alt

সারাদেশ

কালীগঞ্জে ঐতিহ্যের কোন্দার শেষ চিহ্ন ধরে রেখেছেন কয়েকজন কারিগর

প্রতিনিধি, কালীগঞ্জ (গাজীপুর) : শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫

গাজীপুরের কালীগঞ্জ : উপজেলার জাংগালিয়া ইউনিয়নের বাড়িয়াদী গ্রামের কোন্দা তৈরির কারিগরদের কিছু আলোক চিত্র -সংবাদ

গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার জাংগালিয়া ইউনিয়নের ছোট্ট একটি গ্রাম বাড়িয়াদী। এই গ্রামের পরিচয় একসময় ছিল অন্যরকম। এটি ছিল কোন্দা তৈরির এক স্বনামধন্য গ্রাম। বর্ষার মৌসুম এলেই যেন নতুন প্রাণ ফিরে পেত গ্রামটি। শতাধিক পুরুষ মেতে উঠতো কোন্দা তৈরির কাজে। তালগাছ থেকে কেটে, ঘষে, ছেঁটে তৈরি হতো নিখুঁতভাবে নির্মিত কোন্দা। এক সময় দেশের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে পড়তো।

আগে প্রতিটি ঘরে কোন্দা লাগত। বিলে মাছ ছিল, তাই সবাই মাছ ধরতে কোন্দা কিনত। এখন তো কারখানার বর্জ্য এসে বিলের পানি নষ্ট করে ফেলেছে। মাছ নেই, ফলে কোন্দার চাহিদাও নেই। তাই আর বাণিজ্যিকভাবে বানানো হয় না

কিন্তু সময়ের পালাবদলে, প্রযুক্তির জোয়ারে, বিল-জলাশয়ের অবক্ষয়ে আর পরিবেশ দূষণের করুণ থাবায় আজ বিলুপ্তির পথে এই শিল্প। বাড়িয়াদীর ঐতিহ্যবাহী কোন্দা এখন শুধুই স্মৃতির সরণি ধরে বেঁচে আছে কিছু পরিবারের মাঝে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, গ্রামের অধিকাংশ মানুষই পেশা পরিবর্তন করেছেন। অথচ এই গ্রামেই একসময় প্রতিটি বাড়ির উঠোনে, গাছতলায় কিংবা খোলা মাঠে তালগাছ কেটে কোন্দা তৈরির দৃশ্য ছিল নিত্যদিনের চিত্র। সেই ঐতিহ্যের ধারক হয়ে আজও হাতের কাজ ধরে রেখেছেন কয়েকজন কারিগর। নুরুল ইসলাম বেপারীর ছেলে আব্দুল কাদির, আফছার উদ্দিন শিকদারের ছেলে নাজমুল শিকদার এবং ফাইজুদ্দিন শিকদারের ছেলে লাল মিয়া।

প্রবীণ কারিগর হানিফ বেপারী জানান, “আমাদের সময় এই গ্রামে প্রতিটি পুরুষ কোন্দা বানাতে পারতো। আমি নিজেও বাবা-চাচার সঙ্গে কোন্দা তৈরি শিখেছি। অনেক মেলায় পুরস্কারও পেয়েছি। কিন্তু এখন আর সেই চাহিদা নেই। ডিজিটালের যুগে কেউ আর কোন্দা কিনতে চায় না। কোন্দা যেন আজ স্মৃতির জিনিস।

বর্তমান প্রজন্মের কারিগর আব্দুল কাদির ও নাজমুল শিকদার জানান, “আগে প্রতিটি ঘরে কোন্দা লাগতো। বিলে মাছ ছিল, তাই সবাই মাছ ধরতে কোন্দা কিনতো। এখন তো কারখানার বর্জ্য এসে বিলের পানি নষ্ট করে ফেলেছে। মাছ নেই, ফলে কোন্দার চাহিদাও নেই। তাই আর বাণিজ্যিকভাবে বানানো হয় না। শুধু শখের বশে কিছু বানাই।

তারা আরো বলেন, “বাজারে নিয়ে গেলে খুব একটা বিক্রি হয় না। কেউ কেউ বাড়িতে এসে অর্ডার দেন, সেটাই মূলত বিক্রি হয়।

