পলাশের ঘোড়াশালে রসালো সুমিষ্টি আনারসের এবছর বাম্পার ফলনে চাষিদের মুখেও মিষ্টি হাসি ফুটেছে। গুণগত মানের দিক দিয়ে দেশজুড়ে সুনাম রয়েছে ঘোড়াশালের আনারসের। সরেজমিনে দেখা গেছে পলাশের প্রতিটি বাজারে, আনারস সাঁজিয়ে বসে আছে বিক্রেতারা।
জলডুগি আনারস নামে পরিচিত ঘোড়াশালে জিনারদীতে চাষকৃত এ আনারসের জাতটি। হানিকুইন এর বৈজ্ঞানিক নাম। টিলা টেঙ্গর এলাকার জমিতে আনারস চাষে ভালো ফলন পাওয়া যায়। জানা যায়, প্রতি একর জমিতে প্রায় ১৭-১৮ হাজার আনারসের চারা রোপণ করা হয়। এসব এলাকায় প্রায়ই ১৫০ হেক্টর জমিতে আনারসের চাষ হয়
এলাকায় প্রবাদ আছে, ‘ঘোড়াশালের রাবানের আনারস, রসে ভরা টস টস।’ ঘোড়াশাল পৌর এলাকা ও জিনারদী ইউনিয়নের প্রায় ৭০ ভাগ জমি আবহাওয়ার দিক থেকে আনারস চাষের উপযোগী। আম কাঁঠাল লটকনের পাশাপাশি এলাকার কৃষকদের প্রধান অর্থকরি ফসল হচ্ছে আনারস। এসব এলাকার বহুসংখ্যক মানুষের আনারস উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত। এ এলাকায় প্রায় ১৫০ বছর ধরে ঘোড়াশালে আনারস চাষ শুরু হয়েছে।
জানা যায়, কোনো এক ব্যক্তি সিলেটে বেড়াতে গেলে সিলেট থেকে এনে আনারসের চারা রোপণ করেন। ফলন ভালো হওয়ায় এর চাষ ধীরে ধীরে ব্যাপকতা লাভ করে। পরে কোনো একসময় বিলুপ্ত ঘটে দেশীয় আনারসের জাতটির। সিলেট চাষকৃত আনারসটি আবহাওয়ার সঙ্গে তেমন খাপ খাওয়াতে পারেনি। সিলেট হতে আনা আনারসের জাতটি ঘোড়াশালের মাটি ও আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খেলে এবং আনারস চাষে অনুকূল আবহাওয়া থাকায় এলাকায় আনারস চাষে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে।
ঘোড়াশালে জিনারদীতে চাষকৃত এ আনারসের জাতটি ঘোড়াশালে জলডুগি আনারস নামে পরিচিত। হানিকুইন এর বৈজ্ঞানিক নাম। টিলা টেঙ্গর এলাকার জমিতে আনারস চাষে ভালো ফলন পাওয়া যায়। জানা যায়, প্রতি একর জমিতে প্রায় ১৭-১৮ হাজার আনারসের চারা রোপণ করা হয়। এসব এলাকায় প্রায়ই ১৫০ হেক্টর জমিতে আনারসের চাষ হয়।
পলাশে আনারস চাষের গ্রামগুলো রাবান, কুড়াইতলী, লাখেরাজ, খাগৈর, বড়িবাড়ি, কাটাবের, বরাব, ধলাদিয়া, গোপিরাই পাড়া, লেবুপাড়া, সাতটিকা ও পাইকসার কিছু অংশ। আনারস চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা প্রায়ই ৩০ বছর ধরে আনারস চাষবাস করছে। তারা জানায়, বিঘাপ্রতি জমিতে আনারস চাষে ১৫-২০ হাজার টাকা খরচ হয়।
ফলন ভালো হলে প্রতি বিঘার আনারসে বিক্রি হয় প্রায় ৬০ হতে ৮০ হাজার টাকা। এতে লাভ হয় বহু গুণ যা দেশীয় অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে।
আনারসের ফলন ভালো হলে প্রতি বছর আয় হয় প্রায় ৭-৮ কোটি টাকা। প্রতি একর জমিতে প্রায় ১৮ হাজার আনারসের চারা রোপণ করা যায়। আনারস চাষিরা জানায়, আনারস পচনশীল ফল তাই এর সংরক্ষণ ব্যবস্থা থাকা দরকার।
