কেশবপুরে যুবদল নেতা মনিরুল হত্যা
কেশবপুর (যশোর) : রডের আঘাতে নিহত যুবদল নেতা মনিরুল ইসলামের পাশে ইউনিয়ন বিএনপির নেতারা -সংবাদ
দূর থেকে দেখা যাচ্ছিল বাড়িতে মানুষের ভিড়। বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন বয়সি নারী-পুরুষ। কেউ কবরের পাশে, কেউ উঠানে, কেউ মাটির রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছেন। স্বজনদের কেউ আহাজারি করছেন, কেউ ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে যশোরের কেশবপুর উপজেলার বরণডালি গ্রামে নিহত যুবদল নেতা মনিরুল ইসলামের বাড়িতে গিয়ে এই দৃশ্য দেখা যায়।
হত্যাকাণ্ডের তিন দিন পার হয়েছে। তার স্বজনদের আহাজারি থামেনি। জনপ্রতিনিধি বা গণমাধ্যম কর্মী বা শহর থেকে কেউ বাড়িতে ঢুকলেই তারা আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছেন। মনিরুল ইসলাম কেশবপুর থানা যুবদলের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তিনি উপজেলার ত্রিমোহিনী ইউনিয়নের বরনডালি গ্রামের আলী বক্সের ছোট ছেলে।
তার মেঝভাই মিজানুর রহমান বিলাপ করতে করতে বলছিলেন, আমাদের সবার ছোট ভাইকে নির্মমভাবে রড দিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলল। আমি খুনি সবুজের ফাঁসি চাই। আমার ভাইকে দেখতে সারা উপজেলার মানুষ বাড়ি ভিড় করছে। তাদের প্রতিবাদই প্রমাণ করে, আমার ভাই ভালো মানুষ ছিল।
তিনি অভিযোগ করেন, যুবলীগ নেতা সবুজ এক বছর আগে জাকিরের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা ধার নেয়। গত ১৭ জুন বিকেলে আমার বড় ভাই হাসান ডাক্তারের রড সিমেন্টের দোকানের সামনে সবুজের কাছে সেই টাকা চায় জাকির। সেখানে মনিরুলও উপস্থিত ছিল। এ সময় সবুজ ক্ষিপ্ত হয়ে বাঁকা রড দিয়ে জাকিরের মাথায় বাড়ি মারতে গেলে আমার ভাই মনিরুল ঠেকাতে যায়। সেই রড দিয়ে সবুজ তার মাথায় আঘাত করে।
সঙ্গে সঙ্গে সে মাটিতে লুটে পড়ে জ্ঞান হারায়। তাকে কেশবপুর হাসপাতালে নেয়া হলে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। গত ১৮ জুন সকালে মনিরুলের মৃত্যু হয়।
মনিরুলের স্ত্রী জুঁই বেগম বলেন, ৬ বছরের মেয়ে রোজা, ৪ বছরের ছেলে মিরাজ ও দেড় বছরের মেয়ে আয়শাকে রেখে আমার স্বামী মারা গেছে। আমি এখন এদের ভরণপোষণ জোগাবো কিভাবে? তার একমাত্র ছেলে মিরাজ বাবা হত্যার দ্রুত বিচারসহ ঘাতকদের ফাঁসির দাবি জানায়। গত ১৯ জুন দুপুরে মনিরুলের পরিবারকে দেখতে যান ত্রিমোহিনী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আকরাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ আলমগীর কবীর ডালুসহ নেতারা। এ সময় তারা পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, গত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে সবুজ পুলিশের এসপি সার্কেলের নাম ভাঙিয়ে ভিন্ন মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। বর্তমান সময়েও সে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করতে চায় বলেই সে মনিরুলকে হত্যা করে।
এ ঘটনায় নিহতের ভাই মিজানুর রহমান বাদি হয়ে ৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০-১২ জনের নামে কেশবপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ওই রাতেই ঘাতক সবুজ, তার বাবা মোশারফ হোসেন ও লিটনকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে। অন্য আসামীদের আটকে অভিযান অব্যাহত আছে বলে এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শামীম জানান।
কেশবপুরে যুবদল নেতা মনিরুল হত্যা
