মসজিদের ইমামতি ছেড়ে কৃষি কাজে নেমে চরমভাবে সফল হয়েছেন আলমগীর হোসেন শিমুল। এখন তিনি অন্যান্য কৃষকের আইডল। তার কৃষি চর্চাকে অনুসরণ করে চাষাবাদ করছেন অনেক কৃষক। তাতে তারাও কমবেশি সফলতা পাচ্ছেন।
ঘটনাটি খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার সাহস ইউনিয়নের। ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাহস কুমারঘাটা গ্রামের জামে মসজিদে ইমামতি করতেন ওই গ্রামেরই আলেম শিমুল। তার নাম আলমগীর হোসেন শিমুল। কিন্তু তাকে সবাই শিমুল হুজুর নামেই ডাকে বা চেনেন। প্রায় দুই যুগ ধরে গ্রামের মসজিদে ইমামতি করেছেন তিনি। সততা, নিষ্ঠা আর একিনের সাথে চলতেন তিনি। মসজিদে তিনি কখনো মনগড়া কথা বলতেন না।
অনেক সময় মসজিদ কমিটির সদস্যদের সঙ্গে তার দ্বিমত তৈরি হতো হক কথার কারণে। এমন একটা ঘটনার সূত্র ধরে তিনি ইমামের দায়িত্বটা ছেড়ে দেন। নেমে পড়েন কৃষি কাজে।
বাবার দুই একর ত্রিশ শতক জমির একটি ঘেরে তিন ফসলি আবাদ শুরু করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন সবাইকে। এর আগে এই অঞ্চলে জমিতে একই সাথে তিনটি ফসল কেউ কল্পনাও করেনি। জমির আইলে সবজির চাষ, জমিতে ধান চাষ আর সেই জমির পানিতে মাছ চাষ করে লাভবান ডুমুরিয়ার শিমুল হুজুর। ইদানিং তিনি জমিতে ধানের গাছের ফাঁকে ফাঁকে পানি কচুর গাছ লাগিয়ে পরীক্ষা শুরু করেছেন। তাতে সফল হওয়ার সম্ভাবনাও দেখছেন তিনি। কারণ, ইতোমধ্যে কচুগাছ থেকে লতি তুলতে শুরু করেছেন। তার দেখাদেখি ওই অঞ্চলের কৃষকেরাও এখন জমিতে তিন ফসলি চাষাবাদ করছেন।
সম্প্রতি কথা হয় শিমুল হুজুরের সাথে, তিনি চাষাবাদের নতুন নতুন কলাকৌশলের কথা জানান। খেতের আইলে তিনি বারোমাসি সবজি চাষ করা শুরু করেছেন। প্রথমে শসার চাষ দিয়ে সবজি শুরু হয়। শসা অল্পতেই শেষ হয়ে যায়। তারপর সেখানে লাগানো হয় বরবটি চারা। বরবটি খুব দ্রুত বেড়ে উঠে। বরবটি থাকতে থাকতেই তার ভেতর লাউচারা লাগানো হয়।
লাউ গাছের ফাঁকে ফাঁকে লাগানো হয় বেগুন চারা। বেগুন বারোমাসি ফসল। বেগুন গাছের বয়স বেড়ে গেলে তার ভেতর লাগানো হয় মাটির আলুর চারা অথবা ওল চারা।ওল সোজা হয়ে বেগুন গাছের ভেতর দিয়ে ওপরে উঠে যায় আর আলুগাছ লতার মতো বেগুন গাছ ধরে থাকে। তাতে করে আর আলুগাছে নতুন কোন জালা বা বান কিংবা ধরা দিতে হয় না। কম খরচে অধিক লাভের চাষাবাদের পদ্ধতি জানতে শিমুলের সাথে যোগাযোগ করতে দেখা গেল কয়েকজন কৃষকের। তারা এসেছেন পাশের ইউনিয়ন থেকে। শিমুলের বাড়ি ৯নং সাহস ইউনিয়নে হলেও জমি জমা সব ৭নং শোভনা ইউনিয়নের কাকমারীর জয়খালি মৌজায়। এই মৌজাটির চারপাশ নদী বেষ্টিত। এখানে সরকারি দপ্তর অর্থাৎ কৃষি বিভাগ থেকে কোন লোকজন আসে না। চাষিরা আজীবন নিজেদের মনগড়া নীতিতেই চাষাবাদ করে আসছে। ইদানিং শিমুল হুজুর এসে চাষাবাদে মনোযোগ দেওয়ায় অন্যান্য চাষিরাও নড়েচড়ে বসেছেন। তারাও এখন তিন ফসলি চাষ আবাদ শুরু করে লাভবান হচ্ছেন।
কাকমারীর জয়খালি মৌজায় শিমুল হুজুরের চাষ পদ্ধতি নিয়ে কথা হয় উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর কার্যালয়ে কৃষি কর্মকর্তার সাথে। তিনি জানান, আমরা শিমুল হুজুরের তিন ফসলি চাষ পদ্ধতির কথা শুনেছি। তাকে ডেকেছিলাম। কৃষি বিষয়ক কিছু বই-পুস্তক দিয়েছি তাকে। বিনামূল্যে কিছু সার আর কীটনাশক দিয়েছি। আমরা তার সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছি। পার্শ¦বর্তী কৃষকদেরও বলেছি তার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে সমন্বয় করে চাষাবাদ করতে।
