জুলাই অভ্যুত্থানের অগ্রভাগের যোদ্ধা ছিলেন ইয়াসিন মিয়া শেখ। কলেজের ক্লাস ছেড়ে ৭ জুলাই ‘বাংলা ব্লকেড’-এর কর্মসূচিতে অংশ নেন তিনি। এ আন্দোলনে ছিল তার ধারাবাহিক দৈনিক অংশগ্রহণ। ‘শহিদ আবু সাঈদ’-এর অঙ্কিত ছবি একহাতে আর অন্যহাতে ‘ভি’ চিহ্ন দেখিয়ে সগৌরবে ঘরে ফিরে ছিলেন এ যোদ্ধা। শহীদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্বলনের কর্মসূচিও করেন ১০ আগস্ট।
ইয়াসিন শেখে ফেসবুকে সূত্রে জানা যায়, ৮ জুলাই ‘মনে রেখো যুদ্ধ করে রক্ত দিয়ে দেশ পেয়েছি’ এ গান শেয়ারের মধ্যদিয়ে আন্দোলনকে ত্বরান্বিত করে। ১৬ জুলাই বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজ মেসেঞ্জার গ্রুপে তথ্য দিয়ে লেখা হয় তিন ছাত্রলীগ কর্মী নিহত, এদিনের আন্দোলনের তথ্যও শেয়ার করেন। ৩১ জুলাই হাইকোর্টের সামনে শিক্ষার্থী ও আইনজীবীদের ধস্তাধাস্তি প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। ঢাকার প্রত্যেকটি আন্দোলনে সরব ছিল এই ইয়াসিন। ঢাকা থেকে চলে এসে ময়মনসিংহের আন্দোলন অগ্রসৈনিক হিসেবে অংশগ্রহণ করে। মিটিং-মিছিল ও প্রতিবাদে ছিল সম্মুখসারির এক যোদ্ধা। ১ আগস্ট রাত ৮টা ১৫মিনিটে এ প্রসঙ্গে তিনি লিখেন ‘আর ঘরে বসে থাকতে পারছি না, আমিও আসছি। ’ ওই বিকেল ৪টা ১৫ মিনিটে লিখেছিল ‘উত্তাল ময়মনসিংহ টাউন হল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।’ সঙ্গে ছিল আন্দোলনের নানা পর্বের ছবি। ৩ আগস্ট ৬টা ৫৮ মিনিটে ‘এই দেশ আমাদের কোনো মুজিব বাহিনীর না, সুতরাং আমাদেরই এই দেশ বাঁচাতে হবে’ লিখে ওইদিনের আন্দোলনের ছবি ও দেশবাসীকে এ আন্দোলনে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান। এই হাতে শহিদ আবু সাঈদের ছবি আর অন্যহাতে ‘ভি’ দেখিয়ে ফেসবুকে লিখেনব ‘আলহামদুলিল্লাহ, জুলুম কখনো চিরস্থায়ী হয় না।’ ৬ আগস্ট রাত ৮টা ৪৭ মিনিটে ‘অভিনন্দন নোবেল জয়ী ড. ইউনূস, এরপরে ৭ আগস্ট সকাল ৭টা ২ মিনিটে ‘দেশপ্রেমিকের রক্তই স্বাধীনতা বৃক্ষের বীজ স্বরূপ’ স্ট্যাটার্স দেন ফেসবুকে। ফ্যাসিস্ট বিরোধী মারমুখী আন্দোলন তাকে যুদ্ধের সাহস জোগায়। সেই সাহস আর বাবার ইচ্ছে পূরণের জন্যেই রাশিয়া গিয়ে সেখানে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন এই ইয়াসিন। তিনি ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়নের মরিচালী গ্রামের মৃত আব্দুস সাত্তার মীরের ছেলে তিনি। গত ২৭ মার্চ তিনি যুদ্ধে নিহত হন। এ খবর পরিবার জানতে পারে ১ এপ্রিল। তবে ওর লাশের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিলো না।