কেশবপুর (যশোর) : রডের আঘাতে নিহত যুবদল নেতা মনিরুল ইসলামের পাশে ইউনিয়ন বিএনপির নেতারা -সংবাদ
শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫
দূর থেকে দেখা যাচ্ছিল বাড়িতে মানুষের ভিড়। বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন বয়সি নারী-পুরুষ। কেউ কবরের পাশে, কেউ উঠানে, কেউ মাটির রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছেন। স্বজনদের কেউ আহাজারি করছেন, কেউ ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে যশোরের কেশবপুর উপজেলার বরণডালি গ্রামে নিহত যুবদল নেতা মনিরুল ইসলামের বাড়িতে গিয়ে এই দৃশ্য দেখা যায়।
হত্যাকাণ্ডের তিন দিন পার হয়েছে। তার স্বজনদের আহাজারি থামেনি। জনপ্রতিনিধি বা গণমাধ্যম কর্মী বা শহর থেকে কেউ বাড়িতে ঢুকলেই তারা আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছেন। মনিরুল ইসলাম কেশবপুর থানা যুবদলের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তিনি উপজেলার ত্রিমোহিনী ইউনিয়নের বরনডালি গ্রামের আলী বক্সের ছোট ছেলে।
তার মেঝভাই মিজানুর রহমান বিলাপ করতে করতে বলছিলেন, আমাদের সবার ছোট ভাইকে নির্মমভাবে রড দিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলল। আমি খুনি সবুজের ফাঁসি চাই। আমার ভাইকে দেখতে সারা উপজেলার মানুষ বাড়ি ভিড় করছে। তাদের প্রতিবাদই প্রমাণ করে, আমার ভাই ভালো মানুষ ছিল।
তিনি অভিযোগ করেন, যুবলীগ নেতা সবুজ এক বছর আগে জাকিরের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা ধার নেয়। গত ১৭ জুন বিকেলে আমার বড় ভাই হাসান ডাক্তারের রড সিমেন্টের দোকানের সামনে সবুজের কাছে সেই টাকা চায় জাকির। সেখানে মনিরুলও উপস্থিত ছিল। এ সময় সবুজ ক্ষিপ্ত হয়ে বাঁকা রড দিয়ে জাকিরের মাথায় বাড়ি মারতে গেলে আমার ভাই মনিরুল ঠেকাতে যায়। সেই রড দিয়ে সবুজ তার মাথায় আঘাত করে।
সঙ্গে সঙ্গে সে মাটিতে লুটে পড়ে জ্ঞান হারায়। তাকে কেশবপুর হাসপাতালে নেয়া হলে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। গত ১৮ জুন সকালে মনিরুলের মৃত্যু হয়।
মনিরুলের স্ত্রী জুঁই বেগম বলেন, ৬ বছরের মেয়ে রোজা, ৪ বছরের ছেলে মিরাজ ও দেড় বছরের মেয়ে আয়শাকে রেখে আমার স্বামী মারা গেছে। আমি এখন এদের ভরণপোষণ জোগাবো কিভাবে? তার একমাত্র ছেলে মিরাজ বাবা হত্যার দ্রুত বিচারসহ ঘাতকদের ফাঁসির দাবি জানায়। গত ১৯ জুন দুপুরে মনিরুলের পরিবারকে দেখতে যান ত্রিমোহিনী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আকরাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ আলমগীর কবীর ডালুসহ নেতারা। এ সময় তারা পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, গত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে সবুজ পুলিশের এসপি সার্কেলের নাম ভাঙিয়ে ভিন্ন মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। বর্তমান সময়েও সে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করতে চায় বলেই সে মনিরুলকে হত্যা করে।
এ ঘটনায় নিহতের ভাই মিজানুর রহমান বাদি হয়ে ৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০-১২ জনের নামে কেশবপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ওই রাতেই ঘাতক সবুজ, তার বাবা মোশারফ হোসেন ও লিটনকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে। অন্য আসামীদের আটকে অভিযান অব্যাহত আছে বলে এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শামীম জানান।