বেগমগঞ্জ (নোয়াখালী) : প্রভাব খাটিয়ে ঘনবসতি এলাকায় পোল্ট্রি ফিড কারখানা করায় এলাকাবাসীর দুর্ভোগ চরমে -সংবাদ
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর গ্রামে কেএম তাজ পোল্ট্রি অ্যান্ড ফিডস লিমিটেডের ধোঁয়া, ধুলাবালি ও দুর্গন্ধে নাভিশ্বাস উঠেছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। ইতোমধ্যে অনেকেই চর্মরোগ, এলার্জিসহ মারাত্মক রোগে আক্রান্ত। পরিবেশ ছাড়পত্রের শর্ত লঙ্ঘন করে কারখানাটি পরিচালিত হওয়ায় গত ১৮ মে ভুক্তভোগী শত শত নারী-পুরুষ ও শিশুকে নিয়ে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকাবাসী।
বিগত সরকারের আমলে প্রভাব খাটিয়ে স্থাপিত কারখানাটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় নির্মাণ হওয়ায় আশপাশের অন্তত ১০০টির বেশি পরিবার শ্বাসকষ্ট, চর্ম রোগসহ নানা স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছে বলে দাবি করেছেন স্থানীয়রা। এর আশপাশে রয়েছে দুটি মাদ্রাসা ও একটি মসজিদ। স্থানীয় বাসিন্দা গিয়াস উদ্দিন (৬০) বলেন, বিগত দুই যুগ ধরে অভিযোগ করে যাচ্ছি, কিন্তু ফল শূন্য। ধোঁয়ার গন্ধে ঘরে থাকা যায় না, জমিতে ফসলও হয় না। এখন প্রতিবাদ করলে চাঁদাবাজির মামলার ভয় দেখানো হয়। আরেক বাসিন্দা মিয়া সাহেব (৫০) বলেন, বহু আশা করে বাড়ি ঘর করেছি, সুন্দর একটা গেট দিয়েছি। এখন গেট খোলার সাহস নেই, বাইরে বেরোলেই দুর্গন্ধে মাথা ঘুরে পড়ে যাই। কারখানার পাশের বাড়ির গৃহবধূ অনু বেগম (৬০) বলেন, ভাত-তরকারি ঢেকে রাখলেও ধুলায় খাওয়া যায় না। আমরা বাঁচতে চাই, এভাবে আর থাকা সম্ভব না। শিশুরা খাবার খেতে চায়না। বর্তমানে ওই এলাকার বৃদ্ধ এবং শিশুরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। একজন বাসিন্দা লিটন (৪৮) বলেন, আমার জমিতে বর্জ্য ফেলছে। প্রতিবাদ করলেই হয়রানি শুরু হয়। স্থানীয়দের অভিযোগের আলোকে পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক মিলন হোসেন গত ২৭ অক্টোবর/২৫ কারখানাটি সরেজমিন পরিদর্শন করেন। তদন্তে দেখা যায়, পরিবেশগত ছাড়পত্রের ৩ ও ৫ নম্বর শর্ত ভেঙে নতুন ড্রায়ার ইউনিট ও বয়লার স্থাপন করে বায়ুদূষণ করা হচ্ছে।
এতে স্পষ্টভাবে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০) এবং পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা ২০২৩ লঙ্ঘিত হয়েছে। এজন্য কারখানার মালিক মো. খোরশেদ আলমকে কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠানো হয় (যার স্মারক ৩৯০, তারিখ : ২৭/১০/২৪)। পরবর্তীতে বিগত ১৮ নভেম্বর চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিচালক বরাবর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করেন নোয়াখালীর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মিহির লাল সরদার। স্থানীয়রা দাবি করছেন, কারখানাটির মালিক প্রভাব খাটিয়ে বছরের পর বছর ধরে আইন ও শর্ত ভঙ্গ করে চলছে। শতাধিক লিখিত অভিযোগ, স্থানীয়দের প্রতিবাদ ও অধিদপ্তরের প্রতিবেদন সত্ত্বেও এখনও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। কারখানাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, আমরা পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিয়েই ব্যবসা করছি। ধুলাবালি মেশিনে ধরে রাখি, বাইরে যায় না। কারো জমিও আমরা দখল করিনি। এই বিষয়ে বক্তব্য জানতে নোয়াখালীর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মিহির লাল সরদারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার সর্বশেষ বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বেগমগঞ্জ (নোয়াখালী) : প্রভাব খাটিয়ে ঘনবসতি এলাকায় পোল্ট্রি ফিড কারখানা করায় এলাকাবাসীর দুর্ভোগ চরমে -সংবাদ
মঙ্গলবার, ২৭ মে ২০২৫
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর গ্রামে কেএম তাজ পোল্ট্রি অ্যান্ড ফিডস লিমিটেডের ধোঁয়া, ধুলাবালি ও দুর্গন্ধে নাভিশ্বাস উঠেছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। ইতোমধ্যে অনেকেই চর্মরোগ, এলার্জিসহ মারাত্মক রোগে আক্রান্ত। পরিবেশ ছাড়পত্রের শর্ত লঙ্ঘন করে কারখানাটি পরিচালিত হওয়ায় গত ১৮ মে ভুক্তভোগী শত শত নারী-পুরুষ ও শিশুকে নিয়ে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকাবাসী।
বিগত সরকারের আমলে প্রভাব খাটিয়ে স্থাপিত কারখানাটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় নির্মাণ হওয়ায় আশপাশের অন্তত ১০০টির বেশি পরিবার শ্বাসকষ্ট, চর্ম রোগসহ নানা স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছে বলে দাবি করেছেন স্থানীয়রা। এর আশপাশে রয়েছে দুটি মাদ্রাসা ও একটি মসজিদ। স্থানীয় বাসিন্দা গিয়াস উদ্দিন (৬০) বলেন, বিগত দুই যুগ ধরে অভিযোগ করে যাচ্ছি, কিন্তু ফল শূন্য। ধোঁয়ার গন্ধে ঘরে থাকা যায় না, জমিতে ফসলও হয় না। এখন প্রতিবাদ করলে চাঁদাবাজির মামলার ভয় দেখানো হয়। আরেক বাসিন্দা মিয়া সাহেব (৫০) বলেন, বহু আশা করে বাড়ি ঘর করেছি, সুন্দর একটা গেট দিয়েছি। এখন গেট খোলার সাহস নেই, বাইরে বেরোলেই দুর্গন্ধে মাথা ঘুরে পড়ে যাই। কারখানার পাশের বাড়ির গৃহবধূ অনু বেগম (৬০) বলেন, ভাত-তরকারি ঢেকে রাখলেও ধুলায় খাওয়া যায় না। আমরা বাঁচতে চাই, এভাবে আর থাকা সম্ভব না। শিশুরা খাবার খেতে চায়না। বর্তমানে ওই এলাকার বৃদ্ধ এবং শিশুরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। একজন বাসিন্দা লিটন (৪৮) বলেন, আমার জমিতে বর্জ্য ফেলছে। প্রতিবাদ করলেই হয়রানি শুরু হয়। স্থানীয়দের অভিযোগের আলোকে পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক মিলন হোসেন গত ২৭ অক্টোবর/২৫ কারখানাটি সরেজমিন পরিদর্শন করেন। তদন্তে দেখা যায়, পরিবেশগত ছাড়পত্রের ৩ ও ৫ নম্বর শর্ত ভেঙে নতুন ড্রায়ার ইউনিট ও বয়লার স্থাপন করে বায়ুদূষণ করা হচ্ছে।
এতে স্পষ্টভাবে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০) এবং পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা ২০২৩ লঙ্ঘিত হয়েছে। এজন্য কারখানার মালিক মো. খোরশেদ আলমকে কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠানো হয় (যার স্মারক ৩৯০, তারিখ : ২৭/১০/২৪)। পরবর্তীতে বিগত ১৮ নভেম্বর চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিচালক বরাবর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করেন নোয়াখালীর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মিহির লাল সরদার। স্থানীয়রা দাবি করছেন, কারখানাটির মালিক প্রভাব খাটিয়ে বছরের পর বছর ধরে আইন ও শর্ত ভঙ্গ করে চলছে। শতাধিক লিখিত অভিযোগ, স্থানীয়দের প্রতিবাদ ও অধিদপ্তরের প্রতিবেদন সত্ত্বেও এখনও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। কারখানাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, আমরা পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিয়েই ব্যবসা করছি। ধুলাবালি মেশিনে ধরে রাখি, বাইরে যায় না। কারো জমিও আমরা দখল করিনি। এই বিষয়ে বক্তব্য জানতে নোয়াখালীর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মিহির লাল সরদারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার সর্বশেষ বক্তব্য পাওয়া যায়নি।