আনারস সংরক্ষণের জন্য পলাশ-ঘোড়াশালে কোনো হিমাগার নেই। কৃষকরা আনারস সংরক্ষণের জরুরিভিত্তিতে একটি হিমাগার স্থাপনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানান। ঘোড়াশালে সনাতন পদ্ধতির মাধ্যমেই আনারসের চাষ হচ্ছে।
আনারস উৎপাদনকারিরা জানান, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে আনারস চাষ করলে আরও অধিক ফলন হতো এবং দেশও অর্থনৈতিকভাবে বেশি লাভবান হতো। গত বছর সময়এত বৃষ্টি- না হওয়ায় খরায় আনারসের আকার ছোট ছিল। এবার বৃষ্টি হওয়াতে আনারসের আকার বড় হয়েছে। তবে কিছুকিছু জমিতে সঠিক পরিচর্যার অভাবে আকারে ছোট হয়েছে। পলাশ উপজেলা কৃষি অফিসার আয়েশা আক্তার জানান, এবার গত বছরের চেয়ে ৭৫ মে, টন আনারস বেশি ফলন হয়েছে। যেখানে গত বছর ১৬৫০ মে.টন ছিল এবার হয়েছে ১৭২৫ মে. টন আনারস। তাছাড়া কৃষি অফিসের মাঠকর্মীরা নিয়মিত আনারস কৃষকদের পাশে ছিল।
প্রতি হেক্টরে ১৮ হতে ২০ টন আনারসের ফলন হয়েছে। এক হতে দেড় কেজি পর্যন্ত প্রতিটি আনারসের ওজন হওয়ায় কৃষকরা খুশি। তাদের আশা এ বছর অধিক লাভের মুখ দেখতে পাবে। ঘোড়াশালের-আনারসের চাহিদা সারাদেশে। দেশের মধ্যে গুণে মানে সুস্বাদু আনারস হিসেবেও সুপরিচিত। বর্তমানে হাটেবাজারে প্রতি হালি আনারস ১৫০ হতে ২৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা জানায় আনারস গত ১০-১২ দিন হলো বাজারে আসা শুরু হয়েছে বলে দাম একটু বেশি।
শনিবার, ২১ জুন ২০২৫
পলাশের ঘোড়াশালে রসালো সুমিষ্টি আনারসের এবছর বাম্পার ফলনে চাষিদের মুখেও মিষ্টি হাসি ফুটেছে। গুণগত মানের দিক দিয়ে দেশজুড়ে সুনাম রয়েছে ঘোড়াশালের আনারসের। সরেজমিনে দেখা গেছে পলাশের প্রতিটি বাজারে, আনারস সাঁজিয়ে বসে আছে বিক্রেতারা।
জলডুগি আনারস নামে পরিচিত ঘোড়াশালে জিনারদীতে চাষকৃত এ আনারসের জাতটি। হানিকুইন এর বৈজ্ঞানিক নাম। টিলা টেঙ্গর এলাকার জমিতে আনারস চাষে ভালো ফলন পাওয়া যায়। জানা যায়, প্রতি একর জমিতে প্রায় ১৭-১৮ হাজার আনারসের চারা রোপণ করা হয়। এসব এলাকায় প্রায়ই ১৫০ হেক্টর জমিতে আনারসের চাষ হয়
এলাকায় প্রবাদ আছে, ‘ঘোড়াশালের রাবানের আনারস, রসে ভরা টস টস।’ ঘোড়াশাল পৌর এলাকা ও জিনারদী ইউনিয়নের প্রায় ৭০ ভাগ জমি আবহাওয়ার দিক থেকে আনারস চাষের উপযোগী। আম কাঁঠাল লটকনের পাশাপাশি এলাকার কৃষকদের প্রধান অর্থকরি ফসল হচ্ছে আনারস। এসব এলাকার বহুসংখ্যক মানুষের আনারস উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত। এ এলাকায় প্রায় ১৫০ বছর ধরে ঘোড়াশালে আনারস চাষ শুরু হয়েছে।
জানা যায়, কোনো এক ব্যক্তি সিলেটে বেড়াতে গেলে সিলেট থেকে এনে আনারসের চারা রোপণ করেন। ফলন ভালো হওয়ায় এর চাষ ধীরে ধীরে ব্যাপকতা লাভ করে। পরে কোনো একসময় বিলুপ্ত ঘটে দেশীয় আনারসের জাতটির। সিলেট চাষকৃত আনারসটি আবহাওয়ার সঙ্গে তেমন খাপ খাওয়াতে পারেনি। সিলেট হতে আনা আনারসের জাতটি ঘোড়াশালের মাটি ও আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খেলে এবং আনারস চাষে অনুকূল আবহাওয়া থাকায় এলাকায় আনারস চাষে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে।