বাড়িয়াদীর এই শিল্পের পেছনে রয়েছে নিখুঁত দক্ষতা ও নিঃসীম ধৈর্য। একটি ভালো মানের কোন্দা তৈরি করতে লাগে এক সপ্তাহের বেশি সময়। তালগাছ সংগ্রহ করা হয় কালীগঞ্জ, কাপাসিয়া এবং শ্রীপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে। এরপর নির্ধারিত দৈর্ঘ্য অনুযায়ী গাছ কেটে দ্বিখন্ডিত করা হয়। একটি গাছ থেকে দু’টি কোন্দা তৈরি হয়। পরিশ্রমের ফসল সেই কোন্দা প্রতি গাজীপুর মহানগরীর শনিবার পুবাইল বাজারে বিক্রি করা হয়।

একটি ভালো মানের কোন্দার দাম প্রায় ১২ থেকে ১৩ হাজার টাকা। তবে বর্তমান চাহিদা কম হওয়ায় অনেক সময় কারিগরদের খরচই উঠে না। বাড়িয়াদীর কোন্দা শুধু একটি মাছ ধরার যন্ত্র নয়। এটি এই গ্রামের ইতিহাস, ঐতিহ্য, কৃষ্টির প্রতিচ্ছবি। এলাকাবাসীর ভাষায়, “এই কোন্দা বাড়িয়াদীকে আলাদা পরিচয় দিয়েছে। আমরা চাই, এই শিল্প যেন হারিয়ে না যায়। সরকারের বা কোনো সংস্থার সহায়তা পেলে হয়তো আবার নতুন করে ঘুরে দাঁড়াতে পারে আমাদের এই ঐতিহ্য।

বাড়িয়াদীর কোন্দা এখন আর প্রতিদিনের প্রয়োজন নয়, তবে এটি এক সাংস্কৃতিক চিহ্ন—যা বাঁচিয়ে রাখতে পারে একটি গ্রামের ইতিহাসকে। কয়েকজন কারিগরের হাতে হয়তো টিকে আছে এর অস্তিত্ব, কিন্তু প্রয়োজন সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি, সহায়তা এবং প্রচারের। না হলে অদূর ভবিষ্যতেই হয়তো ‘কোন্দা’ শব্দটাই কেবল বইয়ের পাতায় খুঁজতে হবে।

ছবি

আবু সাইদ হত্যা মামলা, গনশুনানী না করে চার্জসীট দাখিল করার প্রতিবাদে দ্বিতীয় দিনেও বিক্ষোভ

ছবি

“বিদেশি ইজারার বিরুদ্ধে রোড মার্চ শেষ, বাম জোটের হুঁশিয়ারি আগামী কর্মসূচির”

ছবি

‘কমপ্লিট শাটডাউনে’ স্থলবন্দর অচল, ক্ষতিতে রপ্তানিমুখী শিল্প

ছবি

‘বিদেশিদের দেব না’ স্লোগানে চট্টগ্রাম বন্দর ঘেরাও কর্মসূচি সম্পন্ন

ছবি

ছাত্র-জনতার সমাবেশে হামলার মামলায় থানায় নেওয়া হয় দীপঙ্করকে

ছবি

সমাবেশে যোগ দিতে আসার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় ইসলামী আন্দোলনের ৫ নেতাকর্মীর মৃত্যু

ছবি

রথযাত্রায় লাখো সনাতনীদের ঢল

জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি নেই এমন প্রশিক্ষণ আইসিটি ডিভিশন দেবে না : ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব

ছবি

বিপিও সামিটে কর্মক্ষেত্রে নারীর সাফল্য বিষয়ক প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত

ছবি

বর্ষায় প্রকৃতির শোভা : সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে ফুটন্ত কদম ফুল

মোহনগঞ্জের হাওরে বিলুপ্তির পথে দেশি মাছ

নবাবগঞ্জে করোনা উপসর্গে একজনের মৃত্যু

রাজবাড়ীতে ট্রাক-ইজিবাইক সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৭

ছবি

বাড়ছে বেওয়ারিশ কুকুরের উপদ্রব

ছবি

স্থলপথে ৯ পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা, ব্যবসায়ীরা হতাশ

নবাবগঞ্জে ডোবা থেকে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার

চাটখিলে ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি, মাদ্রাসা পরিচালককে গণধোলাই

