alt

সারাদেশ

পরিত্যক্ত কলার বরাল এখন ফেলনা নয়, আয়ের উৎস

প্রতিনিধি, পলাশ (নরসিংদী) : বুধবার, ২৮ মে ২০২৫

একটি কলাগাছ থেকে ছড়ি কেটে ফেলার পর সেটির স্থান নর্দমা কিংবা ডোবায়। ফেলে রাখা হতো যেখানে-সেখানে।

সেই ফেলনা জিনিষটা এখন আর ফেলনা নয়। কারো কারো আয়ের উৎস। কলাগাছের মধ্যের অংশ বরাল বা থোর বা মাইজ এখন বিক্রি হচ্ছে রাজধানী ঢাকার শ্যামবাজার-কারওয়ান বাজারে।

একই সঙ্গে রপ্তানি হচ্ছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। এতে করে আয় হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রা। বংশ পরমম্পরায় প্রায় ৩৫-৪০ বছর ধরে ফেলে দেয়া এমন কলা গাছ বিক্রি করেই জীবিকা নির্বাহ করছেন নরসিংদীর পলাশ উপজেলার জিনারদী এলাকার বেশ কয়েকটি পরিবার।

ভৌগলিক নিদর্শন বা জিআই পন্য হিসেবে নরসিংদীর অমৃত সাগর কলার নাম রয়েছে। বছরের পর বছর ধরে পলাশ উপজেলায়ই চাষাবাদ হয়ে থাকে শত শত হেক্টর কলা বাগান। এসব বাগান থেকে কলা বিক্রি করে মালিক-শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্টরা জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। তবে এর বাইরে ভিন্ন উপার্জনের পথ বেছে নিয়েছেন পশাল উপজেলার বেশ কয়েকটি পরিবার।

তেমনই একজন নরসিংদীর পলাশ উপজেলার জিনারদী ইউনিয়নের বাড়ারচর এলাকার থোর বা ভেরেল বা মাইজ সংগ্রাহক ও বিক্রেতা আব্দুল কাদির মিয়া।

তিনি বলেন, জীবিকা নির্বাহের জন্য ছুটছেন কলা বাগানে। তবে কলার ছড়ি কেনা-বেচা করতে নয়। কলার ছড়ি কেটে নেয়ার পর ফেলে দেয়া কলাগাছ সংগ্রহ করতে। সেসব গাছ সংগ্রহের পর নিয়ে আসেন উপজেলার জিনারদী রেলগেইট এলাকায়। এখানে পরিক্তত কলাগাছ ছিলে উপরের অংশ ফেলে দিয়ে ১০ ইঞ্চি পরিমাপে কেটে বস্তাভর্তি করে পৌছে দেন ঢাকার শ্যামবাজার এবং কারওয়ান বাজারে। প্রতি পিচ ৬-৮ টাকার বিনিময়ে বিক্রি করলেও ঢাকায় নিয়ে পাইকারেরা বিক্রি করেন ১৫-২০ টাকায়। তাছাড়া সেখান থেকে রপ্তানী করা হয় যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে।

তার মতই শাহআলম মিয়া ও রনি মিয়া জানান, তারা বংশ পরম্পরায় কলার এই বরালের ব্যবসা পরিচালনা করছেন। তাদের বাবার হাত ধরে এ পেশায় নিয়োজিত হয়ে তাদের ছেলেদেরকেও রেখেছেন সঙ্গে। পিতা-পুত্র মিলে করছেন এ ব্যবসা। সেই সঙ্গে লোক নিয়োগ করে বিভিন্ন বাগান থেকে সংগ্রহ করছেন কলা গাছের বরাল। তাদের এই ব্যবসায় যেমনি নিজেদের আয়ের উৎস হচ্ছে, তেমনি বিদেশেী বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীদের কাছেও পৌছে যাচ্ছে দেশীয় খাবার। তাদের দেখাদেখি স্থানীয়রাও বেশ আগ্রহী হয়ে পড়ছেন এ পেশায়।

নরসিংদীর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা আব্দুল হাই বলেন, প্রচুর পরিমানে আয়রনযুক্ত এই বরাল বা থোর বা মাইজায় প্রচুর পরিমানে ঔষধি গুণাগুণ রয়েছে। সেই সঙ্গে নরসিংদীর অমৃত সাগর কলার কেন্দ্রস্থল হওয়ায় মাইজার ব্যপক উৎস রয়েছে। পলাশ উপজেলা থেকে বেশ কয়েকজন ব্যক্তি এই মাইজা বিক্রির সঙ্গে জড়িত রয়েছে। বিশেষ করে দেশী বাজারের পাশাপাশি বিদেশে অবস্থানরত সিলেটের বাসিন্দারা বেশ পছন্দ করেন বিধায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশেও সেগুলো বিক্রি হচ্ছে। চলতি মৌসুমে নরসিংদীর পলাশসহ ৬ উপজেলায় অমৃত সাগরসহ বিভিন্ন জাতের কলার চাষাবাদ হয়েছে ২ হাজার ১৬৫ হেক্টর জমিতে। বিপুল এই কলার থোর বা মাইজার যথাযথ ব্যবস্থাপনায় বাজারযাতের পাশাপাশি খাবারের চাহিদা বাড়াতে পারলে নতুন সম্ভাবনার পাশাপাশি আয় হতে পারে অধিক পরিমানে বৈদেশিক মুদ্রা।

