একটি কলাগাছ থেকে ছড়ি কেটে ফেলার পর সেটির স্থান নর্দমা কিংবা ডোবায়। ফেলে রাখা হতো যেখানে-সেখানে।
সেই ফেলনা জিনিষটা এখন আর ফেলনা নয়। কারো কারো আয়ের উৎস। কলাগাছের মধ্যের অংশ বরাল বা থোর বা মাইজ এখন বিক্রি হচ্ছে রাজধানী ঢাকার শ্যামবাজার-কারওয়ান বাজারে।
একই সঙ্গে রপ্তানি হচ্ছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। এতে করে আয় হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রা। বংশ পরমম্পরায় প্রায় ৩৫-৪০ বছর ধরে ফেলে দেয়া এমন কলা গাছ বিক্রি করেই জীবিকা নির্বাহ করছেন নরসিংদীর পলাশ উপজেলার জিনারদী এলাকার বেশ কয়েকটি পরিবার।
ভৌগলিক নিদর্শন বা জিআই পন্য হিসেবে নরসিংদীর অমৃত সাগর কলার নাম রয়েছে। বছরের পর বছর ধরে পলাশ উপজেলায়ই চাষাবাদ হয়ে থাকে শত শত হেক্টর কলা বাগান। এসব বাগান থেকে কলা বিক্রি করে মালিক-শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্টরা জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। তবে এর বাইরে ভিন্ন উপার্জনের পথ বেছে নিয়েছেন পশাল উপজেলার বেশ কয়েকটি পরিবার।
তেমনই একজন নরসিংদীর পলাশ উপজেলার জিনারদী ইউনিয়নের বাড়ারচর এলাকার থোর বা ভেরেল বা মাইজ সংগ্রাহক ও বিক্রেতা আব্দুল কাদির মিয়া।
তিনি বলেন, জীবিকা নির্বাহের জন্য ছুটছেন কলা বাগানে। তবে কলার ছড়ি কেনা-বেচা করতে নয়। কলার ছড়ি কেটে নেয়ার পর ফেলে দেয়া কলাগাছ সংগ্রহ করতে। সেসব গাছ সংগ্রহের পর নিয়ে আসেন উপজেলার জিনারদী রেলগেইট এলাকায়। এখানে পরিক্তত কলাগাছ ছিলে উপরের অংশ ফেলে দিয়ে ১০ ইঞ্চি পরিমাপে কেটে বস্তাভর্তি করে পৌছে দেন ঢাকার শ্যামবাজার এবং কারওয়ান বাজারে। প্রতি পিচ ৬-৮ টাকার বিনিময়ে বিক্রি করলেও ঢাকায় নিয়ে পাইকারেরা বিক্রি করেন ১৫-২০ টাকায়। তাছাড়া সেখান থেকে রপ্তানী করা হয় যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে।
তার মতই শাহআলম মিয়া ও রনি মিয়া জানান, তারা বংশ পরম্পরায় কলার এই বরালের ব্যবসা পরিচালনা করছেন। তাদের বাবার হাত ধরে এ পেশায় নিয়োজিত হয়ে তাদের ছেলেদেরকেও রেখেছেন সঙ্গে। পিতা-পুত্র মিলে করছেন এ ব্যবসা। সেই সঙ্গে লোক নিয়োগ করে বিভিন্ন বাগান থেকে সংগ্রহ করছেন কলা গাছের বরাল। তাদের এই ব্যবসায় যেমনি নিজেদের আয়ের উৎস হচ্ছে, তেমনি বিদেশেী বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীদের কাছেও পৌছে যাচ্ছে দেশীয় খাবার। তাদের দেখাদেখি স্থানীয়রাও বেশ আগ্রহী হয়ে পড়ছেন এ পেশায়।
নরসিংদীর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা আব্দুল হাই বলেন, প্রচুর পরিমানে আয়রনযুক্ত এই বরাল বা থোর বা মাইজায় প্রচুর পরিমানে ঔষধি গুণাগুণ রয়েছে। সেই সঙ্গে নরসিংদীর অমৃত সাগর কলার কেন্দ্রস্থল হওয়ায় মাইজার ব্যপক উৎস রয়েছে। পলাশ উপজেলা থেকে বেশ কয়েকজন ব্যক্তি এই মাইজা বিক্রির সঙ্গে জড়িত রয়েছে। বিশেষ করে দেশী বাজারের পাশাপাশি বিদেশে অবস্থানরত সিলেটের বাসিন্দারা বেশ পছন্দ করেন বিধায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশেও সেগুলো বিক্রি হচ্ছে। চলতি মৌসুমে নরসিংদীর পলাশসহ ৬ উপজেলায় অমৃত সাগরসহ বিভিন্ন জাতের কলার চাষাবাদ হয়েছে ২ হাজার ১৬৫ হেক্টর জমিতে। বিপুল এই কলার থোর বা মাইজার যথাযথ ব্যবস্থাপনায় বাজারযাতের পাশাপাশি খাবারের চাহিদা বাড়াতে পারলে নতুন সম্ভাবনার পাশাপাশি আয় হতে পারে অধিক পরিমানে বৈদেশিক মুদ্রা।
বুধবার, ২৮ মে ২০২৫
একটি কলাগাছ থেকে ছড়ি কেটে ফেলার পর সেটির স্থান নর্দমা কিংবা ডোবায়। ফেলে রাখা হতো যেখানে-সেখানে।
সেই ফেলনা জিনিষটা এখন আর ফেলনা নয়। কারো কারো আয়ের উৎস। কলাগাছের মধ্যের অংশ বরাল বা থোর বা মাইজ এখন বিক্রি হচ্ছে রাজধানী ঢাকার শ্যামবাজার-কারওয়ান বাজারে।
একই সঙ্গে রপ্তানি হচ্ছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। এতে করে আয় হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রা। বংশ পরমম্পরায় প্রায় ৩৫-৪০ বছর ধরে ফেলে দেয়া এমন কলা গাছ বিক্রি করেই জীবিকা নির্বাহ করছেন নরসিংদীর পলাশ উপজেলার জিনারদী এলাকার বেশ কয়েকটি পরিবার।
ভৌগলিক নিদর্শন বা জিআই পন্য হিসেবে নরসিংদীর অমৃত সাগর কলার নাম রয়েছে। বছরের পর বছর ধরে পলাশ উপজেলায়ই চাষাবাদ হয়ে থাকে শত শত হেক্টর কলা বাগান। এসব বাগান থেকে কলা বিক্রি করে মালিক-শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্টরা জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। তবে এর বাইরে ভিন্ন উপার্জনের পথ বেছে নিয়েছেন পশাল উপজেলার বেশ কয়েকটি পরিবার।
তেমনই একজন নরসিংদীর পলাশ উপজেলার জিনারদী ইউনিয়নের বাড়ারচর এলাকার থোর বা ভেরেল বা মাইজ সংগ্রাহক ও বিক্রেতা আব্দুল কাদির মিয়া।
তিনি বলেন, জীবিকা নির্বাহের জন্য ছুটছেন কলা বাগানে। তবে কলার ছড়ি কেনা-বেচা করতে নয়। কলার ছড়ি কেটে নেয়ার পর ফেলে দেয়া কলাগাছ সংগ্রহ করতে। সেসব গাছ সংগ্রহের পর নিয়ে আসেন উপজেলার জিনারদী রেলগেইট এলাকায়। এখানে পরিক্তত কলাগাছ ছিলে উপরের অংশ ফেলে দিয়ে ১০ ইঞ্চি পরিমাপে কেটে বস্তাভর্তি করে পৌছে দেন ঢাকার শ্যামবাজার এবং কারওয়ান বাজারে। প্রতি পিচ ৬-৮ টাকার বিনিময়ে বিক্রি করলেও ঢাকায় নিয়ে পাইকারেরা বিক্রি করেন ১৫-২০ টাকায়। তাছাড়া সেখান থেকে রপ্তানী করা হয় যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে।
তার মতই শাহআলম মিয়া ও রনি মিয়া জানান, তারা বংশ পরম্পরায় কলার এই বরালের ব্যবসা পরিচালনা করছেন। তাদের বাবার হাত ধরে এ পেশায় নিয়োজিত হয়ে তাদের ছেলেদেরকেও রেখেছেন সঙ্গে। পিতা-পুত্র মিলে করছেন এ ব্যবসা। সেই সঙ্গে লোক নিয়োগ করে বিভিন্ন বাগান থেকে সংগ্রহ করছেন কলা গাছের বরাল। তাদের এই ব্যবসায় যেমনি নিজেদের আয়ের উৎস হচ্ছে, তেমনি বিদেশেী বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীদের কাছেও পৌছে যাচ্ছে দেশীয় খাবার। তাদের দেখাদেখি স্থানীয়রাও বেশ আগ্রহী হয়ে পড়ছেন এ পেশায়।
নরসিংদীর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা আব্দুল হাই বলেন, প্রচুর পরিমানে আয়রনযুক্ত এই বরাল বা থোর বা মাইজায় প্রচুর পরিমানে ঔষধি গুণাগুণ রয়েছে। সেই সঙ্গে নরসিংদীর অমৃত সাগর কলার কেন্দ্রস্থল হওয়ায় মাইজার ব্যপক উৎস রয়েছে। পলাশ উপজেলা থেকে বেশ কয়েকজন ব্যক্তি এই মাইজা বিক্রির সঙ্গে জড়িত রয়েছে। বিশেষ করে দেশী বাজারের পাশাপাশি বিদেশে অবস্থানরত সিলেটের বাসিন্দারা বেশ পছন্দ করেন বিধায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশেও সেগুলো বিক্রি হচ্ছে। চলতি মৌসুমে নরসিংদীর পলাশসহ ৬ উপজেলায় অমৃত সাগরসহ বিভিন্ন জাতের কলার চাষাবাদ হয়েছে ২ হাজার ১৬৫ হেক্টর জমিতে। বিপুল এই কলার থোর বা মাইজার যথাযথ ব্যবস্থাপনায় বাজারযাতের পাশাপাশি খাবারের চাহিদা বাড়াতে পারলে নতুন সম্ভাবনার পাশাপাশি আয় হতে পারে অধিক পরিমানে বৈদেশিক মুদ্রা।