ঘোড়াশালে জিনারদীতে চাষকৃত এ আনারসের জাতটি ঘোড়াশালে জলডুগি আনারস নামে পরিচিত। হানিকুইন এর বৈজ্ঞানিক নাম। টিলা টেঙ্গর এলাকার জমিতে আনারস চাষে ভালো ফলন পাওয়া যায়। জানা যায়, প্রতি একর জমিতে প্রায় ১৭-১৮ হাজার আনারসের চারা রোপণ করা হয়। এসব এলাকায় প্রায়ই ১৫০ হেক্টর জমিতে আনারসের চাষ হয়।
পলাশে আনারস চাষের গ্রামগুলো রাবান, কুড়াইতলী, লাখেরাজ, খাগৈর, বড়িবাড়ি, কাটাবের, বরাব, ধলাদিয়া, গোপিরাই পাড়া, লেবুপাড়া, সাতটিকা ও পাইকসার কিছু অংশ। আনারস চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা প্রায়ই ৩০ বছর ধরে আনারস চাষবাস করছে। তারা জানায়, বিঘাপ্রতি জমিতে আনারস চাষে ১৫-২০ হাজার টাকা খরচ হয়।
ফলন ভালো হলে প্রতি বিঘার আনারসে বিক্রি হয় প্রায় ৬০ হতে ৮০ হাজার টাকা। এতে লাভ হয় বহু গুণ যা দেশীয় অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে।
আনারসের ফলন ভালো হলে প্রতি বছর আয় হয় প্রায় ৭-৮ কোটি টাকা। প্রতি একর জমিতে প্রায় ১৮ হাজার আনারসের চারা রোপণ করা যায়। আনারস চাষিরা জানায়, আনারস পচনশীল ফল তাই এর সংরক্ষণ ব্যবস্থা থাকা দরকার।
আনারস সংরক্ষণের জন্য পলাশ-ঘোড়াশালে কোনো হিমাগার নেই। কৃষকরা আনারস সংরক্ষণের জরুরিভিত্তিতে একটি হিমাগার স্থাপনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানান। ঘোড়াশালে সনাতন পদ্ধতির মাধ্যমেই আনারসের চাষ হচ্ছে।
আনারস উৎপাদনকারিরা জানান, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে আনারস চাষ করলে আরও অধিক ফলন হতো এবং দেশও অর্থনৈতিকভাবে বেশি লাভবান হতো। গত বছর সময়এত বৃষ্টি- না হওয়ায় খরায় আনারসের আকার ছোট ছিল। এবার বৃষ্টি হওয়াতে আনারসের আকার বড় হয়েছে। তবে কিছুকিছু জমিতে সঠিক পরিচর্যার অভাবে আকারে ছোট হয়েছে। পলাশ উপজেলা কৃষি অফিসার আয়েশা আক্তার জানান, এবার গত বছরের চেয়ে ৭৫ মে, টন আনারস বেশি ফলন হয়েছে। যেখানে গত বছর ১৬৫০ মে.টন ছিল এবার হয়েছে ১৭২৫ মে. টন আনারস। তাছাড়া কৃষি অফিসের মাঠকর্মীরা নিয়মিত আনারস কৃষকদের পাশে ছিল।
প্রতি হেক্টরে ১৮ হতে ২০ টন আনারসের ফলন হয়েছে। এক হতে দেড় কেজি পর্যন্ত প্রতিটি আনারসের ওজন হওয়ায় কৃষকরা খুশি। তাদের আশা এ বছর অধিক লাভের মুখ দেখতে পাবে। ঘোড়াশালের-আনারসের চাহিদা সারাদেশে। দেশের মধ্যে গুণে মানে সুস্বাদু আনারস হিসেবেও সুপরিচিত। বর্তমানে হাটেবাজারে প্রতি হালি আনারস ১৫০ হতে ২৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা জানায় আনারস গত ১০-১২ দিন হলো বাজারে আসা শুরু হয়েছে বলে দাম একটু বেশি।