রোববার, ২২ জুন ২০২৫
মসজিদের ইমামতি ছেড়ে কৃষি কাজে নেমে চরমভাবে সফল হয়েছেন আলমগীর হোসেন শিমুল। এখন তিনি অন্যান্য কৃষকের আইডল। তার কৃষি চর্চাকে অনুসরণ করে চাষাবাদ করছেন অনেক কৃষক। তাতে তারাও কমবেশি সফলতা পাচ্ছেন।
ঘটনাটি খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার সাহস ইউনিয়নের। ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাহস কুমারঘাটা গ্রামের জামে মসজিদে ইমামতি করতেন ওই গ্রামেরই আলেম শিমুল। তার নাম আলমগীর হোসেন শিমুল। কিন্তু তাকে সবাই শিমুল হুজুর নামেই ডাকে বা চেনেন। প্রায় দুই যুগ ধরে গ্রামের মসজিদে ইমামতি করেছেন তিনি। সততা, নিষ্ঠা আর একিনের সাথে চলতেন তিনি। মসজিদে তিনি কখনো মনগড়া কথা বলতেন না।
অনেক সময় মসজিদ কমিটির সদস্যদের সঙ্গে তার দ্বিমত তৈরি হতো হক কথার কারণে। এমন একটা ঘটনার সূত্র ধরে তিনি ইমামের দায়িত্বটা ছেড়ে দেন। নেমে পড়েন কৃষি কাজে।
বাবার দুই একর ত্রিশ শতক জমির একটি ঘেরে তিন ফসলি আবাদ শুরু করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন সবাইকে। এর আগে এই অঞ্চলে জমিতে একই সাথে তিনটি ফসল কেউ কল্পনাও করেনি। জমির আইলে সবজির চাষ, জমিতে ধান চাষ আর সেই জমির পানিতে মাছ চাষ করে লাভবান ডুমুরিয়ার শিমুল হুজুর। ইদানিং তিনি জমিতে ধানের গাছের ফাঁকে ফাঁকে পানি কচুর গাছ লাগিয়ে পরীক্ষা শুরু করেছেন। তাতে সফল হওয়ার সম্ভাবনাও দেখছেন তিনি। কারণ, ইতোমধ্যে কচুগাছ থেকে লতি তুলতে শুরু করেছেন। তার দেখাদেখি ওই অঞ্চলের কৃষকেরাও এখন জমিতে তিন ফসলি চাষাবাদ করছেন।
সম্প্রতি কথা হয় শিমুল হুজুরের সাথে, তিনি চাষাবাদের নতুন নতুন কলাকৌশলের কথা জানান। খেতের আইলে তিনি বারোমাসি সবজি চাষ করা শুরু করেছেন। প্রথমে শসার চাষ দিয়ে সবজি শুরু হয়। শসা অল্পতেই শেষ হয়ে যায়। তারপর সেখানে লাগানো হয় বরবটি চারা। বরবটি খুব দ্রুত বেড়ে উঠে। বরবটি থাকতে থাকতেই তার ভেতর লাউচারা লাগানো হয়।
লাউ গাছের ফাঁকে ফাঁকে লাগানো হয় বেগুন চারা। বেগুন বারোমাসি ফসল। বেগুন গাছের বয়স বেড়ে গেলে তার ভেতর লাগানো হয় মাটির আলুর চারা অথবা ওল চারা।ওল সোজা হয়ে বেগুন গাছের ভেতর দিয়ে ওপরে উঠে যায় আর আলুগাছ লতার মতো বেগুন গাছ ধরে থাকে। তাতে করে আর আলুগাছে নতুন কোন জালা বা বান কিংবা ধরা দিতে হয় না। কম খরচে অধিক লাভের চাষাবাদের পদ্ধতি জানতে শিমুলের সাথে যোগাযোগ করতে দেখা গেল কয়েকজন কৃষকের। তারা এসেছেন পাশের ইউনিয়ন থেকে। শিমুলের বাড়ি ৯নং সাহস ইউনিয়নে হলেও জমি জমা সব ৭নং শোভনা ইউনিয়নের কাকমারীর জয়খালি মৌজায়। এই মৌজাটির চারপাশ নদী বেষ্টিত। এখানে সরকারি দপ্তর অর্থাৎ কৃষি বিভাগ থেকে কোন লোকজন আসে না। চাষিরা আজীবন নিজেদের মনগড়া নীতিতেই চাষাবাদ করে আসছে। ইদানিং শিমুল হুজুর এসে চাষাবাদে মনোযোগ দেওয়ায় অন্যান্য চাষিরাও নড়েচড়ে বসেছেন। তারাও এখন তিন ফসলি চাষ আবাদ শুরু করে লাভবান হচ্ছেন।
কাকমারীর জয়খালি মৌজায় শিমুল হুজুরের চাষ পদ্ধতি নিয়ে কথা হয় উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর কার্যালয়ে কৃষি কর্মকর্তার সাথে। তিনি জানান, আমরা শিমুল হুজুরের তিন ফসলি চাষ পদ্ধতির কথা শুনেছি। তাকে ডেকেছিলাম। কৃষি বিষয়ক কিছু বই-পুস্তক দিয়েছি তাকে। বিনামূল্যে কিছু সার আর কীটনাশক দিয়েছি। আমরা তার সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছি। পার্শ¦বর্তী কৃষকদেরও বলেছি তার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে সমন্বয় করে চাষাবাদ করতে।