ছবি

চট্টগ্রামে হচ্ছে বিএসটিআইয়ের স্বয়ংসম্পূর্ণ ল্যাবরেটরি : শিল্প উপদেষ্টা

ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনায় মৃত ৪

বিএনপির কার্যালয়ে ভাঙচুরের প্রতিবাদে মিছিল ও সমাবেশ

আবু সাঈদের ছবি বিকৃতির অভিযোগে আটক ১

ছবি

দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ পথচারীসহ এলাকাবাসী

শ্রীপুরে পৃথক স্থানে ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু ২

আবু সাউদ মাসুদ-আফজাল হোসেন পন্টি প্যানেলের নিরঙ্কুশ জয়

পবিপ্রবির নির্মাণাধীন ভবন থেকে মাদকসহ আটক ১

নান্দাইলে সাবেক মন্ত্রীকন্যা ও এমপিসহ ১৩৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

ঈশ্বরগঞ্জ পৌর শহরের প্রবেশমুখে ময়লার ভাগাড়, জনস্বাস্থ্য হুমকিতে

নবাবগঞ্জে বাইক দুর্ঘটনায় নিহত ১, আহত ২

চাটখিলে বসতঘরে ভাঙচুর, আহত দুই

কিস্তির টাকা না পেয়ে বৃদ্ধার ঘরে তালা

ছবি

চকরিয়ার মগবাজার-মাছঘাট সড়কে শতাধিক খানাখন্দ, জনদুর্ভোগ

ছবি

যানজটে নাকাল দশমিনার মানুষ

ছবি

চট্টগ্রামে তেলবাহী ট্রেনের ৪টি ওয়াগন লাইনচ্যুত

চট্টগ্রামে আরও ১২ জনের করোনা শনাক্ত

ছবি

মোরেলগঞ্জে সেতু ভেঙে খালে, সবজি ব্যবসায়ী নিহত

ছবি

চট্টগ্রামে বাড়ছে পেঁয়াজের ঝাঁজ, পাইকারি-খুচরায় দামের তফাত

tab

সারাদেশ

কালীগঞ্জে ঐতিহ্যের কোন্দার শেষ চিহ্ন ধরে রেখেছেন কয়েকজন কারিগর

প্রতিনিধি, কালীগঞ্জ (গাজীপুর)

গাজীপুরের কালীগঞ্জ : উপজেলার জাংগালিয়া ইউনিয়নের বাড়িয়াদী গ্রামের কোন্দা তৈরির কারিগরদের কিছু আলোক চিত্র -সংবাদ

শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫

গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার জাংগালিয়া ইউনিয়নের ছোট্ট একটি গ্রাম বাড়িয়াদী। এই গ্রামের পরিচয় একসময় ছিল অন্যরকম। এটি ছিল কোন্দা তৈরির এক স্বনামধন্য গ্রাম। বর্ষার মৌসুম এলেই যেন নতুন প্রাণ ফিরে পেত গ্রামটি। শতাধিক পুরুষ মেতে উঠতো কোন্দা তৈরির কাজে। তালগাছ থেকে কেটে, ঘষে, ছেঁটে তৈরি হতো নিখুঁতভাবে নির্মিত কোন্দা। এক সময় দেশের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে পড়তো।

আগে প্রতিটি ঘরে কোন্দা লাগত। বিলে মাছ ছিল, তাই সবাই মাছ ধরতে কোন্দা কিনত। এখন তো কারখানার বর্জ্য এসে বিলের পানি নষ্ট করে ফেলেছে। মাছ নেই, ফলে কোন্দার চাহিদাও নেই। তাই আর বাণিজ্যিকভাবে বানানো হয় না

কিন্তু সময়ের পালাবদলে, প্রযুক্তির জোয়ারে, বিল-জলাশয়ের অবক্ষয়ে আর পরিবেশ দূষণের করুণ থাবায় আজ বিলুপ্তির পথে এই শিল্প। বাড়িয়াদীর ঐতিহ্যবাহী কোন্দা এখন শুধুই স্মৃতির সরণি ধরে বেঁচে আছে কিছু পরিবারের মাঝে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, গ্রামের অধিকাংশ মানুষই পেশা পরিবর্তন করেছেন। অথচ এই গ্রামেই একসময় প্রতিটি বাড়ির উঠোনে, গাছতলায় কিংবা খোলা মাঠে তালগাছ কেটে কোন্দা তৈরির দৃশ্য ছিল নিত্যদিনের চিত্র। সেই ঐতিহ্যের ধারক হয়ে আজও হাতের কাজ ধরে রেখেছেন কয়েকজন কারিগর। নুরুল ইসলাম বেপারীর ছেলে আব্দুল কাদির, আফছার উদ্দিন শিকদারের ছেলে নাজমুল শিকদার এবং ফাইজুদ্দিন শিকদারের ছেলে লাল মিয়া।

প্রবীণ কারিগর হানিফ বেপারী জানান, “আমাদের সময় এই গ্রামে প্রতিটি পুরুষ কোন্দা বানাতে পারতো। আমি নিজেও বাবা-চাচার সঙ্গে কোন্দা তৈরি শিখেছি। অনেক মেলায় পুরস্কারও পেয়েছি। কিন্তু এখন আর সেই চাহিদা নেই। ডিজিটালের যুগে কেউ আর কোন্দা কিনতে চায় না। কোন্দা যেন আজ স্মৃতির জিনিস।

বর্তমান প্রজন্মের কারিগর আব্দুল কাদির ও নাজমুল শিকদার জানান, “আগে প্রতিটি ঘরে কোন্দা লাগতো। বিলে মাছ ছিল, তাই সবাই মাছ ধরতে কোন্দা কিনতো। এখন তো কারখানার বর্জ্য এসে বিলের পানি নষ্ট করে ফেলেছে। মাছ নেই, ফলে কোন্দার চাহিদাও নেই। তাই আর বাণিজ্যিকভাবে বানানো হয় না। শুধু শখের বশে কিছু বানাই।

তারা আরো বলেন, “বাজারে নিয়ে গেলে খুব একটা বিক্রি হয় না। কেউ কেউ বাড়িতে এসে অর্ডার দেন, সেটাই মূলত বিক্রি হয়।

বাড়িয়াদীর এই শিল্পের পেছনে রয়েছে নিখুঁত দক্ষতা ও নিঃসীম ধৈর্য। একটি ভালো মানের কোন্দা তৈরি করতে লাগে এক সপ্তাহের বেশি সময়। তালগাছ সংগ্রহ করা হয় কালীগঞ্জ, কাপাসিয়া এবং শ্রীপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে। এরপর নির্ধারিত দৈর্ঘ্য অনুযায়ী গাছ কেটে দ্বিখন্ডিত করা হয়। একটি গাছ থেকে দু’টি কোন্দা তৈরি হয়। পরিশ্রমের ফসল সেই কোন্দা প্রতি গাজীপুর মহানগরীর শনিবার পুবাইল বাজারে বিক্রি করা হয়।

একটি ভালো মানের কোন্দার দাম প্রায় ১২ থেকে ১৩ হাজার টাকা। তবে বর্তমান চাহিদা কম হওয়ায় অনেক সময় কারিগরদের খরচই উঠে না। বাড়িয়াদীর কোন্দা শুধু একটি মাছ ধরার যন্ত্র নয়। এটি এই গ্রামের ইতিহাস, ঐতিহ্য, কৃষ্টির প্রতিচ্ছবি। এলাকাবাসীর ভাষায়, “এই কোন্দা বাড়িয়াদীকে আলাদা পরিচয় দিয়েছে। আমরা চাই, এই শিল্প যেন হারিয়ে না যায়। সরকারের বা কোনো সংস্থার সহায়তা পেলে হয়তো আবার নতুন করে ঘুরে দাঁড়াতে পারে আমাদের এই ঐতিহ্য।

বাড়িয়াদীর কোন্দা এখন আর প্রতিদিনের প্রয়োজন নয়, তবে এটি এক সাংস্কৃতিক চিহ্ন—যা বাঁচিয়ে রাখতে পারে একটি গ্রামের ইতিহাসকে। কয়েকজন কারিগরের হাতে হয়তো টিকে আছে এর অস্তিত্ব, কিন্তু প্রয়োজন সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি, সহায়তা এবং প্রচারের। না হলে অদূর ভবিষ্যতেই হয়তো ‘কোন্দা’ শব্দটাই কেবল বইয়ের পাতায় খুঁজতে হবে।

back to top