গাইবান্ধা : নদী ভাঙনের শিকার একটি পরিবার এককভাবে বসতি স্থাপন করেছে -সংবাদ
নানা কারণে পারিবারিক বন্ধন ছিন্ন হয়ে ছোট হয়েছে খানাভুক্ত সদস্য সংখ্যা। জাতীয়ভাবে খানায় সদস্য সংখ্যা গড়ে ৪জন হলেও গাইবান্ধা জেলায় খানার সদস্য ৩.৬১ জন।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, গাইবান্ধা জেলায় মোট জনসংখ্যা ২৫লাখ ২৯হাজার ৩৫৯ জন এবং খানার সংখ্যা ৬লাখ ৯৭হাজার ২৩০টি।
নদী ভাঙন, বন্যা, খরা এসব কারণে এলাকা থেকে স্থানান্তরিত এবং পর্যায়ক্রমে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে অন্যত্র গিয়ে বসবাস করে পৃথক সংসার গড়ে তোলে। এছাড়াও পেশা, পারিবারিক অশান্তি ও মনোমালিন্য, খাদ্যাভাসের পরিবর্তন এসব কারণেও খানার সংখ্যা ছোট হয়ে আসছে
গাইবান্ধার জেলার মধ্যে সর্বোচ্চ বড় খানা সদর উপজেলায় ৩.৭২ জন এবং সর্বনি¤œ সাদুল্যাপুরে ৩.৫৪ জন। বাংলাদেশে স্বাধীনতা পরবর্তী ১৯৮১ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত পাঁচটি শুমারি অনুষ্ঠিত হয়েছে। তথ্য অনুযায়ী ১৯৮১ সারে শুমারিতে খানায় সদস্য ছিল ৫.৪০, ১৯৯১ সালে ৫.২৩, ২০০১ সালে ৪.৩৩, ২০১১ সালে ৩.৮৮ এবং সর্বশেষ ২০২২ সালে দাঁড়িয়েছে ৩.৬৩ জনে। এরমধ্যে ৪সদস্য বিশিষ্ট খানা রয়েছে সর্বাধিক ১লাখ ৮৩হাজার৮০৩টি, যা মোট খানার ২৬.৩৬ শতাংশ। এছাড়াও ৩ সদস্য বিশিষ্ট খানা ২৪.৩৩ শতাংশ এবং ২ সদস্য বিশিষ্ট খানা ১৭.৪৪ শতাংশ।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা গণ উন্নয়ন কেন্দ্রের নির্বাহী প্রধান এম. আবদুস্্ সালাম জানান, পরিবার বা খানাগুলো ক্রমেই ছোট হয়ে আসার পেঁছনে বেশ কিছু কারন রয়েছে। তিনি অভিমত ব্যক্ত করে বলেন, এই অঞ্চলের মানুষজন জলবায়ু পরিবর্তন ও বিভিন্ন ধরণের দুর্যোগ শিকার। মানুষজন নদীভাঙন, বন্যা, খরা এসব কারণে এলাকা থেকে স্থানান্তরিত হয় এবং পর্যায়ক্রমে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে অন্যত্র গিয়ে বসবাস করে পৃথক সংসার গড়ে তোলে। এছাড়াও পেশা, পারিবারিক অশান্তি ও মনোমালিন্য, খাদ্যাভাসের পরিবর্তন এসব কারণেও খানার সংখ্যা ছোট হয়ে আসছে।
গাইবান্ধা সদর উপজেলার নশরৎপুর গ্রামের আমিনুল ইসলাম জানান, আমরা ৬ভাই বোন। দু’বোন বিয়ে হওয়ার পরই কাজের সন্ধানে আমি ঢাকায় চলে যাই, এরপর থেকেই বাবা-মা থেকে আলাদা হয়ে পড়ি। সাঘাটার হাসিলকান্দি গ্রামের আনোয়ার হোসেন জানান, অন্য ভাইদের সন্তানদের সাথে আমার সন্তানের খাওয়া দাওয়া নিয়ে প্রায় ছোট-খাটো ঝগড়া বিবাদের কারণে পৃথক হই। এখন আমরা ৫ ভাই সবাই পৃথক খানা গড়েছি।
এদিকে সাঘাটা বাজারের ৯৯ বছর বয়সী ব্যবসায়ী আলহাজ ইমান আলী জানান, আমার খানায় বর্তমানে ২২ জন সদস্য। চার ছেলে ও ছেলের বউ নাতি-নাতনি নিয়ে একসঙ্গে আছি, একই হাড়িতে রান্না করা হয়। আমাদের মধ্যেও টুকিটাকি কথা কাটাকাটি হলেও কিন্তু আলাদা হয়নি। বেশ ভালই আছি। সুখ-দুঃখ একসাথে শেয়ার করছি। সন্তানেরাও পারিবারিক আদর্শ নিয়ে বড় হচ্ছে।
সাবেক জনপ্রতিনিধি ওমর আলী সরকার জানান, পরিবার ছোট করার পেঁছনে আরেকটি কারণ দারিদ্রতার কারণে হলো সরকারি-বেসরকারি সুযোগ-সুবিধা নিতেই পৃথক খানার তৈরি করছে। এছাড়াও জীবনজীবিকার তাগিদেও খানা ছোট হচ্ছে বলে তিনি জানান।
এদিকে,গাইবান্ধার সিভিল সার্জন ডা. রফিকুজ্জামান জানান মানুষ এখন বেশ সচেতন। দুটি’র বেশি সন্তান নিচ্ছেন না। একারণে খানার সংখ্যা ছোট হয়ে আসছে।
গাইবান্ধা : নদী ভাঙনের শিকার একটি পরিবার এককভাবে বসতি স্থাপন করেছে -সংবাদ
রোববার, ২২ জুন ২০২৫
নানা কারণে পারিবারিক বন্ধন ছিন্ন হয়ে ছোট হয়েছে খানাভুক্ত সদস্য সংখ্যা। জাতীয়ভাবে খানায় সদস্য সংখ্যা গড়ে ৪জন হলেও গাইবান্ধা জেলায় খানার সদস্য ৩.৬১ জন।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, গাইবান্ধা জেলায় মোট জনসংখ্যা ২৫লাখ ২৯হাজার ৩৫৯ জন এবং খানার সংখ্যা ৬লাখ ৯৭হাজার ২৩০টি।
নদী ভাঙন, বন্যা, খরা এসব কারণে এলাকা থেকে স্থানান্তরিত এবং পর্যায়ক্রমে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে অন্যত্র গিয়ে বসবাস করে পৃথক সংসার গড়ে তোলে। এছাড়াও পেশা, পারিবারিক অশান্তি ও মনোমালিন্য, খাদ্যাভাসের পরিবর্তন এসব কারণেও খানার সংখ্যা ছোট হয়ে আসছে
গাইবান্ধার জেলার মধ্যে সর্বোচ্চ বড় খানা সদর উপজেলায় ৩.৭২ জন এবং সর্বনি¤œ সাদুল্যাপুরে ৩.৫৪ জন। বাংলাদেশে স্বাধীনতা পরবর্তী ১৯৮১ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত পাঁচটি শুমারি অনুষ্ঠিত হয়েছে। তথ্য অনুযায়ী ১৯৮১ সারে শুমারিতে খানায় সদস্য ছিল ৫.৪০, ১৯৯১ সালে ৫.২৩, ২০০১ সালে ৪.৩৩, ২০১১ সালে ৩.৮৮ এবং সর্বশেষ ২০২২ সালে দাঁড়িয়েছে ৩.৬৩ জনে। এরমধ্যে ৪সদস্য বিশিষ্ট খানা রয়েছে সর্বাধিক ১লাখ ৮৩হাজার৮০৩টি, যা মোট খানার ২৬.৩৬ শতাংশ। এছাড়াও ৩ সদস্য বিশিষ্ট খানা ২৪.৩৩ শতাংশ এবং ২ সদস্য বিশিষ্ট খানা ১৭.৪৪ শতাংশ।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা গণ উন্নয়ন কেন্দ্রের নির্বাহী প্রধান এম. আবদুস্্ সালাম জানান, পরিবার বা খানাগুলো ক্রমেই ছোট হয়ে আসার পেঁছনে বেশ কিছু কারন রয়েছে। তিনি অভিমত ব্যক্ত করে বলেন, এই অঞ্চলের মানুষজন জলবায়ু পরিবর্তন ও বিভিন্ন ধরণের দুর্যোগ শিকার। মানুষজন নদীভাঙন, বন্যা, খরা এসব কারণে এলাকা থেকে স্থানান্তরিত হয় এবং পর্যায়ক্রমে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে অন্যত্র গিয়ে বসবাস করে পৃথক সংসার গড়ে তোলে। এছাড়াও পেশা, পারিবারিক অশান্তি ও মনোমালিন্য, খাদ্যাভাসের পরিবর্তন এসব কারণেও খানার সংখ্যা ছোট হয়ে আসছে।
গাইবান্ধা সদর উপজেলার নশরৎপুর গ্রামের আমিনুল ইসলাম জানান, আমরা ৬ভাই বোন। দু’বোন বিয়ে হওয়ার পরই কাজের সন্ধানে আমি ঢাকায় চলে যাই, এরপর থেকেই বাবা-মা থেকে আলাদা হয়ে পড়ি। সাঘাটার হাসিলকান্দি গ্রামের আনোয়ার হোসেন জানান, অন্য ভাইদের সন্তানদের সাথে আমার সন্তানের খাওয়া দাওয়া নিয়ে প্রায় ছোট-খাটো ঝগড়া বিবাদের কারণে পৃথক হই। এখন আমরা ৫ ভাই সবাই পৃথক খানা গড়েছি।
এদিকে সাঘাটা বাজারের ৯৯ বছর বয়সী ব্যবসায়ী আলহাজ ইমান আলী জানান, আমার খানায় বর্তমানে ২২ জন সদস্য। চার ছেলে ও ছেলের বউ নাতি-নাতনি নিয়ে একসঙ্গে আছি, একই হাড়িতে রান্না করা হয়। আমাদের মধ্যেও টুকিটাকি কথা কাটাকাটি হলেও কিন্তু আলাদা হয়নি। বেশ ভালই আছি। সুখ-দুঃখ একসাথে শেয়ার করছি। সন্তানেরাও পারিবারিক আদর্শ নিয়ে বড় হচ্ছে।
সাবেক জনপ্রতিনিধি ওমর আলী সরকার জানান, পরিবার ছোট করার পেঁছনে আরেকটি কারণ দারিদ্রতার কারণে হলো সরকারি-বেসরকারি সুযোগ-সুবিধা নিতেই পৃথক খানার তৈরি করছে। এছাড়াও জীবনজীবিকার তাগিদেও খানা ছোট হচ্ছে বলে তিনি জানান।
এদিকে,গাইবান্ধার সিভিল সার্জন ডা. রফিকুজ্জামান জানান মানুষ এখন বেশ সচেতন। দুটি’র বেশি সন্তান নিচ্ছেন না। একারণে খানার সংখ্যা ছোট হয়ে আসছে।