ছবি

ছাত্র-জনতার বিপক্ষে অবস্থানকারীদের শনাক্তে তদন্ত কমিটি গঠন শাবিপ্রবিতে

ছবি

বাজারে এসেছে রসালো লিচু

তিন খাদ্য কর্মকর্তাসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

ছবি

হাট কাঁপাবে বুলবুলের ‘সাদা পাহাড়’ ওজন ৪০ মণ

মাংস কাটার সরঞ্জাম তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কামাররা

ছবি

কালের বিবর্তনে কমছে গোলার ব্যবহার

ছবি

সুন্দরবনে ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’র প্রভাবে ভেসে যাচ্ছিল হরিণের শাবক, বনকর্মীদের প্রয়াসে রক্ষা

ছবি

শাহজাদপুরে ব্রি- ধান ১০২, বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি

দুপুরে ব্যবসায়ীদের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি সন্ধ্যায় ইউএনওর গঠনাস্থল পরিদর্শন

ছবি

কালো সোনা নামে পরিচিত ‘ভ্যানিলা মসলা’ ফলেছে মহেশপুরে

মসলার বাজার অস্থির

শতাধিক ঘরে আগুন, গ্রাম ছাড়া কয়েকশ মানুষ

বিকাশকর্মীকে ছুরিকাঘাতে দুই লাখ টাকা ছিনতাই

মির্জাগঞ্জে সড়কে ড্রেন না থাকায় জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে জনভোগান্তি

রমেক হাসপাতালের মৃত ব্যক্তির দুটি চোখ গায়েব

সিরাজগঞ্জে দোকান ও হোটেলে প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর অভিযান

নিকলীতে মৎস্যজীবীকে সাজানো মামলায় ফাঁসিয়ে জলমহালের মাছ লুটের অভিযোগ

ছবি

মহালছড়িতে সরকারি খাল দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ

হেরোইনসহ গ্রেপ্তার ২

চিনি প্যাকেটজাত করায় ব্যবসায়ীকে জরিমানা

ছবি

তালায় ঘেরে বিষ প্রয়োগে লক্ষাধিক টাকার মাছ নিধন

অবৈধভাবে ভারত হতে প্রবেশকালে তিন বাংলাদেশি আটক

নাজিরপুরে দুই স্কুলে সংঘর্ষ আহত ৬ শিক্ষার্থী

তালায় বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

নোয়াখালীতে নারীকে জবাই করে হত্যা

ছবি

ঈদ সামনে রেখে ব্যস্ত আদমদীঘির কর্মকাররা

বেনাপোল কাস্টমসে ৯ মাসে রাজস্ব বেড়েছে ৩৬৬ কোটি টাকা

সোনারগাঁয়ে পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু

পবিপ্রবিতে দেওয়াল ধসে নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু

ছবি

ভেড়ামারা-হাদল সড়ক এখন নরক : জনদুর্ভোগ চরমে

ছবি

কুষ্টিয়াতে ১৬ জেলে পেলেন বকনা বাছুর

ঝিনাইদহে কৃষককে পিটিয়ে হত্যা

রাজশাহীতে জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ

ছবি

স্বাধীনতার ৫৫ বছর পরও নির্মাণ হয়নি ফতেহপুর ব্রিজ

বাগেরহাটের ফকিরহাটে প্রাণ গেল বাইসাইকেল আরোহীর

সেতু তৈরিতে যুবকদের চমক

tab

সারাদেশ

পরিত্যক্ত কলার বরাল এখন ফেলনা নয়, আয়ের উৎস

প্রতিনিধি, পলাশ (নরসিংদী)

বুধবার, ২৮ মে ২০২৫

একটি কলাগাছ থেকে ছড়ি কেটে ফেলার পর সেটির স্থান নর্দমা কিংবা ডোবায়। ফেলে রাখা হতো যেখানে-সেখানে।

সেই ফেলনা জিনিষটা এখন আর ফেলনা নয়। কারো কারো আয়ের উৎস। কলাগাছের মধ্যের অংশ বরাল বা থোর বা মাইজ এখন বিক্রি হচ্ছে রাজধানী ঢাকার শ্যামবাজার-কারওয়ান বাজারে।

একই সঙ্গে রপ্তানি হচ্ছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। এতে করে আয় হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রা। বংশ পরমম্পরায় প্রায় ৩৫-৪০ বছর ধরে ফেলে দেয়া এমন কলা গাছ বিক্রি করেই জীবিকা নির্বাহ করছেন নরসিংদীর পলাশ উপজেলার জিনারদী এলাকার বেশ কয়েকটি পরিবার।

ভৌগলিক নিদর্শন বা জিআই পন্য হিসেবে নরসিংদীর অমৃত সাগর কলার নাম রয়েছে। বছরের পর বছর ধরে পলাশ উপজেলায়ই চাষাবাদ হয়ে থাকে শত শত হেক্টর কলা বাগান। এসব বাগান থেকে কলা বিক্রি করে মালিক-শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্টরা জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। তবে এর বাইরে ভিন্ন উপার্জনের পথ বেছে নিয়েছেন পশাল উপজেলার বেশ কয়েকটি পরিবার।

তেমনই একজন নরসিংদীর পলাশ উপজেলার জিনারদী ইউনিয়নের বাড়ারচর এলাকার থোর বা ভেরেল বা মাইজ সংগ্রাহক ও বিক্রেতা আব্দুল কাদির মিয়া।

তিনি বলেন, জীবিকা নির্বাহের জন্য ছুটছেন কলা বাগানে। তবে কলার ছড়ি কেনা-বেচা করতে নয়। কলার ছড়ি কেটে নেয়ার পর ফেলে দেয়া কলাগাছ সংগ্রহ করতে। সেসব গাছ সংগ্রহের পর নিয়ে আসেন উপজেলার জিনারদী রেলগেইট এলাকায়। এখানে পরিক্তত কলাগাছ ছিলে উপরের অংশ ফেলে দিয়ে ১০ ইঞ্চি পরিমাপে কেটে বস্তাভর্তি করে পৌছে দেন ঢাকার শ্যামবাজার এবং কারওয়ান বাজারে। প্রতি পিচ ৬-৮ টাকার বিনিময়ে বিক্রি করলেও ঢাকায় নিয়ে পাইকারেরা বিক্রি করেন ১৫-২০ টাকায়। তাছাড়া সেখান থেকে রপ্তানী করা হয় যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে।

তার মতই শাহআলম মিয়া ও রনি মিয়া জানান, তারা বংশ পরম্পরায় কলার এই বরালের ব্যবসা পরিচালনা করছেন। তাদের বাবার হাত ধরে এ পেশায় নিয়োজিত হয়ে তাদের ছেলেদেরকেও রেখেছেন সঙ্গে। পিতা-পুত্র মিলে করছেন এ ব্যবসা। সেই সঙ্গে লোক নিয়োগ করে বিভিন্ন বাগান থেকে সংগ্রহ করছেন কলা গাছের বরাল। তাদের এই ব্যবসায় যেমনি নিজেদের আয়ের উৎস হচ্ছে, তেমনি বিদেশেী বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীদের কাছেও পৌছে যাচ্ছে দেশীয় খাবার। তাদের দেখাদেখি স্থানীয়রাও বেশ আগ্রহী হয়ে পড়ছেন এ পেশায়।

নরসিংদীর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা আব্দুল হাই বলেন, প্রচুর পরিমানে আয়রনযুক্ত এই বরাল বা থোর বা মাইজায় প্রচুর পরিমানে ঔষধি গুণাগুণ রয়েছে। সেই সঙ্গে নরসিংদীর অমৃত সাগর কলার কেন্দ্রস্থল হওয়ায় মাইজার ব্যপক উৎস রয়েছে। পলাশ উপজেলা থেকে বেশ কয়েকজন ব্যক্তি এই মাইজা বিক্রির সঙ্গে জড়িত রয়েছে। বিশেষ করে দেশী বাজারের পাশাপাশি বিদেশে অবস্থানরত সিলেটের বাসিন্দারা বেশ পছন্দ করেন বিধায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশেও সেগুলো বিক্রি হচ্ছে। চলতি মৌসুমে নরসিংদীর পলাশসহ ৬ উপজেলায় অমৃত সাগরসহ বিভিন্ন জাতের কলার চাষাবাদ হয়েছে ২ হাজার ১৬৫ হেক্টর জমিতে। বিপুল এই কলার থোর বা মাইজার যথাযথ ব্যবস্থাপনায় বাজারযাতের পাশাপাশি খাবারের চাহিদা বাড়াতে পারলে নতুন সম্ভাবনার পাশাপাশি আয় হতে পারে অধিক পরিমানে বৈদেশিক মুদ্রা।

back to top