শেষ ২৪ ঘণ্টায় বরগুনায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা আরও ৬৫ জন। এ নিয়ে বরগুনায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ৪৮ জন। বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে এখনও চিকিৎসা নিচ্ছেন ২৫৬ জন। এ অনুপাত বরিশাল বিভাগে মধ্যে অর্ধেক এবং জাতীয় মাপকাঠিতে শতকরা ২৫ ভাগ। পরিস্থিতি ভয়াবহ হলেও চিকিৎসা ক্ষেত্রে তেমন উন্নতি হয়নি। পদায়নকৃত চিকিৎসক- নার্সের বেশিরভাগ যোগদান করেননি। বরগুনা পৌররসভা ডেঙ্গু মোকাবিলায় মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দ চাইলেও মেলেনি এক পয়সাও।
বিভাগের অর্ধেকের বেশি
আক্রান্ত হচ্ছে বরগুনায়
কয়েকদিনের মধ্যে চক্রবৃদ্ধি হারে মশার প্রজনন সৃষ্টি হয়। তাছাড়া সম্প্রতি ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণ হিসেবে চিকিৎসকরা অনেকেই বরগুনা জেনারেল হসতাতালের বর্তমান অবস্থাকে দায়ী করেন। ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালের শয্যা ও মেঝেতে চিকিৎসা চলছে। সংক্রমণ ঠেকাতে ডেঙ্গু রোগীদের মশারি টাঙিয়ে থাকতে বলা হলেও সেই নির্দেশনা পালন করা হচ্ছে না। বরগুনা সদর হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালের শয্যা ও মেঝেতে চিকিৎসা চলছে। সংক্রমণ ঠেকাতে ডেঙ্গু রোগীদের মশারি টাঙিয়ে থাকতে বলা হলেও সেই নির্দেশনা পালন করা হচ্ছে না।
বর্তমানে ভর্তি রোগীর অনেকেই মশারি ব্যবহার করতে না পারা এবং রোগীদের সঙ্গে চার গুণের মতো দর্শনার্থী প্রতিদিন হাসপাতাল এলাকায় রাত কাটায় তারাও মশারি ব্যবহার করেন না। আক্রান্ত রোগীর দ্বারাও অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন। বরগুনার আবাসিক ব্যবস্থপনাকেও অনেকে ডেঙ্গু বিস্তারের জন্য দায়ী করেন। পৌর শহরে বেশিরভাগ পাকা ভবনের দূরত্ব এক বিঘাতেরও কম। যেখানে কোনো পচ্ছিন্নতা কর্মী ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করতে পারে না।
এলাকার সচেতন মহল মনে করে বরগুনায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি হলো রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষের অবহেলার চরম পরিণতি। বরগুনা প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট সোহেল হাফিজ বলেন, ‘ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে এলাকার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের কৌশলগত লড়াইয়ের সীমাবদ্ধতার দিকটিও বরগুনার বর্তমান পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। ডেঙ্গু শুধু ঢাকার নয়, এর বিস্তার ঘটতে পারে সারাদেশে। রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষের বিবেচনায় অবহেলিত বরগুনায় ডেঙ্গুর বিস্তার তাই বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে। সিবিডিপি নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন মিরাজ বলেন, রাষ্ট্র একটি অবহেলিত এলাকার মানুষের জীবন নিশ্চিত করতে পারছে না। এই জরুরি মুহূর্তে যে চিকিৎসক ও নার্সদের নতুন নিয়োগ দেয়া হয়েছে তারা অনেকেই যোগ দেননি।
এদিকে বরগুনার সদর হাসপাতালটি ২৫০ শয্যার। ডেঙ্গু বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ৫০টি শয্যা কেবল ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীদের জন্য বরাদ্দ হয়েছে। (শুক্রবার ২০-৬-২০২৫) পর্যন্ত সদর হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা ছিল প্রায় ২৫০ জন। আর ডেঙ্গু রোগীর জন্য খুব প্রয়োজনীয় স্যালাইনের সংকটের কথা স্বীকার করেন জেলার সিভিল সার্জন মো. আবু ফাত্তাহ।