গত ২০ মে জুলাই বিপ্লবের অগ্রভাগের সৈনিক ইয়াসিনের লাশ সন্ধান পাওয়া গেছে রাশিয়ায়। নিহতের বড় ভাই মো. রুহুল আমিন শেখ জানায়, রস্তু বন্ধন ক্যান্টনম্যান হাসপাতালে ইয়াছিন মিয়া শেখের মরদেহ সুরক্ষিত রয়েছে। বিষয়টি অবগত করে দ্রুত লাশ আনার দাবি জানিয়ে গত ২০ মে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক বরাবরে আবেদন করা হয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ দূতাবাস, মস্কো রাশিয়া (শ্রম কল্যাণ উইং) এর প্রথম সচিব (শ্রম) মো. মাজেদুর রহমান সরকার এক পত্রে জানান, কূটনৈতিক পত্র প্রেরণ, ইয়াসিন মিয়া শেখ এর মৃতদেহ চিহ্নিতকরণ, দূতাবাসকে অবহিতকরণ ও দ্রুত দেশে প্রেরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রাশিয়ার পরারাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। গত ২১ এপ্রিল নিহত ইয়াসিনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ছেলে ইয়াসিনকে এক মিনিটের জন্যেও চোখের আড়াল করছেন না তার ফিরোজা বেগম। পুত্রশোকে শয্যাশায়ী হলেও বারবার ছেলের ছবিতে হাত বুলাচ্ছেন তিনি। বাড়ির পাশ দিয়ে অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেন বাজলেই ছুটে যান। এত ইয়াসিন আসছে, ইয়াসিন আসছে বলে চিৎকার শুরু করেন। ছেলের লাশের অপেক্ষায় দিন কাটচ্ছে এই মায়ের। তিনি বলেন, তোমরা আমার ছেলেকে এনে দাও। আমার সোনা মানিকের লাশটা স্পর্শ করে দেখি। তিনি আরও জানায়, ২৬ মার্চ শেষ কথা হয়। টাকা পাঠাব ঘর বানাব আরও কতো কথা বলেছে আমার ছেলেটা। এটাই ছিল ওর সঙ্গে শেষ কথা।
উঁচু-লম্বা আর সুন্দর চেহারার অধিকারী ইয়াছিন সেনাবাহিনীতে যোগ দিবে এটা ছিল তার বাবার ইচ্ছে। ডৌহাখলা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৯ এসএসসি পাশ করে। এরপরে দেশের মাটিতে সৈনিকে যোগ দিতে একাধিকার সেনাবাহিনীর লাইনেও দাঁড়িয়েও বাবা সেই ইচ্ছে পূরণ করতে পারেনি। ২০২১ গৌরীপুর সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি উর্ত্তীণ হয়। এরপরে ঢাকা মিরপুর বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজে বিবিএতে অধ্যয়নরত ছিলেন ইয়াসিন।
ইয়াসিন তার আইডিতে পোস্টকৃত ভিডিও বার্তায় জানায়, গত বছরের জানুয়ারিতে রাশিয়ায় একটি কোম্পানিতে চাকরির জন্য আবেদন করে। গত সেপ্টেম্বর মাসে অফার লেটার পেয়ে চলে যায় রাশিয়া। মস্কো থেকে প্রায় ১১ হাজার কিলোমিটার দূরের ওই কোম্পানিতে তিন মাস চাকরির পর অনলাইনে আবেদন করে রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে চুক্তিভিত্তিক সৈনিক হিসেবে যোগ দেন।
তিনি জানান, দেশে না হলেও বিদেশে সৈনিক হয়ে বাবার স্বপ্নপূরণ হয় বলেও জানায় সে। ওই ভিডিওতে আওয়ামী লীগ সরকারবিরোধী আন্দোলনের স্মৃতিচারণ ও তার রাজনৈতিক সহকর্মীদের জন্যও দোয়া প্রার্থনা করেন সাবেক এই ছাত্রদল কর্মী। যুদ্ধে মৃত্যু হলেও তার কোনো আফসোস থাকবে না বলে ভিডিও বার্তায় জানিয়ে দেয় ইয়াসিন। সে আরও উল্লেখ করে ২০২৩সালের ২৮ অক্টোবর পল্টনে আন্দোলনে গিয়েছি, হরতাল-জ্বালাও-পোড়াও এর ভিতর দিয়ে অসংখ্যবার জীবনকে বাঁচিয়ে রেখেছি। সেদিন বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনায় বেড়িকেটে পড়েছিলাম। সেই বেড়িকেট ভেঙে এসেছি। জুলাইয়ের দ্বিতীয় স্বাধীনতার যুদ্ধে বারবার দেশীয় শত্রু মোকাবেলা করেছি। ঢাকার রাজপথে মিছিল-মেটিং করেছি। পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় ওদেরকে প্রতিহত করেছি। এতে আমি যুদ্ধে যাওয়ার সাহস পেয়েছি, যুদ্ধে মৃত্যু হলেও আমার এখন কোনো আফসোস থাকবে না। তিনি আরও বলেন, আমি মাহে রমজানের এই দিনে আমি আমার নেতা গৌরীপুরের জনমানুষের নেতা আহাম্মদ তায়েবুর রহমান হিরণসহ দলীয় নেতাকর্মীকেও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। তার বাবাকে হারান ২০১৬ সালের ১ মার্চ। বাবার মৃত্যুবার্ষিকীতে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর পোশাক পড়ে নিজের শরীরের পোষাক স্পর্শ করে ইয়াছিন বলে উঠেন, বাবার মৃত্যুবার্ষিকী এই পোশাক বাবাকে উৎসর্গ করলাম। ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস-জীবন যুদ্ধের এক ইতিহাস এখন ইয়াসিন! ওই ভিডিওটি ফেসবুকে পোস্ট করার মাস না পেরুতেই যুদ্ধে ইউক্রেনের মিসাইল হামলায় নিহত হয় তিনি।
মঙ্গলবার, ২৭ মে ২০২৫
জুলাই অভ্যুত্থানের অগ্রভাগের যোদ্ধা ছিলেন ইয়াসিন মিয়া শেখ। কলেজের ক্লাস ছেড়ে ৭ জুলাই ‘বাংলা ব্লকেড’-এর কর্মসূচিতে অংশ নেন তিনি। এ আন্দোলনে ছিল তার ধারাবাহিক দৈনিক অংশগ্রহণ। ‘শহিদ আবু সাঈদ’-এর অঙ্কিত ছবি একহাতে আর অন্যহাতে ‘ভি’ চিহ্ন দেখিয়ে সগৌরবে ঘরে ফিরে ছিলেন এ যোদ্ধা। শহীদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্বলনের কর্মসূচিও করেন ১০ আগস্ট।
ইয়াসিন শেখে ফেসবুকে সূত্রে জানা যায়, ৮ জুলাই ‘মনে রেখো যুদ্ধ করে রক্ত দিয়ে দেশ পেয়েছি’ এ গান শেয়ারের মধ্যদিয়ে আন্দোলনকে ত্বরান্বিত করে। ১৬ জুলাই বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজ মেসেঞ্জার গ্রুপে তথ্য দিয়ে লেখা হয় তিন ছাত্রলীগ কর্মী নিহত, এদিনের আন্দোলনের তথ্যও শেয়ার করেন। ৩১ জুলাই হাইকোর্টের সামনে শিক্ষার্থী ও আইনজীবীদের ধস্তাধাস্তি প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। ঢাকার প্রত্যেকটি আন্দোলনে সরব ছিল এই ইয়াসিন। ঢাকা থেকে চলে এসে ময়মনসিংহের আন্দোলন অগ্রসৈনিক হিসেবে অংশগ্রহণ করে। মিটিং-মিছিল ও প্রতিবাদে ছিল সম্মুখসারির এক যোদ্ধা। ১ আগস্ট রাত ৮টা ১৫মিনিটে এ প্রসঙ্গে তিনি লিখেন ‘আর ঘরে বসে থাকতে পারছি না, আমিও আসছি। ’ ওই বিকেল ৪টা ১৫ মিনিটে লিখেছিল ‘উত্তাল ময়মনসিংহ টাউন হল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।’ সঙ্গে ছিল আন্দোলনের নানা পর্বের ছবি। ৩ আগস্ট ৬টা ৫৮ মিনিটে ‘এই দেশ আমাদের কোনো মুজিব বাহিনীর না, সুতরাং আমাদেরই এই দেশ বাঁচাতে হবে’ লিখে ওইদিনের আন্দোলনের ছবি ও দেশবাসীকে এ আন্দোলনে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান। এই হাতে শহিদ আবু সাঈদের ছবি আর অন্যহাতে ‘ভি’ দেখিয়ে ফেসবুকে লিখেনব ‘আলহামদুলিল্লাহ, জুলুম কখনো চিরস্থায়ী হয় না।’ ৬ আগস্ট রাত ৮টা ৪৭ মিনিটে ‘অভিনন্দন নোবেল জয়ী ড. ইউনূস, এরপরে ৭ আগস্ট সকাল ৭টা ২ মিনিটে ‘দেশপ্রেমিকের রক্তই স্বাধীনতা বৃক্ষের বীজ স্বরূপ’ স্ট্যাটার্স দেন ফেসবুকে। ফ্যাসিস্ট বিরোধী মারমুখী আন্দোলন তাকে যুদ্ধের সাহস জোগায়। সেই সাহস আর বাবার ইচ্ছে পূরণের জন্যেই রাশিয়া গিয়ে সেখানে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন এই ইয়াসিন। তিনি ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়নের মরিচালী গ্রামের মৃত আব্দুস সাত্তার মীরের ছেলে তিনি। গত ২৭ মার্চ তিনি যুদ্ধে নিহত হন। এ খবর পরিবার জানতে পারে ১ এপ্রিল। তবে ওর লাশের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিলো না।
গত ২০ মে জুলাই বিপ্লবের অগ্রভাগের সৈনিক ইয়াসিনের লাশ সন্ধান পাওয়া গেছে রাশিয়ায়। নিহতের বড় ভাই মো. রুহুল আমিন শেখ জানায়, রস্তু বন্ধন ক্যান্টনম্যান হাসপাতালে ইয়াছিন মিয়া শেখের মরদেহ সুরক্ষিত রয়েছে। বিষয়টি অবগত করে দ্রুত লাশ আনার দাবি জানিয়ে গত ২০ মে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক বরাবরে আবেদন করা হয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ দূতাবাস, মস্কো রাশিয়া (শ্রম কল্যাণ উইং) এর প্রথম সচিব (শ্রম) মো. মাজেদুর রহমান সরকার এক পত্রে জানান, কূটনৈতিক পত্র প্রেরণ, ইয়াসিন মিয়া শেখ এর মৃতদেহ চিহ্নিতকরণ, দূতাবাসকে অবহিতকরণ ও দ্রুত দেশে প্রেরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রাশিয়ার পরারাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। গত ২১ এপ্রিল নিহত ইয়াসিনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ছেলে ইয়াসিনকে এক মিনিটের জন্যেও চোখের আড়াল করছেন না তার ফিরোজা বেগম। পুত্রশোকে শয্যাশায়ী হলেও বারবার ছেলের ছবিতে হাত বুলাচ্ছেন তিনি। বাড়ির পাশ দিয়ে অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেন বাজলেই ছুটে যান। এত ইয়াসিন আসছে, ইয়াসিন আসছে বলে চিৎকার শুরু করেন। ছেলের লাশের অপেক্ষায় দিন কাটচ্ছে এই মায়ের। তিনি বলেন, তোমরা আমার ছেলেকে এনে দাও। আমার সোনা মানিকের লাশটা স্পর্শ করে দেখি। তিনি আরও জানায়, ২৬ মার্চ শেষ কথা হয়। টাকা পাঠাব ঘর বানাব আরও কতো কথা বলেছে আমার ছেলেটা। এটাই ছিল ওর সঙ্গে শেষ কথা।
উঁচু-লম্বা আর সুন্দর চেহারার অধিকারী ইয়াছিন সেনাবাহিনীতে যোগ দিবে এটা ছিল তার বাবার ইচ্ছে। ডৌহাখলা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৯ এসএসসি পাশ করে। এরপরে দেশের মাটিতে সৈনিকে যোগ দিতে একাধিকার সেনাবাহিনীর লাইনেও দাঁড়িয়েও বাবা সেই ইচ্ছে পূরণ করতে পারেনি। ২০২১ গৌরীপুর সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি উর্ত্তীণ হয়। এরপরে ঢাকা মিরপুর বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজে বিবিএতে অধ্যয়নরত ছিলেন ইয়াসিন।
ইয়াসিন তার আইডিতে পোস্টকৃত ভিডিও বার্তায় জানায়, গত বছরের জানুয়ারিতে রাশিয়ায় একটি কোম্পানিতে চাকরির জন্য আবেদন করে। গত সেপ্টেম্বর মাসে অফার লেটার পেয়ে চলে যায় রাশিয়া। মস্কো থেকে প্রায় ১১ হাজার কিলোমিটার দূরের ওই কোম্পানিতে তিন মাস চাকরির পর অনলাইনে আবেদন করে রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে চুক্তিভিত্তিক সৈনিক হিসেবে যোগ দেন।
তিনি জানান, দেশে না হলেও বিদেশে সৈনিক হয়ে বাবার স্বপ্নপূরণ হয় বলেও জানায় সে। ওই ভিডিওতে আওয়ামী লীগ সরকারবিরোধী আন্দোলনের স্মৃতিচারণ ও তার রাজনৈতিক সহকর্মীদের জন্যও দোয়া প্রার্থনা করেন সাবেক এই ছাত্রদল কর্মী। যুদ্ধে মৃত্যু হলেও তার কোনো আফসোস থাকবে না বলে ভিডিও বার্তায় জানিয়ে দেয় ইয়াসিন। সে আরও উল্লেখ করে ২০২৩সালের ২৮ অক্টোবর পল্টনে আন্দোলনে গিয়েছি, হরতাল-জ্বালাও-পোড়াও এর ভিতর দিয়ে অসংখ্যবার জীবনকে বাঁচিয়ে রেখেছি। সেদিন বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনায় বেড়িকেটে পড়েছিলাম। সেই বেড়িকেট ভেঙে এসেছি। জুলাইয়ের দ্বিতীয় স্বাধীনতার যুদ্ধে বারবার দেশীয় শত্রু মোকাবেলা করেছি। ঢাকার রাজপথে মিছিল-মেটিং করেছি। পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় ওদেরকে প্রতিহত করেছি। এতে আমি যুদ্ধে যাওয়ার সাহস পেয়েছি, যুদ্ধে মৃত্যু হলেও আমার এখন কোনো আফসোস থাকবে না। তিনি আরও বলেন, আমি মাহে রমজানের এই দিনে আমি আমার নেতা গৌরীপুরের জনমানুষের নেতা আহাম্মদ তায়েবুর রহমান হিরণসহ দলীয় নেতাকর্মীকেও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। তার বাবাকে হারান ২০১৬ সালের ১ মার্চ। বাবার মৃত্যুবার্ষিকীতে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর পোশাক পড়ে নিজের শরীরের পোষাক স্পর্শ করে ইয়াছিন বলে উঠেন, বাবার মৃত্যুবার্ষিকী এই পোশাক বাবাকে উৎসর্গ করলাম। ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস-জীবন যুদ্ধের এক ইতিহাস এখন ইয়াসিন! ওই ভিডিওটি ফেসবুকে পোস্ট করার মাস না পেরুতেই যুদ্ধে ইউক্রেনের মিসাইল হামলায় নিহত হয় তিনি।