথাযথ প্রয়োগ না থাকায় মৎস্য সম্পদ দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। বিগত ২০ বছর আগে গ্রামাঞ্চলে সর্বত্র দেশি প্রজাতির মাছ পাওয়া গেলেও এখন আর সেই অবস্থা নেই। উপজেলার হাট-বাজারগুলোতে এখন চাষকৃত কার্প জাতীয় রুই, কাতলা, পাঙ্গাস, হাইব্রিড শিং, মাগুর এবং থাই পুটি, কৈ ও তেলাপিয়াসহ নানা ধরনের মাছ বিক্রি হচ্ছে। চাষকৃত মাছের কাছে দেশি প্রজাতির মাছটিকতে না পেরে হারিয়ে গেছে।
জেলেরা জানান, দারিদ্র্যের কারণে তারা মাছ শিকার করতে বাধ্য হচ্ছেন। অভিজ্ঞ মহলের মতে, সমন্বিত মৎস্যসম্পদ ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ গ্রহণ, কৃষি জমিতে স্বল্প মাত্রায় কীটনাশক ব্যবহার এবং প্রজনন মৌসুমে মাছ ধরা বন্ধ করা হলে জাতীয় মৎস্য সম্পদ রক্ষা করা সম্ভব হবে। বর্তমানে বিদেশি চাষকৃত মাছের কাছে দেশীয় প্রজাতির মাছ মার খেয়ে গেছে। এমন অবস্থায় দেশি মাছ বিলুপ্তি হলে উপজেলার ৫ শতাধিক জেলে পরিবারের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে যাবে। এদিকে উপজেলার প্রধান দুটি নদী তেঁতুলিয়া ও বুড়াগৌরাঙ্গে জেলেরা জাল ফেলে ইলিশসহ অন্যান্য মাছ কম পাওয়ার কারণে হতাশ হয়ে তীরে ফিরে আসছেন। ভরা মৌসুমেও কাঙ্খিত মাছ না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তারা। নদীতে জাল ফেলে যৎসামান্য মাছ পেয়ে নদীর তীরে নৌকা নিয়ে ফিরে আসছেন জেলেরা।