সিভিল সার্জন অফিসের তথ্যমতে, স্যালাইন সংকটে এগিয়ে এসেছে স্থানীয় দু’টি বেসরকারি সংগঠন। ডেঙ্গু রোগী বেড়ে যাওয়ায় সদর হাসপাতালে ছয়জন নতুন চিকিৎসক যোগ দিয়েছেন বলেও জানান সিভিল সার্জন। ডেঙ্গুর এই বাড়বাড়ন্তের মধ্যেও ডাবের খোসাসহ পানি ধরে রাখতে পারে এমন নানা কন্টেইনার যত্রতত্র হাসপাতালের পাশেই ফেলছে মানুষজন। শহরের অন্যত্রও ময়লা-আবর্জনার কমতি নেই।
সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে অপরিহার্য। কিন্তু পৌরসভাসহ নানা স্থানীয় সরকারি প্রতিষ্ঠান এখন জন প্রতিনিধিশূন্য। বরগুনা পৌরসভায় ২ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও পদ ২টি শূন্য। মাত্র ৬ জন কর্মচারী শতাধিক পচিচ্ছন্নতা কর্মী ৯টি ওয়ার্ডে কাজ করে। সুতরাং এ পরিস্থিতির সংকট আরও বাড়াতে পারে বলে মনে করেন বরগুনার নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ কমিটির সম্পাদক মনির হোসেন কামাল।
তিনি বলেন, এখন বরগুনা জেলা, বিশেষ করে পৌর শহর ডেঙ্গুর হটস্পট। ঘরে ঘরে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। রোগটি গ্রামাঞ্চলেও ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। শহরসহ বিভিন্ন স্থানে মশা বাড়ছে। বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। এসব আক্রান্ত ব্যক্তির ভিড় জমছে হাসপাতালে। তাদের সামাল দিতে হিমশিম অবস্থা চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের।
শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫
শেষ ২৪ ঘণ্টায় বরগুনায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা আরও ৬৫ জন। এ নিয়ে বরগুনায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ৪৮ জন। বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে এখনও চিকিৎসা নিচ্ছেন ২৫৬ জন। এ অনুপাত বরিশাল বিভাগে মধ্যে অর্ধেক এবং জাতীয় মাপকাঠিতে শতকরা ২৫ ভাগ। পরিস্থিতি ভয়াবহ হলেও চিকিৎসা ক্ষেত্রে তেমন উন্নতি হয়নি। পদায়নকৃত চিকিৎসক- নার্সের বেশিরভাগ যোগদান করেননি। বরগুনা পৌররসভা ডেঙ্গু মোকাবিলায় মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দ চাইলেও মেলেনি এক পয়সাও।
বিভাগের অর্ধেকের বেশি
আক্রান্ত হচ্ছে বরগুনায়
কয়েকদিনের মধ্যে চক্রবৃদ্ধি হারে মশার প্রজনন সৃষ্টি হয়। তাছাড়া সম্প্রতি ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণ হিসেবে চিকিৎসকরা অনেকেই বরগুনা জেনারেল হসতাতালের বর্তমান অবস্থাকে দায়ী করেন। ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালের শয্যা ও মেঝেতে চিকিৎসা চলছে। সংক্রমণ ঠেকাতে ডেঙ্গু রোগীদের মশারি টাঙিয়ে থাকতে বলা হলেও সেই নির্দেশনা পালন করা হচ্ছে না। বরগুনা সদর হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালের শয্যা ও মেঝেতে চিকিৎসা চলছে। সংক্রমণ ঠেকাতে ডেঙ্গু রোগীদের মশারি টাঙিয়ে থাকতে বলা হলেও সেই নির্দেশনা পালন করা হচ্ছে না।
