দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোল দিয়ে আমদানি-রপ্তানি কমলেও বেড়েছে রাজস্ব আদায়। গত ৯ মাসে বিগত অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ৩৬৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে।
কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, গতবছরের সেপ্টেম্বর মাসে কাস্টমস কমিশনার মো. কামরুজ্জামানের তত্ত্বাবধানে আইআরএম এবং আনস্টাফিং দলের কঠোর নজরদারির কারণে শুল্ক ফাঁকির ঘটনা রোধ করা সম্ভব হয়েছে। ফলে এ বছর রাজস্ব আদায় বেড়েছে।
সম্প্রতি বন্দরের ১৭ নম্বর শেড থেকে কাস্টমস কমিশনার মো. কামরুজ্জামান মিথ্যা ঘোষণার মাধ্যমে আমদানিকৃত প্রায় ৪ কোটি টাকা মূল্যের ভারতীয় ফেব্রিকস আটক করেন।
চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি আরও একটি অর্ধ কোটি টাকার অবৈধ পণ্য আটক করা হয়। ওই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট সিঅ্যান্ডএফের লাইসেন্স বাতিলসহ মোটা অংকের অর্থ জরিমানা আদায় করা হয়। তার কারণে আন্তর্জাতিক চেকপোস্টে সক্রিয় ভারতীয় পাসপোর্ট চোরাচালানিদের নিকট থেকে ১২ হাজার ৩৪২টি পণ্যের (ডিএম) চালান আটক করা হয়। যা সরকারি কোষাগারে জমা হয়েছে। এখান থেকে পাঁচ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হবে বলে জানিয়েছেন কাস্টম কর্মকর্তা আব্দুল গনি।
গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই থেকে মার্চ) ভারতে প্রায় ২৮ লাখ ৪০ হাজার ৯৯ টন পণ্য রপ্তানি হয়েছে। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে প্রায় ২৯ লাখ ৪৩ হাজার ৭১ টন পণ্য রপ্তানি হয়েছিল। হিসাব অনুযায়ী, গত অর্থবছরের তুলনায় ১০ হাজার ২৭২ টন পণ্য কম রপ্তানি হয়েছে।
একই সময় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে ভারত থেকে প্রায় ১২ লাখ ৩৩ হাজার ৭৪৬ দশমিক ২৯ টন পণ্য আমদানি হয়েছে। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে প্রায় ১২ লাখ ৫২ হাজার ৭৬৭ দশমিক ২৯ টন পণ্য আমদানি হয়েছিল। হিসাব অনুযায়ী, গত অর্থবছরের তুলনায় একই সময়ে ১৯ হাজার ২০ দশমিক ৮২ টন কম আমদানি হয়েছে।
সূত্র জানায়, পণ্য আমদানি কিছুটা কমলেও চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ৩৬৬ দশমিক ১৫ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে।
বেনাপোল কাস্টম হাউসে চলতি (২০২৪-২৫) অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৬ হাজার ৭০৫ কোটি টাকা। সেই আলোকে অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ হাজার ৪৩২ দশমিক ৩ কোটি টাকা। সেখানে আদায় হয়েছে ৫ হাজার ৭৯৭ দশমিক ৭৬ কোটি টাকা।
যার মধ্যে জুলাই মাসে ৪১৩ দশমিক ২২ কোটি টাকা, আগস্ট মাসে ৪০১ দশমিক ৫৫ কোটি টাকা, সেপ্টেম্বর মাসে ৪৮৯ দশমিক ১১ কোটি টাকা, অক্টোবর মাসে ৫২৪ দশমিক ৬৩ কোটি টাকা, নভেম্বর মাসে ৬১৪ দশমিক ৭১, ডিসেম্বর মাসে ৭৭৮ দশমিক ৯৫ কোটি টাকা, জানুয়ারি মাসে ৬২১ দশমিক ৬৩ কোটি টাকা, ফেব্রুয়ারি মাসে ৮১৮ দশমিক ৫ কোটি টাকা এবং মার্চ মাসে ৭৭০ দশমিক ১১ কোটি রাজস্ব আদায় হয়েছে।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক লতা জানান, বৈশ্বিক মন্দা, ডলারের দাম ঊর্ধ্বগতি আর সংকটের কারণ দেখিয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো কয়েক বছর ধরে এলসির সংখ্যা কমিয়েছেন। এতে আমদানি কমায় গত কয়েকবছর রাজস্ব ঘাটতি হয়েছে। তবে গতবছর থেকে রাজস্ব আদায় বাড়তে শুরু করেছে। চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে উচ্চ শুল্কের পণ্য আমদানি বেড়েছে। শিল্প কারখানার পণ্য আসতে শুরু করেছে। যে কারণে বেনাপোল কাস্টমসে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি পেয়েছে।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি খায়রুজ্জামান মধু বলেন, ‘দেশে সরকারের পতনের পরে দু’দেশের রাজনৈতিক টানাপড়েন থাকায় ভারত থেকে আমদানি কিছুটা কমলেও যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেশিরভাগ আমদানিকারক বেনাপোল বন্দর ব্যবহারে আগ্রহী। তবে বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ রাজস্ব ফাঁকি রোধে কড়াকড়ি আরোপ করায় অসাধু ব্যাবসায়ীরা বিপাকে পড়েছে।
বেনাপোল কাস্টম হাউসের কমিশনার মো. কামরুজ্জামান জানান, গত তিন মাস বেনাপোল বন্দরে কার্গো ভেহিকেল টার্মিনাল চালু ও বসানো হয় স্ক্যানিং মেশিন। দ্রুত পণ্য খালাস ও বাণিজ্য সম্প্রসারণে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের উদ্যোগে বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ রাজস্ব ফাঁকি রোধ ও বাণিজ্য সহজীকরণে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এতে বর্তমানে বাণিজ্যে অনেকটা গতি ফিরেছে, কমেছে হয়রানি। যা সামনের দিনে প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে আমদানি-রপ্তানি বাড়াতে বড় ভূমিকা রাখবে।
এ বন্দরে আমদানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে শিল্প কারখানার কাঁচামাল, তৈরি পোশাক, গার্মেন্টস, শিশু খাদ্য, মাছ, কেমিক্যালসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য।
আর রপ্তানি পণ্যের মধ্যে পাট, পাটের তৈরি পণ্য, গার্মেন্টস, তৈরি পোশাক, কেমিকেল, টিস্যু পেপার, মেলামাইন ও মাছ উল্লেখযোগ্য।
বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫
দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোল দিয়ে আমদানি-রপ্তানি কমলেও বেড়েছে রাজস্ব আদায়। গত ৯ মাসে বিগত অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ৩৬৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে।
কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, গতবছরের সেপ্টেম্বর মাসে কাস্টমস কমিশনার মো. কামরুজ্জামানের তত্ত্বাবধানে আইআরএম এবং আনস্টাফিং দলের কঠোর নজরদারির কারণে শুল্ক ফাঁকির ঘটনা রোধ করা সম্ভব হয়েছে। ফলে এ বছর রাজস্ব আদায় বেড়েছে।
সম্প্রতি বন্দরের ১৭ নম্বর শেড থেকে কাস্টমস কমিশনার মো. কামরুজ্জামান মিথ্যা ঘোষণার মাধ্যমে আমদানিকৃত প্রায় ৪ কোটি টাকা মূল্যের ভারতীয় ফেব্রিকস আটক করেন।
চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি আরও একটি অর্ধ কোটি টাকার অবৈধ পণ্য আটক করা হয়। ওই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট সিঅ্যান্ডএফের লাইসেন্স বাতিলসহ মোটা অংকের অর্থ জরিমানা আদায় করা হয়। তার কারণে আন্তর্জাতিক চেকপোস্টে সক্রিয় ভারতীয় পাসপোর্ট চোরাচালানিদের নিকট থেকে ১২ হাজার ৩৪২টি পণ্যের (ডিএম) চালান আটক করা হয়। যা সরকারি কোষাগারে জমা হয়েছে। এখান থেকে পাঁচ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হবে বলে জানিয়েছেন কাস্টম কর্মকর্তা আব্দুল গনি।
গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই থেকে মার্চ) ভারতে প্রায় ২৮ লাখ ৪০ হাজার ৯৯ টন পণ্য রপ্তানি হয়েছে। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে প্রায় ২৯ লাখ ৪৩ হাজার ৭১ টন পণ্য রপ্তানি হয়েছিল। হিসাব অনুযায়ী, গত অর্থবছরের তুলনায় ১০ হাজার ২৭২ টন পণ্য কম রপ্তানি হয়েছে।
একই সময় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে ভারত থেকে প্রায় ১২ লাখ ৩৩ হাজার ৭৪৬ দশমিক ২৯ টন পণ্য আমদানি হয়েছে। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে প্রায় ১২ লাখ ৫২ হাজার ৭৬৭ দশমিক ২৯ টন পণ্য আমদানি হয়েছিল। হিসাব অনুযায়ী, গত অর্থবছরের তুলনায় একই সময়ে ১৯ হাজার ২০ দশমিক ৮২ টন কম আমদানি হয়েছে।
সূত্র জানায়, পণ্য আমদানি কিছুটা কমলেও চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ৩৬৬ দশমিক ১৫ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে।
বেনাপোল কাস্টম হাউসে চলতি (২০২৪-২৫) অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৬ হাজার ৭০৫ কোটি টাকা। সেই আলোকে অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ হাজার ৪৩২ দশমিক ৩ কোটি টাকা। সেখানে আদায় হয়েছে ৫ হাজার ৭৯৭ দশমিক ৭৬ কোটি টাকা।
যার মধ্যে জুলাই মাসে ৪১৩ দশমিক ২২ কোটি টাকা, আগস্ট মাসে ৪০১ দশমিক ৫৫ কোটি টাকা, সেপ্টেম্বর মাসে ৪৮৯ দশমিক ১১ কোটি টাকা, অক্টোবর মাসে ৫২৪ দশমিক ৬৩ কোটি টাকা, নভেম্বর মাসে ৬১৪ দশমিক ৭১, ডিসেম্বর মাসে ৭৭৮ দশমিক ৯৫ কোটি টাকা, জানুয়ারি মাসে ৬২১ দশমিক ৬৩ কোটি টাকা, ফেব্রুয়ারি মাসে ৮১৮ দশমিক ৫ কোটি টাকা এবং মার্চ মাসে ৭৭০ দশমিক ১১ কোটি রাজস্ব আদায় হয়েছে।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক লতা জানান, বৈশ্বিক মন্দা, ডলারের দাম ঊর্ধ্বগতি আর সংকটের কারণ দেখিয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো কয়েক বছর ধরে এলসির সংখ্যা কমিয়েছেন। এতে আমদানি কমায় গত কয়েকবছর রাজস্ব ঘাটতি হয়েছে। তবে গতবছর থেকে রাজস্ব আদায় বাড়তে শুরু করেছে। চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে উচ্চ শুল্কের পণ্য আমদানি বেড়েছে। শিল্প কারখানার পণ্য আসতে শুরু করেছে। যে কারণে বেনাপোল কাস্টমসে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি পেয়েছে।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি খায়রুজ্জামান মধু বলেন, ‘দেশে সরকারের পতনের পরে দু’দেশের রাজনৈতিক টানাপড়েন থাকায় ভারত থেকে আমদানি কিছুটা কমলেও যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেশিরভাগ আমদানিকারক বেনাপোল বন্দর ব্যবহারে আগ্রহী। তবে বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ রাজস্ব ফাঁকি রোধে কড়াকড়ি আরোপ করায় অসাধু ব্যাবসায়ীরা বিপাকে পড়েছে।
বেনাপোল কাস্টম হাউসের কমিশনার মো. কামরুজ্জামান জানান, গত তিন মাস বেনাপোল বন্দরে কার্গো ভেহিকেল টার্মিনাল চালু ও বসানো হয় স্ক্যানিং মেশিন। দ্রুত পণ্য খালাস ও বাণিজ্য সম্প্রসারণে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের উদ্যোগে বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ রাজস্ব ফাঁকি রোধ ও বাণিজ্য সহজীকরণে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এতে বর্তমানে বাণিজ্যে অনেকটা গতি ফিরেছে, কমেছে হয়রানি। যা সামনের দিনে প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে আমদানি-রপ্তানি বাড়াতে বড় ভূমিকা রাখবে।
এ বন্দরে আমদানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে শিল্প কারখানার কাঁচামাল, তৈরি পোশাক, গার্মেন্টস, শিশু খাদ্য, মাছ, কেমিক্যালসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য।
আর রপ্তানি পণ্যের মধ্যে পাট, পাটের তৈরি পণ্য, গার্মেন্টস, তৈরি পোশাক, কেমিকেল, টিস্যু পেপার, মেলামাইন ও মাছ উল্লেখযোগ্য।