বর্তমানে ভর্তি রোগীর অনেকেই মশারি ব্যবহার করতে না পারা এবং রোগীদের সঙ্গে চার গুণের মতো দর্শনার্থী প্রতিদিন হাসপাতাল এলাকায় রাত কাটায় তারাও মশারি ব্যবহার করেন না। আক্রান্ত রোগীর দ্বারাও অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন। বরগুনার আবাসিক ব্যবস্থপনাকেও অনেকে ডেঙ্গু বিস্তারের জন্য দায়ী করেন। পৌর শহরে বেশিরভাগ পাকা ভবনের দূরত্ব এক বিঘাতেরও কম। যেখানে কোনো পচ্ছিন্নতা কর্মী ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করতে পারে না।
এলাকার সচেতন মহল মনে করে বরগুনায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি হলো রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষের অবহেলার চরম পরিণতি। বরগুনা প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট সোহেল হাফিজ বলেন, ‘ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে এলাকার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের কৌশলগত লড়াইয়ের সীমাবদ্ধতার দিকটিও বরগুনার বর্তমান পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। ডেঙ্গু শুধু ঢাকার নয়, এর বিস্তার ঘটতে পারে সারাদেশে। রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষের বিবেচনায় অবহেলিত বরগুনায় ডেঙ্গুর বিস্তার তাই বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে। সিবিডিপি নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন মিরাজ বলেন, রাষ্ট্র একটি অবহেলিত এলাকার মানুষের জীবন নিশ্চিত করতে পারছে না। এই জরুরি মুহূর্তে যে চিকিৎসক ও নার্সদের নতুন নিয়োগ দেয়া হয়েছে তারা অনেকেই যোগ দেননি।
এদিকে বরগুনার সদর হাসপাতালটি ২৫০ শয্যার। ডেঙ্গু বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ৫০টি শয্যা কেবল ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীদের জন্য বরাদ্দ হয়েছে। (শুক্রবার ২০-৬-২০২৫) পর্যন্ত সদর হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা ছিল প্রায় ২৫০ জন। আর ডেঙ্গু রোগীর জন্য খুব প্রয়োজনীয় স্যালাইনের সংকটের কথা স্বীকার করেন জেলার সিভিল সার্জন মো. আবু ফাত্তাহ।
সিভিল সার্জন অফিসের তথ্যমতে, স্যালাইন সংকটে এগিয়ে এসেছে স্থানীয় দু’টি বেসরকারি সংগঠন। ডেঙ্গু রোগী বেড়ে যাওয়ায় সদর হাসপাতালে ছয়জন নতুন চিকিৎসক যোগ দিয়েছেন বলেও জানান সিভিল সার্জন। ডেঙ্গুর এই বাড়বাড়ন্তের মধ্যেও ডাবের খোসাসহ পানি ধরে রাখতে পারে এমন নানা কন্টেইনার যত্রতত্র হাসপাতালের পাশেই ফেলছে মানুষজন। শহরের অন্যত্রও ময়লা-আবর্জনার কমতি নেই।
সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে অপরিহার্য। কিন্তু পৌরসভাসহ নানা স্থানীয় সরকারি প্রতিষ্ঠান এখন জন প্রতিনিধিশূন্য। বরগুনা পৌরসভায় ২ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও পদ ২টি শূন্য। মাত্র ৬ জন কর্মচারী শতাধিক পচিচ্ছন্নতা কর্মী ৯টি ওয়ার্ডে কাজ করে। সুতরাং এ পরিস্থিতির সংকট আরও বাড়াতে পারে বলে মনে করেন বরগুনার নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ কমিটির সম্পাদক মনির হোসেন কামাল।
তিনি বলেন, এখন বরগুনা জেলা, বিশেষ করে পৌর শহর ডেঙ্গুর হটস্পট। ঘরে ঘরে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। রোগটি গ্রামাঞ্চলেও ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। শহরসহ বিভিন্ন স্থানে মশা বাড়ছে। বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। এসব আক্রান্ত ব্যক্তির ভিড় জমছে হাসপাতালে। তাদের সামাল দিতে হিমশিম অবস্থা চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের।